ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে লাঠি হাতে সড়কে পৌর মেয়র

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩০:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ জুন ২০২০
  • / ১৪২ বার পড়া হয়েছে

গাংনী অফিস:
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মেহেরপুর গাংনী করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় ঘর থেকে বের হওয়া মানুষের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আবারও লাঠি হাতে মাঠে নেমেছেন গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম। ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বদরুল আলম ও পৌর কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চলাচল করা মানুষের মাস্ক পরতে বাধ্য করেছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে তিনি লাঠি হাতে একই স্থানে দাঁড়িয়ে ঘর থেকে বিনা কারণে বের হওয়া মানুষদের সচেতন করেছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বৃহস্পতিবার বলা হয় ‘আপনার সুরক্ষা আপনার হাতেই।’ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আর কোনো উপায় নেই। বিশেষ করে ঘর থেকে বের হলেই পরতে হবে মাস্ক। কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ বা কোনো কাজে মিলিত হওয়ার প্রয়োজন হলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে গাংনী উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মর্তার সভাকক্ষে। সভায় উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ঘর থেকে বের হওয়া ও কর্ম ক্ষেত্রে শতভাগ মানুষের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী বিকেলে মাঠে নামেন গাংনী পৌর মেয়র। মাস্ক ব্যবহার না করায় পথচারী ও যানবাহনে থাকা মানুষকে করা হয় বিভিন্ন প্রকার জেরা। তাৎক্ষণিকভাবে মাস্ক কিনে তা মুখে পরতে বাধ্য করেন পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম। একই সঙ্গে হ্যান্ড মাইক নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা দেন ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পৌর কৃষক লীগের সভাপতি বদরুল আলম।
গতকালের এই কর্মসূচির খবর পেয়ে বদলে যায় গাংনী শহরে মানুষের চলাচলের চিত্র। মাস্কবিহীন ঘর থেকে বের হওয়া অনেকেই অলিগলি রাস্তা দিয়ে লুকিয়ে ফিরেছেন গন্তব্যে। যারা মেয়র-কাউন্সিলরদের জেরার মুখে পড়েছেন তাঁরা মাস্ক পরার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। অপরদিকে অনেকেই বাসস্ট্যান্ড থেকে মাস্ক কিনে পরে ফিরেছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।
এ প্রসঙ্গে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, মাস্কবিহীন কেউ ঘর থেকে বের হয়ে পৌর এলাকায় প্রবেশ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাংনী পৌর এলাকা করোনাভাইরাস সংক্রমণ মুক্ত রাখতে মাস্ক পরানো কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বদরুল আলম বলেন, ‘যারা বাইরে থেকে এলাকায় ফিরছেন, তাঁদেরকে কোরিন্টিন করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আমরা পৌর পরিষদ থেকে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।’
প্রসঙ্গত, মেহেরপুর জেলা রেড জোনের প্রাথমিক তালিকা থেকে গ্রিন জোনে পড়েছে। ফলে লকডাউন হচ্ছে না মেহেরপুর জেলা। তবে জেলায় দিনদিন সংক্রমণ বাড়ছে। এমন অবস্থাতেও ঘর থেকে বের হওয়া বেশিরভাগ মানুষ ব্যবহার করছে না মাক্স। পৌর মেয়র এর গতকালের এই উদ্যোগে পাল্টাতে শুরু করেছে গাংনী শহরে বের হওয়া মানুষের চিত্র। বাধ্য হচ্ছেন তাই অনেকে বাদ পড়া শুরু করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গাংনীতে লাঠি হাতে সড়কে পৌর মেয়র

আপলোড টাইম : ১০:৩০:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ জুন ২০২০

গাংনী অফিস:
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মেহেরপুর গাংনী করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় ঘর থেকে বের হওয়া মানুষের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আবারও লাঠি হাতে মাঠে নেমেছেন গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম। ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বদরুল আলম ও পৌর কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চলাচল করা মানুষের মাস্ক পরতে বাধ্য করেছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে তিনি লাঠি হাতে একই স্থানে দাঁড়িয়ে ঘর থেকে বিনা কারণে বের হওয়া মানুষদের সচেতন করেছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বৃহস্পতিবার বলা হয় ‘আপনার সুরক্ষা আপনার হাতেই।’ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আর কোনো উপায় নেই। বিশেষ করে ঘর থেকে বের হলেই পরতে হবে মাস্ক। কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ বা কোনো কাজে মিলিত হওয়ার প্রয়োজন হলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে গাংনী উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মর্তার সভাকক্ষে। সভায় উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ঘর থেকে বের হওয়া ও কর্ম ক্ষেত্রে শতভাগ মানুষের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী বিকেলে মাঠে নামেন গাংনী পৌর মেয়র। মাস্ক ব্যবহার না করায় পথচারী ও যানবাহনে থাকা মানুষকে করা হয় বিভিন্ন প্রকার জেরা। তাৎক্ষণিকভাবে মাস্ক কিনে তা মুখে পরতে বাধ্য করেন পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম। একই সঙ্গে হ্যান্ড মাইক নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা দেন ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পৌর কৃষক লীগের সভাপতি বদরুল আলম।
গতকালের এই কর্মসূচির খবর পেয়ে বদলে যায় গাংনী শহরে মানুষের চলাচলের চিত্র। মাস্কবিহীন ঘর থেকে বের হওয়া অনেকেই অলিগলি রাস্তা দিয়ে লুকিয়ে ফিরেছেন গন্তব্যে। যারা মেয়র-কাউন্সিলরদের জেরার মুখে পড়েছেন তাঁরা মাস্ক পরার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। অপরদিকে অনেকেই বাসস্ট্যান্ড থেকে মাস্ক কিনে পরে ফিরেছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।
এ প্রসঙ্গে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, মাস্কবিহীন কেউ ঘর থেকে বের হয়ে পৌর এলাকায় প্রবেশ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাংনী পৌর এলাকা করোনাভাইরাস সংক্রমণ মুক্ত রাখতে মাস্ক পরানো কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বদরুল আলম বলেন, ‘যারা বাইরে থেকে এলাকায় ফিরছেন, তাঁদেরকে কোরিন্টিন করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আমরা পৌর পরিষদ থেকে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।’
প্রসঙ্গত, মেহেরপুর জেলা রেড জোনের প্রাথমিক তালিকা থেকে গ্রিন জোনে পড়েছে। ফলে লকডাউন হচ্ছে না মেহেরপুর জেলা। তবে জেলায় দিনদিন সংক্রমণ বাড়ছে। এমন অবস্থাতেও ঘর থেকে বের হওয়া বেশিরভাগ মানুষ ব্যবহার করছে না মাক্স। পৌর মেয়র এর গতকালের এই উদ্যোগে পাল্টাতে শুরু করেছে গাংনী শহরে বের হওয়া মানুষের চিত্র। বাধ্য হচ্ছেন তাই অনেকে বাদ পড়া শুরু করেছেন।