ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জুমার নামাজের গুরুত্ব

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৭:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ নভেম্বর ২০১৮
  • / ৩৭৩ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: সপ্তাহে সাতদিনের মধ্যে শুক্রবার সর্বশ্রেষ্ঠ দিন এবং সাপ্তাহিক ঈদের দিন। কেননা এই দিনেই সবচেয়ে বেশি নেয়ামত আল্লাহ পাক মানুষকে দান করেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,“হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়। তখন তোমারা আল্লাহর ইবাদতের জন্য দ্রুত যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝো।” (সুরা জুমা, আয়াত: ৯) হাদিস শরিফে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে আরো অনেক স্পষ্ট কথা। হজরত তারিক ইবনে শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী কারিম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ক্রীতদাস, মহিলা, নাবালক শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি, এ চার প্রকার মানুষ ছাড়া সব মুসলমানদের উপর জুমার নামাজ জামাতে আদায় করা অপরিহার্য কর্তব্য।” (আবু দাউদ শরিফ) বন্ধুগণ, কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়, তাহলে তার ব্যাপারে রয়েছে কোঠর হুঁশিয়ারি। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী কারিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া জুমার নামাজ বর্জন করবে, তার নাম মুনাফিক হিসেবে এমন দপ্তরে লিপিবদ্ধ হবে, যা মুছে ফেলা হবে না এবং পরিবর্তনও করা যাবে না।” (তাফসীরে মাজহারী) হজরত সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুন্দর করে গোসল করবে, অতপর তেল ব্যবহার করবে এবং সুগন্ধি লাগাবে, তারপর মসজিদে গমন করবে, দুই মুসল্লির মাঝে জোর করে জায়গা নেবে না, সে নামাজ আদায় করবে এবং ইমাম যখন খুতবা দেবেন, চুপ করে মনোযোগ সহকারে তার খুতবা শুনবে, দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (আবু দাউদ শরীফ) অন্য এক হাদিসে পাওয়া যায়, নবী কারিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।” (ইবনে মাযাহ শরীফ) নবী কারিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, “যেসব দিনে সূর্য উদিত হয়েছে তার মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন। সেদিনেই আদম (আ.) কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং সেই দিনেই তাকে জান্নাতে পাঠানো হয়েছে এবং সেই দিনেই জান্নাত থেকে তাকে বের করা হয়েছে। যেদিন কিয়ামত হবে, সেদিনও হবে জুমার দিন।” (মুসলিম শরীফ) বরকতময় একটি হাদিস উল্লেখ করা হলো, হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী কারিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,“জুমার দিনে এমন একটা সময় আছে, যে সময়ে কোনো মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে ভালো কোনো কিছু প্রার্থনা করলে, অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা দান করবেন।” (মুসলিম শরীফ ও মুসনাদে আহমদ) জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার সেই মহামূল্যবান সময় কোনটি? এ সম্পর্কে অনেক মতামত পাওয়া যায়। যথা- খুতবা চলাকালীন, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে, নামাজের পর, আসরের নামাজের পর, সূর্য ডোবার সময় ইত্যাদি। তবে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ মতো হলো, আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত দোয়া কবুলের সময়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে জুমার দিনের হক আদায় করে জুমার নামাজ পরার তাউফিক দান করুন। (আমিন)

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জুমার নামাজের গুরুত্ব

আপলোড টাইম : ০৯:২৭:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ নভেম্বর ২০১৮

ধর্ম ডেস্ক: সপ্তাহে সাতদিনের মধ্যে শুক্রবার সর্বশ্রেষ্ঠ দিন এবং সাপ্তাহিক ঈদের দিন। কেননা এই দিনেই সবচেয়ে বেশি নেয়ামত আল্লাহ পাক মানুষকে দান করেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,“হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়। তখন তোমারা আল্লাহর ইবাদতের জন্য দ্রুত যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝো।” (সুরা জুমা, আয়াত: ৯) হাদিস শরিফে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে আরো অনেক স্পষ্ট কথা। হজরত তারিক ইবনে শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী কারিম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ক্রীতদাস, মহিলা, নাবালক শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি, এ চার প্রকার মানুষ ছাড়া সব মুসলমানদের উপর জুমার নামাজ জামাতে আদায় করা অপরিহার্য কর্তব্য।” (আবু দাউদ শরিফ) বন্ধুগণ, কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়, তাহলে তার ব্যাপারে রয়েছে কোঠর হুঁশিয়ারি। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী কারিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া জুমার নামাজ বর্জন করবে, তার নাম মুনাফিক হিসেবে এমন দপ্তরে লিপিবদ্ধ হবে, যা মুছে ফেলা হবে না এবং পরিবর্তনও করা যাবে না।” (তাফসীরে মাজহারী) হজরত সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুন্দর করে গোসল করবে, অতপর তেল ব্যবহার করবে এবং সুগন্ধি লাগাবে, তারপর মসজিদে গমন করবে, দুই মুসল্লির মাঝে জোর করে জায়গা নেবে না, সে নামাজ আদায় করবে এবং ইমাম যখন খুতবা দেবেন, চুপ করে মনোযোগ সহকারে তার খুতবা শুনবে, দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” (আবু দাউদ শরীফ) অন্য এক হাদিসে পাওয়া যায়, নবী কারিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।” (ইবনে মাযাহ শরীফ) নবী কারিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, “যেসব দিনে সূর্য উদিত হয়েছে তার মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন। সেদিনেই আদম (আ.) কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং সেই দিনেই তাকে জান্নাতে পাঠানো হয়েছে এবং সেই দিনেই জান্নাত থেকে তাকে বের করা হয়েছে। যেদিন কিয়ামত হবে, সেদিনও হবে জুমার দিন।” (মুসলিম শরীফ) বরকতময় একটি হাদিস উল্লেখ করা হলো, হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী কারিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,“জুমার দিনে এমন একটা সময় আছে, যে সময়ে কোনো মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে ভালো কোনো কিছু প্রার্থনা করলে, অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা দান করবেন।” (মুসলিম শরীফ ও মুসনাদে আহমদ) জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার সেই মহামূল্যবান সময় কোনটি? এ সম্পর্কে অনেক মতামত পাওয়া যায়। যথা- খুতবা চলাকালীন, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে, নামাজের পর, আসরের নামাজের পর, সূর্য ডোবার সময় ইত্যাদি। তবে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ মতো হলো, আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত দোয়া কবুলের সময়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে জুমার দিনের হক আদায় করে জুমার নামাজ পরার তাউফিক দান করুন। (আমিন)