ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামারে লক্ষাধিক টাকার খড় ও বিচালি গোপনে বিক্রি, জনমনে ক্ষোভ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ৩৩৪ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক:
এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি খামার হিসেবে খ্যাত দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামারে এবার ৫০ একর জমির তিন লক্ষাধিক টাকার ধানের বিচালি ও খড় গোপনে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে মথুরা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে। কোনো প্রকার কোটেশন, নিলাম, টেন্ডার ছাড়াই বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে এসব বিচালি ও খড় বিক্রি করা হয়েছে। এর আগে প্রায় ৩ কোটি টাকার ধানের বীজ গোপনে পাচার করার দায়ে ফার্মটির ৪ উপ-পরিচালক সাময়িক বরখাস্ত হন। তবে বিখ্যাত এ খামারে দুর্নীতি যেন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। মথুরা বীজ উৎপাদন খামারে চলতি মৌসুমের প্রায় ৫০ একর জমির ধানের বিচালি ও খড় ৬ হাজার টাকা একর দরে বিক্রি করা হয়েছে স্থানীয়দের কাছে বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন বলছেন, কোনো রকম কোটেশন, নোটিশ, টেন্ডার ছাড়াই ইচ্ছা মাফিক এসব খড়-বিচালি বিক্রি করা হয়েছে।
দত্তনগর ফার্ম এলাকার মথুরার মাঝপাড়ার বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, একর প্রতি ৬ হাজার টাকা দরে ২৪ হাজার টাকা দিয়ে এবার মথুরা ফার্মের উপ-পরিচালক মজিবর রহমান খানের কাছ থেকে ৪ একর জমির বিচালি কিনেছেন। তবে কিছু টাকা বাকি থাকায় তাঁকে হয়রানি করার চেষ্টা করেছে। এছাড়াও পোড়াপাড়া, গোকুলনগর পীরগাছার স্থানীয় আরও কয়েকজন বিচালি কিনেছেন। তবে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি প্রত্যাশা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, এসব খড়-বিচালি ফার্ম এলাকার মানুষের মধ্যে ফ্রি দেওয়ার কথা। ফার্ম স্থাপনের সময় যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তখনই শর্ত ছিল জনস্বার্থে স্থাপিত এ ফার্মে স্থানীয়রা অগ্রাধিকার পাবে, অথচ এর কিছুই মানেন না কর্মকর্তারা।
একটি বিশ্বস্ত্র সূত্রে জানা গেছে, খামারের বিচালি খামারের উপ-পরিচালক মজিবর রহমান সরাসরি বিক্রি করেনি। খামারে কর্মরত সর্দারদের মাধ্যমে বিচালি বিক্রি করে থাকেন। পরে সর্দারদের মাসিক বেতনের সঙ্গে তা সমন্বয় করে নেন।
এলাকাবাসী বলছে, খড়-বিচালি গরুর খাবার, পানের বরজ, তামাক পোড়ানোসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ ব্যবহার করে। স্থানীয়ভাবে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি খামার খ্যাত দত্তনগর খামারের মথুরা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক মজিবর রহমান খানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে। তিনি নিজে বাসায় দুটি গাভী গরু পালন করেন। যা খুবই মোটাতাজা অথচ ফার্মের গরুগুলো রুগ্ন ও মরণাপন্ন অবস্থায় বেঁচে আছে। তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সাথে খারাপ আচরণের অভিযোগও উঠেছে। ফার্মের নিজস্ব মেশিন থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে মেশিন ভাড়া করা, ভাড়া মেশিনের পাশাপাশি শ্রমিক দিয়ে ধান কাটানো, শ্রমিকদের মজুরি বেশি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। অবশ্য দুর্নীতির কথা অস্বীকার করে বিষয়টিকে স্রেফ অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মথুরা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক মো. মজিবর রহমান খান সবুজ বলেন, ‘আমি বিচালি বিক্রির ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে ওঠা সকল প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সঠিক নয়। স্থানীয়রা সুবিধা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামারে লক্ষাধিক টাকার খড় ও বিচালি গোপনে বিক্রি, জনমনে ক্ষোভ

আপলোড টাইম : ১০:৩৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০

সমীকরণ প্রতিবেদক:
এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি খামার হিসেবে খ্যাত দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামারে এবার ৫০ একর জমির তিন লক্ষাধিক টাকার ধানের বিচালি ও খড় গোপনে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে মথুরা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে। কোনো প্রকার কোটেশন, নিলাম, টেন্ডার ছাড়াই বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে এসব বিচালি ও খড় বিক্রি করা হয়েছে। এর আগে প্রায় ৩ কোটি টাকার ধানের বীজ গোপনে পাচার করার দায়ে ফার্মটির ৪ উপ-পরিচালক সাময়িক বরখাস্ত হন। তবে বিখ্যাত এ খামারে দুর্নীতি যেন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। মথুরা বীজ উৎপাদন খামারে চলতি মৌসুমের প্রায় ৫০ একর জমির ধানের বিচালি ও খড় ৬ হাজার টাকা একর দরে বিক্রি করা হয়েছে স্থানীয়দের কাছে বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন বলছেন, কোনো রকম কোটেশন, নোটিশ, টেন্ডার ছাড়াই ইচ্ছা মাফিক এসব খড়-বিচালি বিক্রি করা হয়েছে।
দত্তনগর ফার্ম এলাকার মথুরার মাঝপাড়ার বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, একর প্রতি ৬ হাজার টাকা দরে ২৪ হাজার টাকা দিয়ে এবার মথুরা ফার্মের উপ-পরিচালক মজিবর রহমান খানের কাছ থেকে ৪ একর জমির বিচালি কিনেছেন। তবে কিছু টাকা বাকি থাকায় তাঁকে হয়রানি করার চেষ্টা করেছে। এছাড়াও পোড়াপাড়া, গোকুলনগর পীরগাছার স্থানীয় আরও কয়েকজন বিচালি কিনেছেন। তবে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি প্রত্যাশা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, এসব খড়-বিচালি ফার্ম এলাকার মানুষের মধ্যে ফ্রি দেওয়ার কথা। ফার্ম স্থাপনের সময় যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তখনই শর্ত ছিল জনস্বার্থে স্থাপিত এ ফার্মে স্থানীয়রা অগ্রাধিকার পাবে, অথচ এর কিছুই মানেন না কর্মকর্তারা।
একটি বিশ্বস্ত্র সূত্রে জানা গেছে, খামারের বিচালি খামারের উপ-পরিচালক মজিবর রহমান সরাসরি বিক্রি করেনি। খামারে কর্মরত সর্দারদের মাধ্যমে বিচালি বিক্রি করে থাকেন। পরে সর্দারদের মাসিক বেতনের সঙ্গে তা সমন্বয় করে নেন।
এলাকাবাসী বলছে, খড়-বিচালি গরুর খাবার, পানের বরজ, তামাক পোড়ানোসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ ব্যবহার করে। স্থানীয়ভাবে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি খামার খ্যাত দত্তনগর খামারের মথুরা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক মজিবর রহমান খানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে। তিনি নিজে বাসায় দুটি গাভী গরু পালন করেন। যা খুবই মোটাতাজা অথচ ফার্মের গরুগুলো রুগ্ন ও মরণাপন্ন অবস্থায় বেঁচে আছে। তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সাথে খারাপ আচরণের অভিযোগও উঠেছে। ফার্মের নিজস্ব মেশিন থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে মেশিন ভাড়া করা, ভাড়া মেশিনের পাশাপাশি শ্রমিক দিয়ে ধান কাটানো, শ্রমিকদের মজুরি বেশি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। অবশ্য দুর্নীতির কথা অস্বীকার করে বিষয়টিকে স্রেফ অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মথুরা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক মো. মজিবর রহমান খান সবুজ বলেন, ‘আমি বিচালি বিক্রির ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে ওঠা সকল প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সঠিক নয়। স্থানীয়রা সুবিধা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’