ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জীবননগর ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত-৪ : মামলা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৪৪:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ মে ২০১৮
  • / ৪৫৩ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস: জীবননগরে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্য সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছে। আহতরা হলো- জীবননগর পৌরসভার ৭নং ওর্য়াডের কামাল হোসেনের ছেলে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মিঠু (২৩), একই ওর্য়াডের মৃত রবজেল মন্ডলের ছেলে পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম মানিক (২৫), রমজান আলীর ছেলে চঞ্চল ও ইসমাইল হোসেনের ছেলে রিমন। আহতদেরকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জীবননগর শহরের সোনালী ব্যাংকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হয়
আহত মানিক জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের ছেলে নয়ন জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যানের উন্নয়নমুলক কাজ নিয়ে ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়। ওই স্ট্যাটাসে জীবননগর পৌরসভার ৬নং ওর্য়াড কাউন্সিলর আবুল কাশেমের ছেলে জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব একটি বাজে মন্তব্য করে। আমি বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি তার বাবাকে বিষয়টি বললে সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মোবাইল ফোনে গালিগালাজ করতে থাকে। তাকে নিষেধ করলে সে আমাকে বলে তুই ফয়সালের দোকানের সামনে আয় তোর বাপের নাম ভুলিয়ে দেব। আমি তাকে উল্টাপাল্টা কথা বলতে নিষেধ করলে সে আমার মা বাবা তুলে গালমন্দ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমবাজারে যাওয়ার পথে সে আমাকে গালিগালাজ করতে থাকে। আমি তার প্রতিবাদ করলে সে আমাকে ধাক্কা দেয়। আমি ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পথে বিপ্লব ও তার ভাই রকুসহ জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান, শুভ, পৌর মেয়রের চাচাতো ভাই হোসেনসহ বেশ কয়েকজন একত্রিত হয়ে লাঠি, রডসহ এলোপাতাড়ীভাবে আমাদের মারধর করতে থাকে। এসময় আমার নিকট থাকা জুয়েল ভাইয়ের আমের আড়তের ৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এক পযার্য়ে স্থানীয় জনগন ছুটে এসে আমাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য জীবননগর হাসাপাতালে ভর্তি করে।


এ ব্যাপারে জীবননগর ডিগ্র্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লবের সাথে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। জীবননগর ডিগ্র্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি কারও মারধর করিনি, আমি মানিককে আরও ঠেকিয়েছি। জীবননগর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি সোয়েব আহম্মেদ অঞ্জন জানান, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়েছে এটি আমি শুনেছি এবং আহত মানিকসহ সকলকে দেখেছি। তবে বিষয়টি একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হয়েছে। এটি আমি জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জানিফের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, জীবননগর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মানিকের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে এটি আমি শুনেছি। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হবে তার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদ বিন হেদায়েদ (সেতু ) জানান, শনিবার রাতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে এই ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা মানিকের চোখে যে আঘাত লেগেছে সেটা একটু আশঙ্কাজনক। তবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে আশা করি খুব শিঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবে। তবে অন্যারা আশঙ্কামুক্ত।

উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আ. লতিফ অমল জানান, আমি উপজেলায় যে সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজ করি তার সবগুলোর ছবি ফেসবুকে দিয়ে থাকি। এই পোস্টে জীবননগর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমার নামে ফেসবুকে বাজে মন্তব্য করে। এ বিষয়টি আমি তার বাবা পৌর কাউন্সিলার আবুল কাশেমকে জানায়। এরই সুত্র ধরে বিল্পব মানিককে গালিগালাজ করে। পরবর্তীতে মানিকসহ ছাত্রলীগ নেতাদের উপর হামলা করে। জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, জীবননগর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয় সে বিষয়টি আমি শুনেছি এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়। এ ঘটনায় আহত মানিক বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান তিনি। এদিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জীবননগর শহরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জীবননগর ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত-৪ : মামলা

আপলোড টাইম : ০৫:৪৪:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ মে ২০১৮

জীবননগর অফিস: জীবননগরে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্য সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছে। আহতরা হলো- জীবননগর পৌরসভার ৭নং ওর্য়াডের কামাল হোসেনের ছেলে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মিঠু (২৩), একই ওর্য়াডের মৃত রবজেল মন্ডলের ছেলে পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম মানিক (২৫), রমজান আলীর ছেলে চঞ্চল ও ইসমাইল হোসেনের ছেলে রিমন। আহতদেরকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জীবননগর শহরের সোনালী ব্যাংকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হয়
আহত মানিক জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনের ছেলে নয়ন জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যানের উন্নয়নমুলক কাজ নিয়ে ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়। ওই স্ট্যাটাসে জীবননগর পৌরসভার ৬নং ওর্য়াড কাউন্সিলর আবুল কাশেমের ছেলে জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব একটি বাজে মন্তব্য করে। আমি বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি তার বাবাকে বিষয়টি বললে সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মোবাইল ফোনে গালিগালাজ করতে থাকে। তাকে নিষেধ করলে সে আমাকে বলে তুই ফয়সালের দোকানের সামনে আয় তোর বাপের নাম ভুলিয়ে দেব। আমি তাকে উল্টাপাল্টা কথা বলতে নিষেধ করলে সে আমার মা বাবা তুলে গালমন্দ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমবাজারে যাওয়ার পথে সে আমাকে গালিগালাজ করতে থাকে। আমি তার প্রতিবাদ করলে সে আমাকে ধাক্কা দেয়। আমি ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পথে বিপ্লব ও তার ভাই রকুসহ জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান, শুভ, পৌর মেয়রের চাচাতো ভাই হোসেনসহ বেশ কয়েকজন একত্রিত হয়ে লাঠি, রডসহ এলোপাতাড়ীভাবে আমাদের মারধর করতে থাকে। এসময় আমার নিকট থাকা জুয়েল ভাইয়ের আমের আড়তের ৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এক পযার্য়ে স্থানীয় জনগন ছুটে এসে আমাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য জীবননগর হাসাপাতালে ভর্তি করে।


এ ব্যাপারে জীবননগর ডিগ্র্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লবের সাথে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। জীবননগর ডিগ্র্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি কারও মারধর করিনি, আমি মানিককে আরও ঠেকিয়েছি। জীবননগর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি সোয়েব আহম্মেদ অঞ্জন জানান, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়েছে এটি আমি শুনেছি এবং আহত মানিকসহ সকলকে দেখেছি। তবে বিষয়টি একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হয়েছে। এটি আমি জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জানিফের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, জীবননগর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মানিকের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে এটি আমি শুনেছি। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হবে তার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদ বিন হেদায়েদ (সেতু ) জানান, শনিবার রাতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে এই ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা মানিকের চোখে যে আঘাত লেগেছে সেটা একটু আশঙ্কাজনক। তবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে আশা করি খুব শিঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবে। তবে অন্যারা আশঙ্কামুক্ত।

উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আ. লতিফ অমল জানান, আমি উপজেলায় যে সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজ করি তার সবগুলোর ছবি ফেসবুকে দিয়ে থাকি। এই পোস্টে জীবননগর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমার নামে ফেসবুকে বাজে মন্তব্য করে। এ বিষয়টি আমি তার বাবা পৌর কাউন্সিলার আবুল কাশেমকে জানায়। এরই সুত্র ধরে বিল্পব মানিককে গালিগালাজ করে। পরবর্তীতে মানিকসহ ছাত্রলীগ নেতাদের উপর হামলা করে। জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, জীবননগর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয় সে বিষয়টি আমি শুনেছি এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়। এ ঘটনায় আহত মানিক বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান তিনি। এদিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জীবননগর শহরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।