ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবী দালাল চক্রের হানা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪০:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মে ২০২০
  • / ১৭৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে ধূর্ত স্বেচ্ছাসেবী দালাল চক্র। নিজেদেরকে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য পরিচয় দিয়ে স্বল্পমূল্যে ওষুধ কিনে দেওয়ার কথা বলে প্রতিনিয়ত ঠকাচ্ছে সাধারণ রোগী ও তাঁদের স্বজনকে। শুক্রবার (১ মে) স্বল্পমূল্যে ওষুধ নিয়ে দেওয়ার কথা বলে এই দালাল চক্র দুই রোগীর স্বজনের থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৯০৫ টাকা। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। দালালের খপ্পরে পড়া দুই রোগীর স্বজনেরা হলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার রামনগর কলাবাড়ির কামরুন্নাহার ও পারকৃষ্ণপুর-মদনা গ্রামের সামসুন্নাহার।
জানা যায়, করোনা সংকটকে কাজে লাগিয়ে এ সংঘবদ্ধ দালাল চক্র স্বল্পমূল্যে ওষুধ কিনে দেওয়ার নাম করে ঠকিয়ে চলেছে রোগী ও তাদের স্বজনকে। জরুরি বিভাগে সেবা নেওয়া ও হাসপাতালের ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের কাছে নিজেদের স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য পরিচয় দিয়ে তারা রোগীদের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন ছিনিয়ে নিচ্ছে। পরে কৌশলে হাসপাতাল এলাকার যেকোনো একটি দোকান থেকে ওষুধ কিনে তাঁর দ্বিগুন বলে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের ১০ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন থাকা মশলেম হোসেনের স্ত্রী ভুক্তভোগী কামরুন্নাহার বলেন, স্বামীর ওষুধ কেনার জন্য টাকা নিয়ে বের হচ্ছিলেন তিনি। এমন সময় স্বল্পমূল্যে ওষুধ কিনে দেওয়ার কথা বলে দুইজন ওয়ার্ডে প্রবেশ করে। তাঁরা বলেন, করোনা মহামারিতে মানুষকে সহায়তা করছে তাঁদের সংগঠন। পরে বন্যা ফার্মেসি থেকে ৫১০ টাকার ওষুধ কিনে দিয়ে তাঁর মূল্য ১২ শ টাকা নেন তাঁরা। একই সময় একই ওয়ার্ডের ৫ নম্বর শয্যার অন্য এক রোগীর স্বজনের নিকট হতে হাতিয়ে নেন ২১৫ টাকা। এ সময় কামরুন্নাহার ও সামসুন্নাহারের সন্দেহ হলে অন্য এক ফার্মেসিতে ওষুধগুলোর মূল্য জানতে চাইলে প্রতারণার বিষয়ে নিশ্চিত হন তাঁরা। ততক্ষণে হাসপাতাল এলাকা থেকে সটকে পড়ে দালালেরা। বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতাল এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
ওয়ার্ডে দালাল চক্রের সদস্যদের সক্রিয় ভূমিকার কথা জানতে চাইলে ওই হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স নুরুন্নাহার খাতুন বলেন, বিকেল চারটার দিকে দুজন নার্সেস রুমে আসেন এবং নিজেদের স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য পরিচয় দেন। তাঁরা গরিব রোগীদের স্বল্পমূল্যে ওষুধ সরবরাহ করছে বলে জানায়। কয়েকজন গরিব রোগীকে চিহ্নিত করে দিতে বলেও তাঁকে।
এ বিষয়ে বন্যা ফার্মেসির পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুইজন ব্যক্তি তাঁদের ফার্মেসিতে বিক্রির জন্য পাইকারি দরে কিছু ওষুধ কিনতে চান। তাঁরা নিজেদেরকে ফার্মেসি দোকানের মালিক পরিচয় দিলে পাইকারি মূল্যে তিনি তাঁদের কাছে ওষুধ বিক্রি করেন। বিষয়টি তিনি এখন বুঝতে পেরেছেন। তবে এর পূর্বে তাঁর দোকানে তাঁদেরকে কখনো দেখেননি তিনি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবী দালাল চক্রের হানা

আপলোড টাইম : ০৯:৪০:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মে ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে ধূর্ত স্বেচ্ছাসেবী দালাল চক্র। নিজেদেরকে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য পরিচয় দিয়ে স্বল্পমূল্যে ওষুধ কিনে দেওয়ার কথা বলে প্রতিনিয়ত ঠকাচ্ছে সাধারণ রোগী ও তাঁদের স্বজনকে। শুক্রবার (১ মে) স্বল্পমূল্যে ওষুধ নিয়ে দেওয়ার কথা বলে এই দালাল চক্র দুই রোগীর স্বজনের থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৯০৫ টাকা। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। দালালের খপ্পরে পড়া দুই রোগীর স্বজনেরা হলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার রামনগর কলাবাড়ির কামরুন্নাহার ও পারকৃষ্ণপুর-মদনা গ্রামের সামসুন্নাহার।
জানা যায়, করোনা সংকটকে কাজে লাগিয়ে এ সংঘবদ্ধ দালাল চক্র স্বল্পমূল্যে ওষুধ কিনে দেওয়ার নাম করে ঠকিয়ে চলেছে রোগী ও তাদের স্বজনকে। জরুরি বিভাগে সেবা নেওয়া ও হাসপাতালের ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের কাছে নিজেদের স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য পরিচয় দিয়ে তারা রোগীদের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন ছিনিয়ে নিচ্ছে। পরে কৌশলে হাসপাতাল এলাকার যেকোনো একটি দোকান থেকে ওষুধ কিনে তাঁর দ্বিগুন বলে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের ১০ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন থাকা মশলেম হোসেনের স্ত্রী ভুক্তভোগী কামরুন্নাহার বলেন, স্বামীর ওষুধ কেনার জন্য টাকা নিয়ে বের হচ্ছিলেন তিনি। এমন সময় স্বল্পমূল্যে ওষুধ কিনে দেওয়ার কথা বলে দুইজন ওয়ার্ডে প্রবেশ করে। তাঁরা বলেন, করোনা মহামারিতে মানুষকে সহায়তা করছে তাঁদের সংগঠন। পরে বন্যা ফার্মেসি থেকে ৫১০ টাকার ওষুধ কিনে দিয়ে তাঁর মূল্য ১২ শ টাকা নেন তাঁরা। একই সময় একই ওয়ার্ডের ৫ নম্বর শয্যার অন্য এক রোগীর স্বজনের নিকট হতে হাতিয়ে নেন ২১৫ টাকা। এ সময় কামরুন্নাহার ও সামসুন্নাহারের সন্দেহ হলে অন্য এক ফার্মেসিতে ওষুধগুলোর মূল্য জানতে চাইলে প্রতারণার বিষয়ে নিশ্চিত হন তাঁরা। ততক্ষণে হাসপাতাল এলাকা থেকে সটকে পড়ে দালালেরা। বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতাল এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
ওয়ার্ডে দালাল চক্রের সদস্যদের সক্রিয় ভূমিকার কথা জানতে চাইলে ওই হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স নুরুন্নাহার খাতুন বলেন, বিকেল চারটার দিকে দুজন নার্সেস রুমে আসেন এবং নিজেদের স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য পরিচয় দেন। তাঁরা গরিব রোগীদের স্বল্পমূল্যে ওষুধ সরবরাহ করছে বলে জানায়। কয়েকজন গরিব রোগীকে চিহ্নিত করে দিতে বলেও তাঁকে।
এ বিষয়ে বন্যা ফার্মেসির পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুইজন ব্যক্তি তাঁদের ফার্মেসিতে বিক্রির জন্য পাইকারি দরে কিছু ওষুধ কিনতে চান। তাঁরা নিজেদেরকে ফার্মেসি দোকানের মালিক পরিচয় দিলে পাইকারি মূল্যে তিনি তাঁদের কাছে ওষুধ বিক্রি করেন। বিষয়টি তিনি এখন বুঝতে পেরেছেন। তবে এর পূর্বে তাঁর দোকানে তাঁদেরকে কখনো দেখেননি তিনি।