ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ১০১৭ সাংবাদিকের বিবৃতি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৫৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০১৯
  • / ২২৪ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন এক হাজার ১৭ সাংবাদিক। তারা অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই তাঁর বন্দিত্ব অবসানের বিষয়টি নিশ্চিত করারও দাবি জানান সাংবাদিকরা। গতকাল রবিবার এক বিবৃতিতে সাংবাদিকরা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের দাবি, আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই তাঁর বন্দিত্ব অবসানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হোক। বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা উৎকন্ঠাও প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তাঁর দুই হাত ও কাঁধের ব্যথা মারাত্মক পর্যায়ে। তাঁর ডায়াবেটিসও বিপজ্জনক মাত্রায়। মুখের ভেতরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর স্বাস্থ্যের এমন অবনতি হয়েছে যে তিনি স্বাভাবিকভাবে খাওয়া-দাওয়া পর্যন্ত করতে পারছেন না।খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। অসুস্থ অবস্থায়ই এক বছরের বেশি সময় আগে তাঁকে জেলে নেয়া হয়। রাখা হয় নাজিমউদ্দিন রোডের জনমানবহীন পরিত্যাক্ত কারাগারের স্যাঁতস্যাঁতে কক্ষে। জেলে নেয়ার পর চিকিৎসায় উপর্যুপরি অবহেলার কারণে তাঁর অসুখের মাত্রা বেড়ে যায়। নতুন নতুন উপসর্গ দেখা দেয়। একপর্যায়ে বেগম জিয়া নিজেই আদালতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা জানাতে বাধ্য হন।
সরকার গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড তাঁকে পরীক্ষা করে তাদের রিপোর্টে জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাম কাঁধে ব্যথা বাড়ার পাশাপাশি তিনি বাম কাঁধ ঠিকমতো নাড়াতে পারেন না। বাম বাহু, বাম পা এবং শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথায় তিনি অস্থির থাকেন। তাঁর হাতের গ্রিপও দুর্বল। চিকিৎসকরা রিপোর্টে তাঁর ‘কার্পাল টানেল সিনড্রোমের’ কথা উল্লেখ করেন। আমরা গভীর উৎকণ্ঠার সঙ্গে বলতে চাই, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে করা একটি উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাদ- দেয়া হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট কিংবা চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তাছাড়া যে দুই কোটি টাকা নিয়ে মামলা, সেই দুই কোটি টাকার একটি টাকাও নষ্ট হয়নি। ইতোমধ্যে সেই টাকা ব্যাংকে তিনগুণ বেড়ে ছয় কোটিরও বেশি হয়েছে। কিন্তু প্রবীণ বয়সে অন্যায়ভাবে শাস্তি পাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। এই মামলায় উচ্চতর আদালত থেকে জামিন হওয়া সত্ত্বেও এক বছরের বেশি সময় ধরে নানান ফন্দিফিকির করে তাঁকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। ৩৪টি হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাঁর মুক্তিলাভে সুকৌশলে ব্যাঘাত ঘটানো হচ্ছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়া একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আপসহীন, অসামান্য নেত্রী। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী তিনি। তাঁর নূন্যতম মৌলিক মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। বন্দি রেখে তাঁকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া অমানবিক, অযৌক্তিক, প্রতিহিংসামূলক এবং অগ্রহণযোগ্য। আমাদের প্রত্যাশা, অনতিবিলম্বে সরকার তাঁকে মুক্তি দিয়ে গণতন্ত্র ও গণমানুষের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ১০১৭ সাংবাদিকের বিবৃতি

আপলোড টাইম : ১১:৫৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০১৯

সমীকরণ প্রতিবেদন:
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন এক হাজার ১৭ সাংবাদিক। তারা অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই তাঁর বন্দিত্ব অবসানের বিষয়টি নিশ্চিত করারও দাবি জানান সাংবাদিকরা। গতকাল রবিবার এক বিবৃতিতে সাংবাদিকরা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের দাবি, আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই তাঁর বন্দিত্ব অবসানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হোক। বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা উৎকন্ঠাও প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তাঁর দুই হাত ও কাঁধের ব্যথা মারাত্মক পর্যায়ে। তাঁর ডায়াবেটিসও বিপজ্জনক মাত্রায়। মুখের ভেতরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর স্বাস্থ্যের এমন অবনতি হয়েছে যে তিনি স্বাভাবিকভাবে খাওয়া-দাওয়া পর্যন্ত করতে পারছেন না।খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। অসুস্থ অবস্থায়ই এক বছরের বেশি সময় আগে তাঁকে জেলে নেয়া হয়। রাখা হয় নাজিমউদ্দিন রোডের জনমানবহীন পরিত্যাক্ত কারাগারের স্যাঁতস্যাঁতে কক্ষে। জেলে নেয়ার পর চিকিৎসায় উপর্যুপরি অবহেলার কারণে তাঁর অসুখের মাত্রা বেড়ে যায়। নতুন নতুন উপসর্গ দেখা দেয়। একপর্যায়ে বেগম জিয়া নিজেই আদালতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা জানাতে বাধ্য হন।
সরকার গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড তাঁকে পরীক্ষা করে তাদের রিপোর্টে জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাম কাঁধে ব্যথা বাড়ার পাশাপাশি তিনি বাম কাঁধ ঠিকমতো নাড়াতে পারেন না। বাম বাহু, বাম পা এবং শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথায় তিনি অস্থির থাকেন। তাঁর হাতের গ্রিপও দুর্বল। চিকিৎসকরা রিপোর্টে তাঁর ‘কার্পাল টানেল সিনড্রোমের’ কথা উল্লেখ করেন। আমরা গভীর উৎকণ্ঠার সঙ্গে বলতে চাই, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে করা একটি উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাদ- দেয়া হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট কিংবা চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তাছাড়া যে দুই কোটি টাকা নিয়ে মামলা, সেই দুই কোটি টাকার একটি টাকাও নষ্ট হয়নি। ইতোমধ্যে সেই টাকা ব্যাংকে তিনগুণ বেড়ে ছয় কোটিরও বেশি হয়েছে। কিন্তু প্রবীণ বয়সে অন্যায়ভাবে শাস্তি পাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। এই মামলায় উচ্চতর আদালত থেকে জামিন হওয়া সত্ত্বেও এক বছরের বেশি সময় ধরে নানান ফন্দিফিকির করে তাঁকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। ৩৪টি হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাঁর মুক্তিলাভে সুকৌশলে ব্যাঘাত ঘটানো হচ্ছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়া একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আপসহীন, অসামান্য নেত্রী। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী তিনি। তাঁর নূন্যতম মৌলিক মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। বন্দি রেখে তাঁকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া অমানবিক, অযৌক্তিক, প্রতিহিংসামূলক এবং অগ্রহণযোগ্য। আমাদের প্রত্যাশা, অনতিবিলম্বে সরকার তাঁকে মুক্তি দিয়ে গণতন্ত্র ও গণমানুষের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।