ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুরি হলেও থানায় আসেনা অভিযোগ : বিড়ম্বনার অযুহাত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৩:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • / ৩১২ বার পড়া হয়েছে

নতুন বছরের শুরু থেকে চুয়াডাঙ্গা শহরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে চোরের উপদ্রব
বিশেষ প্রতিবেদক:
দিনে অথবা রাতে বিশেষ কায়দায় সুযোগ মত গ্রীল কেটে বা তালা ভেঙ্গে চোরেরা বাসা-বাড়ি, মসজিদ, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে মানুষকে সর্বশান্ত করছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছাউনির টিন কেটে ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা ও মালামাল চুরের ঘটনাও নতুন নয়। চোরদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না বিদ্যুতের তার, ঘটি-বাটি, টিউবওয়েল, পানির ট্যাংক, হাসপাতাল এমনকি মসজিদের দান বাক্সের টাকাও। চুয়াডাঙ্গা শহরে ইদানীং একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে এসমস্ত চুরির ঘটনা অধিকাংশই পুলিশকে জানানো হয় না। ফলে চোরচক্র সনাক্ত ও আটকে নির্বিকার পুলিশ প্রশাসন।
ভুক্তভোগীরা জানান, থানায় চুরির মামলা করতে গিয়ে উল্টো নানা উটকো বিড়ম্বনায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। সে কারণে এর সঠিক পরিসংখ্যানও পাওয়া যায় না। কিন্ত প্রায় প্রতিদিন শহরের কোথাও না কোথাও চুরি সংগঠিত হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। শহরে মাদকসেবীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ ধরনের চুরির ঘটনা ঘটছে এবং মাদকসেবীরাই এসব চুরির সঙ্গে জড়িত বলে, শহরের সচেতন নাগরিকদের দাবি।
১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের কলেজ রোডের জেলা প্রশাসকের বাসভবনের পাশ্ববর্তী একটি বাসা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র বাড়ির সদস্যদের মতো চলাচল অনুসরণ করে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে নগদ টাকাসহ একটি ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। একই দিন ওই এলাকার আরও বেশ কয়েকটি বাসা বাড়ি থেকে গহনা, টাকা-পয়সা ও কাপড় চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনার কিছুদিন পূর্বে চুয়াডাঙ্গা পুরাতন জেলখানার পরিত্যক্ত ভবনের জানালার গ্রিল চুরির চেষ্টা চালায় চোরেরা। তবে শহরে টহলরত পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে দফা পালিয়ে যায় চোর। পুলিশ অবশ্য দৌড়েও সেই চোরকে ধরতে ব্যর্থ হয়।
তথ্যানুযায়ী, এ বছরের শুরুতে (৬ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গা বিএডিসি খামারের সাব-স্টেশনের ট্রান্সমিটার চুরির সময় হাতেনাতে একজনকে আটক করে পুলিশে দেয় খামারের লোকজন। পরদিনগত গভীর রাতে পৌর শহরের বুজরুকগড়গড়ি এলাকার এপেক্স ইটভাটায় গভীর রাতে তান্ডব চালায় একদল দুর্বৃত্ত। তারা ইটভাটার শ্রমিকদের কাছ থেকে মোবাইলসহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশি অভিযানে পাঁচজনকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। কিছুদিনের মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত আরও একজনকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ১১ জানুয়ারি গভীর রাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের নিচের বাজারের একটি দোকানের উপরের টিন কেটে ক্যাশবাক্স ভেঙে নগদ টাকা চুরির চেষ্টাকালে পাহারাদারদের দক্ষতায় হাতেনাতে দু’চোর আটক হয়। এ ঘটনার তিন সপ্তাহের মাথায় (২৮ জানুয়ারি) এই বাজারেরই আরও পাঁচটি দোকানে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করা হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাজারের দু’জন নৈশ প্রহরীকে আটক করে প্রায় ৪৮ ঘন্টা পর মুক্তি দেয়া হয়। এরপর থেকে বাজারগুলোতে পাহারাদার সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সমস্ত দোকান/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে সেই সময় এক জরুরী সভায় মিলিত হন। জরুরী সভা থেকে ‘দোকান মালিক/ব্যবসায়ি, শ্রমিক ও নৈশ প্রহরীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত’সহ কয়েক দফা দাবি নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়া হয়। তবে এখনো পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেনি কেউ।
সেই সময় খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল খালেক ব্যবসায়ীদের জরুরী সভায় উপস্থিত হয়ে সমসাময়িক ঘটনা ও চুরির বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক সুবিচারের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘এর আগে এই বাজারে চুরির ঘটনা ঘটেছে এবং আমরা তাৎক্ষণিক চোরচক্রকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এবারের ঘটনার খবর পাওয়ার পর পরই আমরা মাঠে নেমেছি। আপনাদের সহযোগিতা পেলে শিগগিরই জড়িতদের আটক করা সম্ভব হবে।’ কিন্তু আজও সেই চোর ধরতে পারেনি পুলিশ।
এ ছাড়াও পুলিশের দক্ষতায় ২১ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজপাড়ার একটি দোকানের তালা ভেঙে চুরির সময় হাতেনাতে চোরকে আটক করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৪ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বিশেষ অভিযানে চুয়াডাঙ্গা থেকে চুরি হওয়ার ৭২ ঘন্টার মধ্যে মেহেরপুর থেকে ইজিবাইকসহ আন্তঃজেলা চোর চক্রের এক সদস্যকে আটক করা হয়। ২৮ জানুয়ারি পৌর শহরের ফার্মপাড়া থেকে অভিনব কৌশলে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি (৯ ফেব্রুয়ারি) পৌর শহরের পলাশপাড়া এলাকার মৃত জবেদ আলীর বাসভবনে চুরির চেষ্টাকালে হাতেনাতে একজন মহিলা চোরকে আটক করা হয়।
শহরের বিভিন্ন এলাকা, মার্কেট ও হাট-বাজারের পাহারাদারদের ভাষ্যমতে, ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান সুরক্ষায় রাত জেগে পাহারা করি। আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে চুরির ঘটনা ঘটে, এর জন্য প্রশাসনের লোকেরা দায়ী। আমরা দিনমজুর-নি¤œ আয়ের পাহারাদাররা চুরির দায় মাথায় নিয়ে কেন হাজতে যাবো?
পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনই শহরের কোথাও না কোথাও চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। ইদানিং শহরের বেশ কিছু এলাকায় মাদকসেবীর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। ধারণা মতে, মাদকসেবীরাই এ ধরনের চুরির ঘটনায় জড়িত। চোরের ভয়ে আমরা তটস্থ। সারা এলাকাজুড়ে যেন চুরির উৎসব চলছে। সম্প্রতি চোরের উপদ্রপ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, চোর এবং মাদকসেবীদের ধরতে পুলিশী অভিযান চলছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, মাদকসেবী এসব চোরদের ধরলে আইনের ফাঁকে ক’দিনের মধ্যে জামিনে বের হয়ে আবার সেই একই কাজে জড়িয়ে পড়ে।
এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহাম্মদ কলিমুল্লাহ বলেছেন, ‘চুরির ঘটনার বেশির ভাগ পুলিশকে জানানো হয় না। তবে চোর ধরতে পুলিশের সকল ইউনিট তৎপর রয়েছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে চুরির উপদ্রব বন্ধে সবার আগে আপনাদেরকে সচেতন হতে হবে। বর্তমানে পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত জনবান্ধব। আপনারা সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসুন, চুরিসহ যেকোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ করুন। কোন প্রকার বাড়তি ভোগান্তি ছাড়াই আপনাদের সমস্যার সমাধান করা হবে।’
দিনে অথবা রাতে বিশেষ কায়দায় সুযোগ মত গ্রীল কেটে বা তালা ভেঙ্গে চোরেরা বাসা-বাড়ি, মসজিদ, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে মানুষকে সর্বশান্ত করছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছাউনির টিন কেটে ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা ও মালামাল চুরের ঘটনাও নতুন নয়। চোরদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না বিদ্যুতের তার, ঘটি-বাটি, টিউবওয়েল, পানির ট্যাংক, হাসপাতাল এমনকি মসজিদের দান বাক্সের টাকাও। চুয়াডাঙ্গা শহরে ইদানীং একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে এসমস্ত চুরির ঘটনা অধিকাংশই পুলিশকে জানানো হয় না। ফলে চোরচক্র সনাক্ত ও আটকে নির্বিকার পুলিশ প্রশাসন।
ভুক্তভোগীরা জানান, থানায় চুরির মামলা করতে গিয়ে উল্টো নানা উটকো বিড়ম্বনায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। সে কারণে এর সঠিক পরিসংখ্যানও পাওয়া যায় না। কিন্ত প্রায় প্রতিদিন শহরের কোথাও না কোথাও চুরি সংগঠিত হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। শহরে মাদকসেবীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ ধরনের চুরির ঘটনা ঘটছে এবং মাদকসেবীরাই এসব চুরির সঙ্গে জড়িত বলে, শহরের সচেতন নাগরিকদের দাবি।
১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের কলেজ রোডের জেলা প্রশাসকের বাসভবনের পাশ্ববর্তী একটি বাসা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র বাড়ির সদস্যদের মতো চলাচল অনুসরণ করে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে নগদ টাকাসহ একটি ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। একই দিন ওই এলাকার আরও বেশ কয়েকটি বাসা বাড়ি থেকে গহনা, টাকা-পয়সা ও কাপড় চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনার কিছুদিন পূর্বে চুয়াডাঙ্গা পুরাতন জেলখানার পরিত্যক্ত ভবনের জানালার গ্রিল চুরির চেষ্টা চালায় চোরেরা। তবে শহরে টহলরত পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে দফা পালিয়ে যায় চোর। পুলিশ অবশ্য দৌড়েও সেই চোরকে ধরতে ব্যর্থ হয়।
তথ্যানুযায়ী, এ বছরের শুরুতে (৬ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গা বিএডিসি খামারের সাব-স্টেশনের ট্রান্সমিটার চুরির সময় হাতেনাতে একজনকে আটক করে পুলিশে দেয় খামারের লোকজন। পরদিনগত গভীর রাতে পৌর শহরের বুজরুকগড়গড়ি এলাকার এপেক্স ইটভাটায় গভীর রাতে তান্ডব চালায় একদল দুর্বৃত্ত। তারা ইটভাটার শ্রমিকদের কাছ থেকে মোবাইলসহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশি অভিযানে পাঁচজনকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। কিছুদিনের মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত আরও একজনকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ১১ জানুয়ারি গভীর রাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের নিচের বাজারের একটি দোকানের উপরের টিন কেটে ক্যাশবাক্স ভেঙে নগদ টাকা চুরির চেষ্টাকালে পাহারাদারদের দক্ষতায় হাতেনাতে দু’চোর আটক হয়। এ ঘটনার তিন সপ্তাহের মাথায় (২৮ জানুয়ারি) এই বাজারেরই আরও পাঁচটি দোকানে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করা হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাজারের দু’জন নৈশ প্রহরীকে আটক করে প্রায় ৪৮ ঘন্টা পর মুক্তি দেয়া হয়। এরপর থেকে বাজারগুলোতে পাহারাদার সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সমস্ত দোকান/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে সেই সময় এক জরুরী সভায় মিলিত হন। জরুরী সভা থেকে ‘দোকান মালিক/ব্যবসায়ি, শ্রমিক ও নৈশ প্রহরীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত’সহ কয়েক দফা দাবি নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়া হয়। তবে এখনো পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেনি কেউ।
সেই সময় খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল খালেক ব্যবসায়ীদের জরুরী সভায় উপস্থিত হয়ে সমসাময়িক ঘটনা ও চুরির বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক সুবিচারের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘এর আগে এই বাজারে চুরির ঘটনা ঘটেছে এবং আমরা তাৎক্ষণিক চোরচক্রকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এবারের ঘটনার খবর পাওয়ার পর পরই আমরা মাঠে নেমেছি। আপনাদের সহযোগিতা পেলে শিগগিরই জড়িতদের আটক করা সম্ভব হবে।’ কিন্তু আজও সেই চোর ধরতে পারেনি পুলিশ।
এ ছাড়াও পুলিশের দক্ষতায় ২১ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজপাড়ার একটি দোকানের তালা ভেঙে চুরির সময় হাতেনাতে চোরকে আটক করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৪ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বিশেষ অভিযানে চুয়াডাঙ্গা থেকে চুরি হওয়ার ৭২ ঘন্টার মধ্যে মেহেরপুর থেকে ইজিবাইকসহ আন্তঃজেলা চোর চক্রের এক সদস্যকে আটক করা হয়। ২৮ জানুয়ারি পৌর শহরের ফার্মপাড়া থেকে অভিনব কৌশলে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি (৯ ফেব্রুয়ারি) পৌর শহরের পলাশপাড়া এলাকার মৃত জবেদ আলীর বাসভবনে চুরির চেষ্টাকালে হাতেনাতে একজন মহিলা চোরকে আটক করা হয়।
শহরের বিভিন্ন এলাকা, মার্কেট ও হাট-বাজারের পাহারাদারদের ভাষ্যমতে, ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান সুরক্ষায় রাত জেগে পাহারা করি। আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে চুরির ঘটনা ঘটে, এর জন্য প্রশাসনের লোকেরা দায়ী। আমরা দিনমজুর-নি¤œ আয়ের পাহারাদাররা চুরির দায় মাথায় নিয়ে কেন হাজতে যাবো?
পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনই শহরের কোথাও না কোথাও চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। ইদানিং শহরের বেশ কিছু এলাকায় মাদকসেবীর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। ধারণা মতে, মাদকসেবীরাই এ ধরনের চুরির ঘটনায় জড়িত। চোরের ভয়ে আমরা তটস্থ। সারা এলাকাজুড়ে যেন চুরির উৎসব চলছে। সম্প্রতি চোরের উপদ্রপ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, চোর এবং মাদকসেবীদের ধরতে পুলিশী অভিযান চলছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, মাদকসেবী এসব চোরদের ধরলে আইনের ফাঁকে ক’দিনের মধ্যে জামিনে বের হয়ে আবার সেই একই কাজে জড়িয়ে পড়ে।
এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহাম্মদ কলিমুল্লাহ বলেছেন, ‘চুরির ঘটনার বেশির ভাগ পুলিশকে জানানো হয় না। তবে চোর ধরতে পুলিশের সকল ইউনিট তৎপর রয়েছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে চুরির উপদ্রব বন্ধে সবার আগে আপনাদেরকে সচেতন হতে হবে। বর্তমানে পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত জনবান্ধব। আপনারা সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসুন, চুরিসহ যেকোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ করুন। কোন প্রকার বাড়তি ভোগান্তি ছাড়াই আপনাদের সমস্যার সমাধান করা হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুরি হলেও থানায় আসেনা অভিযোগ : বিড়ম্বনার অযুহাত

আপলোড টাইম : ১০:১৩:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

নতুন বছরের শুরু থেকে চুয়াডাঙ্গা শহরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে চোরের উপদ্রব
বিশেষ প্রতিবেদক:
দিনে অথবা রাতে বিশেষ কায়দায় সুযোগ মত গ্রীল কেটে বা তালা ভেঙ্গে চোরেরা বাসা-বাড়ি, মসজিদ, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে মানুষকে সর্বশান্ত করছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছাউনির টিন কেটে ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা ও মালামাল চুরের ঘটনাও নতুন নয়। চোরদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না বিদ্যুতের তার, ঘটি-বাটি, টিউবওয়েল, পানির ট্যাংক, হাসপাতাল এমনকি মসজিদের দান বাক্সের টাকাও। চুয়াডাঙ্গা শহরে ইদানীং একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে এসমস্ত চুরির ঘটনা অধিকাংশই পুলিশকে জানানো হয় না। ফলে চোরচক্র সনাক্ত ও আটকে নির্বিকার পুলিশ প্রশাসন।
ভুক্তভোগীরা জানান, থানায় চুরির মামলা করতে গিয়ে উল্টো নানা উটকো বিড়ম্বনায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। সে কারণে এর সঠিক পরিসংখ্যানও পাওয়া যায় না। কিন্ত প্রায় প্রতিদিন শহরের কোথাও না কোথাও চুরি সংগঠিত হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। শহরে মাদকসেবীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ ধরনের চুরির ঘটনা ঘটছে এবং মাদকসেবীরাই এসব চুরির সঙ্গে জড়িত বলে, শহরের সচেতন নাগরিকদের দাবি।
১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের কলেজ রোডের জেলা প্রশাসকের বাসভবনের পাশ্ববর্তী একটি বাসা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র বাড়ির সদস্যদের মতো চলাচল অনুসরণ করে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে নগদ টাকাসহ একটি ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। একই দিন ওই এলাকার আরও বেশ কয়েকটি বাসা বাড়ি থেকে গহনা, টাকা-পয়সা ও কাপড় চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনার কিছুদিন পূর্বে চুয়াডাঙ্গা পুরাতন জেলখানার পরিত্যক্ত ভবনের জানালার গ্রিল চুরির চেষ্টা চালায় চোরেরা। তবে শহরে টহলরত পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে দফা পালিয়ে যায় চোর। পুলিশ অবশ্য দৌড়েও সেই চোরকে ধরতে ব্যর্থ হয়।
তথ্যানুযায়ী, এ বছরের শুরুতে (৬ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গা বিএডিসি খামারের সাব-স্টেশনের ট্রান্সমিটার চুরির সময় হাতেনাতে একজনকে আটক করে পুলিশে দেয় খামারের লোকজন। পরদিনগত গভীর রাতে পৌর শহরের বুজরুকগড়গড়ি এলাকার এপেক্স ইটভাটায় গভীর রাতে তান্ডব চালায় একদল দুর্বৃত্ত। তারা ইটভাটার শ্রমিকদের কাছ থেকে মোবাইলসহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশি অভিযানে পাঁচজনকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। কিছুদিনের মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত আরও একজনকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ১১ জানুয়ারি গভীর রাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের নিচের বাজারের একটি দোকানের উপরের টিন কেটে ক্যাশবাক্স ভেঙে নগদ টাকা চুরির চেষ্টাকালে পাহারাদারদের দক্ষতায় হাতেনাতে দু’চোর আটক হয়। এ ঘটনার তিন সপ্তাহের মাথায় (২৮ জানুয়ারি) এই বাজারেরই আরও পাঁচটি দোকানে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করা হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাজারের দু’জন নৈশ প্রহরীকে আটক করে প্রায় ৪৮ ঘন্টা পর মুক্তি দেয়া হয়। এরপর থেকে বাজারগুলোতে পাহারাদার সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সমস্ত দোকান/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে সেই সময় এক জরুরী সভায় মিলিত হন। জরুরী সভা থেকে ‘দোকান মালিক/ব্যবসায়ি, শ্রমিক ও নৈশ প্রহরীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত’সহ কয়েক দফা দাবি নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়া হয়। তবে এখনো পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেনি কেউ।
সেই সময় খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল খালেক ব্যবসায়ীদের জরুরী সভায় উপস্থিত হয়ে সমসাময়িক ঘটনা ও চুরির বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক সুবিচারের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘এর আগে এই বাজারে চুরির ঘটনা ঘটেছে এবং আমরা তাৎক্ষণিক চোরচক্রকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এবারের ঘটনার খবর পাওয়ার পর পরই আমরা মাঠে নেমেছি। আপনাদের সহযোগিতা পেলে শিগগিরই জড়িতদের আটক করা সম্ভব হবে।’ কিন্তু আজও সেই চোর ধরতে পারেনি পুলিশ।
এ ছাড়াও পুলিশের দক্ষতায় ২১ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজপাড়ার একটি দোকানের তালা ভেঙে চুরির সময় হাতেনাতে চোরকে আটক করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৪ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বিশেষ অভিযানে চুয়াডাঙ্গা থেকে চুরি হওয়ার ৭২ ঘন্টার মধ্যে মেহেরপুর থেকে ইজিবাইকসহ আন্তঃজেলা চোর চক্রের এক সদস্যকে আটক করা হয়। ২৮ জানুয়ারি পৌর শহরের ফার্মপাড়া থেকে অভিনব কৌশলে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি (৯ ফেব্রুয়ারি) পৌর শহরের পলাশপাড়া এলাকার মৃত জবেদ আলীর বাসভবনে চুরির চেষ্টাকালে হাতেনাতে একজন মহিলা চোরকে আটক করা হয়।
শহরের বিভিন্ন এলাকা, মার্কেট ও হাট-বাজারের পাহারাদারদের ভাষ্যমতে, ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান সুরক্ষায় রাত জেগে পাহারা করি। আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে চুরির ঘটনা ঘটে, এর জন্য প্রশাসনের লোকেরা দায়ী। আমরা দিনমজুর-নি¤œ আয়ের পাহারাদাররা চুরির দায় মাথায় নিয়ে কেন হাজতে যাবো?
পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনই শহরের কোথাও না কোথাও চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। ইদানিং শহরের বেশ কিছু এলাকায় মাদকসেবীর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। ধারণা মতে, মাদকসেবীরাই এ ধরনের চুরির ঘটনায় জড়িত। চোরের ভয়ে আমরা তটস্থ। সারা এলাকাজুড়ে যেন চুরির উৎসব চলছে। সম্প্রতি চোরের উপদ্রপ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, চোর এবং মাদকসেবীদের ধরতে পুলিশী অভিযান চলছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, মাদকসেবী এসব চোরদের ধরলে আইনের ফাঁকে ক’দিনের মধ্যে জামিনে বের হয়ে আবার সেই একই কাজে জড়িয়ে পড়ে।
এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহাম্মদ কলিমুল্লাহ বলেছেন, ‘চুরির ঘটনার বেশির ভাগ পুলিশকে জানানো হয় না। তবে চোর ধরতে পুলিশের সকল ইউনিট তৎপর রয়েছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে চুরির উপদ্রব বন্ধে সবার আগে আপনাদেরকে সচেতন হতে হবে। বর্তমানে পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত জনবান্ধব। আপনারা সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসুন, চুরিসহ যেকোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ করুন। কোন প্রকার বাড়তি ভোগান্তি ছাড়াই আপনাদের সমস্যার সমাধান করা হবে।’
দিনে অথবা রাতে বিশেষ কায়দায় সুযোগ মত গ্রীল কেটে বা তালা ভেঙ্গে চোরেরা বাসা-বাড়ি, মসজিদ, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে মানুষকে সর্বশান্ত করছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছাউনির টিন কেটে ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা ও মালামাল চুরের ঘটনাও নতুন নয়। চোরদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না বিদ্যুতের তার, ঘটি-বাটি, টিউবওয়েল, পানির ট্যাংক, হাসপাতাল এমনকি মসজিদের দান বাক্সের টাকাও। চুয়াডাঙ্গা শহরে ইদানীং একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে এসমস্ত চুরির ঘটনা অধিকাংশই পুলিশকে জানানো হয় না। ফলে চোরচক্র সনাক্ত ও আটকে নির্বিকার পুলিশ প্রশাসন।
ভুক্তভোগীরা জানান, থানায় চুরির মামলা করতে গিয়ে উল্টো নানা উটকো বিড়ম্বনায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। সে কারণে এর সঠিক পরিসংখ্যানও পাওয়া যায় না। কিন্ত প্রায় প্রতিদিন শহরের কোথাও না কোথাও চুরি সংগঠিত হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। শহরে মাদকসেবীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ ধরনের চুরির ঘটনা ঘটছে এবং মাদকসেবীরাই এসব চুরির সঙ্গে জড়িত বলে, শহরের সচেতন নাগরিকদের দাবি।
১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের কলেজ রোডের জেলা প্রশাসকের বাসভবনের পাশ্ববর্তী একটি বাসা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে। চোরচক্র বাড়ির সদস্যদের মতো চলাচল অনুসরণ করে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে নগদ টাকাসহ একটি ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। একই দিন ওই এলাকার আরও বেশ কয়েকটি বাসা বাড়ি থেকে গহনা, টাকা-পয়সা ও কাপড় চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনার কিছুদিন পূর্বে চুয়াডাঙ্গা পুরাতন জেলখানার পরিত্যক্ত ভবনের জানালার গ্রিল চুরির চেষ্টা চালায় চোরেরা। তবে শহরে টহলরত পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে দফা পালিয়ে যায় চোর। পুলিশ অবশ্য দৌড়েও সেই চোরকে ধরতে ব্যর্থ হয়।
তথ্যানুযায়ী, এ বছরের শুরুতে (৬ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গা বিএডিসি খামারের সাব-স্টেশনের ট্রান্সমিটার চুরির সময় হাতেনাতে একজনকে আটক করে পুলিশে দেয় খামারের লোকজন। পরদিনগত গভীর রাতে পৌর শহরের বুজরুকগড়গড়ি এলাকার এপেক্স ইটভাটায় গভীর রাতে তান্ডব চালায় একদল দুর্বৃত্ত। তারা ইটভাটার শ্রমিকদের কাছ থেকে মোবাইলসহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশি অভিযানে পাঁচজনকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। কিছুদিনের মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত আরও একজনকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ১১ জানুয়ারি গভীর রাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের নিচের বাজারের একটি দোকানের উপরের টিন কেটে ক্যাশবাক্স ভেঙে নগদ টাকা চুরির চেষ্টাকালে পাহারাদারদের দক্ষতায় হাতেনাতে দু’চোর আটক হয়। এ ঘটনার তিন সপ্তাহের মাথায় (২৮ জানুয়ারি) এই বাজারেরই আরও পাঁচটি দোকানে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করা হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাজারের দু’জন নৈশ প্রহরীকে আটক করে প্রায় ৪৮ ঘন্টা পর মুক্তি দেয়া হয়। এরপর থেকে বাজারগুলোতে পাহারাদার সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সমস্ত দোকান/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে সেই সময় এক জরুরী সভায় মিলিত হন। জরুরী সভা থেকে ‘দোকান মালিক/ব্যবসায়ি, শ্রমিক ও নৈশ প্রহরীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত’সহ কয়েক দফা দাবি নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়া হয়। তবে এখনো পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেনি কেউ।
সেই সময় খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল খালেক ব্যবসায়ীদের জরুরী সভায় উপস্থিত হয়ে সমসাময়িক ঘটনা ও চুরির বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক সুবিচারের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘এর আগে এই বাজারে চুরির ঘটনা ঘটেছে এবং আমরা তাৎক্ষণিক চোরচক্রকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এবারের ঘটনার খবর পাওয়ার পর পরই আমরা মাঠে নেমেছি। আপনাদের সহযোগিতা পেলে শিগগিরই জড়িতদের আটক করা সম্ভব হবে।’ কিন্তু আজও সেই চোর ধরতে পারেনি পুলিশ।
এ ছাড়াও পুলিশের দক্ষতায় ২১ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজপাড়ার একটি দোকানের তালা ভেঙে চুরির সময় হাতেনাতে চোরকে আটক করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৪ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বিশেষ অভিযানে চুয়াডাঙ্গা থেকে চুরি হওয়ার ৭২ ঘন্টার মধ্যে মেহেরপুর থেকে ইজিবাইকসহ আন্তঃজেলা চোর চক্রের এক সদস্যকে আটক করা হয়। ২৮ জানুয়ারি পৌর শহরের ফার্মপাড়া থেকে অভিনব কৌশলে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি (৯ ফেব্রুয়ারি) পৌর শহরের পলাশপাড়া এলাকার মৃত জবেদ আলীর বাসভবনে চুরির চেষ্টাকালে হাতেনাতে একজন মহিলা চোরকে আটক করা হয়।
শহরের বিভিন্ন এলাকা, মার্কেট ও হাট-বাজারের পাহারাদারদের ভাষ্যমতে, ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান সুরক্ষায় রাত জেগে পাহারা করি। আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে চুরির ঘটনা ঘটে, এর জন্য প্রশাসনের লোকেরা দায়ী। আমরা দিনমজুর-নি¤œ আয়ের পাহারাদাররা চুরির দায় মাথায় নিয়ে কেন হাজতে যাবো?
পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনই শহরের কোথাও না কোথাও চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। ইদানিং শহরের বেশ কিছু এলাকায় মাদকসেবীর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। ধারণা মতে, মাদকসেবীরাই এ ধরনের চুরির ঘটনায় জড়িত। চোরের ভয়ে আমরা তটস্থ। সারা এলাকাজুড়ে যেন চুরির উৎসব চলছে। সম্প্রতি চোরের উপদ্রপ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, চোর এবং মাদকসেবীদের ধরতে পুলিশী অভিযান চলছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, মাদকসেবী এসব চোরদের ধরলে আইনের ফাঁকে ক’দিনের মধ্যে জামিনে বের হয়ে আবার সেই একই কাজে জড়িয়ে পড়ে।
এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহাম্মদ কলিমুল্লাহ বলেছেন, ‘চুরির ঘটনার বেশির ভাগ পুলিশকে জানানো হয় না। তবে চোর ধরতে পুলিশের সকল ইউনিট তৎপর রয়েছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে চুরির উপদ্রব বন্ধে সবার আগে আপনাদেরকে সচেতন হতে হবে। বর্তমানে পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত জনবান্ধব। আপনারা সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসুন, চুরিসহ যেকোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ করুন। কোন প্রকার বাড়তি ভোগান্তি ছাড়াই আপনাদের সমস্যার সমাধান করা হবে।’