ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিঃ এর পাট বীজ দ্বারা উৎপাদিত : পাট ফসল ও পাটবীজ বিপণন শীর্ষক মাঠ দিবস

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৬:০৭:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অগাস্ট ২০১৭
  • / ৮৮৫ বার পড়া হয়েছে

dav

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার লোকনাথপুরে কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেডের পাটবীজ দ্বারা উৎপাদিত পাট ফসলের উপর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টার দিকে গত লোকনাথপুর হাইওয়ে সংলগ্ন তাল বাগান মাঠে ইউএসএআইডি, এভিসি প্রজেক্টের সহযোগিতায় কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেড’র আয়োজনে এ মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ্ মিন্টুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জুট স্পিনারস অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন খোকন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ প্রবীর কুমার বিশ^াস, জলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কামরুল হক মিঞাঁ, দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুফী মো: রফিকুজ্জামান, ইউএসএআইডি, এভিসি প্রজেক্ট ঢাকা’র রির্সাস এন্ড টেকনোলজি কর্মাসিয়ালাইজেশনের প্রাক্তন টিম লিডার ড. মো: সিরাজুল ইসলাম, কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: নুর আলম (লিটন), পরিচালক (অপারেশন) মুহা: আব্দুল্লাহ-আল-মামুন ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ সদস্য মুন্সী সিরাজুল ইসলাম।
শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন কাদিপুর পুলপাড়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম মো. তারিকুল ইসলাম। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন অত্র কোম্পানী’র প্রোডাকশন ইনচার্জ কৃষিবিদ নাজিম উদ্দীন। মাঠ দিবসের উদ্দেশ্য বিষয়ে বক্তব্য রাখেন অত্র কোম্পানী’র পরিচালক অপারেশন মুহা: আব্দুল্লাহ-আল-মামুন। এরপর প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিসহ সকল অংশগ্রহণকারী কৃষক, ডিলার/রিটেইলার কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেডের পাট বীজ দ্বারা উৎপাদিত পাট ফসলের প্রর্দশনী প্লট পরিদর্শন করেন। প্লট পরিদর্শন শেষে বক্তব্য রাখেন, কনিকা পাটবীজ ব্যবহারকারী কৃষক ইদ্রিস আলী ও রহমতুল্লাহ রনি। কৃষক ইদ্দ্রিস আলী বলেন, প্রতি বছর ভারতের পাট বীজ দিয়ে পাট চাষ করি কিন্তু এ বছর ১২ বিঘা পাট চাষের মধ্যে অত্র কোম্পানী’র পাটবীজ দিয়ে ১ বিঘা পাট চাষ করেছিলাম। কিন্তু একই সময়ে ভারত ও কনিকার পাটবীজ জমিতে বপন করে ভারতের পাট বীজের তুলনায় কনিকার পাটের উচ্চতা ১৪ ফুট হয়েছিল। আমি এবছর (৩৩ শতাংশ) জমিতে কনিকার পাটবীজ দিয়ে উৎপাদিত পাট ফসল ৯০ দিনে কর্তন করে ১২ মণ ফলন পেয়েছি এবং একই সময়ে ভারতে পাট ফসলে ১০ থেকে ১০.৫ মণ ফলন পেয়েছি। যদি উক্ত ফসল ১২০ দিন রাখতাম তাহলে আমার বিশ^াস কনিকার পাট ফসলে অনায়াসে ১৪-১৫ মণ ফলন পাওয়া যেত।  এরপর বক্তব্য রাখেন দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুফী মো. রফিকুজ্জামান। তিনি বক্তব্যে বলেন, আমার জানা মতে এতদাঞ্চলে বেসরকারীভাবে কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেড গুনগত মানসম্পন্ন সকল প্রকার বীজের মধ্যে পাটবীজ, বীজআলু, ধানবীজসহ সবজী বীজ উৎপাদন ও বিপণন করছে। সরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অত্র কোম্পানী সঠিক জেনারেশনের বীজ উৎপাদন করে ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের নিকট সরবরাহ করছে। আমরা জানি যে আমাদের দেশের মাটিতে ৫% জৈব পদার্থ থাকার কথা কিন্তু সেক্ষেত্রে জমিতে জৈব পদার্থের পরিমান ১%-এর নিচে নেমে গেছে। অত্র কোম্পানী বীজ উৎপাদনের পাশাপাশি মাটির স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য এতদাঞ্চলে বেসরকারী ভাবে সবচেয়ে বড় জৈব সারের প্লান্ট তৈরি করেছে। আমি এই প্রতিষ্ঠানের সকল উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
তারপর ইউএসএআইডি, এভিসি প্রজেক্ট-ঢাকা’র রির্সাস এন্ড টেকনোলজি কর্মাসিয়ালাইজেশনের প্রাক্তন টিম লিডার ড. মো: সিরাজুল ইসলাম তার বক্তেব্য বলেন, আমরা পাটবীজ উৎপাদনের জন্য ২০১৫ সালে বড় বড় কর্পোরেট কোম্পানী’র কাছে গিয়েছিলাম কিন্তু কোন কোম্পানী’ই সাহস করে পাটবীজ উৎপাদন করতে চাই নাই। বাংলাদেশের কৃষকের কথা চিন্তা করে পরীক্ষামুলক ভাবে শুধুমাত্র  কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেড গুনগত মানসম্পন্ন পাটবীজ উৎপাদনে এগিয়ে এসেছিল এবং পাটবীজ উৎপাদন অব্যাহত সহ প্রতি বছর পাটবীজ উৎপাদন বৃদ্ধি করছেন। আমাদের দেশের পাটের আঁশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা রয়েছে। এদেশের পাটের আঁশ দিয়ে বড় বড় অটো মোবাইল প্রতিষ্ঠান গাড়ীর ড্যাশবোড তৈরি করছে। এছাড়াও সোনালী আঁশের বহুবিধ ব্যবহার হচ্ছে। এরপর জেলা পরিষদের সদস্য জনাব মুন্সী সিরাজুল ইসলাম বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সরকার পাট শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য পাটের বহুবিধ ব্যবহারসহ নানা পরিকল্পনা গ্রহন করছে। কনিকা পাটবীজ উৎপাদিত পাট ফসল দেখে প্রশংসা করেন এবং সকলকে দেশিও পাটবীজ ব্যবহারে উদ্যোগ গ্রহন করার বিষয়ে পরামর্শ দেন।
কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার বক্তব্য বলেন, কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেডের উৎপাদিত বীজআলু, ধানবীজ, পাটবীজসহ ভুট্টাবীজ বাংলাদেশের ২৩টি জেলায় ডিলারদের মাধ্যমে বিপণন করছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের ভিত্তি মানের পাটবীজ দ্বারা উৎপাদিত পাট ফসল আমরা সরেজমিনে দেখলাম। এই পাটের গোড়ার দিকে কোন হুল জাতীয় কাটা হয়নি এবং পাটের ছালও মোটা বিধায়, ভাল ফলন হবে বলে আশা করছি। আর বেশিদিন দুরে নয় পাট আমাদের সোনালী গৌরব ফিরিয়ে আনবেই। এরপর উন্মুক্ত আলোচনায় পাটবীজ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি এ বছর ভারতের পাশাপাশি কনিকার পাটবীজ বিপণন করেছিলাম কিন্তু যে সমস্ত কৃষককে দিয়েছিলাম তাদের ফলাফল খুবই ভাল হয়েছে। জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কৃষিবিদ মো: কামরুল হক মিঞাঁ বক্তব্যে বলেন অত্র কোম্পানী সকল প্রকার উৎপাদিত বীজআলু, ধানবীজ ও পাটবীজের সরকারী ভাবে ট্যাগ প্রদান করে থাকি । তিনি আরো বলেন আমি চুয়াডাঙ্গা জেলায় বীজ প্রত্যয়নের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অত্র কোম্পানীর উৎপাদিত বীজ ফসলের প্লট পরিদর্শনসহ সকল নিয়ম কানুন মেনে বীজের ট্যাগ প্রদান করে থাকি। এ পর্যন্ত আমার জানামতে কনিকা বীজ ব্যবহার করে কোন চাষী ঠকেনি বরং ভাল ফলন পেয়েছে। তেমনি ভাবে কনিকার পাটবীজ বিশে^র মধ্যে উৎকৃষ্ট মানের। এরপর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর-চুয়াডাঙ্গা’র উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত), কৃষিবিদ প্রবীর কুমার বিশ^াস তার বক্তব্যে বলেন, কনিকা বীজের গুনগতমান সম্পর্কে আমি যতদুর জানি খুবই গুনগত মানসম্পন্ন। দেশিও পাটবীজের ব্যবহার বৃদ্ধিতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন খোকন তার বক্তব্যে বলেন, কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেড যে এতদাঞ্চলে বীজ উৎপাদনে অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে আমার আগে জানা ছিল না। আমি অত্র প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে যতটুকু জানতে পেরেছি কৃষকদের গুনগতমান সম্পন্ন বীজ সরবরাহ করে বেসরকারী ভাবে ভাল কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, বেসরকারী ভাবে বাংলাদেশে প্রথম কোম্পানী হিসাবে পাটবীজ উৎপাদন করছে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি এবং জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কৃষি বিষয়ে কোন সহযোগিতা করার থাকলে আমরা করব এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণের জন্য পরিকল্পনা গ্রহন করব। বাংলাদেশ সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। সেই লক্ষ্যে কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসুচি গ্রহন করার সুযোগ রয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই কোম্পানীকে ধন্যবাদ জানাই পাট ফসলের মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।
অনুষ্ঠানের সভাপতি হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ্ মিন্টু বক্তব্য বলেন, অত্র কোম্পানী সকল প্রকার বীজসহ জৈব সার উৎপাদন ও বিপণন করছে। অত্র কোম্পানী’র সকল প্রকার বীজসহ জৈব সার ব্যবহার করার জন্য সকলকে আহবান জানান। সার্বিক সঞ্চালনায় ছিলেন অত্র কোম্পানীর ম্যানেজার মমিনুল ইসলাম। ব্যবস্থাপনায় ছিলেন অত্র কোম্পানী’র কো-অর্ডিনেটর মাবুদ সরকার, আরাফাত রহমান, সিহাব উদ্দীন কর্মকর্তাবৃন্দ প্রমুখ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গায় কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিঃ এর পাট বীজ দ্বারা উৎপাদিত : পাট ফসল ও পাটবীজ বিপণন শীর্ষক মাঠ দিবস

আপলোড টাইম : ০৬:০৭:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অগাস্ট ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার লোকনাথপুরে কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেডের পাটবীজ দ্বারা উৎপাদিত পাট ফসলের উপর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টার দিকে গত লোকনাথপুর হাইওয়ে সংলগ্ন তাল বাগান মাঠে ইউএসএআইডি, এভিসি প্রজেক্টের সহযোগিতায় কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেড’র আয়োজনে এ মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ্ মিন্টুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জুট স্পিনারস অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন খোকন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ প্রবীর কুমার বিশ^াস, জলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কামরুল হক মিঞাঁ, দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুফী মো: রফিকুজ্জামান, ইউএসএআইডি, এভিসি প্রজেক্ট ঢাকা’র রির্সাস এন্ড টেকনোলজি কর্মাসিয়ালাইজেশনের প্রাক্তন টিম লিডার ড. মো: সিরাজুল ইসলাম, কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: নুর আলম (লিটন), পরিচালক (অপারেশন) মুহা: আব্দুল্লাহ-আল-মামুন ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ সদস্য মুন্সী সিরাজুল ইসলাম।
শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন কাদিপুর পুলপাড়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম মো. তারিকুল ইসলাম। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন অত্র কোম্পানী’র প্রোডাকশন ইনচার্জ কৃষিবিদ নাজিম উদ্দীন। মাঠ দিবসের উদ্দেশ্য বিষয়ে বক্তব্য রাখেন অত্র কোম্পানী’র পরিচালক অপারেশন মুহা: আব্দুল্লাহ-আল-মামুন। এরপর প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিসহ সকল অংশগ্রহণকারী কৃষক, ডিলার/রিটেইলার কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেডের পাট বীজ দ্বারা উৎপাদিত পাট ফসলের প্রর্দশনী প্লট পরিদর্শন করেন। প্লট পরিদর্শন শেষে বক্তব্য রাখেন, কনিকা পাটবীজ ব্যবহারকারী কৃষক ইদ্রিস আলী ও রহমতুল্লাহ রনি। কৃষক ইদ্দ্রিস আলী বলেন, প্রতি বছর ভারতের পাট বীজ দিয়ে পাট চাষ করি কিন্তু এ বছর ১২ বিঘা পাট চাষের মধ্যে অত্র কোম্পানী’র পাটবীজ দিয়ে ১ বিঘা পাট চাষ করেছিলাম। কিন্তু একই সময়ে ভারত ও কনিকার পাটবীজ জমিতে বপন করে ভারতের পাট বীজের তুলনায় কনিকার পাটের উচ্চতা ১৪ ফুট হয়েছিল। আমি এবছর (৩৩ শতাংশ) জমিতে কনিকার পাটবীজ দিয়ে উৎপাদিত পাট ফসল ৯০ দিনে কর্তন করে ১২ মণ ফলন পেয়েছি এবং একই সময়ে ভারতে পাট ফসলে ১০ থেকে ১০.৫ মণ ফলন পেয়েছি। যদি উক্ত ফসল ১২০ দিন রাখতাম তাহলে আমার বিশ^াস কনিকার পাট ফসলে অনায়াসে ১৪-১৫ মণ ফলন পাওয়া যেত।  এরপর বক্তব্য রাখেন দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুফী মো. রফিকুজ্জামান। তিনি বক্তব্যে বলেন, আমার জানা মতে এতদাঞ্চলে বেসরকারীভাবে কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেড গুনগত মানসম্পন্ন সকল প্রকার বীজের মধ্যে পাটবীজ, বীজআলু, ধানবীজসহ সবজী বীজ উৎপাদন ও বিপণন করছে। সরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অত্র কোম্পানী সঠিক জেনারেশনের বীজ উৎপাদন করে ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের নিকট সরবরাহ করছে। আমরা জানি যে আমাদের দেশের মাটিতে ৫% জৈব পদার্থ থাকার কথা কিন্তু সেক্ষেত্রে জমিতে জৈব পদার্থের পরিমান ১%-এর নিচে নেমে গেছে। অত্র কোম্পানী বীজ উৎপাদনের পাশাপাশি মাটির স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য এতদাঞ্চলে বেসরকারী ভাবে সবচেয়ে বড় জৈব সারের প্লান্ট তৈরি করেছে। আমি এই প্রতিষ্ঠানের সকল উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
তারপর ইউএসএআইডি, এভিসি প্রজেক্ট-ঢাকা’র রির্সাস এন্ড টেকনোলজি কর্মাসিয়ালাইজেশনের প্রাক্তন টিম লিডার ড. মো: সিরাজুল ইসলাম তার বক্তেব্য বলেন, আমরা পাটবীজ উৎপাদনের জন্য ২০১৫ সালে বড় বড় কর্পোরেট কোম্পানী’র কাছে গিয়েছিলাম কিন্তু কোন কোম্পানী’ই সাহস করে পাটবীজ উৎপাদন করতে চাই নাই। বাংলাদেশের কৃষকের কথা চিন্তা করে পরীক্ষামুলক ভাবে শুধুমাত্র  কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেড গুনগত মানসম্পন্ন পাটবীজ উৎপাদনে এগিয়ে এসেছিল এবং পাটবীজ উৎপাদন অব্যাহত সহ প্রতি বছর পাটবীজ উৎপাদন বৃদ্ধি করছেন। আমাদের দেশের পাটের আঁশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা রয়েছে। এদেশের পাটের আঁশ দিয়ে বড় বড় অটো মোবাইল প্রতিষ্ঠান গাড়ীর ড্যাশবোড তৈরি করছে। এছাড়াও সোনালী আঁশের বহুবিধ ব্যবহার হচ্ছে। এরপর জেলা পরিষদের সদস্য জনাব মুন্সী সিরাজুল ইসলাম বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সরকার পাট শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য পাটের বহুবিধ ব্যবহারসহ নানা পরিকল্পনা গ্রহন করছে। কনিকা পাটবীজ উৎপাদিত পাট ফসল দেখে প্রশংসা করেন এবং সকলকে দেশিও পাটবীজ ব্যবহারে উদ্যোগ গ্রহন করার বিষয়ে পরামর্শ দেন।
কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার বক্তব্য বলেন, কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেডের উৎপাদিত বীজআলু, ধানবীজ, পাটবীজসহ ভুট্টাবীজ বাংলাদেশের ২৩টি জেলায় ডিলারদের মাধ্যমে বিপণন করছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের ভিত্তি মানের পাটবীজ দ্বারা উৎপাদিত পাট ফসল আমরা সরেজমিনে দেখলাম। এই পাটের গোড়ার দিকে কোন হুল জাতীয় কাটা হয়নি এবং পাটের ছালও মোটা বিধায়, ভাল ফলন হবে বলে আশা করছি। আর বেশিদিন দুরে নয় পাট আমাদের সোনালী গৌরব ফিরিয়ে আনবেই। এরপর উন্মুক্ত আলোচনায় পাটবীজ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি এ বছর ভারতের পাশাপাশি কনিকার পাটবীজ বিপণন করেছিলাম কিন্তু যে সমস্ত কৃষককে দিয়েছিলাম তাদের ফলাফল খুবই ভাল হয়েছে। জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কৃষিবিদ মো: কামরুল হক মিঞাঁ বক্তব্যে বলেন অত্র কোম্পানী সকল প্রকার উৎপাদিত বীজআলু, ধানবীজ ও পাটবীজের সরকারী ভাবে ট্যাগ প্রদান করে থাকি । তিনি আরো বলেন আমি চুয়াডাঙ্গা জেলায় বীজ প্রত্যয়নের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অত্র কোম্পানীর উৎপাদিত বীজ ফসলের প্লট পরিদর্শনসহ সকল নিয়ম কানুন মেনে বীজের ট্যাগ প্রদান করে থাকি। এ পর্যন্ত আমার জানামতে কনিকা বীজ ব্যবহার করে কোন চাষী ঠকেনি বরং ভাল ফলন পেয়েছে। তেমনি ভাবে কনিকার পাটবীজ বিশে^র মধ্যে উৎকৃষ্ট মানের। এরপর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর-চুয়াডাঙ্গা’র উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত), কৃষিবিদ প্রবীর কুমার বিশ^াস তার বক্তব্যে বলেন, কনিকা বীজের গুনগতমান সম্পর্কে আমি যতদুর জানি খুবই গুনগত মানসম্পন্ন। দেশিও পাটবীজের ব্যবহার বৃদ্ধিতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন খোকন তার বক্তব্যে বলেন, কনিকা সীড কোম্পানী (প্রা:) লিমিটেড যে এতদাঞ্চলে বীজ উৎপাদনে অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে আমার আগে জানা ছিল না। আমি অত্র প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে যতটুকু জানতে পেরেছি কৃষকদের গুনগতমান সম্পন্ন বীজ সরবরাহ করে বেসরকারী ভাবে ভাল কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, বেসরকারী ভাবে বাংলাদেশে প্রথম কোম্পানী হিসাবে পাটবীজ উৎপাদন করছে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি এবং জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কৃষি বিষয়ে কোন সহযোগিতা করার থাকলে আমরা করব এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণের জন্য পরিকল্পনা গ্রহন করব। বাংলাদেশ সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। সেই লক্ষ্যে কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসুচি গ্রহন করার সুযোগ রয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই কোম্পানীকে ধন্যবাদ জানাই পাট ফসলের মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।
অনুষ্ঠানের সভাপতি হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ্ মিন্টু বক্তব্য বলেন, অত্র কোম্পানী সকল প্রকার বীজসহ জৈব সার উৎপাদন ও বিপণন করছে। অত্র কোম্পানী’র সকল প্রকার বীজসহ জৈব সার ব্যবহার করার জন্য সকলকে আহবান জানান। সার্বিক সঞ্চালনায় ছিলেন অত্র কোম্পানীর ম্যানেজার মমিনুল ইসলাম। ব্যবস্থাপনায় ছিলেন অত্র কোম্পানী’র কো-অর্ডিনেটর মাবুদ সরকার, আরাফাত রহমান, সিহাব উদ্দীন কর্মকর্তাবৃন্দ প্রমুখ।