ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে হাটের জমিতে পৌর মার্কেট নির্মাণে বাধা জমির মালিকানা নিয়ে জটিলতা : উত্তেজনার সৃষ্টি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:২৬:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
  • / ২৭১ বার পড়া হয়েছে

meherpur pic-19-02-17 - Copy

গাংনী অফিস: গাংনী শহরের হাট সংলগ্ন এলাকায় ১৩শতাংশ জমির মালিকানা দাবী করে পৌর মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় আজিম উদ্দীনের ছেলে-মেয়েরা। রোববার সকালে আজিম গং স্বপরিবারে অবস্থান নিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ জোর পূর্বক সেখানে মার্কেট নির্মাণ করছেন বলে দাবী করেছেন আজিম গং। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছেন, হাটের জমিতে নিয়ম মেনেই নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। আজিম উদ্দীন গংয়ের দাবী, গাংনী মৌজার সাবেক ২০৫৬ দাগের ১৩ শতাংশ্য জমি বাংলা ১৩৪২ সালে বন্দোবস্ত নিয়ে স্বত্তবান ও দখলী হয়। কিন্তু এসএ রেকর্ডে ভ্রমাত্মকভাবে সরকারের নামে রেকর্ড হয়। এর বিরুদ্ধে ১৯৮২ সালে আজিম উদ্দীন মেহেরপুর মুন্সেফি আদালতে দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন ও ১৯৮৩ সালের ৮ মার্চ তিনি ডিক্রী প্রাপ্ত হন। এর বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ মিস ছানি মামলা দায়ের করলেও তা নামঞ্জুর হয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর জেলা জজ আদালতে আপিল করে। মেহেরপুর বিজ্ঞ সাব জজ আদালত শুনানি শেষে মামলাটি খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে সরকার পক্ষ ১৯৮৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারী মহামান্য হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন মামলা দায়ের করলেও ২০০১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী হাইকোর্ট এক আদেশে মেহেরপুর সাব জজ আদালতের রায় বহাল রাখেন। আজিম উদ্দীন মন্ডল মারা গেলে আব্দুল গণিসহ তার সাত ছেলে ও দুই কন্যা ওয়ারিশ হন। এ ছাড়াও আরএস রেকর্ড ভ্রম্যাত্মকের সংশোধনী জন্য ২০১৫ সালে মেহেরপুর যুগ্ম জেলা ২য় আদালতে দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন আব্দুল গণি। এদিকে ওই জমিতে থাকা জেলা পরিষদ কর্তৃক নির্মিত টিনশেড ভেঙ্গে গাংনী পৌর কর্তৃপক্ষ ওই জায়গায় মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন। পৌর মেয়র তার নিজস্ব লোক ও পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীগণের উপস্থিতিতে গত বৃহষ্পতিবার থেকে দিন রাত নির্মাণকাজ করায় জনমনে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বৈধভাবে মার্কেট নির্মিত হলে তা কেন দিনে ও রাতের আঁধারে নির্মাণ করা হচ্ছে এ প্রশ্ন জনমনে। এদিকে রোববার সকালে মার্কেট নির্মাণস্থলে আজিম গং অবস্থান নেন। তারা মাটিকাটা স্কেভেটর মেশিন বন্ধ করেন ও শ্রমিকদেরকে সরিয়ে দেন। সংবাদ পেয়ে পৌর মেয়র তার লোকজন নিয়ে আজিম গংদেরকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে আদালতে জরুরী কাজ থাকায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন পৌর মেয়র । স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটায় পার্শ¦বর্তী আশরাফুজ্জামান বদিম মার্কেট ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে দাবী করেছেন আশরাফুজ্জামান বদিম। ইতোমধ্যে ওই মার্কেটের বেজ ঢালাই সংলগ্ন মাটি কাটায় মার্কেটের  সুমি ট্রেডার্সের দেয়াল ধ্বসে প্রায় তিন লক্ষ টাকার মালামাল বিনষ্ট হয় বলে দাবী করেছেন সুমি ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী হাজী গোলাম মোস্তফা। এ মুহুর্তে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে ওই বিল্ডিংটি ধ্বসে পড়তে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। এব্যাপারে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই জমির মালিকানা দাবি করলে জনৈক্য আহম্মেদ আলী করবে আজিম উদ্দীনকে। আজিম উদ্দীনের নামে সিএস রেকর্ড, আরএস রেকর্ড কিছুই নেই আবার মামলা করেছে অন্য নামে বিধায় তারা কারোর প্রলোভনে এ কাজ করছে। আগামীকাল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট বিষয়টি সমাধান হওয়ার কথা রয়েছে। আর যদি তারা আদালতের রায়ে জমি পায় আমরা তাদের ছেড়ে দেব। কিন্তু মাকের্ট নিমার্ণ নিয়ে কেন বাধা দেবে। সরকারী জায়গায় দির্ঘ বছর ধরে হাট বসে আসছে। আজ একজন দাবি করলো আর জমি দিয়ে দেব। জনগনের প্রতিনিধি আমি জনগনের জমি জনগনকে বুজিয়ে দেব। তারা বেশি কিছু করলে জনগনের হাতে ছেড়ে দেব বিচার। এদিকে পৌর প্রকৌশলী শামীম রেজা জানান, নিয়মানুযায়ি পৌর কর্তৃপক্ষ মার্কেট নির্মাণ করছেন। গত ১২ জানুয়ারী ঢাকা খেকে প্রকাশিত আমাদের সময় পত্রিকায় টেন্ডার আহবান করা হয় এবং চলতি মাসের ৯ তারিখে কাজের অনুমতি পান শহিদুল ট্রেডার্স। পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে পৌর মার্কেট। মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম রসুল জানান, দিন ও রাতে  মার্কেট নির্মাণের কথা তিনি শুনেছেন। সরকারীভাবে নির্মিত শেড কিভাবে পৌর কর্তৃপক্ষ ভেঙ্গে ফেলেছেন এবং ওই জমি কার তা দেখে তার পর এবিষয়ে কি করণীয় জানানো হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গাংনীতে হাটের জমিতে পৌর মার্কেট নির্মাণে বাধা জমির মালিকানা নিয়ে জটিলতা : উত্তেজনার সৃষ্টি

আপলোড টাইম : ০৪:২৬:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৭

meherpur pic-19-02-17 - Copy

গাংনী অফিস: গাংনী শহরের হাট সংলগ্ন এলাকায় ১৩শতাংশ জমির মালিকানা দাবী করে পৌর মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় আজিম উদ্দীনের ছেলে-মেয়েরা। রোববার সকালে আজিম গং স্বপরিবারে অবস্থান নিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ জোর পূর্বক সেখানে মার্কেট নির্মাণ করছেন বলে দাবী করেছেন আজিম গং। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছেন, হাটের জমিতে নিয়ম মেনেই নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। আজিম উদ্দীন গংয়ের দাবী, গাংনী মৌজার সাবেক ২০৫৬ দাগের ১৩ শতাংশ্য জমি বাংলা ১৩৪২ সালে বন্দোবস্ত নিয়ে স্বত্তবান ও দখলী হয়। কিন্তু এসএ রেকর্ডে ভ্রমাত্মকভাবে সরকারের নামে রেকর্ড হয়। এর বিরুদ্ধে ১৯৮২ সালে আজিম উদ্দীন মেহেরপুর মুন্সেফি আদালতে দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন ও ১৯৮৩ সালের ৮ মার্চ তিনি ডিক্রী প্রাপ্ত হন। এর বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ মিস ছানি মামলা দায়ের করলেও তা নামঞ্জুর হয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর জেলা জজ আদালতে আপিল করে। মেহেরপুর বিজ্ঞ সাব জজ আদালত শুনানি শেষে মামলাটি খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে সরকার পক্ষ ১৯৮৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারী মহামান্য হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন মামলা দায়ের করলেও ২০০১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী হাইকোর্ট এক আদেশে মেহেরপুর সাব জজ আদালতের রায় বহাল রাখেন। আজিম উদ্দীন মন্ডল মারা গেলে আব্দুল গণিসহ তার সাত ছেলে ও দুই কন্যা ওয়ারিশ হন। এ ছাড়াও আরএস রেকর্ড ভ্রম্যাত্মকের সংশোধনী জন্য ২০১৫ সালে মেহেরপুর যুগ্ম জেলা ২য় আদালতে দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন আব্দুল গণি। এদিকে ওই জমিতে থাকা জেলা পরিষদ কর্তৃক নির্মিত টিনশেড ভেঙ্গে গাংনী পৌর কর্তৃপক্ষ ওই জায়গায় মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন। পৌর মেয়র তার নিজস্ব লোক ও পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীগণের উপস্থিতিতে গত বৃহষ্পতিবার থেকে দিন রাত নির্মাণকাজ করায় জনমনে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বৈধভাবে মার্কেট নির্মিত হলে তা কেন দিনে ও রাতের আঁধারে নির্মাণ করা হচ্ছে এ প্রশ্ন জনমনে। এদিকে রোববার সকালে মার্কেট নির্মাণস্থলে আজিম গং অবস্থান নেন। তারা মাটিকাটা স্কেভেটর মেশিন বন্ধ করেন ও শ্রমিকদেরকে সরিয়ে দেন। সংবাদ পেয়ে পৌর মেয়র তার লোকজন নিয়ে আজিম গংদেরকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে আদালতে জরুরী কাজ থাকায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন পৌর মেয়র । স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটায় পার্শ¦বর্তী আশরাফুজ্জামান বদিম মার্কেট ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে দাবী করেছেন আশরাফুজ্জামান বদিম। ইতোমধ্যে ওই মার্কেটের বেজ ঢালাই সংলগ্ন মাটি কাটায় মার্কেটের  সুমি ট্রেডার্সের দেয়াল ধ্বসে প্রায় তিন লক্ষ টাকার মালামাল বিনষ্ট হয় বলে দাবী করেছেন সুমি ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী হাজী গোলাম মোস্তফা। এ মুহুর্তে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে ওই বিল্ডিংটি ধ্বসে পড়তে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। এব্যাপারে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই জমির মালিকানা দাবি করলে জনৈক্য আহম্মেদ আলী করবে আজিম উদ্দীনকে। আজিম উদ্দীনের নামে সিএস রেকর্ড, আরএস রেকর্ড কিছুই নেই আবার মামলা করেছে অন্য নামে বিধায় তারা কারোর প্রলোভনে এ কাজ করছে। আগামীকাল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট বিষয়টি সমাধান হওয়ার কথা রয়েছে। আর যদি তারা আদালতের রায়ে জমি পায় আমরা তাদের ছেড়ে দেব। কিন্তু মাকের্ট নিমার্ণ নিয়ে কেন বাধা দেবে। সরকারী জায়গায় দির্ঘ বছর ধরে হাট বসে আসছে। আজ একজন দাবি করলো আর জমি দিয়ে দেব। জনগনের প্রতিনিধি আমি জনগনের জমি জনগনকে বুজিয়ে দেব। তারা বেশি কিছু করলে জনগনের হাতে ছেড়ে দেব বিচার। এদিকে পৌর প্রকৌশলী শামীম রেজা জানান, নিয়মানুযায়ি পৌর কর্তৃপক্ষ মার্কেট নির্মাণ করছেন। গত ১২ জানুয়ারী ঢাকা খেকে প্রকাশিত আমাদের সময় পত্রিকায় টেন্ডার আহবান করা হয় এবং চলতি মাসের ৯ তারিখে কাজের অনুমতি পান শহিদুল ট্রেডার্স। পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে পৌর মার্কেট। মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম রসুল জানান, দিন ও রাতে  মার্কেট নির্মাণের কথা তিনি শুনেছেন। সরকারীভাবে নির্মিত শেড কিভাবে পৌর কর্তৃপক্ষ ভেঙ্গে ফেলেছেন এবং ওই জমি কার তা দেখে তার পর এবিষয়ে কি করণীয় জানানো হবে।