ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জখম স্কুলছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে ডিসি-এসপি : থানায় মামলা দায়ের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:০৪:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৮
  • / ৪৭১ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় বখাটের ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্রী জখম : অভিযুক্ত রানা আটক
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি গ্রামের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী লিমা খাতুন নামের এক স্কুলছাত্রীকে ছুরিকাঘাত করেছে রানা (২০) নামের এক বখাটে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তালতলায় শ্মশানপাড়ায় বিশ্বাসের গোরস্থানের নিকটে এ ঘটনা ঘটে। জখম স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত স্কুল ছাত্রী চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি গ্রামের জোড়গাছাপাড়ার আব্দুর রহমান ওরফে রহমের মেয়ে ও রাহেলা খাতুন গার্লস একাডেমীর অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। পুলিশ ঘটনার তিন ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত রানাকে আলমডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয়। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ, পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান-পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জখম স্কুলছাত্রীকে দেখতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আসেন। এঘটনায় স্কুলছাত্রীর পিতা রহম আলী সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জখম স্কুলছাত্রী এ প্রতিবেদককে বলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার শ্মশানপাড়ার কাজলের ছেলে রাজা দীর্ঘদিন যাবত তাকে উত্যক্ত করে আসছিল। এমনকি বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিল তাকে। গতকাল সকালে লিমা খাতুন বাড়ি থেকে স্কুলে বের হয়। পথিমধ্যে যুবক রানা তাকে দাড়াতে বলে। উত্তরে লিমা খাতুন বলে, ‘আমি স্কুলে যাচ্ছি, আমাকে ডিস্টার্ব করো না’। তখন বখাটে রানা বলে তোর জন্য তো আমার জীবন শেষ হয়ে গেল বলে পিছন থেকে তার ডান কোমরে চুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।


এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী স্কুলছাত্রীর চাচাতো দুলাভাই জুয়েল প্রতিবেদককে বলেন, আমি ও লিমা খাতুন একসাথে যাচ্ছিলাম। শ্মশানপাড়ার বিশ্বাসের কবরস্থানের নিকট পৌছালে একটি ছেলে তার পথরোধ করে। পরে তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পিছন থেকে তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় জখম স্কুলছাত্রী লিমা খাতুনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, এ ঘটনায় দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে স্কুলছাত্রীকে দেখতে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ, পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান-পিপিএম, সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলামসহ জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক ও রাহেলা খাতুন গার্লস একাডেমী স্কুলের কমিটির সাবেক সভাপতি শওকত আলী বিশ্বাস ছুটে আসেন। এ সময় তার সার্বিক খোজ খবর নেন ও অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির আশ্বাস প্রদান করেন। ঘটনার তিন ঘন্টা পর আলমডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে অভিযুক্ত রানাকে অটক করতে সক্ষম হয় চুয়াডাঙ্গা ফাড়ি পুলিশের ইনচার্জ ওহিদুল ইসলাম। গতকাল রাতে স্কুলছাত্রী বাবা বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি-তদন্ত) আব্দুল খালেক জানান, পৌর এলাকার শ্মশান পাড়ার মো. কাজলের ছেলে রানা ওই স্কুলছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করতো। বুধবার সকালে স্কুলছাত্রী স্কুলে যাওয়ার পথে বখাটে রানা তাকে পিছন থেকে ছুরিকাঘাত করে। এতে স্কুলছাত্রী মারাত্মক জখম হয়। তাকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ রানাকে আলমডাঙ্গা থেকে আটক করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. তারিক হাছান শাহিন জানান, স্কুলছাত্রীর পিঠের ডান পাজরে গভীর ক্ষত রয়েছে। সে আশংকামুক্ত নয়। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বাইরে রেফার্ড করা হতে পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

জখম স্কুলছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে ডিসি-এসপি : থানায় মামলা দায়ের

আপলোড টাইম : ০৭:০৪:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

চুয়াডাঙ্গায় বখাটের ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্রী জখম : অভিযুক্ত রানা আটক
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি গ্রামের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী লিমা খাতুন নামের এক স্কুলছাত্রীকে ছুরিকাঘাত করেছে রানা (২০) নামের এক বখাটে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তালতলায় শ্মশানপাড়ায় বিশ্বাসের গোরস্থানের নিকটে এ ঘটনা ঘটে। জখম স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত স্কুল ছাত্রী চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি গ্রামের জোড়গাছাপাড়ার আব্দুর রহমান ওরফে রহমের মেয়ে ও রাহেলা খাতুন গার্লস একাডেমীর অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। পুলিশ ঘটনার তিন ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত রানাকে আলমডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয়। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ, পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান-পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জখম স্কুলছাত্রীকে দেখতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আসেন। এঘটনায় স্কুলছাত্রীর পিতা রহম আলী সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জখম স্কুলছাত্রী এ প্রতিবেদককে বলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার শ্মশানপাড়ার কাজলের ছেলে রাজা দীর্ঘদিন যাবত তাকে উত্যক্ত করে আসছিল। এমনকি বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিল তাকে। গতকাল সকালে লিমা খাতুন বাড়ি থেকে স্কুলে বের হয়। পথিমধ্যে যুবক রানা তাকে দাড়াতে বলে। উত্তরে লিমা খাতুন বলে, ‘আমি স্কুলে যাচ্ছি, আমাকে ডিস্টার্ব করো না’। তখন বখাটে রানা বলে তোর জন্য তো আমার জীবন শেষ হয়ে গেল বলে পিছন থেকে তার ডান কোমরে চুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।


এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী স্কুলছাত্রীর চাচাতো দুলাভাই জুয়েল প্রতিবেদককে বলেন, আমি ও লিমা খাতুন একসাথে যাচ্ছিলাম। শ্মশানপাড়ার বিশ্বাসের কবরস্থানের নিকট পৌছালে একটি ছেলে তার পথরোধ করে। পরে তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পিছন থেকে তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় জখম স্কুলছাত্রী লিমা খাতুনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, এ ঘটনায় দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে স্কুলছাত্রীকে দেখতে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ, পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান-পিপিএম, সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলামসহ জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক ও রাহেলা খাতুন গার্লস একাডেমী স্কুলের কমিটির সাবেক সভাপতি শওকত আলী বিশ্বাস ছুটে আসেন। এ সময় তার সার্বিক খোজ খবর নেন ও অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির আশ্বাস প্রদান করেন। ঘটনার তিন ঘন্টা পর আলমডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে অভিযুক্ত রানাকে অটক করতে সক্ষম হয় চুয়াডাঙ্গা ফাড়ি পুলিশের ইনচার্জ ওহিদুল ইসলাম। গতকাল রাতে স্কুলছাত্রী বাবা বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি-তদন্ত) আব্দুল খালেক জানান, পৌর এলাকার শ্মশান পাড়ার মো. কাজলের ছেলে রানা ওই স্কুলছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করতো। বুধবার সকালে স্কুলছাত্রী স্কুলে যাওয়ার পথে বখাটে রানা তাকে পিছন থেকে ছুরিকাঘাত করে। এতে স্কুলছাত্রী মারাত্মক জখম হয়। তাকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ রানাকে আলমডাঙ্গা থেকে আটক করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. তারিক হাছান শাহিন জানান, স্কুলছাত্রীর পিঠের ডান পাজরে গভীর ক্ষত রয়েছে। সে আশংকামুক্ত নয়। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বাইরে রেফার্ড করা হতে পারে।