ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গার চাকুলিয়া সীমান্তে বাংলাদেশী গরুব্যবসায়ীকে ধরে রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে জখম বিএসএফের নির্মম নির্যাতনের পর সীমান্তে ফেলে যাওয়া বকুলের মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩৩:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ২৮৭ বার পড়া হয়েছে

khdsকার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার চাকুলিয়া সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে বাংলাদেশী গরুব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গরুব্যবসায়ী বকুল ম-লের মৃত্যু হয়। শনিবার ভোররাতে গরু আনার জন্য বকুল ম-লসহ ৪/৫ জন ভারতে প্রবেশ করে। এসময় ভারতের হুদাপাড়া সীমান্তের বিএসএফ বকুলকে আটক করলে অন্যরা পালিয়ে যায়। বিএসএফ সদস্যরা তাকে নির্যাতনের পর হুদাপাড়া এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পরে অন্য গরুব্যবসায়ীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে দামুড়হুদার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বকুলকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিজিবি ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার মধ্যরাতে বকুল মন্ডলসহ ৫/৬ জন গরু ব্যবসায়ী সীমান্তে গরু আনতে যায়। শনিবার ভোরে তারা চাকুলিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। ভোরে তারা সীমান্তের ৮৮ নং মেইন পিলারের কাছে অবস্থান করার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে ধাওয়া করে। এসময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও বিএসএফের হাতে আটক হয় বকুল ম-ল। বিএসএফ সদস্যরা বকুল ম-লকে ধরে ব্যপক নির্যাতন চালায়। রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে বকুলের পায়ের ও হাতের রগ কেটে দেয় বিএসএফ সদস্যরা। পরে ভোর ৬টার দিকে ভারতের হুদাপাড়া এলাকায় বকুলকে ফেলে রেখে যায় তারা। অন্য গরুব্যবসায়ীরা বকুলকে উদ্ধার করে প্রথমে দামুড়হুদার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। পরে গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বকুল ম-লকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত বকুল ম-ল (২৮) চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত সদর উদ্দীনের ছেলে। দুই সন্তানের জনক নিহত বকুল ম-ল ফুলবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় পাড়ায় বসবাস করতো। তার লাশ গ্রামে নিয়ে আসার সাথে সাথে তাকে এক নজর দেখার জন্য গ্রামের লোকজন ভিড় করে তার বাড়িতে। কান্নায় ভেঙে পড়ে তার আত্মীয় স্বজনরা।
চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবির পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আমির মজিদ জানান, শনিবার ভোররাতে বকুল ম-লসহ ৪/৫ জন গরুব্যবসায়ী গরু আনার জন্য চাকুলিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এসময় ভারতের হুদাপাড়া সীমান্তে দায়িত্বরত বিএসএফ সদস্যরা বকুলকে আটক করলে অন্যরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে বিএসএফকে পত্র দেয়া হয়েছে।
বিজিবির উপর মহল থেকে গরু আনা বন্ধের ব্যপারে কড়া নির্দেশ থাকলেও ঠাকুরপুর সীমান্তে কিছু দালালরা বিজিবির নাম ভাঙিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তা বাংলাদেশে আসতে সাহায্য করে। বকুলের  মর্মান্তিক মৃত্যুর পর এসব দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছে ফুলবাড়ি গ্রামবাসী।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গার চাকুলিয়া সীমান্তে বাংলাদেশী গরুব্যবসায়ীকে ধরে রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে জখম বিএসএফের নির্মম নির্যাতনের পর সীমান্তে ফেলে যাওয়া বকুলের মৃত্যু

আপলোড টাইম : ১০:৩৩:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জানুয়ারী ২০১৭

khdsকার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার চাকুলিয়া সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে বাংলাদেশী গরুব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গরুব্যবসায়ী বকুল ম-লের মৃত্যু হয়। শনিবার ভোররাতে গরু আনার জন্য বকুল ম-লসহ ৪/৫ জন ভারতে প্রবেশ করে। এসময় ভারতের হুদাপাড়া সীমান্তের বিএসএফ বকুলকে আটক করলে অন্যরা পালিয়ে যায়। বিএসএফ সদস্যরা তাকে নির্যাতনের পর হুদাপাড়া এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পরে অন্য গরুব্যবসায়ীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে দামুড়হুদার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বকুলকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিজিবি ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার মধ্যরাতে বকুল মন্ডলসহ ৫/৬ জন গরু ব্যবসায়ী সীমান্তে গরু আনতে যায়। শনিবার ভোরে তারা চাকুলিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। ভোরে তারা সীমান্তের ৮৮ নং মেইন পিলারের কাছে অবস্থান করার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে ধাওয়া করে। এসময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও বিএসএফের হাতে আটক হয় বকুল ম-ল। বিএসএফ সদস্যরা বকুল ম-লকে ধরে ব্যপক নির্যাতন চালায়। রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে বকুলের পায়ের ও হাতের রগ কেটে দেয় বিএসএফ সদস্যরা। পরে ভোর ৬টার দিকে ভারতের হুদাপাড়া এলাকায় বকুলকে ফেলে রেখে যায় তারা। অন্য গরুব্যবসায়ীরা বকুলকে উদ্ধার করে প্রথমে দামুড়হুদার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। পরে গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বকুল ম-লকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত বকুল ম-ল (২৮) চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত সদর উদ্দীনের ছেলে। দুই সন্তানের জনক নিহত বকুল ম-ল ফুলবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় পাড়ায় বসবাস করতো। তার লাশ গ্রামে নিয়ে আসার সাথে সাথে তাকে এক নজর দেখার জন্য গ্রামের লোকজন ভিড় করে তার বাড়িতে। কান্নায় ভেঙে পড়ে তার আত্মীয় স্বজনরা।
চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবির পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আমির মজিদ জানান, শনিবার ভোররাতে বকুল ম-লসহ ৪/৫ জন গরুব্যবসায়ী গরু আনার জন্য চাকুলিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এসময় ভারতের হুদাপাড়া সীমান্তে দায়িত্বরত বিএসএফ সদস্যরা বকুলকে আটক করলে অন্যরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে বিএসএফকে পত্র দেয়া হয়েছে।
বিজিবির উপর মহল থেকে গরু আনা বন্ধের ব্যপারে কড়া নির্দেশ থাকলেও ঠাকুরপুর সীমান্তে কিছু দালালরা বিজিবির নাম ভাঙিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তা বাংলাদেশে আসতে সাহায্য করে। বকুলের  মর্মান্তিক মৃত্যুর পর এসব দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছে ফুলবাড়ি গ্রামবাসী।