ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গার সরিষাডাঙ্গায় শিশু অপহরণ চেষ্টার গুজব : অপহরকদের পেলেন না গ্রামবাসী : জীবননগরের রায়পুরে সন্দেহের বশে দুই প্রতিবন্ধীকে গণধোলাই

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৩০:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০১৭
  • / ২৯০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার সরিষাডাঙ্গায় শিশু অপহরণ চেষ্টার গুজব রটলেও সারাগ্রাম খুজে একজন অপহরণকারীরও দেখা পাননি গ্রামবাসী। এদিকে, জীবননগরের রায়পুরে অপহরণকারী সন্দেহে এক বাক-প্রতিবন্ধী এবং এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে বেধড়ক মারপিট করে স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য এবং সাংবাদিকদের সহযোহিতায় দুই প্রতিবন্ধীকে জনতার কাছ থেকে উদ্ধার করে নিরাপদে নেয়া হয়।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার সরিষাডাঙ্গা গ্রাম থেকে সাত বছরের শিশুকণ্যাকে অপহরণ চেষ্টার গুজব রটে। গতকাল সন্ধ্যার পর গুজব শোনা যায় বড়মসজিদপাড়ার লালনের স্ত্রী তার মেয়েকে রেখে পাশের বাড়িতে যান। এই সুযোগে বোরকা পড়া একজন বাড়িতে ঢুকে ওই শিশুকে বাড়ির পাশে বাঁশবাগানে নিতে গেলে চিৎকার দেয় সে। এসময় চিৎকার শুনে পাশের বাড়িতে থাকা তার মা ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা ছুটে আসে। অবস্থা বেগতিক দেখে পালিয়ে যায় বোরকা পড়া ওই ব্যাক্তি। এসময় বাড়ির অদূরে থাকা আরও দুইজন পার্শ্ববর্তি ইটভাটার দিকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে তটস্থ রয়েছে গ্রামবাসী। লাঠিসোঁটা নিয়ে গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে অপহরণকারীদের খুজে বেড়ায়। একইসাথে পুলিশের কঠোর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, জীবননগরের রায়পুরে অপহরণকারী সন্দেহে দুই প্রতিবন্ধীকে গণধোলাই দিয়েছে এলাকাবাসী। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রায়পুর গ্রাামের হুদাপাড়ায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো ১০/১২ বছর বয়সী এক শিশু। এসময় বাক প্রতিবন্ধী বয়ষ্ক এক ভিক্ষুক ওই শিশুর কাছে গেলে আকস্মিক ছেলেধরা বলে চিৎকার দেয় সে। এসময় একই এলাকার রহমের ছেলে রিপন ও তাঁরাচান মিয়ার ছেলে কালামসহ কয়েক যুবক ওই ভিক্ষুককে নারী ও শিশু পাচারকারী সন্দেহে লাঠি ও বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে রায়পুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য আশাদুল ইসলাম ওই বাক প্রতিবন্ধি ভিক্ষুককে কৌশলে জনগণের কাছে থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আটকে রাখেন।
অপরদিকে, বেলা ১১টার দিকে একই ইউনিয়নের রায়পুর বাজারে আসেন যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের মানসিক প্রতিবন্ধী আওরঙ্গজেব মিঠু (৩৫)। তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে বাড়িতে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। বাড়ি থেকে বেরিয়ে সে জীবননগরের রায়পুর বাজারে আসলে স্থানীয়রা তাকে নারী ও শিশু অপহরণকারী সন্দেহে গণধোলাই দেয়। গণধোলাইয়ের সময়ও তার হাতে শিকল বাধা অবস্থায় ছিলো। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানেরসহ সাংবাদিকদের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে নিরাপদে রাখা হয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান তাহাজ্জাত হোসেন মীর্জা বলেন, তারা কেউ অপহরণকারী নয়, একজন মানসিক প্রতিবন্ধি ও আরেকজন বাক প্রতিবন্ধি ভিক্ষুক। তারা নারী ও শিশু অপহরণের সাথে জড়িতও নয়। এটা শুধুমাত্র গুজব ছাড়া আর কিছুই না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গার সরিষাডাঙ্গায় শিশু অপহরণ চেষ্টার গুজব : অপহরকদের পেলেন না গ্রামবাসী : জীবননগরের রায়পুরে সন্দেহের বশে দুই প্রতিবন্ধীকে গণধোলাই

আপলোড টাইম : ০৪:৩০:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার সরিষাডাঙ্গায় শিশু অপহরণ চেষ্টার গুজব রটলেও সারাগ্রাম খুজে একজন অপহরণকারীরও দেখা পাননি গ্রামবাসী। এদিকে, জীবননগরের রায়পুরে অপহরণকারী সন্দেহে এক বাক-প্রতিবন্ধী এবং এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে বেধড়ক মারপিট করে স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য এবং সাংবাদিকদের সহযোহিতায় দুই প্রতিবন্ধীকে জনতার কাছ থেকে উদ্ধার করে নিরাপদে নেয়া হয়।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার সরিষাডাঙ্গা গ্রাম থেকে সাত বছরের শিশুকণ্যাকে অপহরণ চেষ্টার গুজব রটে। গতকাল সন্ধ্যার পর গুজব শোনা যায় বড়মসজিদপাড়ার লালনের স্ত্রী তার মেয়েকে রেখে পাশের বাড়িতে যান। এই সুযোগে বোরকা পড়া একজন বাড়িতে ঢুকে ওই শিশুকে বাড়ির পাশে বাঁশবাগানে নিতে গেলে চিৎকার দেয় সে। এসময় চিৎকার শুনে পাশের বাড়িতে থাকা তার মা ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা ছুটে আসে। অবস্থা বেগতিক দেখে পালিয়ে যায় বোরকা পড়া ওই ব্যাক্তি। এসময় বাড়ির অদূরে থাকা আরও দুইজন পার্শ্ববর্তি ইটভাটার দিকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে তটস্থ রয়েছে গ্রামবাসী। লাঠিসোঁটা নিয়ে গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে অপহরণকারীদের খুজে বেড়ায়। একইসাথে পুলিশের কঠোর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, জীবননগরের রায়পুরে অপহরণকারী সন্দেহে দুই প্রতিবন্ধীকে গণধোলাই দিয়েছে এলাকাবাসী। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রায়পুর গ্রাামের হুদাপাড়ায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো ১০/১২ বছর বয়সী এক শিশু। এসময় বাক প্রতিবন্ধী বয়ষ্ক এক ভিক্ষুক ওই শিশুর কাছে গেলে আকস্মিক ছেলেধরা বলে চিৎকার দেয় সে। এসময় একই এলাকার রহমের ছেলে রিপন ও তাঁরাচান মিয়ার ছেলে কালামসহ কয়েক যুবক ওই ভিক্ষুককে নারী ও শিশু পাচারকারী সন্দেহে লাঠি ও বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে রায়পুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য আশাদুল ইসলাম ওই বাক প্রতিবন্ধি ভিক্ষুককে কৌশলে জনগণের কাছে থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আটকে রাখেন।
অপরদিকে, বেলা ১১টার দিকে একই ইউনিয়নের রায়পুর বাজারে আসেন যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের মানসিক প্রতিবন্ধী আওরঙ্গজেব মিঠু (৩৫)। তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে বাড়িতে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। বাড়ি থেকে বেরিয়ে সে জীবননগরের রায়পুর বাজারে আসলে স্থানীয়রা তাকে নারী ও শিশু অপহরণকারী সন্দেহে গণধোলাই দেয়। গণধোলাইয়ের সময়ও তার হাতে শিকল বাধা অবস্থায় ছিলো। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানেরসহ সাংবাদিকদের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে নিরাপদে রাখা হয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান তাহাজ্জাত হোসেন মীর্জা বলেন, তারা কেউ অপহরণকারী নয়, একজন মানসিক প্রতিবন্ধি ও আরেকজন বাক প্রতিবন্ধি ভিক্ষুক। তারা নারী ও শিশু অপহরণের সাথে জড়িতও নয়। এটা শুধুমাত্র গুজব ছাড়া আর কিছুই না।