ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগে দুজন বহিষ্কার!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৬:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৯
  • / ৩৩৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার নামে রোগীদের নিকট থেকে জোরপূর্বক অর্থ দাবি অভিযোগের সত্যতা মেলাই বড় আজাদ ও সজল নামের দুই স্বেচ্ছাসেবীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তাঁদের দুজনকে সাময়িক বহিষ্কার করেন। এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নেওয়া ছাড়া তাঁদের হাসপাতালে ঢোকাও নিষিদ্ধ করেছেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে আলমডাঙ্গা উপজেলার খুদিয়াখালি গ্রামের ঈদগাঁপাড়ার বিপ্লবের শিশুকন্যা তাবাচ্ছুম আলোর (৩) কানে একটি রাবার ঢোকে। তিনি ওই রাতে মেয়েকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে রবারটি বের করে দেওয়ার জন্য নগদ ৫ হাজার টাকা দাবি করেন ওই দুই স্বেচ্ছাসেবী আজাদ ও স্বজল।
শিশুটির পিতা বিপ্লব প্রতিবেদককে বলেন, রাতে জরুরি বিভাগে আমার মেয়েকে নেওয়া হলে ডাক্তার রাবারটি বের করার জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের বলেন। স্বেচ্ছাসেবীরা জরুরি বিভাগের মধ্যে একটি রুমে আমাদের ঢুকিয়ে নগদ ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ২ হাজার টাকা হলেই কাজ করে দেবেন বলে জানান স্বেচ্ছাসেবী আজাদ ও স্বজল। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁরা বলেন, এখানে চিকিৎসা হবে না। কোনো কানের ডাক্তার, রাজশাহী অথবা ঢাকাতে নিয়ে যান।’ পরে বিপ্লব শিশু তাবাচ্ছুমকে নিয়ে চিকিৎসাসেবা না নিয়েই বাড়িতে চলে যান। পরদিন সকালে মুন্সিগঞ্জ এলাকার একটি চিকিৎসকের নিকট থেকে বিনা মূল্যে তাবাচ্ছুমের কানের মধ্যে থাকা রাবারটি বের করা হয়।
এদিকে ওই রাতেই আরও দুই রোগীর নিকট থেকে হাতভাঙা ব্যান্ডেজ বাবদ নগদ সাত শ টাকা দাবি করেন আজাদ ও স্বজল। তাঁদের কাছে টাকা না থাকায় জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসকের নিকট বিষয়টি জানালে তৎক্ষণিক বিনা মূল্যে সেবা প্রদান করা হয়। সাধারণত জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের আড়ালেই রোগীদের পাশের ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করা হয়। এ ছাড়াও হাসপাতালের কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী মাদকাসক্ত বলেও গোপন সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে দীর্ঘদিন যাবৎ জরুরি বিভাগের স্বেচ্ছাসেবীদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের অভিযোগ থাকলেও চিকিৎসার খাতিরে প্রায় কেউই তেমন মুখ খোলেন না। এ বিষয়ে এর আগেও স্বেচ্ছাসেবীদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলেও বন্ধ হয়নি তাঁদের এসব কর্মকা-।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, ‘আমি বিষয়টি শোনার পর তা প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ওই দুই স্বেচ্ছাসেবীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।’ তবে এ বিষয়ে আরও তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গায় অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগে দুজন বহিষ্কার!

আপলোড টাইম : ১০:৫৬:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার নামে রোগীদের নিকট থেকে জোরপূর্বক অর্থ দাবি অভিযোগের সত্যতা মেলাই বড় আজাদ ও সজল নামের দুই স্বেচ্ছাসেবীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তাঁদের দুজনকে সাময়িক বহিষ্কার করেন। এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নেওয়া ছাড়া তাঁদের হাসপাতালে ঢোকাও নিষিদ্ধ করেছেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে আলমডাঙ্গা উপজেলার খুদিয়াখালি গ্রামের ঈদগাঁপাড়ার বিপ্লবের শিশুকন্যা তাবাচ্ছুম আলোর (৩) কানে একটি রাবার ঢোকে। তিনি ওই রাতে মেয়েকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে রবারটি বের করে দেওয়ার জন্য নগদ ৫ হাজার টাকা দাবি করেন ওই দুই স্বেচ্ছাসেবী আজাদ ও স্বজল।
শিশুটির পিতা বিপ্লব প্রতিবেদককে বলেন, রাতে জরুরি বিভাগে আমার মেয়েকে নেওয়া হলে ডাক্তার রাবারটি বের করার জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের বলেন। স্বেচ্ছাসেবীরা জরুরি বিভাগের মধ্যে একটি রুমে আমাদের ঢুকিয়ে নগদ ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ২ হাজার টাকা হলেই কাজ করে দেবেন বলে জানান স্বেচ্ছাসেবী আজাদ ও স্বজল। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁরা বলেন, এখানে চিকিৎসা হবে না। কোনো কানের ডাক্তার, রাজশাহী অথবা ঢাকাতে নিয়ে যান।’ পরে বিপ্লব শিশু তাবাচ্ছুমকে নিয়ে চিকিৎসাসেবা না নিয়েই বাড়িতে চলে যান। পরদিন সকালে মুন্সিগঞ্জ এলাকার একটি চিকিৎসকের নিকট থেকে বিনা মূল্যে তাবাচ্ছুমের কানের মধ্যে থাকা রাবারটি বের করা হয়।
এদিকে ওই রাতেই আরও দুই রোগীর নিকট থেকে হাতভাঙা ব্যান্ডেজ বাবদ নগদ সাত শ টাকা দাবি করেন আজাদ ও স্বজল। তাঁদের কাছে টাকা না থাকায় জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসকের নিকট বিষয়টি জানালে তৎক্ষণিক বিনা মূল্যে সেবা প্রদান করা হয়। সাধারণত জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের আড়ালেই রোগীদের পাশের ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করা হয়। এ ছাড়াও হাসপাতালের কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী মাদকাসক্ত বলেও গোপন সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে দীর্ঘদিন যাবৎ জরুরি বিভাগের স্বেচ্ছাসেবীদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের অভিযোগ থাকলেও চিকিৎসার খাতিরে প্রায় কেউই তেমন মুখ খোলেন না। এ বিষয়ে এর আগেও স্বেচ্ছাসেবীদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলেও বন্ধ হয়নি তাঁদের এসব কর্মকা-।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, ‘আমি বিষয়টি শোনার পর তা প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ওই দুই স্বেচ্ছাসেবীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।’ তবে এ বিষয়ে আরও তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।