ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

টার্কি মুরগি পালনে স্বাবলম্বী স্বপন মিয়া

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫১:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৯
  • / ২৫৬ বার পড়া হয়েছে

মিঠুন মাহমুদ:
একসময় টার্কি ছিল একটি পাখির নাম। বর্তমানে এটি বিভিন্ন স্থানে মুরগি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। অল্প সময়ে স্বল্প পুঁজিতে টার্কি মুরগি পালন করে অনেকে স্বাবলম্বী হওয়ায় এর প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন অনেকে। টার্কি মুরগি মূলত বন্যপাখি হলেও বর্তমানে একে গৃহে পালন করা হচ্ছে। জীবননগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী উপজেলায় ছোট-বড় সব ধরনের খামার মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন ব্যক্তি টার্কি মুরগি পালন করছেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে জীবননগর পৌর শহরসহ উপজেলার বেশ কয়েকজন বাণিজ্যিকভাবে টার্কি মুরগি পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
টার্কি মুরগি পালনে স্বাবলম্বী জীবননগর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড নারায়ণপুর গ্রামের স্বপন মিয়া জানান, টার্কি অনেক বড় আকারের পাখি, দেখতে অনেক সুন্দর। বাড়িতে প্রায় ৬ মাস পালন করলে এক একটি টার্কি পাখির স্ত্রী জাতের ওজন প্রায় ৬-৮ কেজি আর পুরুষ জাতের ওজন প্রায় ৯-১০ কেজি হয়। বাড়িতে দেশি মুরগির মতো করে এটি পালন করা যায়। দেখতে একটু ভয়ঙ্কর হলেও এ মুরগি খুব শান্ত স্বভাবের হয়।
একই গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, ইনামুল হক, পৌরসভার পোস্ট অফিস পাড়ার সিএনজির চালক আব্দুল আলিম ও জীবননগর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোয়েব আহম্মেদ অঞ্জন তাঁদের বাড়িতে টার্কি মুরগির খামার তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁরা জানান, টার্কি মুরগি একবার ডিম দেওয়া শুরু করলে একাধারে ডিম দিতে থাকে। এ মুরগির ডিমগুলো দেশি মুরগির ডিমের মতোই দেখতে, শুধু ডিমের খোসার ওপর দাগ টানা চিহ্ন দেখা যায়। আর দেশি মুরগির ডিমের দাম কম হলেও এ মুরগির ডিম দেড় শ টাকা থেকে দুই শ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। তবে এ মুরগি পালনে খরচ অনেক কম, খাবারও লাগে কম। বাদামের পাতা, কপিসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ানো হয় এ জাতের মুরগিকে।
জীবননগর উপজেলা উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফয়েজউদ্দিন জানান, টার্কি মুরগি এ অঞ্চলে একেবারে নতুন, তারপরও এ এলাকায় এ মুরগি পালনে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। এ উপজেলার প্রায় ৫০ জন এ মুরগি পালন করছিল, তবে বর্তমানে এ মুরগির বাজার ভালো না হওয়ায় অনেকে এ মুরগি পালন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তবে তেমন বড় ধরনের খরচ না হওয়ায় অনেকে এ মুরগি পালনে উৎসাহিত হচ্ছেন। টার্কি মুরগির তেমন রোগব্যাধি হয় না বললেই চলে, তবে রোগের মধ্যে অনেক সময় রানীখেত ও বসন্ত রোগ বেশি দেখা দেয়। সময় মতো চিকিৎসা দিলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। টার্কি মুরগির বাচ্ছা দেশি মুরগি বা হ্যাচারিতে ইনকোবেটরে ফোটালে ভালো হয়। বর্তমানে টার্কি পালন করে অনেক বেকার যুবক তাঁদের আর্থিক সচ্ছলতা এনেছেন। টার্কি পালন করলে পরিবারের খাদ্যচাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগও সৃষ্টি হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

টার্কি মুরগি পালনে স্বাবলম্বী স্বপন মিয়া

আপলোড টাইম : ০৯:৫১:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৯

মিঠুন মাহমুদ:
একসময় টার্কি ছিল একটি পাখির নাম। বর্তমানে এটি বিভিন্ন স্থানে মুরগি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। অল্প সময়ে স্বল্প পুঁজিতে টার্কি মুরগি পালন করে অনেকে স্বাবলম্বী হওয়ায় এর প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন অনেকে। টার্কি মুরগি মূলত বন্যপাখি হলেও বর্তমানে একে গৃহে পালন করা হচ্ছে। জীবননগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী উপজেলায় ছোট-বড় সব ধরনের খামার মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন ব্যক্তি টার্কি মুরগি পালন করছেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে জীবননগর পৌর শহরসহ উপজেলার বেশ কয়েকজন বাণিজ্যিকভাবে টার্কি মুরগি পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
টার্কি মুরগি পালনে স্বাবলম্বী জীবননগর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড নারায়ণপুর গ্রামের স্বপন মিয়া জানান, টার্কি অনেক বড় আকারের পাখি, দেখতে অনেক সুন্দর। বাড়িতে প্রায় ৬ মাস পালন করলে এক একটি টার্কি পাখির স্ত্রী জাতের ওজন প্রায় ৬-৮ কেজি আর পুরুষ জাতের ওজন প্রায় ৯-১০ কেজি হয়। বাড়িতে দেশি মুরগির মতো করে এটি পালন করা যায়। দেখতে একটু ভয়ঙ্কর হলেও এ মুরগি খুব শান্ত স্বভাবের হয়।
একই গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, ইনামুল হক, পৌরসভার পোস্ট অফিস পাড়ার সিএনজির চালক আব্দুল আলিম ও জীবননগর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোয়েব আহম্মেদ অঞ্জন তাঁদের বাড়িতে টার্কি মুরগির খামার তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাঁরা জানান, টার্কি মুরগি একবার ডিম দেওয়া শুরু করলে একাধারে ডিম দিতে থাকে। এ মুরগির ডিমগুলো দেশি মুরগির ডিমের মতোই দেখতে, শুধু ডিমের খোসার ওপর দাগ টানা চিহ্ন দেখা যায়। আর দেশি মুরগির ডিমের দাম কম হলেও এ মুরগির ডিম দেড় শ টাকা থেকে দুই শ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। তবে এ মুরগি পালনে খরচ অনেক কম, খাবারও লাগে কম। বাদামের পাতা, কপিসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ানো হয় এ জাতের মুরগিকে।
জীবননগর উপজেলা উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফয়েজউদ্দিন জানান, টার্কি মুরগি এ অঞ্চলে একেবারে নতুন, তারপরও এ এলাকায় এ মুরগি পালনে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। এ উপজেলার প্রায় ৫০ জন এ মুরগি পালন করছিল, তবে বর্তমানে এ মুরগির বাজার ভালো না হওয়ায় অনেকে এ মুরগি পালন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তবে তেমন বড় ধরনের খরচ না হওয়ায় অনেকে এ মুরগি পালনে উৎসাহিত হচ্ছেন। টার্কি মুরগির তেমন রোগব্যাধি হয় না বললেই চলে, তবে রোগের মধ্যে অনেক সময় রানীখেত ও বসন্ত রোগ বেশি দেখা দেয়। সময় মতো চিকিৎসা দিলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। টার্কি মুরগির বাচ্ছা দেশি মুরগি বা হ্যাচারিতে ইনকোবেটরে ফোটালে ভালো হয়। বর্তমানে টার্কি পালন করে অনেক বেকার যুবক তাঁদের আর্থিক সচ্ছলতা এনেছেন। টার্কি পালন করলে পরিবারের খাদ্যচাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগও সৃষ্টি হয়।