ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

খাড়াগোদা থেকে গোপালপুর ১০ কিঃমিঃ ব্যস্তময় সড়কের বেহালদশা ভোগান্তির অন্ত নেই যাত্রীদের : সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:৩১:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৬
  • / ৩২৪ বার পড়া হয়েছে

IMG_20161124_193819_019

তিতুদহ প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা থেকে গোপালপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার ব্যস্তময় সড়কের ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করেছে। ভাঙা রাস্তা এবং ছোট-বড় শত শত গর্তের কারণে ক্রমেই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠছে এই সড়ক। রাস্তার কার্পেটিং নষ্ট হয়ে খুবই ভয়ানক অবস্থায় রয়েছে ছোট-বড় ইটের টুকরোগুলো। গর্তে গাড়ি পড়ে প্রতিদিনই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। অথচ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার পণ্য পরিবহন করা হয়। চালকেরা বলছেন, আগে সবজি বোঝায় গাড়ি নিয়ে সরোজগঞ্জ হয়ে ঢাকাতে যেতাম। কিন্তু খাড়াগোদা-সরোজগঞ্জ সড়কের যে অবস্থা তাতে করে খালি গাড়ি নিয়ে যাওয়াই সমস্যা তো বোঝায় গাড়ি কিভাবে নিবো। তাই বাধ্য হয়ে ঢাকাতে পণ্য নিতে এ রাস্তা ব্যবহার করি। কিন্তু এ রাস্তার অবস্থা তার থেকেও খারাপ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চোরকোল পেরিয়ে গোপালপুর সামনে রেখে মাঠের ভিতর গত শনিবার সকালে গর্তে পড়ে একটি অটো উল্টে যায়। কয়েকদিন আগে সকালে গর্তে পড়ে গোবিন্দপুরে এক্সেল ভেঙে একটি পাখি ভ্যান উল্টে যায়। কিছুদিন আগে যাত্রী বোঝায় আলমসাধুর এক্সেল ভেঙে যায়। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাড়াগোদা থেকে গোপালপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং উঠে ও রাস্তা ভেঙে সৃষ্টি হয়েছে শত শত গর্ত। এসব গর্ত পার হয়ে গাড়ি চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চালকদের। নষ্ট হচ্ছে গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ। স্থানীয়রা জানান, ২০০২ সালে রাস্তা তৈরির পর এই সড়কের আরো কোনো স্থায়ী সংস্কার বা নতুন করে মেরামত করা হয়নি। গর্তে পড়ে যাত্রীসহ অটো, পাখি ভ্যান, আলমসাধু এমন কি বড় ধরনের কাঁচা সবজি বোঝায় ট্রাক উল্টে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ৭ বছর ধরে এ সড়কে গাড়ি চালাচ্ছেন মো. সবুজ মিয়া। তিনি সমীকরণকে বলেন, খাড়াগোদা ছেড়ে গিয়ে মুহাম্মদপুর থেকে শুরু করে গোপালপুর পর্যন্ত সড়কে বেশি গর্ত। ফলে গাড়ি নষ্ট হচ্ছে, যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। গর্তের মধ্যে বালি নেই। গর্তে পড়ে গাড়ির এক্সেল ভেঙে যায়। প্রতিদিনই দূর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু দেখার কোনো মানুষ নেই। পিকআপ চালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম সমীকরণকে জানান, রাস্তার যে অবস্থা ১৯৯৮ সালে যেমন মাটির রাস্তা ছিল, এখন রাস্তার অবস্থাও ঠিক সেরকম। ক্ষেতের আইলও আরো ভালো। প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার পণ্য রপ্তানি হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে। কিন্তু রাস্তা নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, খাড়াগোদা থেকে গোপালপুর পর্যন্ত রাস্তাকে রাস্তা বলা যায় না। এক গর্ত পার হলেই আর এক গর্ত। মানুষ চলাফেরা করতে পারছেন না। স্থানীয় সরকার/ঠিকাদার শহরের রাস্তাগুলো নিয়েই ব্যস্ত আছেন। কিন্তু যেটা আগে প্রয়োজন সেটা তো আগে দেখতে হবে। প্রাইমারি পাশ না করে কি হাইস্কুলে পড়া যায়? গ্রামের রাস্তার উন্নয়ন না করে কি শহরের রাস্তার উন্নয়ন সম্ভব? এ রাস্তা ব্যবহার করে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টির মতো আলমসাধু, অটো, করিমন, নছিমন, ভ্যান, পাখিভ্যান এবং ১৫ থেকে ২০টির মতো কাঁচামাল বোঝায় বড় আকারের পিকআপ, ট্রাক চলাচল করে। এছাড়া স্কুল, মাদ্রাসায় পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচলের একমাত্র সড়কও এটা। কিন্তু দেখার যেনো কেউই নেই। এ রাস্তা দিয়ে অসুস্থ বা ডেলিভারী রোগী নিয়ে যেতে দেখা দেয় নানা সমস্যা। পড়তে হয় নানা দুর্ভোগে। স্কুল মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, এখান থেকে স্কুলে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ কিন্তু আমাদের সময় লাগে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট। এসব দুর্ভোগ, দুর্দশা নিয়ে দিনের পর দিন পার করছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা থেকে গোপালপুর সড়কে প্রতিনিয়ত চলাচলকারী যাত্রীরা। যদি স্থানীয় ঠিকাদার বা সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ একটু সুনজর দিতো তাহলে দুর্ভোগের ছোবল থেকে রক্ষা পেতো খাড়াগোদা-গোপালপুর ব্যস্তময় সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

খাড়াগোদা থেকে গোপালপুর ১০ কিঃমিঃ ব্যস্তময় সড়কের বেহালদশা ভোগান্তির অন্ত নেই যাত্রীদের : সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ

আপলোড টাইম : ০৩:৩১:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৬

IMG_20161124_193819_019

তিতুদহ প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা থেকে গোপালপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার ব্যস্তময় সড়কের ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করেছে। ভাঙা রাস্তা এবং ছোট-বড় শত শত গর্তের কারণে ক্রমেই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠছে এই সড়ক। রাস্তার কার্পেটিং নষ্ট হয়ে খুবই ভয়ানক অবস্থায় রয়েছে ছোট-বড় ইটের টুকরোগুলো। গর্তে গাড়ি পড়ে প্রতিদিনই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। অথচ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার পণ্য পরিবহন করা হয়। চালকেরা বলছেন, আগে সবজি বোঝায় গাড়ি নিয়ে সরোজগঞ্জ হয়ে ঢাকাতে যেতাম। কিন্তু খাড়াগোদা-সরোজগঞ্জ সড়কের যে অবস্থা তাতে করে খালি গাড়ি নিয়ে যাওয়াই সমস্যা তো বোঝায় গাড়ি কিভাবে নিবো। তাই বাধ্য হয়ে ঢাকাতে পণ্য নিতে এ রাস্তা ব্যবহার করি। কিন্তু এ রাস্তার অবস্থা তার থেকেও খারাপ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চোরকোল পেরিয়ে গোপালপুর সামনে রেখে মাঠের ভিতর গত শনিবার সকালে গর্তে পড়ে একটি অটো উল্টে যায়। কয়েকদিন আগে সকালে গর্তে পড়ে গোবিন্দপুরে এক্সেল ভেঙে একটি পাখি ভ্যান উল্টে যায়। কিছুদিন আগে যাত্রী বোঝায় আলমসাধুর এক্সেল ভেঙে যায়। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাড়াগোদা থেকে গোপালপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং উঠে ও রাস্তা ভেঙে সৃষ্টি হয়েছে শত শত গর্ত। এসব গর্ত পার হয়ে গাড়ি চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চালকদের। নষ্ট হচ্ছে গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ। স্থানীয়রা জানান, ২০০২ সালে রাস্তা তৈরির পর এই সড়কের আরো কোনো স্থায়ী সংস্কার বা নতুন করে মেরামত করা হয়নি। গর্তে পড়ে যাত্রীসহ অটো, পাখি ভ্যান, আলমসাধু এমন কি বড় ধরনের কাঁচা সবজি বোঝায় ট্রাক উল্টে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ৭ বছর ধরে এ সড়কে গাড়ি চালাচ্ছেন মো. সবুজ মিয়া। তিনি সমীকরণকে বলেন, খাড়াগোদা ছেড়ে গিয়ে মুহাম্মদপুর থেকে শুরু করে গোপালপুর পর্যন্ত সড়কে বেশি গর্ত। ফলে গাড়ি নষ্ট হচ্ছে, যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। গর্তের মধ্যে বালি নেই। গর্তে পড়ে গাড়ির এক্সেল ভেঙে যায়। প্রতিদিনই দূর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু দেখার কোনো মানুষ নেই। পিকআপ চালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম সমীকরণকে জানান, রাস্তার যে অবস্থা ১৯৯৮ সালে যেমন মাটির রাস্তা ছিল, এখন রাস্তার অবস্থাও ঠিক সেরকম। ক্ষেতের আইলও আরো ভালো। প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার পণ্য রপ্তানি হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে। কিন্তু রাস্তা নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, খাড়াগোদা থেকে গোপালপুর পর্যন্ত রাস্তাকে রাস্তা বলা যায় না। এক গর্ত পার হলেই আর এক গর্ত। মানুষ চলাফেরা করতে পারছেন না। স্থানীয় সরকার/ঠিকাদার শহরের রাস্তাগুলো নিয়েই ব্যস্ত আছেন। কিন্তু যেটা আগে প্রয়োজন সেটা তো আগে দেখতে হবে। প্রাইমারি পাশ না করে কি হাইস্কুলে পড়া যায়? গ্রামের রাস্তার উন্নয়ন না করে কি শহরের রাস্তার উন্নয়ন সম্ভব? এ রাস্তা ব্যবহার করে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টির মতো আলমসাধু, অটো, করিমন, নছিমন, ভ্যান, পাখিভ্যান এবং ১৫ থেকে ২০টির মতো কাঁচামাল বোঝায় বড় আকারের পিকআপ, ট্রাক চলাচল করে। এছাড়া স্কুল, মাদ্রাসায় পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচলের একমাত্র সড়কও এটা। কিন্তু দেখার যেনো কেউই নেই। এ রাস্তা দিয়ে অসুস্থ বা ডেলিভারী রোগী নিয়ে যেতে দেখা দেয় নানা সমস্যা। পড়তে হয় নানা দুর্ভোগে। স্কুল মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, এখান থেকে স্কুলে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ কিন্তু আমাদের সময় লাগে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট। এসব দুর্ভোগ, দুর্দশা নিয়ে দিনের পর দিন পার করছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা থেকে গোপালপুর সড়কে প্রতিনিয়ত চলাচলকারী যাত্রীরা। যদি স্থানীয় ঠিকাদার বা সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ একটু সুনজর দিতো তাহলে দুর্ভোগের ছোবল থেকে রক্ষা পেতো খাড়াগোদা-গোপালপুর ব্যস্তময় সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা।