ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গাংনীর রাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই কোন নিয়মনীতি অনুপস্থিত থেকেও বেতন উত্তোলন : লেট মাষ্টার হয়ে বহাল তবিয়তে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৪৮:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০১৭
  • / ৩২২ বার পড়া হয়েছে

গাংনী অফিস: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমাতুজ্জোহরা লাভলী বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার পরেও নিয়মিত বেতন উত্তোলন করছেন ও অন্যজন সেলিনা আক্তার লাভলী যিনি চাকুরীর শুরু থেকে সাড়ে ১০টা কিংবা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ে যান। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদের বেতন উত্তোলনে সহায়তা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রাথমিক ভাবে প্রমাণ পাওয়ায় ফাতেমাতুজ্জোহরার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারকে লিখিত দিয়েছেন গাংনী শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এহসানুল হাবীব এবং  সেলিনা আক্তারের  বিষয়টি দেখে ও ম্যানেজিং কমিটির সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।  রাইপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার জানান, শিক্ষক ফাতেমাতুজ্জোহরা গত ৬ জানুয়ারী থেকেই অদ্যাবদি (১৩/০৩/১৭ ইং) অনুপস্থিত রয়েছেন। একজন সহকারী শিক্ষা অফিসারও পরিদর্শনে গিয়ে তার হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত উল্লেখ করেন। ফাতেমাতুজ্জোহরা কোথায় আছেন কেমন আছেন তাও অবহিত করেন না কর্তৃপক্ষকে। বিষয়টি শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়েছে। বিদ্যালয় সভাপতি জাকির হোসেন জানান, তিনি বেশ কয়েকবার ওই শিক্ষককে হুশিয়ার করে দেয়ার পরও তিনি কর্ণপাত করেন না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে। শিক্ষক ফাতেমাতুজ্জোহরার সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি বলেন, আমি মানুষিক ভাবে বেশ কয়েকদিন অসুস্থ। এর আগে এক মাসের ছুটির আবেদন করেছি। আবেদনটি অফিস সহকারীর হাতে দিয়েছি। বেশি অসুস্থ হওয়ায় আর খোজ নিতে পারিনি। বর্তমান আমি স্বামীর কাছে থেকে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে সেলিনা আক্তার তিনি ১৯৯২ সালে রাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর থেকেই সকাল ১০ থেকে সাড়ে ১০ বা পৌনে ১১টার দিকে স্কুলে আসে। এব্যাপারে অনেক বার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদসহ এলাকার অনেক অভিভাবক তাকে বার বার বিষয়টি বিভিন্ন ভাবে আলাপ-আলোচনা করেও কোন সুরাহা মেলেনি। এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার জানান, তিনি বিদ্যালয়ে অনেকদিন যাবত এভাবে আসে তাকে অনেক বার বলেও হয়নি। তিনি যে সময়ে আসবে সেই সময়ে আসে। আমি নিজে যেহেতু অসুস্থ তাই বেশি কিছু বলতে পারিনি। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ও রাইপুর ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি মাফ চাই এর বেশি আর কিছু বলতে পারব না। এব্যাপারে সেলিনা আক্তার বলেন, আমি সংসার করি, বয়স হয়েছে অসুস্থ থাকি, তাছাড়াও রাস্তায় গাড়ী ঘোরা পেতে দেরি হয়। এছাড়াও রাজনৈতিক কারণে কেউ মিথ্যা অভিযোগ করতে পারে। কিন্তু পরপর দুই দিন সাংবাদিকরা ওই বিদ্যালয়ে হাজির হয়েও ৯টার স্কুলে ১০টায় তার উপস্থিতি পায়নি। গাংনী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এহসানুল হাবীব জানান, তিনি শিক্ষকের অনুপস্থিতির বিষয়টি না জেনেই বেতন সীটে স্বাক্ষর করেছেন। এখন অবগত হবার পর তার বেতন বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সাথে নেয়া হবে বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং অন্যজন শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার  বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে বিদ্যালয়ে ৮জন শিক্ষক এর মধ্যে একজন পিটিআইয়ে, একজন টেনিংয়ে, সেলিনা আক্তার লেট মাষ্টার, ফাতেমাতুজজ্জোহরা মানুসিক অসুস্থ ও প্রধান শিক্ষকের ক্যান্সার ধরা পরায়। বর্তমান বিদ্যায়ে পড়ালেখা নিয়ে চিন্তায় পরেছেন অভিভাবকবৃন্দ। দ্রæত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে শিশুদের সুন্দর ভাবে পড়ালেখা শিখতে নানা বিধ সমস্যার সৃষ্টি হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গাংনীর রাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই কোন নিয়মনীতি অনুপস্থিত থেকেও বেতন উত্তোলন : লেট মাষ্টার হয়ে বহাল তবিয়তে

আপলোড টাইম : ০৫:৪৮:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০১৭

গাংনী অফিস: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমাতুজ্জোহরা লাভলী বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার পরেও নিয়মিত বেতন উত্তোলন করছেন ও অন্যজন সেলিনা আক্তার লাভলী যিনি চাকুরীর শুরু থেকে সাড়ে ১০টা কিংবা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ে যান। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদের বেতন উত্তোলনে সহায়তা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রাথমিক ভাবে প্রমাণ পাওয়ায় ফাতেমাতুজ্জোহরার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারকে লিখিত দিয়েছেন গাংনী শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এহসানুল হাবীব এবং  সেলিনা আক্তারের  বিষয়টি দেখে ও ম্যানেজিং কমিটির সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।  রাইপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার জানান, শিক্ষক ফাতেমাতুজ্জোহরা গত ৬ জানুয়ারী থেকেই অদ্যাবদি (১৩/০৩/১৭ ইং) অনুপস্থিত রয়েছেন। একজন সহকারী শিক্ষা অফিসারও পরিদর্শনে গিয়ে তার হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত উল্লেখ করেন। ফাতেমাতুজ্জোহরা কোথায় আছেন কেমন আছেন তাও অবহিত করেন না কর্তৃপক্ষকে। বিষয়টি শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়েছে। বিদ্যালয় সভাপতি জাকির হোসেন জানান, তিনি বেশ কয়েকবার ওই শিক্ষককে হুশিয়ার করে দেয়ার পরও তিনি কর্ণপাত করেন না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে। শিক্ষক ফাতেমাতুজ্জোহরার সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি বলেন, আমি মানুষিক ভাবে বেশ কয়েকদিন অসুস্থ। এর আগে এক মাসের ছুটির আবেদন করেছি। আবেদনটি অফিস সহকারীর হাতে দিয়েছি। বেশি অসুস্থ হওয়ায় আর খোজ নিতে পারিনি। বর্তমান আমি স্বামীর কাছে থেকে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে সেলিনা আক্তার তিনি ১৯৯২ সালে রাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর থেকেই সকাল ১০ থেকে সাড়ে ১০ বা পৌনে ১১টার দিকে স্কুলে আসে। এব্যাপারে অনেক বার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদসহ এলাকার অনেক অভিভাবক তাকে বার বার বিষয়টি বিভিন্ন ভাবে আলাপ-আলোচনা করেও কোন সুরাহা মেলেনি। এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার জানান, তিনি বিদ্যালয়ে অনেকদিন যাবত এভাবে আসে তাকে অনেক বার বলেও হয়নি। তিনি যে সময়ে আসবে সেই সময়ে আসে। আমি নিজে যেহেতু অসুস্থ তাই বেশি কিছু বলতে পারিনি। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ও রাইপুর ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি মাফ চাই এর বেশি আর কিছু বলতে পারব না। এব্যাপারে সেলিনা আক্তার বলেন, আমি সংসার করি, বয়স হয়েছে অসুস্থ থাকি, তাছাড়াও রাস্তায় গাড়ী ঘোরা পেতে দেরি হয়। এছাড়াও রাজনৈতিক কারণে কেউ মিথ্যা অভিযোগ করতে পারে। কিন্তু পরপর দুই দিন সাংবাদিকরা ওই বিদ্যালয়ে হাজির হয়েও ৯টার স্কুলে ১০টায় তার উপস্থিতি পায়নি। গাংনী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এহসানুল হাবীব জানান, তিনি শিক্ষকের অনুপস্থিতির বিষয়টি না জেনেই বেতন সীটে স্বাক্ষর করেছেন। এখন অবগত হবার পর তার বেতন বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সাথে নেয়া হবে বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং অন্যজন শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার  বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে বিদ্যালয়ে ৮জন শিক্ষক এর মধ্যে একজন পিটিআইয়ে, একজন টেনিংয়ে, সেলিনা আক্তার লেট মাষ্টার, ফাতেমাতুজজ্জোহরা মানুসিক অসুস্থ ও প্রধান শিক্ষকের ক্যান্সার ধরা পরায়। বর্তমান বিদ্যায়ে পড়ালেখা নিয়ে চিন্তায় পরেছেন অভিভাবকবৃন্দ। দ্রæত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে শিশুদের সুন্দর ভাবে পড়ালেখা শিখতে নানা বিধ সমস্যার সৃষ্টি হবে।