ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল মিললো পুকুরে!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২০:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অগাস্ট ২০১৮
  • / ২৯০ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহে মিলেছে এবার সরকারের ভিজিএফ কর্মসূচির শতশত কেজি চাল। সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পুকুর থেকে গত সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত ভিজিএফ কর্মসূচির এই চাল উদ্ধার করে জনতা। এসময় পুকুর পাড়ে আশপাশ গ্রামের হাজারো জনতা ভীড় করে। হতদরদ্রিদের চাল এ ভাবে পুকুরে মধ্যে ফেলে দেওয়ায় ঘটনায় মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মি ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দায়ি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।
গ্রামবাসি জানায়, মহারাজপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের মাঝ পাড়া মসজিদের পাশে থাকা ৫ টি পুকুর থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে গ্রামবাসির সন্দেহ হয়। সোমবার রাত ৯টার দিকে হরিপুর গ্রামের রজব আলী, সিরাজুল, আজিজুলসহ ৫টি পুকুরে নেমে গ্রামবাসি চাল দেখতে পান। চাল পচে যাওয়ার কারণে পুকুরের মাছ মরে ভেসে ওঠে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কয়েক’শ কেজি চাল পানি থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এই পুকুরের আমেপাশেই রয়েছে মহারাজপুর ইউনিয়নের দুই ইউপি সদস্য শাবানা বেগম ও আহাম্মদ আলীর বাড়ি। তারা এই চাল সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান।
মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি রাতেই ঘটনাস্থলে পৌছে ঘটনার সত্যতা পায়। তিনি বলেন প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিজিএফ কর্মসূচির চালের স্লিপ দেওয়ার পর সবুজ নামে এক ব্যক্তি ভিজিএফ কার্ডধারীদের কাছ থেকে ২৬’শ কেজি চাল কিনে নেন। এরপর সেই চাল এলাকার ধান চাল ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন সবুজ। আজিজুল হরিপুর গ্রামের কওছার আলীর ছেলে। প্রশাসনিক তৎপরতার কারণে এই চাল গুদামে তুলতে না পেরে নিজের পুকুরে ফেলে দেন আজিজুল ইসলাম। সবুজ চাল কেনার কথা স্বীকার করে বলেন আমি ভিজিএফ কার্ডধারীদের কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকার চাল কিনে আজিজুলের কাছে বিক্রি করি। আজিজুলের সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান, আমি আত্মীয় বাড়িতে আছি। চালের খবর আমি জানি না। তবে আজিজুলের স্ত্রী জানায় তার স্বামী চাতালে গেছেন, সোমবার দুপুরে খেতেও আসেন নি। গ্রামবাসি জানায়, এ ঘটনার পর থেকে আজিজুল পলাতক রয়েছে।
ঝিনাইদহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাম্মী ইসলাম জানান, মঙ্গলবার দুপুরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুকুর থেকে চাল উদ্ধারের সত্যতা পেয়েছি। তিনি বলেন, চাল বিক্রির সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে যা যা করার সব করা হবে। তিনি আরো জানান, ঈদের আগে দোগাছি ইউনিয়নে ভিজিএফ চাল চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে। অপরাধ করে কেও পার পাবে না বলেও উল্লেখ করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ঝিনাইদহে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল মিললো পুকুরে!

আপলোড টাইম : ০৯:২০:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অগাস্ট ২০১৮

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহে মিলেছে এবার সরকারের ভিজিএফ কর্মসূচির শতশত কেজি চাল। সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পুকুর থেকে গত সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত ভিজিএফ কর্মসূচির এই চাল উদ্ধার করে জনতা। এসময় পুকুর পাড়ে আশপাশ গ্রামের হাজারো জনতা ভীড় করে। হতদরদ্রিদের চাল এ ভাবে পুকুরে মধ্যে ফেলে দেওয়ায় ঘটনায় মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মি ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দায়ি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।
গ্রামবাসি জানায়, মহারাজপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের মাঝ পাড়া মসজিদের পাশে থাকা ৫ টি পুকুর থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে গ্রামবাসির সন্দেহ হয়। সোমবার রাত ৯টার দিকে হরিপুর গ্রামের রজব আলী, সিরাজুল, আজিজুলসহ ৫টি পুকুরে নেমে গ্রামবাসি চাল দেখতে পান। চাল পচে যাওয়ার কারণে পুকুরের মাছ মরে ভেসে ওঠে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কয়েক’শ কেজি চাল পানি থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এই পুকুরের আমেপাশেই রয়েছে মহারাজপুর ইউনিয়নের দুই ইউপি সদস্য শাবানা বেগম ও আহাম্মদ আলীর বাড়ি। তারা এই চাল সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান।
মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি রাতেই ঘটনাস্থলে পৌছে ঘটনার সত্যতা পায়। তিনি বলেন প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিজিএফ কর্মসূচির চালের স্লিপ দেওয়ার পর সবুজ নামে এক ব্যক্তি ভিজিএফ কার্ডধারীদের কাছ থেকে ২৬’শ কেজি চাল কিনে নেন। এরপর সেই চাল এলাকার ধান চাল ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন সবুজ। আজিজুল হরিপুর গ্রামের কওছার আলীর ছেলে। প্রশাসনিক তৎপরতার কারণে এই চাল গুদামে তুলতে না পেরে নিজের পুকুরে ফেলে দেন আজিজুল ইসলাম। সবুজ চাল কেনার কথা স্বীকার করে বলেন আমি ভিজিএফ কার্ডধারীদের কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকার চাল কিনে আজিজুলের কাছে বিক্রি করি। আজিজুলের সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান, আমি আত্মীয় বাড়িতে আছি। চালের খবর আমি জানি না। তবে আজিজুলের স্ত্রী জানায় তার স্বামী চাতালে গেছেন, সোমবার দুপুরে খেতেও আসেন নি। গ্রামবাসি জানায়, এ ঘটনার পর থেকে আজিজুল পলাতক রয়েছে।
ঝিনাইদহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাম্মী ইসলাম জানান, মঙ্গলবার দুপুরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুকুর থেকে চাল উদ্ধারের সত্যতা পেয়েছি। তিনি বলেন, চাল বিক্রির সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে যা যা করার সব করা হবে। তিনি আরো জানান, ঈদের আগে দোগাছি ইউনিয়নে ভিজিএফ চাল চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে। অপরাধ করে কেও পার পাবে না বলেও উল্লেখ করেন।