ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এডি. এসপি তরিকুল ইসলাম : শিঘ্রই প্রতিবেদন দাখিল

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৬:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মার্চ ২০১৮
  • / ৪৮১ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর শিংনগরের অপ্রীতিকর ঘটনা তদন্তে ২ সদস্যের কমিটি
দর্শনা অফিস: জীবননগর থানাধীন শিংনগর গ্রামে আসামী ধরতে গিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়ে ৬ পুলিশ সদস্য ক্লোজড’র ঘটনা তদন্তে ২ সদস্য বিশিষ্ট বিশিষ্ট কমিটি গঠন করো হয়েছে। ওই কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম ও সদস্য সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবীবসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহা. কলিমুল্লাহ এবং জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাবুব হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, ইউপি সদস্য সেলিম উদ্দিন ও আমিনুল ইসলাম।
পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘একটি অপ্রীতিকর ঘটনায় ৬ পুলিশ সদস্য ক্লোজড’র ঘটনায় আমাকে সদস্য করে ও সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবীবকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্তের কাজ চলছে; ২-১ দিনের মধ্যে তদন প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। দোষী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।’
ঘটনার বিবরণে সিংনগর গ্রামের তোতা মিয়া বলেন, ‘আমি বাড়িতে ঢুকছিলাম এ সময় আমার বাড়ির সামনে ৩ জন দাঁড়িয়ে ৩ বোতল ফেনসিডিল খেয়ে আমাকে বলে- ‘আমাদের একটু পানি খাওয়াও’। আমি বাড়ি থেকে গ্লাস এনে দিয়ে বাড়ির বাইরের কল দেখিয়ে দিলে তারা কল থেকে পানি খেয়ে যাওয়ার সময় আমার পকেটে একটি ফেনসিডিলের খালি বোতল দিয়ে গেঞ্জি চেপে ধরে মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারা বলে- ‘১ লাখ টাকা দে নাই ধরে নিয়ে যাবো’। এরপর আমার ভাই পলাশ এসে আমাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এরপর ঐ ৩ জনের মধ্যে একজন মোবাইল করে আরো ৩ জনকে ডেকে আনে। তাদের মধ্যে পিস্তল দেখে পুলিশ ভেবে আমরা পালিয়ে যায়। এ সময় আমাদের ধরতে না পেরে ঘরে ঢুকে গোলাম মিয়ার স্ত্রী (৫০), হাফিজুলের ছেলে নাছিম (৩০), আমার ছেলে রিদয় (১৬), মহি উদ্দিনের স্ত্রী রহিমা (৪৫) ও প্রতিবন্ধি রানার ছেলে আখের আলী (৫০) কে বেদম প্রহার করে। জানালায় হাত কুড়াল দিয়ে টিনের ঘর কুপিয়েছে এবং সুটকেসে থাকা ৭০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে।
এদিকে তোতার স্ত্রী বিউটি খাতুন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে বলে, আমিও তাদের পানি খেতে দিয়েছি।
সিংনগর ওর্য়াড মেম্বর আমিনুল ইসলাম বলেন, বেলা আড়াইটার দিকে আমি ঘটনাটি শুনে চেয়ারম্যানকে ফোন দিই। এরপর চেয়ারম্যান জীবননগর থানায় ফোন দিলে ওসি সাহেব এসে ওদের কাউকে পায়নি। তিনি বলেন- ‘এরা আমাদের থানার কেউ না, চুয়াডাঙ্গা থানার। আর আপনারা সব দেখছেন আমাদের গ্রামের ৬/৭ জনকে অমানসিক ভাবে মেরেছে এবং ঘরবাড়ি ভাংচুর করেছে।
উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি জীবনগর থানার ওসিকে ফোন দিলে তিনি বলেন- ‘ওদের আটকিয়ে রাখেন’। তখন আমি বলি- ওরা তো পুলিশ, ওদের কাছে পিস্তল রয়েছে’।
অপরদিকে ঐ একই সময় দর্শনা আকন্দবাড়িয়া ও সিংনগর সড়কে মানিকপুর গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে বাড়ি থেকে দর্শনায় যাওয়ার পথে ঐ একই পুলিশ তার কাছে থাকা ৪৩ হাজার টাকা কেড়ে এবং তার কাছে থাকা কাগজবিহিন ডিসকভারী মোটরসাইকেল কেড়ে নেয়। এরপর বাড়ি থেকে মোটর-সাইকেলের কাগজপত্র নিয়ে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা থানা থেকে ঐ মোটর সাইকেল নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে সজলের স্ত্রী বলেন, ‘২১ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে এবং বাকি ২২ হাজার টাকা মঙ্গলবার ফিরিয়ে দেবে। তবে সজল টাকা নেওয়ার কথা সাংবাদিকদের কাছে অস্বীকার করে। তবে বিকেলে সজলকে এসপি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এডি. এসপি তরিকুল ইসলাম : শিঘ্রই প্রতিবেদন দাখিল

আপলোড টাইম : ০৯:৫৬:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মার্চ ২০১৮

জীবননগর শিংনগরের অপ্রীতিকর ঘটনা তদন্তে ২ সদস্যের কমিটি
দর্শনা অফিস: জীবননগর থানাধীন শিংনগর গ্রামে আসামী ধরতে গিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়ে ৬ পুলিশ সদস্য ক্লোজড’র ঘটনা তদন্তে ২ সদস্য বিশিষ্ট বিশিষ্ট কমিটি গঠন করো হয়েছে। ওই কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম ও সদস্য সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবীবসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহা. কলিমুল্লাহ এবং জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাবুব হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, ইউপি সদস্য সেলিম উদ্দিন ও আমিনুল ইসলাম।
পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘একটি অপ্রীতিকর ঘটনায় ৬ পুলিশ সদস্য ক্লোজড’র ঘটনায় আমাকে সদস্য করে ও সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবীবকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্তের কাজ চলছে; ২-১ দিনের মধ্যে তদন প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। দোষী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।’
ঘটনার বিবরণে সিংনগর গ্রামের তোতা মিয়া বলেন, ‘আমি বাড়িতে ঢুকছিলাম এ সময় আমার বাড়ির সামনে ৩ জন দাঁড়িয়ে ৩ বোতল ফেনসিডিল খেয়ে আমাকে বলে- ‘আমাদের একটু পানি খাওয়াও’। আমি বাড়ি থেকে গ্লাস এনে দিয়ে বাড়ির বাইরের কল দেখিয়ে দিলে তারা কল থেকে পানি খেয়ে যাওয়ার সময় আমার পকেটে একটি ফেনসিডিলের খালি বোতল দিয়ে গেঞ্জি চেপে ধরে মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারা বলে- ‘১ লাখ টাকা দে নাই ধরে নিয়ে যাবো’। এরপর আমার ভাই পলাশ এসে আমাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এরপর ঐ ৩ জনের মধ্যে একজন মোবাইল করে আরো ৩ জনকে ডেকে আনে। তাদের মধ্যে পিস্তল দেখে পুলিশ ভেবে আমরা পালিয়ে যায়। এ সময় আমাদের ধরতে না পেরে ঘরে ঢুকে গোলাম মিয়ার স্ত্রী (৫০), হাফিজুলের ছেলে নাছিম (৩০), আমার ছেলে রিদয় (১৬), মহি উদ্দিনের স্ত্রী রহিমা (৪৫) ও প্রতিবন্ধি রানার ছেলে আখের আলী (৫০) কে বেদম প্রহার করে। জানালায় হাত কুড়াল দিয়ে টিনের ঘর কুপিয়েছে এবং সুটকেসে থাকা ৭০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে।
এদিকে তোতার স্ত্রী বিউটি খাতুন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে বলে, আমিও তাদের পানি খেতে দিয়েছি।
সিংনগর ওর্য়াড মেম্বর আমিনুল ইসলাম বলেন, বেলা আড়াইটার দিকে আমি ঘটনাটি শুনে চেয়ারম্যানকে ফোন দিই। এরপর চেয়ারম্যান জীবননগর থানায় ফোন দিলে ওসি সাহেব এসে ওদের কাউকে পায়নি। তিনি বলেন- ‘এরা আমাদের থানার কেউ না, চুয়াডাঙ্গা থানার। আর আপনারা সব দেখছেন আমাদের গ্রামের ৬/৭ জনকে অমানসিক ভাবে মেরেছে এবং ঘরবাড়ি ভাংচুর করেছে।
উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি জীবনগর থানার ওসিকে ফোন দিলে তিনি বলেন- ‘ওদের আটকিয়ে রাখেন’। তখন আমি বলি- ওরা তো পুলিশ, ওদের কাছে পিস্তল রয়েছে’।
অপরদিকে ঐ একই সময় দর্শনা আকন্দবাড়িয়া ও সিংনগর সড়কে মানিকপুর গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে বাড়ি থেকে দর্শনায় যাওয়ার পথে ঐ একই পুলিশ তার কাছে থাকা ৪৩ হাজার টাকা কেড়ে এবং তার কাছে থাকা কাগজবিহিন ডিসকভারী মোটরসাইকেল কেড়ে নেয়। এরপর বাড়ি থেকে মোটর-সাইকেলের কাগজপত্র নিয়ে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা থানা থেকে ঐ মোটর সাইকেল নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে সজলের স্ত্রী বলেন, ‘২১ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে এবং বাকি ২২ হাজার টাকা মঙ্গলবার ফিরিয়ে দেবে। তবে সজল টাকা নেওয়ার কথা সাংবাদিকদের কাছে অস্বীকার করে। তবে বিকেলে সজলকে এসপি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়।