ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহের আসমানী মোমেনা খাতুন….

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৪০৮ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস: “আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও” পল্লী কবি জসিম উদ্দীনের কবিতার মতোই মোমেনা খাতুনের দারিদ্রতা ও জীবন যাপন। ছোটবেলা থেকে পিতা মাতা হারানো এই এতিম নারী নিজ ভিটায় পার করেছেন ৪৫ বছর। বিয়ে হলেও থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণে স্বামী তাকে রাখেনি। সেই থেকেই মোমেনা খাতুন বেঁচে থাকার যুদ্ধ শুরু করেন। প্রতিমাসে বি-পজেটিভ রক্ত জোগাড় ও ভাতের খোরাক যোগাতে নিরন্তন যুদ্ধ তার। আসমানীর মতো ভেন্নাপাতার ঘর না থাকলেও আধুনিক এই সভ্যতার যুগে মোমেনা খাতুনের ঘরটি ঠিক তেমনই। আলো বাতাস ঢোকার কোন পথ নেই। মাটির ঘরে বাঁশের চটা দিয়ে তৈরী জানালা ও দরজায় ঝুলছে ছেড়া বস্তা। মরিচা পড়া টিনের ঘরটি একটু বাতাস হলেই নড়ে ওঠে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না গ্রামের পুর্বপাড়ায় মোমেনা খাতুনের বাড়ি। তিনি ওই গ্রামের মৃতঃ খেদ আলী মন্ডলের ছোট মেয়ে। তার বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। বাপের ভিটায় তিনি একাই থাকেন। মোমেনা খাতুন জানান, স্বামী পরিত্যক্তা হওয়ার পর থেকেই তিনি গ্রামবাসির সাহায্য সহায়তা নিয়ে বেঁেচ আছেন। জাকাত, ফিতরা, ধান চাল যখন যে ভাবে পারেন গ্রামবাসি তাকে সাহায্য করেন। এলাকার যুবকরা তার জন্য প্রতি মাসে রক্ত দেন। মাঝে মধ্যে তাকে রক্ত কিনতেও হয়। এ কাজে তাকে সহায়তা করেন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম। গান্না গ্রামের শরিফুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম ও প্রতিবেশি পাপিয়া খাতুন জানান, হতদরিদ্র মেয়েটির অনেক কষ্টের জীবন। তার একটি ঘর দরকার। প্রয়োজন বিধবা ভাতা। কিন্তু এসব তার কে করে দিবে ? এদিকে মোমেনা খাতুনের এই কষ্টের কথা শুনে স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন ঝিনাইদহ মাদার তেরেসার ব্লাড ব্যাংকের যুগ্নআহবায়ক তারেক মাহমুদ জয় তার প্রতি মাসে বিনামুল্যে রক্ত দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মোমেনা খাতুনের দারিদ্রতা নিয়ে গান্না ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর জয়নাল আবেদিন জানান, সরকারী ভাবে যত রকম সাহায্য আসে সব কিছুই তাকে দেওয়া হয়। প্রতি মাসে মোমেনা খাতুন ভিজিবি কর্মসুচির আওতায় চাল পাচ্ছেন। তার বাড়ি করে দেওয়ার চেষ্টাও করা হচ্ছে বলে জয়নাল মেম্বর জানান। কেও মোমেনা খাতুনকে আর্থিক সহায়তা করতে চাইলে ০১৭১০-১৮২৫৪৮ জয়নাল মেম্বরের এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ঝিনাইদহের আসমানী মোমেনা খাতুন….

আপলোড টাইম : ০৯:০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অগাস্ট ২০১৮

ঝিনাইদহ অফিস: “আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও” পল্লী কবি জসিম উদ্দীনের কবিতার মতোই মোমেনা খাতুনের দারিদ্রতা ও জীবন যাপন। ছোটবেলা থেকে পিতা মাতা হারানো এই এতিম নারী নিজ ভিটায় পার করেছেন ৪৫ বছর। বিয়ে হলেও থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণে স্বামী তাকে রাখেনি। সেই থেকেই মোমেনা খাতুন বেঁচে থাকার যুদ্ধ শুরু করেন। প্রতিমাসে বি-পজেটিভ রক্ত জোগাড় ও ভাতের খোরাক যোগাতে নিরন্তন যুদ্ধ তার। আসমানীর মতো ভেন্নাপাতার ঘর না থাকলেও আধুনিক এই সভ্যতার যুগে মোমেনা খাতুনের ঘরটি ঠিক তেমনই। আলো বাতাস ঢোকার কোন পথ নেই। মাটির ঘরে বাঁশের চটা দিয়ে তৈরী জানালা ও দরজায় ঝুলছে ছেড়া বস্তা। মরিচা পড়া টিনের ঘরটি একটু বাতাস হলেই নড়ে ওঠে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না গ্রামের পুর্বপাড়ায় মোমেনা খাতুনের বাড়ি। তিনি ওই গ্রামের মৃতঃ খেদ আলী মন্ডলের ছোট মেয়ে। তার বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। বাপের ভিটায় তিনি একাই থাকেন। মোমেনা খাতুন জানান, স্বামী পরিত্যক্তা হওয়ার পর থেকেই তিনি গ্রামবাসির সাহায্য সহায়তা নিয়ে বেঁেচ আছেন। জাকাত, ফিতরা, ধান চাল যখন যে ভাবে পারেন গ্রামবাসি তাকে সাহায্য করেন। এলাকার যুবকরা তার জন্য প্রতি মাসে রক্ত দেন। মাঝে মধ্যে তাকে রক্ত কিনতেও হয়। এ কাজে তাকে সহায়তা করেন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম। গান্না গ্রামের শরিফুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম ও প্রতিবেশি পাপিয়া খাতুন জানান, হতদরিদ্র মেয়েটির অনেক কষ্টের জীবন। তার একটি ঘর দরকার। প্রয়োজন বিধবা ভাতা। কিন্তু এসব তার কে করে দিবে ? এদিকে মোমেনা খাতুনের এই কষ্টের কথা শুনে স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন ঝিনাইদহ মাদার তেরেসার ব্লাড ব্যাংকের যুগ্নআহবায়ক তারেক মাহমুদ জয় তার প্রতি মাসে বিনামুল্যে রক্ত দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মোমেনা খাতুনের দারিদ্রতা নিয়ে গান্না ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর জয়নাল আবেদিন জানান, সরকারী ভাবে যত রকম সাহায্য আসে সব কিছুই তাকে দেওয়া হয়। প্রতি মাসে মোমেনা খাতুন ভিজিবি কর্মসুচির আওতায় চাল পাচ্ছেন। তার বাড়ি করে দেওয়ার চেষ্টাও করা হচ্ছে বলে জয়নাল মেম্বর জানান। কেও মোমেনা খাতুনকে আর্থিক সহায়তা করতে চাইলে ০১৭১০-১৮২৫৪৮ জয়নাল মেম্বরের এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।