ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তনু হত্যাকান্ড : তদন্তে অগ্রগতি নেই

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:২৭:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০১৭
  • / ৫১৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: হত্যার শিকার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেছেন, মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তার ওপর আমি সন্তুষ্ট নই। তদন্ত কর্মকর্তা আমাদের কথা শোনেন না। কয়েক দিন আগে যোগাযোগ করেছেন। সে সময় আমাদের চুপ থাকার জন্য বলেছেন। তাঁরা নাকি চেষ্টা করছেন। সোহাগী জাহান তনু হত্যাকান্ডের এক বছর পূর্ণ হলো আজ সোমবার। এই এক বছরে মামলা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট, তা জানতে চাইলে নিহত তনুর মা আনোয়ারা বেগম রোববার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আনোয়ারা বেগম বলেন, গত এক বছরে আমার ডায়াবেটিস হয়েছে। আগে এ রোগ ছিল না। মায়ের কষ্ট মেয়ে বোঝে। ছেলেরা বোঝে না। আমি অসুস্থ, মেয়ে থাকলে বুঝত। সব কাজ করে দিত। মেয়ের স্মৃতিচারণা করে আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এত চালু মেয়ে (তনু) কেমনে মরল? কারা গরিবের পেডে (পেটে) লাথি মারছে। তনু হত্যার পর ছোট ছেলেটা কোথাও কাজের জন্য যেতে পারে না। আমাদের আগলে রাখে। সোহাগী জাহান তনু হত্যাকান্ডের এক বছর পূর্ণ হলেও এ মামলার কোনো আসামি এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি। দীর্ঘ সময়ে এ মামলার কোনো কিনারা করতে পারেনি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ অবস্থায় তনু হত্যাকান্ডের বিচার নিয়ে শঙ্কিত পরিবারের সদস্যরা। এদিকে সোমবার বেলা ১১টায় তনু হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেনের কাছে স্মারকলিপি দেবে গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লা। এ ছাড়া ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার দিনটি উপলক্ষে কলেজে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। তনুর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর লাশ কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরে কালভার্টের ২০ থেকে ৩০ গজ পশ্চিমে ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২১ মার্চ বিকেলে তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এ পর্যন্ত তনু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তিনবার বদল করা হয়। ২১ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয় কোতোয়ালি মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলামকে। ২৫ মার্চ মামলার তদন্ত দেওয়া হয় কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মঞ্জুর আলমকে। গত ১ এপ্রিল থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত এ মামলার তদন্ত করেন সিআইডির কুমিল্লার পুলিশ পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম। সর্বশেষ গত বছরের ২৪ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা বদল করে সিআইডির নোয়াখালী ও ফেনী অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর কয়েকজনের সঙ্গে ডিএনএ মেলানোর উদ্যোগ নেন। এর মধ্যে তনুর নাট্য সংগঠনের ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের পাঁচজন নাট্যকর্মীর সঙ্গে ডিএনএ মেলানো হয়। এর বাইরে আর কোনো অগ্রগতি নেই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

তনু হত্যাকান্ড : তদন্তে অগ্রগতি নেই

আপলোড টাইম : ০৫:২৭:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: হত্যার শিকার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেছেন, মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তার ওপর আমি সন্তুষ্ট নই। তদন্ত কর্মকর্তা আমাদের কথা শোনেন না। কয়েক দিন আগে যোগাযোগ করেছেন। সে সময় আমাদের চুপ থাকার জন্য বলেছেন। তাঁরা নাকি চেষ্টা করছেন। সোহাগী জাহান তনু হত্যাকান্ডের এক বছর পূর্ণ হলো আজ সোমবার। এই এক বছরে মামলা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট, তা জানতে চাইলে নিহত তনুর মা আনোয়ারা বেগম রোববার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আনোয়ারা বেগম বলেন, গত এক বছরে আমার ডায়াবেটিস হয়েছে। আগে এ রোগ ছিল না। মায়ের কষ্ট মেয়ে বোঝে। ছেলেরা বোঝে না। আমি অসুস্থ, মেয়ে থাকলে বুঝত। সব কাজ করে দিত। মেয়ের স্মৃতিচারণা করে আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এত চালু মেয়ে (তনু) কেমনে মরল? কারা গরিবের পেডে (পেটে) লাথি মারছে। তনু হত্যার পর ছোট ছেলেটা কোথাও কাজের জন্য যেতে পারে না। আমাদের আগলে রাখে। সোহাগী জাহান তনু হত্যাকান্ডের এক বছর পূর্ণ হলেও এ মামলার কোনো আসামি এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি। দীর্ঘ সময়ে এ মামলার কোনো কিনারা করতে পারেনি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ অবস্থায় তনু হত্যাকান্ডের বিচার নিয়ে শঙ্কিত পরিবারের সদস্যরা। এদিকে সোমবার বেলা ১১টায় তনু হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেনের কাছে স্মারকলিপি দেবে গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লা। এ ছাড়া ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার দিনটি উপলক্ষে কলেজে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। তনুর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর লাশ কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরে কালভার্টের ২০ থেকে ৩০ গজ পশ্চিমে ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২১ মার্চ বিকেলে তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এ পর্যন্ত তনু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তিনবার বদল করা হয়। ২১ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয় কোতোয়ালি মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলামকে। ২৫ মার্চ মামলার তদন্ত দেওয়া হয় কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মঞ্জুর আলমকে। গত ১ এপ্রিল থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত এ মামলার তদন্ত করেন সিআইডির কুমিল্লার পুলিশ পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম। সর্বশেষ গত বছরের ২৪ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা বদল করে সিআইডির নোয়াখালী ও ফেনী অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর কয়েকজনের সঙ্গে ডিএনএ মেলানোর উদ্যোগ নেন। এর মধ্যে তনুর নাট্য সংগঠনের ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের পাঁচজন নাট্যকর্মীর সঙ্গে ডিএনএ মেলানো হয়। এর বাইরে আর কোনো অগ্রগতি নেই।