ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গার বিনোদন কেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড় : দর্শনার্থীদের সেলফি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:০৯:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন ২০১৭
  • / ৭০৮ বার পড়া হয়েছে

ঈদ বিনোদন : বৃষ্টি-বাদলের দিনেও ঐতিহাসিক মুজিবনগরে হাজারও মানুষের ঢল
চুয়াডাঙ্গার বিনোদন কেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড় : দর্শনার্থীদের সেলফি
01উজ্জ্বল মাসুদ/ মাসুদ রানা: ঈদ আনন্দে মাতোয়ারা চুয়াডাঙ্গার সকল মানুষ। ঈদের আনন্দ আরেকটু বাড়াতে সব বয়সী মানুষই যাচ্ছেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। গত তিনদনই চুয়াডাঙ্গার পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে ঢল নামে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরের। যদিও জেলায় পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রের সংখ্যা হাতে গোনা, তবুও সেখানে গিয়ে আনন্দের সাথে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন তারা। ঈদের দিন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই মানুষের ঢল নামে পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে। গতকাল বুধবারও চুয়াডাঙ্গা শহরের পুলিশ পার্ক, শিশুস্বর্গ পার্ক, বিএডিসি ফার্ম, দামুড়হুদার মেহেরুন পার্ক, ডিসি ইকোপার্কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। এছাড়া জেলার বিভিন্ন নিরিবিলি এলাকায় মনোরম পরিবেশে সময় পার করেন অনেকেই। মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, আলমসাধু, নসিমন-করিমনযোগে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে গিয়ে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও স্বজন্দের সাথে সময় আনন্দময় মুহুর্ত অতিবাহিত করেন। তবে বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড়ের সাথে চোখে পড়ে তাদের সেলফি তোলা। আধুনিক যুগের প্রায় সকলেই আনন্দের মুহুর্তগুলো নিজের মুঠোফোনে ক্যামেরা বন্দি করছে।
ঈদের তৃতীয় দিন অর্থাত গতকাল বুধবার জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত দর্শনার্থী ও মানুষের ঢল চুয়াডাঙ্গার পুলিশ পার্কে। নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরি ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষই আনন্দে মেতে ওঠেন সেখানে। শিশুরা মেতে ওঠে বাধ ভাঙা উচ্ছাসে। তারা দোলনা, সিøপার, ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডে চড়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছে। কিশোর-কিশোরি, যুবক-যুবতিসহ প্রায় সকলেই ব্যস্ত ছিলো ভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি উঠতে। পুলিশ পার্কের দেয়ালে আঁকা থাকা চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনার চিত্র ও তথ্য শিশু সন্তানের কাছে তুলে ধরছেন অনেক অভিভাবকরা।
পার্কে আসা শিশুরা জানায়, প্রতিদিন স্কুল-কোচিং শেষে বাড়িতে পড়াশোনার মধ্যেই থাকতে হয়। আব্বু-আম্মু ব্যস্ত থাকায় তাদের বললেও কোথাও নিয়ে যায় না। ঈদে সবার ছুটি থাকায় পার্কে বেড়াতে এসেছি। আমার খুব ভালো লাগছে। অভিভাবকরা জানান, কর্মব্যস্ত জীবনে শিশুসন্তাদের নিয়ে কোথাও বের হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও হয়ে ওঠেনা। ছুটি পেলেও বিনোদন কেন্দ্রের অভাবে ছেলেমেয়েকে নিয়ে কোথাও যাওয়া হয়না। ছেলেমেয়ের আবদারে এখানে আসতে হয়েছে।
এদিকে, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও ঈদ বিনোদনের জন্য ঘুরতে আসা হাজারও দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে ঐতিহাসিক মুজিবনগরের বিশাল আম্রকাননে। বৃষ্টি-বাদলের দিনেও থেমে নেই মানুষের ঘোরাঘুরি।পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ বিনোদনের জন্য দর্শনার্থীরা ঘুরতে আছে ঐতিহাসিক মুজিবনগর। ঈদোত্তর বিনোদনের জন্য মেহেরপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরদের ভিড় জমছে মুজিবনগরে কমপ্লেক্সে। এজন্য সড়কগুলোতে মানুষ ও পরিবহনের ভিড়ে দীর্ঘ যানজট হলে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতায় সুষ্ঠ ভাবে যাওয়া-আশা করছে দর্শনার্থীরা। এক্ষেত্রে পুলিশি নজরদারী থাকায় সড়ক দূর্ঘটনা কমেছে।
স্বাধীনতার সুতিকাগার প্রথম রাজধানী মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্সের নকশা অনুযায়ী পূরো কাজ এখনও শেষ না হলেও বিনোদন পিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষনের জায়গা কমপ্লেক্সটি। এ ঈদে ভ্রমন পিয়াসী মানুষের ভিড়ে মুখরিত মুজিবনগর কমপ্লেক্স। কমপ্লেক্সে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর ভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র, স্মৃতিসৌধ, আম্রকানন, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন মুরাল, সরকারি শিশু পরিবার, শাপলা চত্ত্বরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে ঘুরে দেখছে দর্শনার্থীরা। চুয়াডাঙ্গা থেকে আগত আব্দুর রাজ্জাক জানান, ঈদের ছুটির এক দিনের জন্য স্ব-পরিবারে ঘুরেতে এসে ভিন্ন ধরনের আনান্ত পাচ্ছি। সন্তানদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সেক্টর ভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে খুব ভালো লাগছে। তবে কমপ্লেক্সেটি নকশা অনুযায়ী পরিপূর্ণতা পেলে পর্যটকের সংখ্যা আরো বাড়তো বলে তিনি মনে করেন। এছাড়া মুজিবনগরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করা দরকার।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গার বিনোদন কেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড় : দর্শনার্থীদের সেলফি

আপলোড টাইম : ০৫:০৯:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন ২০১৭

ঈদ বিনোদন : বৃষ্টি-বাদলের দিনেও ঐতিহাসিক মুজিবনগরে হাজারও মানুষের ঢল
চুয়াডাঙ্গার বিনোদন কেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড় : দর্শনার্থীদের সেলফি
01উজ্জ্বল মাসুদ/ মাসুদ রানা: ঈদ আনন্দে মাতোয়ারা চুয়াডাঙ্গার সকল মানুষ। ঈদের আনন্দ আরেকটু বাড়াতে সব বয়সী মানুষই যাচ্ছেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। গত তিনদনই চুয়াডাঙ্গার পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে ঢল নামে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরের। যদিও জেলায় পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রের সংখ্যা হাতে গোনা, তবুও সেখানে গিয়ে আনন্দের সাথে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন তারা। ঈদের দিন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই মানুষের ঢল নামে পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে। গতকাল বুধবারও চুয়াডাঙ্গা শহরের পুলিশ পার্ক, শিশুস্বর্গ পার্ক, বিএডিসি ফার্ম, দামুড়হুদার মেহেরুন পার্ক, ডিসি ইকোপার্কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। এছাড়া জেলার বিভিন্ন নিরিবিলি এলাকায় মনোরম পরিবেশে সময় পার করেন অনেকেই। মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, আলমসাধু, নসিমন-করিমনযোগে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে গিয়ে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও স্বজন্দের সাথে সময় আনন্দময় মুহুর্ত অতিবাহিত করেন। তবে বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড়ের সাথে চোখে পড়ে তাদের সেলফি তোলা। আধুনিক যুগের প্রায় সকলেই আনন্দের মুহুর্তগুলো নিজের মুঠোফোনে ক্যামেরা বন্দি করছে।
ঈদের তৃতীয় দিন অর্থাত গতকাল বুধবার জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত দর্শনার্থী ও মানুষের ঢল চুয়াডাঙ্গার পুলিশ পার্কে। নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরি ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষই আনন্দে মেতে ওঠেন সেখানে। শিশুরা মেতে ওঠে বাধ ভাঙা উচ্ছাসে। তারা দোলনা, সিøপার, ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডে চড়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছে। কিশোর-কিশোরি, যুবক-যুবতিসহ প্রায় সকলেই ব্যস্ত ছিলো ভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি উঠতে। পুলিশ পার্কের দেয়ালে আঁকা থাকা চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনার চিত্র ও তথ্য শিশু সন্তানের কাছে তুলে ধরছেন অনেক অভিভাবকরা।
পার্কে আসা শিশুরা জানায়, প্রতিদিন স্কুল-কোচিং শেষে বাড়িতে পড়াশোনার মধ্যেই থাকতে হয়। আব্বু-আম্মু ব্যস্ত থাকায় তাদের বললেও কোথাও নিয়ে যায় না। ঈদে সবার ছুটি থাকায় পার্কে বেড়াতে এসেছি। আমার খুব ভালো লাগছে। অভিভাবকরা জানান, কর্মব্যস্ত জীবনে শিশুসন্তাদের নিয়ে কোথাও বের হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও হয়ে ওঠেনা। ছুটি পেলেও বিনোদন কেন্দ্রের অভাবে ছেলেমেয়েকে নিয়ে কোথাও যাওয়া হয়না। ছেলেমেয়ের আবদারে এখানে আসতে হয়েছে।
এদিকে, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও ঈদ বিনোদনের জন্য ঘুরতে আসা হাজারও দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে ঐতিহাসিক মুজিবনগরের বিশাল আম্রকাননে। বৃষ্টি-বাদলের দিনেও থেমে নেই মানুষের ঘোরাঘুরি।পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ বিনোদনের জন্য দর্শনার্থীরা ঘুরতে আছে ঐতিহাসিক মুজিবনগর। ঈদোত্তর বিনোদনের জন্য মেহেরপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরদের ভিড় জমছে মুজিবনগরে কমপ্লেক্সে। এজন্য সড়কগুলোতে মানুষ ও পরিবহনের ভিড়ে দীর্ঘ যানজট হলে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতায় সুষ্ঠ ভাবে যাওয়া-আশা করছে দর্শনার্থীরা। এক্ষেত্রে পুলিশি নজরদারী থাকায় সড়ক দূর্ঘটনা কমেছে।
স্বাধীনতার সুতিকাগার প্রথম রাজধানী মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্সের নকশা অনুযায়ী পূরো কাজ এখনও শেষ না হলেও বিনোদন পিয়াসীদের অন্যতম আকর্ষনের জায়গা কমপ্লেক্সটি। এ ঈদে ভ্রমন পিয়াসী মানুষের ভিড়ে মুখরিত মুজিবনগর কমপ্লেক্স। কমপ্লেক্সে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর ভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র, স্মৃতিসৌধ, আম্রকানন, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন মুরাল, সরকারি শিশু পরিবার, শাপলা চত্ত্বরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে ঘুরে দেখছে দর্শনার্থীরা। চুয়াডাঙ্গা থেকে আগত আব্দুর রাজ্জাক জানান, ঈদের ছুটির এক দিনের জন্য স্ব-পরিবারে ঘুরেতে এসে ভিন্ন ধরনের আনান্ত পাচ্ছি। সন্তানদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সেক্টর ভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে খুব ভালো লাগছে। তবে কমপ্লেক্সেটি নকশা অনুযায়ী পরিপূর্ণতা পেলে পর্যটকের সংখ্যা আরো বাড়তো বলে তিনি মনে করেন। এছাড়া মুজিবনগরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করা দরকার।