ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ছোট প্রকল্পে বড় ব্যয়

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী ২০২১
  • / ১০৬ বার পড়া হয়েছে

অযৌক্তিক প্রস্তাব খতিয়ে দেখা দরকার
দুই কিলোমিটারেরও কম দৈর্ঘ্যরে একটি সড়ক নির্মাণে প্রায় ৫০ কোটি টাকার প্রস্তাবকে আমাদের কাছে অযৌক্তিক বলেই প্রতীয়মান হয়। উল্লেখ্য, ‘ভুয়াপুর লিংক সড়ক নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পে ১ দশমিক ৮০ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণে ৪৯ কোটি ৭১ লাখ টাকার প্রস্তাব করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। স্বভাবতই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন এ ব্যয় প্রস্তাবকে অদ্ভুত ও অস্বাভাবিক উল্লেখ করে প্রশ্ন রেখেছেন, ‘এত টাকা কোথায় ব্যয় হবে? মনে হচ্ছে, দামি কোনো বস্তু দিয়ে এই রাস্তা তৈরি করা হতে পারে!’ বস্তুত এমন প্রশ্ন সবারই। আমরা আগেও দেখেছি, বিভিন্ন প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় প্রস্তাব করার পর পরিকল্পনা কমিশন তাতে আপত্তি জানিয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তির মুখে প্রকল্প ব্যয় কমানোও হয়েছে। তাহলে কেন কোনো প্রকল্পের অত্যধিক ব্যয় প্রস্তাব করা হয়? একটি প্রকল্প যখন চূড়ান্ত হয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) কাছে আসে, তখন তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয় না। এর আগেই প্রকল্পের কোনো খাতে কোনো অপচয়ের ব্যাপার থাকলে তা রোধ করা উচিত।
বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের আয় কমেছে এবং ব্যয় বেড়েছে। জানা গেছে, ব্যয় সাশ্রয়ের চিন্তা থেকে অন্তত ৫০০ প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় বাহুল্য ব্যয় বাদ দিয়ে বা কমিয়েই যে কোনো প্রকল্প প্রস্তাব দেয়া উচিত। সম্প্রতি একনেক বৈঠকে উন্নয়ন প্রকল্পের মেয়াদ ও টাকা বাড়ানোর ধারা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তারপরও দুর্ভাগ্যজনকভাবে একের পর এক প্রকল্পে অপচয়ের খবর মিলছে। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখতে হবে অবশ্যই। তাছাড়া প্রকল্প প্রস্তাবে অতিরিক্ত ব্যয় দেখানোর পেছনে দুর্নীতি বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার। তাছাড়া প্রকল্পের অস্বাভাবিক ব্যয় প্রস্তাব এলে অথবা উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ সহায়তার প্রকল্প প্রস্তাবে অযৌক্তিক শর্ত আরোপ করা হলে তা অনুমোদনের বিষয়টিও ভেবে দেখা উচিত বলেই আমরা মনে করি। অভিযোগ আছে, এ দেশে সড়কসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর নির্মাণ ব্যয় অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। অথচ আমাদের শ্রম তুলনামূলক সস্তা। সেক্ষেত্রে সড়ক নির্মাণ ব্যয় কেন বেশি, স্বভাবতই সে প্রশ্ন ওঠে। আমাদের সম্পদের পরিমাণ কম, কিন্তু জনসংখ্যা বেশি। সেক্ষেত্রে অপচয় কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টিও সর্বজনবিদিত। দুর্নীতি আমাদের অন্যতম বড় সমস্যা। এটি কঠোরভাবে দমন করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার বিকল্প নেই। অনেক সময় দুর্নীতির উদ্দেশ্যেই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। কাজেই এসব ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দিতে হবে।ৎ

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ছোট প্রকল্পে বড় ব্যয়

আপলোড টাইম : ১০:২৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী ২০২১

অযৌক্তিক প্রস্তাব খতিয়ে দেখা দরকার
দুই কিলোমিটারেরও কম দৈর্ঘ্যরে একটি সড়ক নির্মাণে প্রায় ৫০ কোটি টাকার প্রস্তাবকে আমাদের কাছে অযৌক্তিক বলেই প্রতীয়মান হয়। উল্লেখ্য, ‘ভুয়াপুর লিংক সড়ক নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পে ১ দশমিক ৮০ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণে ৪৯ কোটি ৭১ লাখ টাকার প্রস্তাব করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। স্বভাবতই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন এ ব্যয় প্রস্তাবকে অদ্ভুত ও অস্বাভাবিক উল্লেখ করে প্রশ্ন রেখেছেন, ‘এত টাকা কোথায় ব্যয় হবে? মনে হচ্ছে, দামি কোনো বস্তু দিয়ে এই রাস্তা তৈরি করা হতে পারে!’ বস্তুত এমন প্রশ্ন সবারই। আমরা আগেও দেখেছি, বিভিন্ন প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় প্রস্তাব করার পর পরিকল্পনা কমিশন তাতে আপত্তি জানিয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তির মুখে প্রকল্প ব্যয় কমানোও হয়েছে। তাহলে কেন কোনো প্রকল্পের অত্যধিক ব্যয় প্রস্তাব করা হয়? একটি প্রকল্প যখন চূড়ান্ত হয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) কাছে আসে, তখন তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয় না। এর আগেই প্রকল্পের কোনো খাতে কোনো অপচয়ের ব্যাপার থাকলে তা রোধ করা উচিত।
বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের আয় কমেছে এবং ব্যয় বেড়েছে। জানা গেছে, ব্যয় সাশ্রয়ের চিন্তা থেকে অন্তত ৫০০ প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় বাহুল্য ব্যয় বাদ দিয়ে বা কমিয়েই যে কোনো প্রকল্প প্রস্তাব দেয়া উচিত। সম্প্রতি একনেক বৈঠকে উন্নয়ন প্রকল্পের মেয়াদ ও টাকা বাড়ানোর ধারা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তারপরও দুর্ভাগ্যজনকভাবে একের পর এক প্রকল্পে অপচয়ের খবর মিলছে। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখতে হবে অবশ্যই। তাছাড়া প্রকল্প প্রস্তাবে অতিরিক্ত ব্যয় দেখানোর পেছনে দুর্নীতি বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার। তাছাড়া প্রকল্পের অস্বাভাবিক ব্যয় প্রস্তাব এলে অথবা উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ সহায়তার প্রকল্প প্রস্তাবে অযৌক্তিক শর্ত আরোপ করা হলে তা অনুমোদনের বিষয়টিও ভেবে দেখা উচিত বলেই আমরা মনে করি। অভিযোগ আছে, এ দেশে সড়কসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর নির্মাণ ব্যয় অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। অথচ আমাদের শ্রম তুলনামূলক সস্তা। সেক্ষেত্রে সড়ক নির্মাণ ব্যয় কেন বেশি, স্বভাবতই সে প্রশ্ন ওঠে। আমাদের সম্পদের পরিমাণ কম, কিন্তু জনসংখ্যা বেশি। সেক্ষেত্রে অপচয় কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টিও সর্বজনবিদিত। দুর্নীতি আমাদের অন্যতম বড় সমস্যা। এটি কঠোরভাবে দমন করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার বিকল্প নেই। অনেক সময় দুর্নীতির উদ্দেশ্যেই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। কাজেই এসব ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দিতে হবে।ৎ