ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

‘তীব্র তাপদাহে বাসের অযোগ্য হচ্ছে পৃথিবী’

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৪:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৫০২ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, পৃথিবীর তাপমাত্রা যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে এর ভূস্তর ‘হটহাউস’ এ পরিণত হবে। বিশেষ করে প্রাক-শিল্পস্তরে যদি তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে বাড়ে তাহলে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে এই গ্রহ। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের দাবানল, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তীব্র খরা এবং জাপানে একের পর দুর্যোগ এই সতর্কবার্তা দিচ্ছে আমাদের। সোমবার আমেরিকান প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস এ প্রকাশিত ‘ট্র্যাজেকটরিস অব দ্য আর্থ সিস্টেম ইন দ্য অ্যান্থ্র্যেপোসিন’ শীর্ষক রিপোর্টে জানানো হয়, হটহাউস তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে হতে পারে যা প্রাক শিল্পস্তরের চেয়ে বেশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রীন হাউস গ্যাসের নি:সরণই কেবল তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী নয়, মানুষের কারণে সৃষ্ট তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে বাড়তে পারে। এটা ফিডব্যাকের মতো কাজ করে। অর্থাত্ আমরা যে ধরনের কাজ করবো প্রকৃতি থেকে তার অনুরূপ সাড়া পাবো। এমনকি আমরা যদি গ্রিণ হাউস গ্যাসের নি:সরণ বন্ধও করি। গবেষকরা জানান, তীব্র তাপদাহের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা ৬০ মিটার বেড়ে যেতে পারে। এই গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং এশিয়ায় যেভাবে তাপমাত্রা বেড়েছে তা রেকর্ড। এবার অনেক মানুষও মারা গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমরা এক নতুন ভূতাত্ত্বিক যুগে প্রবেশ করছি যেখানে গ্রহে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে মানুষ সরাসরি ভূমিকা রাখছে। গবেষকরা এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, প্রাক শিল্প যুগের চেয়ে তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। প্রতি দশকে তাপমাত্রা দশমিক ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে বাড়ছে। ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের অধ্যাপক এবং গবেষণা সহযোগী ক্যাথেরিন রিচার্ডসন বলেন, গবেষণা নতুন নয়। আমরা অনেক আগে থেকেই এমন সতর্কবার্তা দিয়েছি। কিন্তু এভাবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে এবং তা ৪ ডিগ্রি থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌছালে সমাজে মানুষ বাস করতে পারবে না। জাপানের আবহাওয়াবিদরা গতকাল বুধবার জানিয়েছেন, জাপানের প্রধান দ্বীপ হনশুর দিকে ধেয়ে আসতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘শানশান’। কাল টোকিওতে আঘাত হানতে পারে এই ঝড়। ক্যালিফোর্নিয়ায় গত দুই সপ্তাহ ধরে দাবানল চলছে। বিশ্বের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম দাবানলে পরিণত হয়েছে। এ পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিশাল এলাকা নিয়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা অধ্যুষিত রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসজুড়ে খরা দেখা দিয়েছে। দেশটির কৃষি পণ্যের এক তৃতীয়াংশের উত্পাদন হয় এই রাজ্যে। রাজ্যের এক মন্ত্রী জানান, এখানে মানুষের বাস করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে এবং বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

‘তীব্র তাপদাহে বাসের অযোগ্য হচ্ছে পৃথিবী’

আপলোড টাইম : ০৯:২৪:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অগাস্ট ২০১৮

প্রযুক্তি ডেস্ক: বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, পৃথিবীর তাপমাত্রা যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে এর ভূস্তর ‘হটহাউস’ এ পরিণত হবে। বিশেষ করে প্রাক-শিল্পস্তরে যদি তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে বাড়ে তাহলে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে এই গ্রহ। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের দাবানল, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তীব্র খরা এবং জাপানে একের পর দুর্যোগ এই সতর্কবার্তা দিচ্ছে আমাদের। সোমবার আমেরিকান প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস এ প্রকাশিত ‘ট্র্যাজেকটরিস অব দ্য আর্থ সিস্টেম ইন দ্য অ্যান্থ্র্যেপোসিন’ শীর্ষক রিপোর্টে জানানো হয়, হটহাউস তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে হতে পারে যা প্রাক শিল্পস্তরের চেয়ে বেশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রীন হাউস গ্যাসের নি:সরণই কেবল তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী নয়, মানুষের কারণে সৃষ্ট তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে বাড়তে পারে। এটা ফিডব্যাকের মতো কাজ করে। অর্থাত্ আমরা যে ধরনের কাজ করবো প্রকৃতি থেকে তার অনুরূপ সাড়া পাবো। এমনকি আমরা যদি গ্রিণ হাউস গ্যাসের নি:সরণ বন্ধও করি। গবেষকরা জানান, তীব্র তাপদাহের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা ৬০ মিটার বেড়ে যেতে পারে। এই গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং এশিয়ায় যেভাবে তাপমাত্রা বেড়েছে তা রেকর্ড। এবার অনেক মানুষও মারা গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমরা এক নতুন ভূতাত্ত্বিক যুগে প্রবেশ করছি যেখানে গ্রহে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে মানুষ সরাসরি ভূমিকা রাখছে। গবেষকরা এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, প্রাক শিল্প যুগের চেয়ে তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। প্রতি দশকে তাপমাত্রা দশমিক ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে বাড়ছে। ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের অধ্যাপক এবং গবেষণা সহযোগী ক্যাথেরিন রিচার্ডসন বলেন, গবেষণা নতুন নয়। আমরা অনেক আগে থেকেই এমন সতর্কবার্তা দিয়েছি। কিন্তু এভাবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে এবং তা ৪ ডিগ্রি থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌছালে সমাজে মানুষ বাস করতে পারবে না। জাপানের আবহাওয়াবিদরা গতকাল বুধবার জানিয়েছেন, জাপানের প্রধান দ্বীপ হনশুর দিকে ধেয়ে আসতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘শানশান’। কাল টোকিওতে আঘাত হানতে পারে এই ঝড়। ক্যালিফোর্নিয়ায় গত দুই সপ্তাহ ধরে দাবানল চলছে। বিশ্বের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম দাবানলে পরিণত হয়েছে। এ পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিশাল এলাকা নিয়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা অধ্যুষিত রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসজুড়ে খরা দেখা দিয়েছে। দেশটির কৃষি পণ্যের এক তৃতীয়াংশের উত্পাদন হয় এই রাজ্যে। রাজ্যের এক মন্ত্রী জানান, এখানে মানুষের বাস করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে এবং বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।