ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে বিসিআইসির আমদানীকৃত ২৯৭ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের প্রতি বস্তায় কম!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:০৩:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৬
  • / ৩৯৯ বার পড়া হয়েছে

eerঝিনাইদহ প্রতিনিধি: হাজার হাজার বস্তা সার গায়েবের পর এবার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরে অবস্থিত সরকারী বাফার সার গুদামে বিসিআইসির আমদানীকৃত ২৯৭ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের প্রতি বস্তায় ওজনে কম ধরা পাড়েছে। সৌদি আরব থেকে বিসিআইসি এই সার আমদানী করে গুদামজাত করার জন্য বৃহস্পতিবার ৩৩টি ট্রাকে করে ঝিনাইদহের বাফার গুদামে পাঠায়। প্রতি বস্তায় সার কম থাকার খবরটি জানাজানি হলে ডিলারদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বার বার প্রতি বস্তায় ইউরিয়া সার কম দিয়ে বড় ধরণের আর্থিক জালিয়াতি করা হচ্ছে বলেও ডিলারদের অভিযোগ। এর আগে কালীগঞ্জ বাফার গোডাউন থেকে সরকারী হিসেবে ৫৪৭ মেট্রিক টন অর্থাৎ ১০ হাজার ৯৪০ বস্তা সারের কোন হদিস মিলছে না। যার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এদিকে প্রতি ইউরিয়া সারের বস্তায় ওজনে কম থাকার বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম ও বাংলাদেশ ফারটিলাইজার এ্যাসোসিয়েশন ঝিনাইদহ শাখার সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর হোসেন বাফার গোডাউন পরিদর্শন করেন। এ সময় বাফার গোডউন ইনচার্জ মাসুদ রানা কয়েকটি বস্তা মেপে  সার কম রয়েছে বলে নিশ্চিত হন। এরপর স্থানীয়রা ডিলারদের আপত্তির মুখে গোডাউন কর্তৃপক্ষ সার রিসিভ করেনি। জানা গেছে, সৌদি আরব থেকে ওজনে কম দেওয়া এই সার বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) ঢাকার সাউথ ডেল্টা শিপিং এন্ড ট্রেডিং লি: আমদানী করে। গত ২২ জুলাই  নবাব এন্ড কোম্পানীর ১৬টি ট্রাকে আসা ৩শ মেট্রিক টন ইউরিয়ার সারের প্রতি বস্তায় ৩ থেকে ৪ কেজি কম পাওয়া যায়। সে সময় বিষয়টি জানাজানি হলে সার প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান নবাব এন্ড কোং প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে সার ভরে রিব্যাগিং করে বাফার কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়। ডিলারদের অভিযোগের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার গোডাউনে গিয়ে দেখা যায় গোডাউন চত্ত্বরে ৩৩টি সার বোঝায় ট্রাক দাড়িয়ে আছে। গোডউন ইনচার্জ মাসুদ রানা জানান, আমদানীকৃত করা সারের প্রতি বস্তায় ওজনে কম রয়েছে। এরপর সার আনডোল বন্ধ করে দিয়েছি। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন রিব্যাগিং করে ৫০ কেজি করেই ডিলারদের সার সরবরাহ করা হবে। বাংলাদেশ ফারটিলাইজার এ্যসোসিয়েশন ঝিনাইদহ শাখার সভাপতি ও ডিলার আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর জানান, আমরা স্থানীয় এমপির উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার গোডাউনে গিয়ে সার মেপে কম পেয়েছি।  আমরা কর্তৃপক্ষকে বলেছি প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি সার বুঝিয়ে দিলে আমরা এই সার গ্রহন করবো। তিনি অভিযোগ করেন, এর আগে এই গোডাউন থেকে ডিলারদের মাঝে ওজনে কম, নিম্নমানের ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হয়। যার ফলে দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন। বাফার গোডাউন সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় এ গোডাউন থেকে ২১৫ জন তালিকাভুক্ত ডিলারের মাঝে সার সরবারাহ করা হয়। ডিলাররা এই সার উত্তোলন করে কৃষক পর্যায়ে পৌঁছে দেয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ঝিনাইদহে বিসিআইসির আমদানীকৃত ২৯৭ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের প্রতি বস্তায় কম!

আপলোড টাইম : ০১:০৩:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৬

eerঝিনাইদহ প্রতিনিধি: হাজার হাজার বস্তা সার গায়েবের পর এবার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরে অবস্থিত সরকারী বাফার সার গুদামে বিসিআইসির আমদানীকৃত ২৯৭ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের প্রতি বস্তায় ওজনে কম ধরা পাড়েছে। সৌদি আরব থেকে বিসিআইসি এই সার আমদানী করে গুদামজাত করার জন্য বৃহস্পতিবার ৩৩টি ট্রাকে করে ঝিনাইদহের বাফার গুদামে পাঠায়। প্রতি বস্তায় সার কম থাকার খবরটি জানাজানি হলে ডিলারদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বার বার প্রতি বস্তায় ইউরিয়া সার কম দিয়ে বড় ধরণের আর্থিক জালিয়াতি করা হচ্ছে বলেও ডিলারদের অভিযোগ। এর আগে কালীগঞ্জ বাফার গোডাউন থেকে সরকারী হিসেবে ৫৪৭ মেট্রিক টন অর্থাৎ ১০ হাজার ৯৪০ বস্তা সারের কোন হদিস মিলছে না। যার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এদিকে প্রতি ইউরিয়া সারের বস্তায় ওজনে কম থাকার বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম ও বাংলাদেশ ফারটিলাইজার এ্যাসোসিয়েশন ঝিনাইদহ শাখার সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর হোসেন বাফার গোডাউন পরিদর্শন করেন। এ সময় বাফার গোডউন ইনচার্জ মাসুদ রানা কয়েকটি বস্তা মেপে  সার কম রয়েছে বলে নিশ্চিত হন। এরপর স্থানীয়রা ডিলারদের আপত্তির মুখে গোডাউন কর্তৃপক্ষ সার রিসিভ করেনি। জানা গেছে, সৌদি আরব থেকে ওজনে কম দেওয়া এই সার বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) ঢাকার সাউথ ডেল্টা শিপিং এন্ড ট্রেডিং লি: আমদানী করে। গত ২২ জুলাই  নবাব এন্ড কোম্পানীর ১৬টি ট্রাকে আসা ৩শ মেট্রিক টন ইউরিয়ার সারের প্রতি বস্তায় ৩ থেকে ৪ কেজি কম পাওয়া যায়। সে সময় বিষয়টি জানাজানি হলে সার প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান নবাব এন্ড কোং প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে সার ভরে রিব্যাগিং করে বাফার কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়। ডিলারদের অভিযোগের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার গোডাউনে গিয়ে দেখা যায় গোডাউন চত্ত্বরে ৩৩টি সার বোঝায় ট্রাক দাড়িয়ে আছে। গোডউন ইনচার্জ মাসুদ রানা জানান, আমদানীকৃত করা সারের প্রতি বস্তায় ওজনে কম রয়েছে। এরপর সার আনডোল বন্ধ করে দিয়েছি। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন রিব্যাগিং করে ৫০ কেজি করেই ডিলারদের সার সরবরাহ করা হবে। বাংলাদেশ ফারটিলাইজার এ্যসোসিয়েশন ঝিনাইদহ শাখার সভাপতি ও ডিলার আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর জানান, আমরা স্থানীয় এমপির উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার গোডাউনে গিয়ে সার মেপে কম পেয়েছি।  আমরা কর্তৃপক্ষকে বলেছি প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি সার বুঝিয়ে দিলে আমরা এই সার গ্রহন করবো। তিনি অভিযোগ করেন, এর আগে এই গোডাউন থেকে ডিলারদের মাঝে ওজনে কম, নিম্নমানের ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হয়। যার ফলে দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন। বাফার গোডাউন সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় এ গোডাউন থেকে ২১৫ জন তালিকাভুক্ত ডিলারের মাঝে সার সরবারাহ করা হয়। ডিলাররা এই সার উত্তোলন করে কৃষক পর্যায়ে পৌঁছে দেয়।