ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চুক্তিবদ্ধ চাষীদের ধোকা দিয়ে সালাউদ্দীন-লোটাস আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৪৭:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর ২০১৭
  • / ৪৪১ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্সের কর্মকর্তাদের ধানবীজ নিয়ে ধান্দাবাজীর গোমর ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা বিএডিসি কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্স কর্মকর্তাদের চলতি বোরো ধানের বীজ নিয়ে টালবাহানার গোমর ফাঁস হয়েছে। সূত্র বলেছে, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ১০ একর স্কীম মালিক পাবে শতভাগ। সর্বোচ্চ ২০ একর স্কীম মালিক পাবে ৬০ ভাগ। নানা টালবাহানা শেষে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে গতকাল সন্ধ্যার সময় কয়েকজন স্কীম মালিককে নামমাত্র বীজ প্রদান করলেও সন্ধ্যার পর সালাউদ্দীন লোটাস এর ম্যানেজার ২ হাজার ৩৮০ কেজি বীজের টোকেন নিয়ে ঈদগাপড়ার আরজেদ আলীর ছেলে বাবুল জনতার হাতে আটক হয়। অবশেষে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
জানা যায়, বীজতলা তৈরী করার সময় শেষ হতে চললেও চুয়াডাঙ্গা জেলায় বোরো বীজ ধানের চাষীরা বীজ না পেয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। এদিকে চাহিদার তুলনায় চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্সের বীজ কম আশায় দফায় দফায় মিটিং করেও কোনো ফল না পেয়ে গতকাল জেলা প্রশাসনের দারস্থ হন কর্তৃপক্ষ। পরে সন্ধ্যার সময় স্কীম মালিকদের বীজ দেওয়া শুরু হয়। এসময় ঢাকা সার্কেলের যুগ্ম পরিচালক মাসুদুর রহমানের উপস্থিতিতে পাঁচজনকে বীজ দেওয়া হয়। যাদের ১০ একরের নীচে স্কীম, তারা পাবে শতভাগ বীজ। আর সর্বোচ্চ ২৫ একর স্কীম মালিকরা পাবেন ৬০ ভাগ। এমনটাই জানান চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্স এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোর্শেদুল ইসলাম। এদিকে গতকাল সন্ধ্যার পর বেরিয়ে আসতে শুরু করে চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্স এর থলের বিড়াল। প্রকৃত কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্স এর স্কীম মালিকদের তালিকা চাইলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন উপ-পরিচালক। পরে তিনি কিছু তালিকার একসেট কপি দিলেও সেখানে স্কীম মালিকদের নাম আছে, পিতার নাম নেই। কোথাকার স্কীম তার কোন ঠিকানা নেই। উপ-পরিচালকের কথা অনুযায়ী যেখানে সর্বোচ্চ স্কীম মালিকের ১৫০ কেজির উপরে বীজ পাওয়ার কথা না। সেখানে চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্স এর উপ-সহকারী পরিচালকের দেওয়া ২ হাজার ৩৮০ কেজি বীজের টোকেন নিয়ে সালাউদ্দীন-লোটাসের ম্যানেজার ঈদগাপাড়ার আরজেদ আলীর ছেলে বাবুলকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনগন।
এ টোকেনের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্টাক্টগ্রোয়ার্স এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোর্শেদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সময়ের সমীকরণকে জানান, এ টোকেন এখন দিচ্ছি না। পরে তাকে আজকের (বৃহস্পতিবারের) তারিখে দেওয়া টোকেন দেখালে তিনি বিষয়টা এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই, কে বা কারা দিয়েছে। লোকনাথপুর ও জীবননগর ব্লকের উপ-সহকরী পরিচলক ফারুক সরকারের নাম ও সীল দেখালে তিনি স্বীকার করেন সে দিয়েছে। বিষয়টা সেই ভালো বলতে পারবে। পরে লোকনাথপুর ও জীবননগর ব্লকের উপ-সহকরী পরিচলক ফারুক সরকারের সাথে মুঠোফোনে তার দেওয়া ২ হাজার ৩৮০ কেজি বীজের টোকেনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান- এটা এমনিতে ইস্যু করেছি, এটা কেস স্লিপ। এটা কিছু না ইত্যাদি। যেটার সঠিক ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে সাধারণ স্কীম মালিকরা অভিযোগ করে বলেন, এতোদিন কর্মকর্তাদের যোগসাজসে কয়েকজন ব্যক্তি বিএডিসির কন্ট্রাক্ট্েরগ্রায়ার্সকে জিম্মি করে তাদের অপতৎপরতা চালাতে পাললেও এখন আর পারছে না। কয়েকজনের স্বার্থ রক্ষা করতে না পারার কারনে কর্তৃপক্ষও বীজ দিতে গড়িমসি শুরু করে দিয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে বীজতলাতে বীজ ফেলতে না পারলে এ বছর বোরো বীজ ধান চাষ করতে পরবে না এসকল স্কীম মালিক বা চাষীরা। ফলে সরকার এ বছর চুয়াডাঙ্গা থেকে ভালো মানের বোরো বীজ ধান পাবে বলে সন্ধেহ থেকেই যাচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুক্তিবদ্ধ চাষীদের ধোকা দিয়ে সালাউদ্দীন-লোটাস আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ

আপলোড টাইম : ১১:৪৭:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর ২০১৭

চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্সের কর্মকর্তাদের ধানবীজ নিয়ে ধান্দাবাজীর গোমর ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা বিএডিসি কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্স কর্মকর্তাদের চলতি বোরো ধানের বীজ নিয়ে টালবাহানার গোমর ফাঁস হয়েছে। সূত্র বলেছে, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ১০ একর স্কীম মালিক পাবে শতভাগ। সর্বোচ্চ ২০ একর স্কীম মালিক পাবে ৬০ ভাগ। নানা টালবাহানা শেষে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে গতকাল সন্ধ্যার সময় কয়েকজন স্কীম মালিককে নামমাত্র বীজ প্রদান করলেও সন্ধ্যার পর সালাউদ্দীন লোটাস এর ম্যানেজার ২ হাজার ৩৮০ কেজি বীজের টোকেন নিয়ে ঈদগাপড়ার আরজেদ আলীর ছেলে বাবুল জনতার হাতে আটক হয়। অবশেষে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
জানা যায়, বীজতলা তৈরী করার সময় শেষ হতে চললেও চুয়াডাঙ্গা জেলায় বোরো বীজ ধানের চাষীরা বীজ না পেয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। এদিকে চাহিদার তুলনায় চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্সের বীজ কম আশায় দফায় দফায় মিটিং করেও কোনো ফল না পেয়ে গতকাল জেলা প্রশাসনের দারস্থ হন কর্তৃপক্ষ। পরে সন্ধ্যার সময় স্কীম মালিকদের বীজ দেওয়া শুরু হয়। এসময় ঢাকা সার্কেলের যুগ্ম পরিচালক মাসুদুর রহমানের উপস্থিতিতে পাঁচজনকে বীজ দেওয়া হয়। যাদের ১০ একরের নীচে স্কীম, তারা পাবে শতভাগ বীজ। আর সর্বোচ্চ ২৫ একর স্কীম মালিকরা পাবেন ৬০ ভাগ। এমনটাই জানান চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্স এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোর্শেদুল ইসলাম। এদিকে গতকাল সন্ধ্যার পর বেরিয়ে আসতে শুরু করে চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্স এর থলের বিড়াল। প্রকৃত কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্স এর স্কীম মালিকদের তালিকা চাইলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন উপ-পরিচালক। পরে তিনি কিছু তালিকার একসেট কপি দিলেও সেখানে স্কীম মালিকদের নাম আছে, পিতার নাম নেই। কোথাকার স্কীম তার কোন ঠিকানা নেই। উপ-পরিচালকের কথা অনুযায়ী যেখানে সর্বোচ্চ স্কীম মালিকের ১৫০ কেজির উপরে বীজ পাওয়ার কথা না। সেখানে চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্ট্রাক্টগ্রোয়ার্স এর উপ-সহকারী পরিচালকের দেওয়া ২ হাজার ৩৮০ কেজি বীজের টোকেন নিয়ে সালাউদ্দীন-লোটাসের ম্যানেজার ঈদগাপাড়ার আরজেদ আলীর ছেলে বাবুলকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনগন।
এ টোকেনের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির কন্টাক্টগ্রোয়ার্স এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোর্শেদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সময়ের সমীকরণকে জানান, এ টোকেন এখন দিচ্ছি না। পরে তাকে আজকের (বৃহস্পতিবারের) তারিখে দেওয়া টোকেন দেখালে তিনি বিষয়টা এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই, কে বা কারা দিয়েছে। লোকনাথপুর ও জীবননগর ব্লকের উপ-সহকরী পরিচলক ফারুক সরকারের নাম ও সীল দেখালে তিনি স্বীকার করেন সে দিয়েছে। বিষয়টা সেই ভালো বলতে পারবে। পরে লোকনাথপুর ও জীবননগর ব্লকের উপ-সহকরী পরিচলক ফারুক সরকারের সাথে মুঠোফোনে তার দেওয়া ২ হাজার ৩৮০ কেজি বীজের টোকেনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান- এটা এমনিতে ইস্যু করেছি, এটা কেস স্লিপ। এটা কিছু না ইত্যাদি। যেটার সঠিক ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে সাধারণ স্কীম মালিকরা অভিযোগ করে বলেন, এতোদিন কর্মকর্তাদের যোগসাজসে কয়েকজন ব্যক্তি বিএডিসির কন্ট্রাক্ট্েরগ্রায়ার্সকে জিম্মি করে তাদের অপতৎপরতা চালাতে পাললেও এখন আর পারছে না। কয়েকজনের স্বার্থ রক্ষা করতে না পারার কারনে কর্তৃপক্ষও বীজ দিতে গড়িমসি শুরু করে দিয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে বীজতলাতে বীজ ফেলতে না পারলে এ বছর বোরো বীজ ধান চাষ করতে পরবে না এসকল স্কীম মালিক বা চাষীরা। ফলে সরকার এ বছর চুয়াডাঙ্গা থেকে ভালো মানের বোরো বীজ ধান পাবে বলে সন্ধেহ থেকেই যাচ্ছে।