ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য প্রবল ঝুঁকিতে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:১৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ২৩২ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
নতুন করোনাভাইরাস কাঁপন ধরিয়েছে সারা বিশ্বে। অনেক দেশে ছোট আকারে এই ভাইরাস ছড়ালেও চীনে চলছে রীতিমতো মহামারি পরিস্থিতি। দেশটিতে গতকাল সোমবার পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫০-এ উঠেছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য-পর্যটন ক্ষেত্রে চীন যেমন ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে, এই সূত্রে প্রভাবও পড়েছে বহু দেশেই। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কারো শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পরেনি। তবে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য, উন্নয়ন ও ভ্রমণকেন্দ্রিক যোগাযোগের পরিসর অনেক বড় থাকায় জনস্বাস্থ্য যেমন পড়েছে ঝুঁকির মুখে, তেমনি দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যও প্রবল ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। চীন থেকে বছরে প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। করোনাভাইরাসের কারণে চীন থেকে পণ্য জাহাজীকরণ, বুকিং এবং বিক্রি আপাতত বন্ধ রয়েছে। যেসব পণ্য দেশে আসছে সেগুলো এক মাস আগেই বুকিং করা। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারিতে চীনা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে চীন এসব পণ্য সরবরাহ শুরু করবে কি না। অনেক দেশ চীনের সঙ্গে আকাশপথে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশও চীনের নাগরিকদের আগমনী ভিসা বন্ধ করেছে। আকাশপথেও যাতায়াত স্থগিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পণ্যের কাঁচামাল আমদানির সংকট দেখা দিলে রপ্তানিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীদের একটি অংশ চীনের বদলে বিকল্প দেশ থেকে এসব পণ্য আমদানির খোঁজখবর নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ এ পরিস্থিতিতে চীনের বিকল্প বাজার ক্রেতাদের হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথাও বলছেন এবং এর জন্য প্রস্তুতির তাগিদ দিয়েছেন।
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বড় ঝুঁকিতে: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। কারণ আমরা চীন থেকে যেমন আমদানি করি, তেমনি আবার রপ্তানির বিষয়ও আছে।’
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘চীনের ভাইরাস সংকট দীর্ঘায়িত হলে আমরা পোশাকসহ শিল্প খাতের যেসব কাঁচামাল আমদানি করি, তাতে সমস্যা দেখা দেবে। প্রয়োজনে বিকল্পও ভাবতে হবে। পরিস্থিতি জটিল হলে কিছু ক্রেতা চীনের বিকল্প খুঁজবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্ভাবনা আছে। তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’
চায়না বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিআই) সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার। ২০২১ সাল নাগাদ এটি ১৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। এই সম্ভাবনায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। সংগঠনটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন মৃধা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই রকম বিপর্যয়ে সবার আগে মানুষের জীবন। এ ক্ষেত্রে চীন কোনো ঝুঁকি নিতে রাজি না। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চীনের রপ্তানিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। সেটার জন্য আমাদের আমদানিতেও একটা বড় প্রভাব পড়বে।’
বিজিএমইএর সহসভাপতি আরশাদ জামাল দিপু বলেন, ‘চীন লক ডাউন (সব দিক থেকে বন্ধ) হওয়ার ফলে পোশাক খাতের ক্রেতার এবং আমাদের উদ্যোক্তাদের বেশ অসুবিধায় পড়তে হবে। কেননা বায়াররা চীনের সাংহাই ও গুয়াংজো শহরে পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের কার্যাদেশ নিয়ে বৈঠক করেন। এ সমস্যার ফলে এসব বৈঠক ব্যাংককে হবে। এর ফলে বাংলাদেশ নতুন ওয়ার্ক অর্ডারের ক্ষেত্রে আংশিক সুবিধা পেতে পারে।’
ফল আমদানিকারক আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিংয়ের মালিক নাজিম উদ্দিন বলছেন, ‘এখন চীন থেকে যেসব ফল দেশে আসছে সেগুলো এক মাস আগে বুুকিং দেওয়া; ভাইরাসের কারণে নতুন করে ফল আসা বন্ধ রয়েছে। আর সর্বোচ্চ ১০ দিন চীন থেকে ফল আসবে। চীন বন্ধ করে দেওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগেভাগে ফল আসা শুরু হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আপেল, কমলা এবং মিসর থেকে মাল্টা আসা শুরু হবে।’
বৈশ্বিক পরামর্শক সংস্থা প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস (পিডাব্লিউসি)-বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক মামুন রশীদ বলেন, ‘কাঁচামাল ও শিল্পের যন্ত্রাংশ আমদানিতে চীন আমাদের জন্য একটি বিরাট উৎস। ফলে রপ্তানিমুখী দেশ হিসেবে আমাদের বাণিজ্য ঝুঁকিতে পড়তে হবে। তবে চীন ছেড়ে যাওয়া ক্রেতাদের ধরতে আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে, আরো আটঘাট বেঁধে নামতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো চীনের বিভিন্ন বড় বড় কম্পানি বাস্তবায়ন করছে। সে ক্ষেত্রে তারা অসুস্থ হলে, কাজে না আসতে পারলে আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন পিছিয়ে যেতে পারে। আমাদের সংকট কাটানোর জন্য বিকল্প প্রস্তুতিও নিতে হবে।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে সে দেশের নাগরিকদের জন্য অন অ্যারাইভাল (আগমনী ভিসা) আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে কুনমিং এবং গুয়াংজুগামী ফ্লাইটে যাত্রীসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। যাত্রীর অভাবে সম্প্রতি একটি বেসরকারি এয়ারলাইনস পূর্বনির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল করেছে। ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, ‘আউটবাউন্ড ও ইনবাউন্ড পর্যটনের একটি বড় বাজার চীন। করোনাভাইরাসের কারণে উভয় পর্যটনেই বড় ধাক্কা লেগেছে।’
মেগা প্রকল্পে সময় ও ব্যয় বাড়তে পারে: বাংলাদেশে চীনা অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তায় অবকাঠামো উন্নয়নের বড় প্রকল্পগুলোর অগ্রগতিতে বাধা তৈরির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত সময়ে কাজ না এগোলে বাড়তে পারে প্রকল্প ব্যয়ও। চৈনিক নববর্ষে যোগ দিতে গিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত অনেক চীনা আটকে পড়েছেন।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ‘এমনিতেই আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা নেই। তার ওপর চীনা সহায়তার বড় প্রকল্পে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা আটকে পড়লে সেটা দুশ্চিন্তারই কারণ। আর সময়মতো কাজ না এগোলে প্রকল্প ব্যয় বাড়বে বা বাড়ানোর অজুহাত তোলা হতে পারে। কর্ণফুলী টানেলসহ কয়েকটি প্রকল্পে কর্মরত চীনের শতাধিক কর্মকর্তা তাঁদের ছুটি আরো বাড়িয়েছেন।’
পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-রেল সংযোগ, কর্ণফুলী টানেল, ঢাকা বাইপাস সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে চীনের নাগরিকরা বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্ত আছেন। এসব প্রকল্পে দেড় হাজার চীনা নাগরিক কাজ করছেন। তার বাইরে আরো কিছু প্রকল্পে ৫০০ চীনা নাগরিক সহায়তা করছেন। এরই মধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্পে যুক্ত ৩৫ চীনা কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘সওজ অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পে যুক্ত চীনা কর্মকর্তা ও পরামর্শকদের জন্য প্রকল্পের কাজ থেমে থাকবে না। অবস্থার অবনতি হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে চীনের ১১০০ নাগরিক কাজ করছেন। তার মধ্যে ছুটিতে দেশে গিয়েছিলেন ২৫০ জন। তাঁরা ফিরছেন। তবে কাজে যুক্ত করা হচ্ছে না। এতে কাজ থেমে নেই। প্রকল্প সূত্র জানায়, চীনফেরত প্রকল্পের ১৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দাপ্তরিক কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে যুক্ত চীনারা ছুটি শেষে ফিরছেন। কিন্তু তাদের ১৪ দিন পর্যবেক্ষণ শেষ না হলে কাজ করতে দেওয়া হবে না। ঢাকা বাইপাস সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত চীনের অর্ধ শতাধিক কর্মকর্তা ছুটি নিয়ে দেশে গেছেন। আগামী মাসে তাঁদের ফেরার কথা। কিন্তু তাঁরা ফিরতে পারবেন না বলে মনে করা হচ্ছে।’
এখন পর্যন্ত করোনামুক্ত বাংলাদেশ: গতকাল সোমবার বিকেলেও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক করোনাভাইরাস বিষয়ে এক সেমিনারে বলেছেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। এমনকি দেশের বাইরেও বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া যায়নি। তবে আমরা ঝুঁকির মধ্যে আছি। সেদিকে নজর রেখে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘২১ জানুয়ারি থেকে আমরা দেশে সতর্কতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছি। এর আওতায় ওই দিন থেকে আজ (গতকাল) পর্যন্ত চীনফেরত মোট পাঁচ হাজার ৯৫২ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। যাদের ভেতর থেকে জ্বর ও সন্দেহজনক উপসর্গ থাকায় ৩৯ জনের রক্ত ও লালা পরীক্ষা করা হয়েছে, কিন্তু কারোর নমুনায়ই করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। ড. ফ্লোরা জানান, উহান থেকে ফেরতদের মধ্যে দুই দফায় ১৬ জনকে কুর্মিটোলা ও সিএমএইচে পাঠানো হয়। যাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আটজনের রক্ত ও লালা পরীক্ষা করা হলেও কারোরই করোনাভাইরাস মেলেনি। এর মধ্যে সাতজন পুরোপুরি সুস্থ হওয়ায় তাঁদের রবিবার রাতে আশকোনা হজ ক্যাম্পের কোয়ারান্টাইনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সর্বশেষ হিসাবে গত রাত পর্যন্ত আশকোনা হজ ক্যাম্পের কোয়ারান্টাইনে ছিলেন ৩০৩ জন। এ ছাড়া হাসপাতালের কোয়ারান্টাইনে রয়েছেন ৯ জন। এর মধ্যে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনটি পরিবারের শিশুসহ আটজন এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একজন রয়েছেন।
আইইডিসিআর মানুষের সচেতনতার জন্য করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ), অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ না করা, কাশি শিষ্টাচার মেনে চলা (হাঁচি-কাশির সময় বাহু-টিস্যু-কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা), অসুস্থ পশু-পাখির সংস্পর্শ পরিহার করা, মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খাওয়া, অসুস্থ হলে ঘরে থাকা, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার, জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত চীন ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকা এবং প্রয়োজন ব্যতীত এ সময়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহ করার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে চীনফেরত কিছু মানুষ সরকারের সরাসরি নজরদারি এড়িয়ে যাঁর যাঁর বাড়িঘরে চলে গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে তাঁদের এলাকায় মানুষের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর পালদী গ্রাৃমের হেলাল সিকদার, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার আবু রায়হান ও রেজোয়ান কবীর এবং পার্বতীপুর কয়লাখনির পাঁচ চীনা নাগরিক সরাসরি চীন থেকে যাঁর যাঁর এলাকায় পৌঁছে গেছেন বিভিন্ন বন্দর হয়ে। তবে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, সবাই স্বাস্থ্য বিভাগের নজরদারিতে আছেন। কারো অসুস্থতা দেখা দিলেই হাসপাতালে নেওয়া হবে।
আইইডিসিআরের পরিচালক এ বিষয়ে বলেন, ‘অনেকেই চীন থেকে এলেও সবাই কিন্তু উহান থেকে আসেনি। আমরা প্রথমত উহান থেকে আসা মানুষদের প্রতি সবচেয়ে বেশি নজর দিচ্ছি।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য প্রবল ঝুঁকিতে

আপলোড টাইম : ১১:১৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০

সমীকরণ প্রতিবেদন:
নতুন করোনাভাইরাস কাঁপন ধরিয়েছে সারা বিশ্বে। অনেক দেশে ছোট আকারে এই ভাইরাস ছড়ালেও চীনে চলছে রীতিমতো মহামারি পরিস্থিতি। দেশটিতে গতকাল সোমবার পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫০-এ উঠেছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য-পর্যটন ক্ষেত্রে চীন যেমন ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে, এই সূত্রে প্রভাবও পড়েছে বহু দেশেই। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কারো শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পরেনি। তবে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য, উন্নয়ন ও ভ্রমণকেন্দ্রিক যোগাযোগের পরিসর অনেক বড় থাকায় জনস্বাস্থ্য যেমন পড়েছে ঝুঁকির মুখে, তেমনি দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যও প্রবল ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। চীন থেকে বছরে প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। করোনাভাইরাসের কারণে চীন থেকে পণ্য জাহাজীকরণ, বুকিং এবং বিক্রি আপাতত বন্ধ রয়েছে। যেসব পণ্য দেশে আসছে সেগুলো এক মাস আগেই বুকিং করা। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারিতে চীনা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে চীন এসব পণ্য সরবরাহ শুরু করবে কি না। অনেক দেশ চীনের সঙ্গে আকাশপথে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশও চীনের নাগরিকদের আগমনী ভিসা বন্ধ করেছে। আকাশপথেও যাতায়াত স্থগিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পণ্যের কাঁচামাল আমদানির সংকট দেখা দিলে রপ্তানিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীদের একটি অংশ চীনের বদলে বিকল্প দেশ থেকে এসব পণ্য আমদানির খোঁজখবর নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ এ পরিস্থিতিতে চীনের বিকল্প বাজার ক্রেতাদের হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথাও বলছেন এবং এর জন্য প্রস্তুতির তাগিদ দিয়েছেন।
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বড় ঝুঁকিতে: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। কারণ আমরা চীন থেকে যেমন আমদানি করি, তেমনি আবার রপ্তানির বিষয়ও আছে।’
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘চীনের ভাইরাস সংকট দীর্ঘায়িত হলে আমরা পোশাকসহ শিল্প খাতের যেসব কাঁচামাল আমদানি করি, তাতে সমস্যা দেখা দেবে। প্রয়োজনে বিকল্পও ভাবতে হবে। পরিস্থিতি জটিল হলে কিছু ক্রেতা চীনের বিকল্প খুঁজবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্ভাবনা আছে। তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।’
চায়না বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিআই) সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার। ২০২১ সাল নাগাদ এটি ১৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। এই সম্ভাবনায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। সংগঠনটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন মৃধা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই রকম বিপর্যয়ে সবার আগে মানুষের জীবন। এ ক্ষেত্রে চীন কোনো ঝুঁকি নিতে রাজি না। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চীনের রপ্তানিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। সেটার জন্য আমাদের আমদানিতেও একটা বড় প্রভাব পড়বে।’
বিজিএমইএর সহসভাপতি আরশাদ জামাল দিপু বলেন, ‘চীন লক ডাউন (সব দিক থেকে বন্ধ) হওয়ার ফলে পোশাক খাতের ক্রেতার এবং আমাদের উদ্যোক্তাদের বেশ অসুবিধায় পড়তে হবে। কেননা বায়াররা চীনের সাংহাই ও গুয়াংজো শহরে পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের কার্যাদেশ নিয়ে বৈঠক করেন। এ সমস্যার ফলে এসব বৈঠক ব্যাংককে হবে। এর ফলে বাংলাদেশ নতুন ওয়ার্ক অর্ডারের ক্ষেত্রে আংশিক সুবিধা পেতে পারে।’
ফল আমদানিকারক আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিংয়ের মালিক নাজিম উদ্দিন বলছেন, ‘এখন চীন থেকে যেসব ফল দেশে আসছে সেগুলো এক মাস আগে বুুকিং দেওয়া; ভাইরাসের কারণে নতুন করে ফল আসা বন্ধ রয়েছে। আর সর্বোচ্চ ১০ দিন চীন থেকে ফল আসবে। চীন বন্ধ করে দেওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগেভাগে ফল আসা শুরু হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আপেল, কমলা এবং মিসর থেকে মাল্টা আসা শুরু হবে।’
বৈশ্বিক পরামর্শক সংস্থা প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস (পিডাব্লিউসি)-বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক মামুন রশীদ বলেন, ‘কাঁচামাল ও শিল্পের যন্ত্রাংশ আমদানিতে চীন আমাদের জন্য একটি বিরাট উৎস। ফলে রপ্তানিমুখী দেশ হিসেবে আমাদের বাণিজ্য ঝুঁকিতে পড়তে হবে। তবে চীন ছেড়ে যাওয়া ক্রেতাদের ধরতে আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে, আরো আটঘাট বেঁধে নামতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো চীনের বিভিন্ন বড় বড় কম্পানি বাস্তবায়ন করছে। সে ক্ষেত্রে তারা অসুস্থ হলে, কাজে না আসতে পারলে আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন পিছিয়ে যেতে পারে। আমাদের সংকট কাটানোর জন্য বিকল্প প্রস্তুতিও নিতে হবে।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে সে দেশের নাগরিকদের জন্য অন অ্যারাইভাল (আগমনী ভিসা) আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে কুনমিং এবং গুয়াংজুগামী ফ্লাইটে যাত্রীসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। যাত্রীর অভাবে সম্প্রতি একটি বেসরকারি এয়ারলাইনস পূর্বনির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল করেছে। ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, ‘আউটবাউন্ড ও ইনবাউন্ড পর্যটনের একটি বড় বাজার চীন। করোনাভাইরাসের কারণে উভয় পর্যটনেই বড় ধাক্কা লেগেছে।’
মেগা প্রকল্পে সময় ও ব্যয় বাড়তে পারে: বাংলাদেশে চীনা অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তায় অবকাঠামো উন্নয়নের বড় প্রকল্পগুলোর অগ্রগতিতে বাধা তৈরির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত সময়ে কাজ না এগোলে বাড়তে পারে প্রকল্প ব্যয়ও। চৈনিক নববর্ষে যোগ দিতে গিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত অনেক চীনা আটকে পড়েছেন।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ‘এমনিতেই আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা নেই। তার ওপর চীনা সহায়তার বড় প্রকল্পে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা আটকে পড়লে সেটা দুশ্চিন্তারই কারণ। আর সময়মতো কাজ না এগোলে প্রকল্প ব্যয় বাড়বে বা বাড়ানোর অজুহাত তোলা হতে পারে। কর্ণফুলী টানেলসহ কয়েকটি প্রকল্পে কর্মরত চীনের শতাধিক কর্মকর্তা তাঁদের ছুটি আরো বাড়িয়েছেন।’
পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-রেল সংযোগ, কর্ণফুলী টানেল, ঢাকা বাইপাস সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে চীনের নাগরিকরা বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্ত আছেন। এসব প্রকল্পে দেড় হাজার চীনা নাগরিক কাজ করছেন। তার বাইরে আরো কিছু প্রকল্পে ৫০০ চীনা নাগরিক সহায়তা করছেন। এরই মধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্পে যুক্ত ৩৫ চীনা কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘সওজ অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পে যুক্ত চীনা কর্মকর্তা ও পরামর্শকদের জন্য প্রকল্পের কাজ থেমে থাকবে না। অবস্থার অবনতি হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে চীনের ১১০০ নাগরিক কাজ করছেন। তার মধ্যে ছুটিতে দেশে গিয়েছিলেন ২৫০ জন। তাঁরা ফিরছেন। তবে কাজে যুক্ত করা হচ্ছে না। এতে কাজ থেমে নেই। প্রকল্প সূত্র জানায়, চীনফেরত প্রকল্পের ১৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দাপ্তরিক কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে যুক্ত চীনারা ছুটি শেষে ফিরছেন। কিন্তু তাদের ১৪ দিন পর্যবেক্ষণ শেষ না হলে কাজ করতে দেওয়া হবে না। ঢাকা বাইপাস সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত চীনের অর্ধ শতাধিক কর্মকর্তা ছুটি নিয়ে দেশে গেছেন। আগামী মাসে তাঁদের ফেরার কথা। কিন্তু তাঁরা ফিরতে পারবেন না বলে মনে করা হচ্ছে।’
এখন পর্যন্ত করোনামুক্ত বাংলাদেশ: গতকাল সোমবার বিকেলেও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক করোনাভাইরাস বিষয়ে এক সেমিনারে বলেছেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। এমনকি দেশের বাইরেও বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া যায়নি। তবে আমরা ঝুঁকির মধ্যে আছি। সেদিকে নজর রেখে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘২১ জানুয়ারি থেকে আমরা দেশে সতর্কতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছি। এর আওতায় ওই দিন থেকে আজ (গতকাল) পর্যন্ত চীনফেরত মোট পাঁচ হাজার ৯৫২ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। যাদের ভেতর থেকে জ্বর ও সন্দেহজনক উপসর্গ থাকায় ৩৯ জনের রক্ত ও লালা পরীক্ষা করা হয়েছে, কিন্তু কারোর নমুনায়ই করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। ড. ফ্লোরা জানান, উহান থেকে ফেরতদের মধ্যে দুই দফায় ১৬ জনকে কুর্মিটোলা ও সিএমএইচে পাঠানো হয়। যাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আটজনের রক্ত ও লালা পরীক্ষা করা হলেও কারোরই করোনাভাইরাস মেলেনি। এর মধ্যে সাতজন পুরোপুরি সুস্থ হওয়ায় তাঁদের রবিবার রাতে আশকোনা হজ ক্যাম্পের কোয়ারান্টাইনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সর্বশেষ হিসাবে গত রাত পর্যন্ত আশকোনা হজ ক্যাম্পের কোয়ারান্টাইনে ছিলেন ৩০৩ জন। এ ছাড়া হাসপাতালের কোয়ারান্টাইনে রয়েছেন ৯ জন। এর মধ্যে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনটি পরিবারের শিশুসহ আটজন এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একজন রয়েছেন।
আইইডিসিআর মানুষের সচেতনতার জন্য করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ), অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ না করা, কাশি শিষ্টাচার মেনে চলা (হাঁচি-কাশির সময় বাহু-টিস্যু-কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা), অসুস্থ পশু-পাখির সংস্পর্শ পরিহার করা, মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খাওয়া, অসুস্থ হলে ঘরে থাকা, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার, জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত চীন ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকা এবং প্রয়োজন ব্যতীত এ সময়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহ করার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে চীনফেরত কিছু মানুষ সরকারের সরাসরি নজরদারি এড়িয়ে যাঁর যাঁর বাড়িঘরে চলে গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে তাঁদের এলাকায় মানুষের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর পালদী গ্রাৃমের হেলাল সিকদার, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার আবু রায়হান ও রেজোয়ান কবীর এবং পার্বতীপুর কয়লাখনির পাঁচ চীনা নাগরিক সরাসরি চীন থেকে যাঁর যাঁর এলাকায় পৌঁছে গেছেন বিভিন্ন বন্দর হয়ে। তবে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, সবাই স্বাস্থ্য বিভাগের নজরদারিতে আছেন। কারো অসুস্থতা দেখা দিলেই হাসপাতালে নেওয়া হবে।
আইইডিসিআরের পরিচালক এ বিষয়ে বলেন, ‘অনেকেই চীন থেকে এলেও সবাই কিন্তু উহান থেকে আসেনি। আমরা প্রথমত উহান থেকে আসা মানুষদের প্রতি সবচেয়ে বেশি নজর দিচ্ছি।’