ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে ৩৬ বছরের যুবকের সাথে ৯ বছরের শিশুর বিয়ে!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৬:৩২:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ মে ২০১৮
  • / ৩৩৮ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহে ৩৬ বছরের যুবকের সাথে ৯ বছরের শিশুর এক আজব বিয়ে হয়েছে। ঘটনাটি ফাঁস হওয়ায় প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এদিকে বাল্য বিয়েতে সহায়তার দায়ে ঝিনাইদহ নোটারি পাবলিকের আইনজীবী এড জাহাঙ্গীর কবির ও এড মীর আক্কাস আলীকে শোকজ করা হয়েছে। গত রোববার বয়স গোপন করে তারাই এই বিয়ে দিয়েছিলেন নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের দপ্তর থেকে এই শোকজ নোটিশ পাঠানো হয় বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের মোশারফ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনির ছাত্রী মাছুরা খাতুনকে বিয়ে দেওয়া হয় কোরাপাড়া গ্রামে জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে। শিশু মাছুরা খাতুন নতুন কোর্টপাড়ার ওমর আলীর মেয়ে। অন্যদিকে জাহাঙ্গীর হোসেন কোরাপাড়া গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে। সে পেশায় বাসের হেলপার। এদিকে ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবীরের হস্তক্ষেপে ২য় শ্রেনির ছাত্রী মাছুরাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেন। মাছুরার মা শাপলা খাতুন জানান, তার মেয়ের জন্ম তারিখ ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর। এতে তার বয়স হচ্ছে ৯ বছর। তিনি আরও জানান মেয়ে লেখা পড়ায় ভালো না। তাই বিয়ের কাবিন করে রেখেছিলাম। ১৬ বছর পূর্ন হলে তখন জামাই বাড়ি উঠায়ে দেব। পাগলাকানাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের দেওয়া জন্ম নিবন্ধন সনদেও মাছুরার বয়স ৯ বছর। তবে মেয়ের পিতা ওমর আলীর হলফনামায় মেয়ের বয়স ৮ বছরের কথা উল্লেখ আছে। বর জাহাঙ্গীরের বয়স নোটারী পাবলিকের শপথনামায় ২১ বছর উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে তার বয়স ৩৬ বছর। এই অসম বয়সের বিয়ে নিয়ে মেয়ের পিতা ওমর আলী জানান, আমি ৩ জন সাক্ষির উপস্থিতিতে এক হলফনামায় বিয়ে আইনসিদ্ধ না হওয়ায় ছেলে পক্ষের সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। খোজ নিয়ে জানা গেছে, বিয়ে হওয়ার পর বাসের হেলপারি শেষে নতুন বর জাহাঙ্গীর প্রতি রাতেই শ্বশুর বাড়ি এসে রাত যাপন করতো। এতে প্রতিবেশিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এদিকে বয়স গোপন করে নোটারী পাবলিক করায় জনমনে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি সন্দেহ ও প্রশ্ন উঠেছে। কতিপয় আইনজীবী ও তাদের নিয়োজিত মহুরীরা এই অসৎ কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। বড় অংকের টাকা নিয়ে তারা জাল জোচ্চুরিতে লিপ্ত হচ্ছে। যার জলন্ত প্রমান হচ্ছে ৮ বছরের শিশু মাছুরার বিয়ে। এ ব্যাপারে শিশু মাছুরার শ্রেনী শিক্ষক মোশারফ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, তাদের ছাত্রী মাছুরার বিয়ে হয়ে গেছে বলে আমরাও শুনেছি। তবে এটা অন্যায় কাজ হয়েছে। তিনি জানান, মাছুরা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকতেন। কোন দিন সে স্কুল কামায় করতো না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ঝিনাইদহে ৩৬ বছরের যুবকের সাথে ৯ বছরের শিশুর বিয়ে!

আপলোড টাইম : ০৬:৩২:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ মে ২০১৮

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহে ৩৬ বছরের যুবকের সাথে ৯ বছরের শিশুর এক আজব বিয়ে হয়েছে। ঘটনাটি ফাঁস হওয়ায় প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এদিকে বাল্য বিয়েতে সহায়তার দায়ে ঝিনাইদহ নোটারি পাবলিকের আইনজীবী এড জাহাঙ্গীর কবির ও এড মীর আক্কাস আলীকে শোকজ করা হয়েছে। গত রোববার বয়স গোপন করে তারাই এই বিয়ে দিয়েছিলেন নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের দপ্তর থেকে এই শোকজ নোটিশ পাঠানো হয় বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের মোশারফ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনির ছাত্রী মাছুরা খাতুনকে বিয়ে দেওয়া হয় কোরাপাড়া গ্রামে জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে। শিশু মাছুরা খাতুন নতুন কোর্টপাড়ার ওমর আলীর মেয়ে। অন্যদিকে জাহাঙ্গীর হোসেন কোরাপাড়া গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে। সে পেশায় বাসের হেলপার। এদিকে ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবীরের হস্তক্ষেপে ২য় শ্রেনির ছাত্রী মাছুরাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেন। মাছুরার মা শাপলা খাতুন জানান, তার মেয়ের জন্ম তারিখ ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর। এতে তার বয়স হচ্ছে ৯ বছর। তিনি আরও জানান মেয়ে লেখা পড়ায় ভালো না। তাই বিয়ের কাবিন করে রেখেছিলাম। ১৬ বছর পূর্ন হলে তখন জামাই বাড়ি উঠায়ে দেব। পাগলাকানাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের দেওয়া জন্ম নিবন্ধন সনদেও মাছুরার বয়স ৯ বছর। তবে মেয়ের পিতা ওমর আলীর হলফনামায় মেয়ের বয়স ৮ বছরের কথা উল্লেখ আছে। বর জাহাঙ্গীরের বয়স নোটারী পাবলিকের শপথনামায় ২১ বছর উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে তার বয়স ৩৬ বছর। এই অসম বয়সের বিয়ে নিয়ে মেয়ের পিতা ওমর আলী জানান, আমি ৩ জন সাক্ষির উপস্থিতিতে এক হলফনামায় বিয়ে আইনসিদ্ধ না হওয়ায় ছেলে পক্ষের সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। খোজ নিয়ে জানা গেছে, বিয়ে হওয়ার পর বাসের হেলপারি শেষে নতুন বর জাহাঙ্গীর প্রতি রাতেই শ্বশুর বাড়ি এসে রাত যাপন করতো। এতে প্রতিবেশিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এদিকে বয়স গোপন করে নোটারী পাবলিক করায় জনমনে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি সন্দেহ ও প্রশ্ন উঠেছে। কতিপয় আইনজীবী ও তাদের নিয়োজিত মহুরীরা এই অসৎ কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। বড় অংকের টাকা নিয়ে তারা জাল জোচ্চুরিতে লিপ্ত হচ্ছে। যার জলন্ত প্রমান হচ্ছে ৮ বছরের শিশু মাছুরার বিয়ে। এ ব্যাপারে শিশু মাছুরার শ্রেনী শিক্ষক মোশারফ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, তাদের ছাত্রী মাছুরার বিয়ে হয়ে গেছে বলে আমরাও শুনেছি। তবে এটা অন্যায় কাজ হয়েছে। তিনি জানান, মাছুরা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকতেন। কোন দিন সে স্কুল কামায় করতো না।