ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদা কুড়ুলগাছীতে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের শিকার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:১৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০১৭
  • / ৪৩৮ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদা কুড়ুলগাছীতে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের শিকার : ধর্ষকসহ আটক-২
ধর্ষণের পর দোতলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা চেষ্টা করে ধর্ষক আমির
ধর্ষিতা প্রতিবন্ধী শিশুটি দেখতে হাসপাতালে চুয়াডাঙ্গার এসপি নিজাম উদ্দীন: দিলেন আর্থিক অনুদান
নিজস্ব প্রতিবেদক/কুড়ুলগাছি প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছিতে দশ বছর বয়সের প্রতিবন্ধী এক শিশুকে ফুসলিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে একটি পোল্টি মুরগির ফার্মের দ্বিতীয় তলায় ধর্ষণের শিকার হয় ওই প্রতিবন্ধি শিশু। প্রচুর রক্তক্ষরণ ও একটি পা ভেঙ্গে যাওয়ায় ঘটনার পর থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ধর্ষিতা ওই শিশু চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এঘটনায় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন নিজে সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক আমির হোসেন (২২) ও তার সহযোগি পোল্টি ফার্ম মালিক মনিরুজ্জামান মন্টুকে আটক করে। এঘটনায় পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন ধর্ষিতার চিকিৎসা বাবদ নগদ দশ হাজার টাকাও প্রদান করেন। এদিকে, প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকের ফাসির দাবি করেছে এলাকাবাসী।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের বাগান পাড়ার আনিসুর রহমান বিল্লাল্লের প্রতিবন্ধী শিশু কন্যাকে তারই প্রতিবেশী আজগর আলির ছেলে আমির হোসেন বাসার পাশে খেলার করার সময় কৌশলে ডেকে নিয়ে একটি পোল্টি ফার্মের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় শিশুটির চিৎকার করলে ধর্ষক প্রতিবন্ধী শিশুটিকে ধর্ষণ শেষে হত্যার উদ্দেশ্যে পোল্টি মুরগির ফার্মের দ্বিতীয় তলা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে শিশুটির একটি পা ভেঙে যায়। এসময় স্থানীয়রা ছুটে আসলে ধর্ষক আমির গণধোলাইয়ের শিকার হলেও কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ওই প্রতিবন্ধী শিশুটিকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে নেয়। কিন্তু রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। শিশুটি এখন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
এদিকে, এই ধর্ষেণের ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা বাদি হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীনের নেতৃত্বে দামুড়হুদা সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহসহ সঙ্গীয় ফোর্স অভিযুক্ত ধর্ষক আমির হোসন তার নানার বাড়ি সদাবরি থেকে এবং তার সহযোগি মনিরুজ্জামান মন্টুকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন।
এই ধর্ষণের ঘটনা অন্যখাতে নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলে পোল্টি ফার্মের মালিক মনিরুজ্জামান মন্টুকে এবং ধর্ষিতার পিতা আমিরের সহযোগি মন্টুর পক্ষ নিয়ে তাকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে স্থানীয় জনগণ উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এসময় পরিস্থিতি শান্ত করতে জনগণের সামনে মন্টু বেধরক পেটায় পুলিশ। পরে মন্টু ও ধর্ষিতার পিতাকে দামুড়হুদা থানায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে ধর্ষিতার বাবার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমির ও মন্টুকে গ্রেফতার দেখিয়ে থানা হাজতে প্রেরণ করা হয়। এবং ধর্ষিতার পিতাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ মো. ফকরুল খান জানান, গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কুড়ুলগাছি গ্রামের প্রতিবন্ধী শিশু বাড়ির পাশে খেলা করছিলো। এসময় একই গ্রামের আমির হোসেন তাকে মুখ চেপে ধরে তুলে নিয়ে গিয়ে পার্শ¦বর্তী মনিরুজ্জামান মন্টুর মুরগী খামারের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে ধর্ষণ করে। তার চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে প্রতিবন্ধী শিশুকে দু’তলা থেকে ফেলে দিয়ে ধর্ষক আমির হোসেন পালিয়ে যায়। দু’তলা থেকে ফেলে দেওয়ায় শিশুটির একটি পা ভেঙ্গে গেছে। পরে এলাকাবাসী শিশুটিকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এই ঘটনায় দুপুরে ধর্ষিতার বাবা আনিছুর রহমান বাদী হয়ে কুড়ালগাছি গ্রামের আজগার আলীর ছেলে আমির হোসেন ও একই গ্রামের রহমানের ছেলে মনিরুজ্জামান মন্টু নাম উল্লেখ করে দামুড়হুদা থানায় মামলা করে। মামলা নং- ১৪ তাং-৭/৮/২০১৭। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন স্যারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে। শিশুটির ডাক্তারী পরীক্ষা বিকালে সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান ওসি।
এদিকে, গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ নিজাম উদ্দীন শিশুটিকে দেখার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ছুটে যান। এসময় তিনি শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করানোসহ তার চিকিৎসার সার্বিক খোঁজ খবর নেন। পরে তিনি হত দেিদ্র পরিবারের এই বাক প্রতিবন্দি ধর্ষণের শিকার শিশুর চিকিৎসা সেবার জন্য তার  মায়ের হাতে নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন জানান, শিশুটি ধর্ষনের সাথে যারা জড়িত তাদের শাস্তির ব্যপারে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগীতাসহ তার চিকিসা সেবার জন্য সহযোগীতা অবব্যহত থাকবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দামুড়হুদা কুড়ুলগাছীতে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের শিকার

আপলোড টাইম : ০৫:১৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০১৭

দামুড়হুদা কুড়ুলগাছীতে প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের শিকার : ধর্ষকসহ আটক-২
ধর্ষণের পর দোতলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা চেষ্টা করে ধর্ষক আমির
ধর্ষিতা প্রতিবন্ধী শিশুটি দেখতে হাসপাতালে চুয়াডাঙ্গার এসপি নিজাম উদ্দীন: দিলেন আর্থিক অনুদান
নিজস্ব প্রতিবেদক/কুড়ুলগাছি প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছিতে দশ বছর বয়সের প্রতিবন্ধী এক শিশুকে ফুসলিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে একটি পোল্টি মুরগির ফার্মের দ্বিতীয় তলায় ধর্ষণের শিকার হয় ওই প্রতিবন্ধি শিশু। প্রচুর রক্তক্ষরণ ও একটি পা ভেঙ্গে যাওয়ায় ঘটনার পর থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ধর্ষিতা ওই শিশু চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এঘটনায় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন নিজে সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক আমির হোসেন (২২) ও তার সহযোগি পোল্টি ফার্ম মালিক মনিরুজ্জামান মন্টুকে আটক করে। এঘটনায় পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন ধর্ষিতার চিকিৎসা বাবদ নগদ দশ হাজার টাকাও প্রদান করেন। এদিকে, প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকের ফাসির দাবি করেছে এলাকাবাসী।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের বাগান পাড়ার আনিসুর রহমান বিল্লাল্লের প্রতিবন্ধী শিশু কন্যাকে তারই প্রতিবেশী আজগর আলির ছেলে আমির হোসেন বাসার পাশে খেলার করার সময় কৌশলে ডেকে নিয়ে একটি পোল্টি ফার্মের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় শিশুটির চিৎকার করলে ধর্ষক প্রতিবন্ধী শিশুটিকে ধর্ষণ শেষে হত্যার উদ্দেশ্যে পোল্টি মুরগির ফার্মের দ্বিতীয় তলা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে শিশুটির একটি পা ভেঙে যায়। এসময় স্থানীয়রা ছুটে আসলে ধর্ষক আমির গণধোলাইয়ের শিকার হলেও কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ওই প্রতিবন্ধী শিশুটিকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে নেয়। কিন্তু রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। শিশুটি এখন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
এদিকে, এই ধর্ষেণের ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা বাদি হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীনের নেতৃত্বে দামুড়হুদা সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহসহ সঙ্গীয় ফোর্স অভিযুক্ত ধর্ষক আমির হোসন তার নানার বাড়ি সদাবরি থেকে এবং তার সহযোগি মনিরুজ্জামান মন্টুকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন।
এই ধর্ষণের ঘটনা অন্যখাতে নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলে পোল্টি ফার্মের মালিক মনিরুজ্জামান মন্টুকে এবং ধর্ষিতার পিতা আমিরের সহযোগি মন্টুর পক্ষ নিয়ে তাকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে স্থানীয় জনগণ উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এসময় পরিস্থিতি শান্ত করতে জনগণের সামনে মন্টু বেধরক পেটায় পুলিশ। পরে মন্টু ও ধর্ষিতার পিতাকে দামুড়হুদা থানায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে ধর্ষিতার বাবার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমির ও মন্টুকে গ্রেফতার দেখিয়ে থানা হাজতে প্রেরণ করা হয়। এবং ধর্ষিতার পিতাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ মো. ফকরুল খান জানান, গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কুড়ুলগাছি গ্রামের প্রতিবন্ধী শিশু বাড়ির পাশে খেলা করছিলো। এসময় একই গ্রামের আমির হোসেন তাকে মুখ চেপে ধরে তুলে নিয়ে গিয়ে পার্শ¦বর্তী মনিরুজ্জামান মন্টুর মুরগী খামারের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে ধর্ষণ করে। তার চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে প্রতিবন্ধী শিশুকে দু’তলা থেকে ফেলে দিয়ে ধর্ষক আমির হোসেন পালিয়ে যায়। দু’তলা থেকে ফেলে দেওয়ায় শিশুটির একটি পা ভেঙ্গে গেছে। পরে এলাকাবাসী শিশুটিকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এই ঘটনায় দুপুরে ধর্ষিতার বাবা আনিছুর রহমান বাদী হয়ে কুড়ালগাছি গ্রামের আজগার আলীর ছেলে আমির হোসেন ও একই গ্রামের রহমানের ছেলে মনিরুজ্জামান মন্টু নাম উল্লেখ করে দামুড়হুদা থানায় মামলা করে। মামলা নং- ১৪ তাং-৭/৮/২০১৭। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন স্যারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে। শিশুটির ডাক্তারী পরীক্ষা বিকালে সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান ওসি।
এদিকে, গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ নিজাম উদ্দীন শিশুটিকে দেখার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ছুটে যান। এসময় তিনি শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করানোসহ তার চিকিৎসার সার্বিক খোঁজ খবর নেন। পরে তিনি হত দেিদ্র পরিবারের এই বাক প্রতিবন্দি ধর্ষণের শিকার শিশুর চিকিৎসা সেবার জন্য তার  মায়ের হাতে নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন জানান, শিশুটি ধর্ষনের সাথে যারা জড়িত তাদের শাস্তির ব্যপারে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগীতাসহ তার চিকিসা সেবার জন্য সহযোগীতা অবব্যহত থাকবে।