ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় উদ্বোধনের আগেই বন্ধ এসটিসি ব্যাংক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০২১
  • / ১৫৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদ না নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
উদ্বোধনের আগেই বন্ধ করে দেওয়া হলো স্মল ট্রেডার্স কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড (এসটিসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের চুয়াডাঙ্গা শাখাকে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের কিছু আগেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে ওই ব্যাংকের উদ্বোধন অনুষ্ঠান না করার আদেশ দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না থাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারার কারণে এই আদেশ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের একাডেমি মোড়ের সারা ভবনের তৃতীয় তলায় আড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসটিসি ব্যাংক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ৮১তম শাখার উদ্বোধন করার কথা ছিল। উদ্বোধনের সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিল তারা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ইতোমধ্যে অতিথিদের অনেকেই উপস্থিত হন। তবে ঠিক বেলা ১১টার কিছুমাত্র আগেই উদ্বোধনস্থলে এসে উপস্থিত হন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া মমতাজ। তিনি ব্যাংকটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করার মৌখিক আদেশ দেন। ব্যাংকটির ব্যানার নামিয়ে ফেলে অতিদ্রুত জেলা প্রশাসকের নিকট দেখা করার জন্য বলে আসেন।
এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্টেট সুরাইয়া মমতাজ বলেন, ‘ব্যাংকটির বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনসহ লিগ্যাল কোনো কাগজপত্র নেই। আর সমবায় অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নেওয়া প্রতিষ্ঠান ব্যাংক হিসেবে চলতে পারে না। আপাতত আমি উদ্বোধন অনুষ্ঠানসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। তাদেরকে সকল কাগজপত্র নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে দেখা করার জন্য বলেছি।’
এদিকে, এ ঘটনার পরও উদ্বোধনস্থলে বেশ কয়েকজন মানুষকে দেখতে পাওয়া গেছে। প্রায় এক ঘণ্টা পর এসটিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পরিচয় দানকারী খালিদ হাসান লিটু, পরিচালক (প্রশাসন) মির্জা সোহাগ মামুন, সিনিয়র জিএম অ্যান্ড ডিভিশনাল ইনচার্জ (খুলনা) আরাফাত নজীব ও চুয়াডাঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপক শেখ পিণ্টু সেখানে উপস্থিত হন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ অমান্য করে মঞ্চে তাঁরা একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। আলোচনায় এসটিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পরিচয় দানকারী খালিদ হাসান লিটু বলেন, ‘আমাদের ভুল হয়েছিল যে চুয়াডাঙ্গার ডিসি মহোদয়কে অবগত করানো হয়নি। যার কারণে একটু সমস্যা হয়েছে। ওনার সঙ্গে আমরা আলোচনা করে পুনরায় উদ্বোধন কার্যক্রমের বিষয়ে জানাব।’
এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘সমবায় ব্যাংকের আইন অনুযায়ী সেখান থেকে অনুমোদন নিয়ে কেউ ব্যাংক নামে কার্যক্রম চালাতে পারবে না। বিষয়টি আমার নজরে আসায় আমি কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। তাঁদেরকে কাগজপত্রসহ অফিসে আসার জন্য বলেছি। তা ছাড়া, আমি জেলা সমবায় অফিসারকে এবিষয়ে তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। সবকিছু দেখে যাচাই-বাছাইসহ প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত জানাব।’
এদিকে, এসটিসি ব্যাংক নামের এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় নানা রকম অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকটি জেলা ও উপজেলা শহরে তাদের অফিস সিলগালাসহ কার্যক্রমকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও চাকরি দেওয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও আছে এসটিসি ব্যাংকের বিরুদ্ধে। মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়ে ও সমবায় অধিদপ্তরের বিধিবিধান লঙ্ঘন করে অর্থ লেনদেন করার অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গায় উদ্বোধনের আগেই বন্ধ এসটিসি ব্যাংক

আপলোড টাইম : ১০:১৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০২১

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদ না নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
উদ্বোধনের আগেই বন্ধ করে দেওয়া হলো স্মল ট্রেডার্স কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড (এসটিসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের চুয়াডাঙ্গা শাখাকে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের কিছু আগেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে ওই ব্যাংকের উদ্বোধন অনুষ্ঠান না করার আদেশ দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না থাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারার কারণে এই আদেশ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের একাডেমি মোড়ের সারা ভবনের তৃতীয় তলায় আড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসটিসি ব্যাংক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ৮১তম শাখার উদ্বোধন করার কথা ছিল। উদ্বোধনের সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিল তারা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ইতোমধ্যে অতিথিদের অনেকেই উপস্থিত হন। তবে ঠিক বেলা ১১টার কিছুমাত্র আগেই উদ্বোধনস্থলে এসে উপস্থিত হন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া মমতাজ। তিনি ব্যাংকটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করার মৌখিক আদেশ দেন। ব্যাংকটির ব্যানার নামিয়ে ফেলে অতিদ্রুত জেলা প্রশাসকের নিকট দেখা করার জন্য বলে আসেন।
এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্টেট সুরাইয়া মমতাজ বলেন, ‘ব্যাংকটির বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনসহ লিগ্যাল কোনো কাগজপত্র নেই। আর সমবায় অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নেওয়া প্রতিষ্ঠান ব্যাংক হিসেবে চলতে পারে না। আপাতত আমি উদ্বোধন অনুষ্ঠানসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। তাদেরকে সকল কাগজপত্র নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে দেখা করার জন্য বলেছি।’
এদিকে, এ ঘটনার পরও উদ্বোধনস্থলে বেশ কয়েকজন মানুষকে দেখতে পাওয়া গেছে। প্রায় এক ঘণ্টা পর এসটিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পরিচয় দানকারী খালিদ হাসান লিটু, পরিচালক (প্রশাসন) মির্জা সোহাগ মামুন, সিনিয়র জিএম অ্যান্ড ডিভিশনাল ইনচার্জ (খুলনা) আরাফাত নজীব ও চুয়াডাঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপক শেখ পিণ্টু সেখানে উপস্থিত হন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ অমান্য করে মঞ্চে তাঁরা একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। আলোচনায় এসটিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পরিচয় দানকারী খালিদ হাসান লিটু বলেন, ‘আমাদের ভুল হয়েছিল যে চুয়াডাঙ্গার ডিসি মহোদয়কে অবগত করানো হয়নি। যার কারণে একটু সমস্যা হয়েছে। ওনার সঙ্গে আমরা আলোচনা করে পুনরায় উদ্বোধন কার্যক্রমের বিষয়ে জানাব।’
এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘সমবায় ব্যাংকের আইন অনুযায়ী সেখান থেকে অনুমোদন নিয়ে কেউ ব্যাংক নামে কার্যক্রম চালাতে পারবে না। বিষয়টি আমার নজরে আসায় আমি কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। তাঁদেরকে কাগজপত্রসহ অফিসে আসার জন্য বলেছি। তা ছাড়া, আমি জেলা সমবায় অফিসারকে এবিষয়ে তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। সবকিছু দেখে যাচাই-বাছাইসহ প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত জানাব।’
এদিকে, এসটিসি ব্যাংক নামের এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় নানা রকম অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকটি জেলা ও উপজেলা শহরে তাদের অফিস সিলগালাসহ কার্যক্রমকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও চাকরি দেওয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও আছে এসটিসি ব্যাংকের বিরুদ্ধে। মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়ে ও সমবায় অধিদপ্তরের বিধিবিধান লঙ্ঘন করে অর্থ লেনদেন করার অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে।