ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গার তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের করোনা জয়

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৬:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ মে ২০২০
  • / ১৯৮২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনাভাইরাসকে জয় করলেন চুয়াডাঙ্গার তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁরা। জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন শিবানী সরকার, আমজাদ হোসেন ও খায়রুল ইসলাম। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রায় প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মাঠে থাকতে হয়েছে এবং নিয়মিত অফিস করতে হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের এই তিন কর্মকর্তাকে। এরই মধ্যে হঠাৎ করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তাঁরা স্যাম্পল পাঠান আইইডিসিআর-এ। ১৬ মে তাঁদের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। পজিটিভ রিপোর্ট আসার সঙ্গে সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের নির্দেশে তাঁরা জেলা প্রশাসনের অফিসার্স কোয়াটারে হোম আইসোলেশনে থাকেন। ওখানে কোয়ারেন্টাইনের সব নিয়ম মেনে নিয়মিত কয়েকটা ওষুধ, ভিটামিন সি ও ডি যুক্ত খাবার খাচ্ছিলেন তাঁরা। সর্বশেষ গত ২৮ মে পরপর তিনবার তাঁদের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। তাঁরা বলছেন, করোনা জয়ের প্রথম হাতিয়ার ছিল নিজেদের মনোবল।
এদিকে, করোনাভাইরাসকে জয় করার পর কীভাবে হোম আইসোলেশনে ছিলেন, কী কী নিয়ম মানছিলেন এবং কীভাবে করোনা নেগিটিভ আসে, তা তুলে ধরে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমজাদ হোসেন। যা পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো-
অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হবার পরের অভিজ্ঞতা জানতে চেয়েছেন। যারা এখনো করোনায় আক্রান্ত হননি (সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সুস্থ রাখুক) এবং যারা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে রয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্যে আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা সংক্ষেপে শেয়ার করছি। করোনা পজিটিভ হওয়ার পর যে ওষুধগুলো সেবন করেছি (একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শক্রমে) ১) 1) Tab.Zimax 500mg (0+0+1) 7days 2) Tab.Scabo 6/Ivera ৬ (২ টা ট্যাবলেট একদিনে একবার) ৩) 3) Tab.Tofen 1mg(1+0+1) 15days 4) Nasal drop. Rynex 0.05%(2 drops in each nose 3-4 times daily) (সর্দি থাকলে) ৫)Tab.Xinc 20mg(2+2+2) 15days 6) Tab.Ceevit Ds(1+0+1) 15days 7) Tab.Esonix 20mg(1+0+1) (খাওয়ার আগে) ৮. Tab.Monas 10mg(0+0+1) 15days (প্রচুর কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলে) ০৯) Inhaler.Sulprex ( 2 puff /Chap 3-4 times daily) (শ্বাসকষ্ট হলে) ১০) Tab. Napa 500mg (1+1+1)  (জ্বর থাকলে) তাছাড়া যেসকল ঘরোয়া টেকনিক অবলম্বন করেছি (সুস্থ অবস্থায়ও আমাদের সকলকেই নিম্নোক্ত টেকনিকগুলো অনুসরণ করা উচিত) মধু, আদা, লবঙ্গ, রসুন ও লেবুর রস মিশ্রিত চা/গরম পানি দিনে অন্তত ৪/৫ বার পান করেছি। দিনে অন্তত ৫ বার গরম পানির ঝঃবধস (ভাঁপ) নিয়েছি। লবণ/ভিনেগার মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে দিনে কমপক্ষে ৫ বার করে গার্গল (কুলি) করেছি। ডিম, দুধ, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেয়েছি। প্রতিদিন কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট রোদ পোহাতে হয়েছে। প্রতিদিন অন্তত ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করা। (পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের ইমিউনিটি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে) বি: দ্র: কোনোভাবেই আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। মনে সাহস রাখলেই করোনাকে জয় করা সম্ভব। সত্যি কথা বলতে করোনা একটা আতঙ্ক ছাড়া কিছুই না। আতঙ্কিত হলেই সমস্যা। আমি আবারো বলছি, কোনোভাবেই আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। ছাড়াও নিম্নোক্ত বিষয়গুলো আমাদের সবাইকে মেনে চলা উচিত: নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করুন। হাঁচি ও কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সর্বোপরি ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। আশা করি উপর্যুক্ত নিয়মগুলো অনুসরণ করলে যে কেউ করোনা থেকে সহজেই মুক্তি পাবে। ইনশাআল্লাহ! আবারও নতুন উদ্যোমে দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করবো। আমার কাছে দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারাটা গর্বের। সকলের দোয়া প্রত্যাশা করছি। ধন্যবাদ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গার তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের করোনা জয়

আপলোড টাইম : ০৯:২৬:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ মে ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনাভাইরাসকে জয় করলেন চুয়াডাঙ্গার তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁরা। জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন শিবানী সরকার, আমজাদ হোসেন ও খায়রুল ইসলাম। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রায় প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মাঠে থাকতে হয়েছে এবং নিয়মিত অফিস করতে হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের এই তিন কর্মকর্তাকে। এরই মধ্যে হঠাৎ করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তাঁরা স্যাম্পল পাঠান আইইডিসিআর-এ। ১৬ মে তাঁদের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। পজিটিভ রিপোর্ট আসার সঙ্গে সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের নির্দেশে তাঁরা জেলা প্রশাসনের অফিসার্স কোয়াটারে হোম আইসোলেশনে থাকেন। ওখানে কোয়ারেন্টাইনের সব নিয়ম মেনে নিয়মিত কয়েকটা ওষুধ, ভিটামিন সি ও ডি যুক্ত খাবার খাচ্ছিলেন তাঁরা। সর্বশেষ গত ২৮ মে পরপর তিনবার তাঁদের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। তাঁরা বলছেন, করোনা জয়ের প্রথম হাতিয়ার ছিল নিজেদের মনোবল।
এদিকে, করোনাভাইরাসকে জয় করার পর কীভাবে হোম আইসোলেশনে ছিলেন, কী কী নিয়ম মানছিলেন এবং কীভাবে করোনা নেগিটিভ আসে, তা তুলে ধরে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমজাদ হোসেন। যা পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো-
অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হবার পরের অভিজ্ঞতা জানতে চেয়েছেন। যারা এখনো করোনায় আক্রান্ত হননি (সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সুস্থ রাখুক) এবং যারা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে রয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্যে আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা সংক্ষেপে শেয়ার করছি। করোনা পজিটিভ হওয়ার পর যে ওষুধগুলো সেবন করেছি (একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শক্রমে) ১) 1) Tab.Zimax 500mg (0+0+1) 7days 2) Tab.Scabo 6/Ivera ৬ (২ টা ট্যাবলেট একদিনে একবার) ৩) 3) Tab.Tofen 1mg(1+0+1) 15days 4) Nasal drop. Rynex 0.05%(2 drops in each nose 3-4 times daily) (সর্দি থাকলে) ৫)Tab.Xinc 20mg(2+2+2) 15days 6) Tab.Ceevit Ds(1+0+1) 15days 7) Tab.Esonix 20mg(1+0+1) (খাওয়ার আগে) ৮. Tab.Monas 10mg(0+0+1) 15days (প্রচুর কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলে) ০৯) Inhaler.Sulprex ( 2 puff /Chap 3-4 times daily) (শ্বাসকষ্ট হলে) ১০) Tab. Napa 500mg (1+1+1)  (জ্বর থাকলে) তাছাড়া যেসকল ঘরোয়া টেকনিক অবলম্বন করেছি (সুস্থ অবস্থায়ও আমাদের সকলকেই নিম্নোক্ত টেকনিকগুলো অনুসরণ করা উচিত) মধু, আদা, লবঙ্গ, রসুন ও লেবুর রস মিশ্রিত চা/গরম পানি দিনে অন্তত ৪/৫ বার পান করেছি। দিনে অন্তত ৫ বার গরম পানির ঝঃবধস (ভাঁপ) নিয়েছি। লবণ/ভিনেগার মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে দিনে কমপক্ষে ৫ বার করে গার্গল (কুলি) করেছি। ডিম, দুধ, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেয়েছি। প্রতিদিন কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট রোদ পোহাতে হয়েছে। প্রতিদিন অন্তত ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করা। (পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের ইমিউনিটি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে) বি: দ্র: কোনোভাবেই আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। মনে সাহস রাখলেই করোনাকে জয় করা সম্ভব। সত্যি কথা বলতে করোনা একটা আতঙ্ক ছাড়া কিছুই না। আতঙ্কিত হলেই সমস্যা। আমি আবারো বলছি, কোনোভাবেই আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। ছাড়াও নিম্নোক্ত বিষয়গুলো আমাদের সবাইকে মেনে চলা উচিত: নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করুন। হাঁচি ও কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সর্বোপরি ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। আশা করি উপর্যুক্ত নিয়মগুলো অনুসরণ করলে যে কেউ করোনা থেকে সহজেই মুক্তি পাবে। ইনশাআল্লাহ! আবারও নতুন উদ্যোমে দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করবো। আমার কাছে দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারাটা গর্বের। সকলের দোয়া প্রত্যাশা করছি। ধন্যবাদ।