ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তুরস্কে বাড়ছে নাস্তিকতা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০১৯
  • / ৩২০ বার পড়া হয়েছে

বিশ্ব ডেস্ক: জরিপ পরিচালনার জন্য বিখ্যাত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কন্ডা জানিয়েছে, মুসলিম প্রধান দেশ তুরস্কে নাস্তিকতা বাড়ছে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের চাপিয়ে দেওয়া কঠোর নীতির কারণেই নাস্তিকের সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে ওই জরিপে৷ সূত্র: আহওয়াল নিউজ কন্ডার জরিপে দাবি করা হয়, গত ১০ বছরে তুরস্কে স্রষ্টার অস্তিত্বে অবিশ্বাসীদের সংখ্যা বেড়েছে। দেশটিতে ইসলাম ধর্ম পালন করা লোকের সংখ্যা ৫৫ শতাংশ থেকে ৫১ শতাংশে নেমেছে। তারা বলছে, তুরস্কে নাস্তিকরা আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। তবে ২০০৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা এরদোগান সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্ম চর্চায় জনগণের ওপর কোনোরকম কঠোরতা নেই বলেও মত অনেক বিশ্লেষকের। ২০১৪ সালে তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছিল যে, দেশটির ৯৯ শতাংশ লোক ইসলাম ধর্মের অনুসারী৷ কিন্তু কন্ডার এই গবেষণা প্রকাশের পর ধর্মমন্ত্রণালয়ের এ দাবি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। তবে কন্ডার জরিপ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জরিপ দুটোই সঠিক বলে মনে করছেন ধর্মতত্ত্ববিদ কেমিল কেলিক। তুরস্কে জন্মসূত্রে সবাই মুসলমান মন্তব্য করে কলিন বলেন, ৯৯ শতাংশ মুসলমানের সবাই যে আত্মিকভাবে ধর্ম পালন করে তা নয়। নিয়মিত নামাজ আদায়, হজ ও পর্দা বিধান পালনের মতো সব ইসলামী রীতি তার মেনে চললেও মানসিকভাবে অনেকেই ধর্মকে সামাজিক অনুশাসনের পদ্ধতি ছাড়া আর কিছুই ভাবেন না বলে দাবি করেন কলিন। তবে তার মতে, তুরস্কে এখনও সত্যিকারের ধার্মিক মানুষের অনুপাত ৬০ শতাংশের মতো। এ বিষয়ে বস্তুবাদে বিশ্বাসী ৩৬ বছর বয়সি তুরস্কের অধিবাসী আহমেত বালেইমেজ বলেন, ‘তুরস্কে ইসলাম পালন করতে বাধ্য করা হয়। তাই ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা থেকে নিজেকে রক্ষায় নাস্তিকতা উত্তম বিকল্প বলে মনে করি আমি। তুরস্কের নাস্তিকদের অন্যতম প্রধান সংগঠন অ্যাটিজম ডেরনেগির প্রধান সেলিম ওজকোহেন অভিযোগ করেন, ‘এরদোগান প্রশাসন চেষ্টা করছে ধর্মপ্রাণ মুসলমান প্রজন্ম তৈরি করতে। অথচ ভেতরে ভেতরে এই প্রজন্মের মধ্যে বিশ্বাসগত বিভাজন স্পষ্ট হচ্ছে। প্রমাণস্বরুপ ২০১৬ সালের অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ তুলে এনে সেলিম বলেন, ‘তুরস্কের ধর্মীয় চিন্তাবিদ ফেতুল্লাহ গুলেনের ওপর ওই অভ্যুত্থানের দায় দেওয়া হয়েছিল। তার অনুসারীরা প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যুক্ত হয়। এতেই রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভেদ স্পষ্ট। একই ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে এমন বিভেদে জনগণ নাস্তিকতায় ঝুঁকছে বলে মনে করেন সেলিম ওজকোহেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

তুরস্কে বাড়ছে নাস্তিকতা!

আপলোড টাইম : ১০:২৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০১৯

বিশ্ব ডেস্ক: জরিপ পরিচালনার জন্য বিখ্যাত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কন্ডা জানিয়েছে, মুসলিম প্রধান দেশ তুরস্কে নাস্তিকতা বাড়ছে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের চাপিয়ে দেওয়া কঠোর নীতির কারণেই নাস্তিকের সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে ওই জরিপে৷ সূত্র: আহওয়াল নিউজ কন্ডার জরিপে দাবি করা হয়, গত ১০ বছরে তুরস্কে স্রষ্টার অস্তিত্বে অবিশ্বাসীদের সংখ্যা বেড়েছে। দেশটিতে ইসলাম ধর্ম পালন করা লোকের সংখ্যা ৫৫ শতাংশ থেকে ৫১ শতাংশে নেমেছে। তারা বলছে, তুরস্কে নাস্তিকরা আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। তবে ২০০৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা এরদোগান সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্ম চর্চায় জনগণের ওপর কোনোরকম কঠোরতা নেই বলেও মত অনেক বিশ্লেষকের। ২০১৪ সালে তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছিল যে, দেশটির ৯৯ শতাংশ লোক ইসলাম ধর্মের অনুসারী৷ কিন্তু কন্ডার এই গবেষণা প্রকাশের পর ধর্মমন্ত্রণালয়ের এ দাবি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। তবে কন্ডার জরিপ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জরিপ দুটোই সঠিক বলে মনে করছেন ধর্মতত্ত্ববিদ কেমিল কেলিক। তুরস্কে জন্মসূত্রে সবাই মুসলমান মন্তব্য করে কলিন বলেন, ৯৯ শতাংশ মুসলমানের সবাই যে আত্মিকভাবে ধর্ম পালন করে তা নয়। নিয়মিত নামাজ আদায়, হজ ও পর্দা বিধান পালনের মতো সব ইসলামী রীতি তার মেনে চললেও মানসিকভাবে অনেকেই ধর্মকে সামাজিক অনুশাসনের পদ্ধতি ছাড়া আর কিছুই ভাবেন না বলে দাবি করেন কলিন। তবে তার মতে, তুরস্কে এখনও সত্যিকারের ধার্মিক মানুষের অনুপাত ৬০ শতাংশের মতো। এ বিষয়ে বস্তুবাদে বিশ্বাসী ৩৬ বছর বয়সি তুরস্কের অধিবাসী আহমেত বালেইমেজ বলেন, ‘তুরস্কে ইসলাম পালন করতে বাধ্য করা হয়। তাই ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা থেকে নিজেকে রক্ষায় নাস্তিকতা উত্তম বিকল্প বলে মনে করি আমি। তুরস্কের নাস্তিকদের অন্যতম প্রধান সংগঠন অ্যাটিজম ডেরনেগির প্রধান সেলিম ওজকোহেন অভিযোগ করেন, ‘এরদোগান প্রশাসন চেষ্টা করছে ধর্মপ্রাণ মুসলমান প্রজন্ম তৈরি করতে। অথচ ভেতরে ভেতরে এই প্রজন্মের মধ্যে বিশ্বাসগত বিভাজন স্পষ্ট হচ্ছে। প্রমাণস্বরুপ ২০১৬ সালের অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ তুলে এনে সেলিম বলেন, ‘তুরস্কের ধর্মীয় চিন্তাবিদ ফেতুল্লাহ গুলেনের ওপর ওই অভ্যুত্থানের দায় দেওয়া হয়েছিল। তার অনুসারীরা প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যুক্ত হয়। এতেই রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভেদ স্পষ্ট। একই ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে এমন বিভেদে জনগণ নাস্তিকতায় ঝুঁকছে বলে মনে করেন সেলিম ওজকোহেন।