ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার নির্দেশ আদালতের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:১২:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০১৯
  • / ২৮১ বার পড়া হয়েছে

কুমিল্লার হত্যা মামলায় জামিন শুনানি আজ; এগারো মামলার শুনানি ১৬ এপ্রিল
সমীকরণ প্রতিবেদন:
উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড ও জেল কোড অনুযায়ী কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত খালেদা জিয়ার পক্ষে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা প্রদানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ও ৩ মার্চ চিকিৎসা চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি শেষে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন আদালত।
আদেশে আদালত বলেন, খালেদাকে চিকিৎসা দেয়ার লক্ষ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশে এরই মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের সদস্যরা উচ্চ আদালতের নির্দেশ মতে মনোনীত হয়েছেন। খালেদা জিয়া কী অবস্থায় ও কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত চিকিৎসা পেতে পারেন তাও উচ্চ আদালত কর্তৃক সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু মেডিক্যাল বোর্ড কর্তৃক আসামির চিকিৎসা প্রদানের বিষয়টি চলমান রয়েছে, সেহেতু উচ্চ আদালতের নির্দেশনার বাইরে আসামির দরখাস্তের পরিপ্রেক্ষিতে বা তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানোর নির্দেশনা প্রদানের কোনো সুযোগ বা এখতিয়ার আদালতের নেই। আদেশে আদালত আরো বলেন, এ অবস্থায় খালেদার দাখিলকৃত দরখাস্ত আদালতে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণে আসামি বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে তার চিকিৎসাসংক্রান্ত দু’টি আবেদন নথিভুক্ত করা হোক, তবে আসামিকে উচ্চ আদালতের রিট পিটিশন ১১৪৯৬/২০১৮ মামলার ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর তারিখের রায়ের নির্দেশ মতে এবং জেল কোড অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা বা অব্যাহত রাখার জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতে আনা হলে তার চিকিৎসার জন্য আবেদন করতে আইনজীবীদের পরামর্শ দেন। এরপর খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ উল্লেখ করে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। এরপর ওই আবেদনের ওপর ১২ ফেব্রুয়ারিসহ কয়েক কার্যদিবস শুনানি হয়। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে আদালতের আদেশ সম্পর্কে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আমরা এ আদেশে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত চিকিৎসকের বিষয়টি তিনি পাশ কেটে গেছেন। ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানোর বিষয়টি এ আদালতের বিবেচনা করার সুযোগ ছিল কিন্তু তিনি তা করেননি। ব্যক্তিগত চিকিৎসকের বিষয়ে যেহেতু আদালত কোনো আদেশ দেননি। তাই আদেশটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাদের প্রত্যাশিত আদেশের জন্য উচ্চ আদালতে যাবো। গত ৩ মার্চ নাইকো মামলায় আদালতে হাজির করা হলে বেগম খালেদা জিয়া তার চিকিৎসার বিষয়ে আইনজীবীদের বলেন, দিন দিন তার শরীর খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে। শরীর কাঁপে, পা নাড়াতে পারেন না। আদালতে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে সমস্যা হয়। চিকিৎসার জন্য রক্ত নিতে যারা তার কাছে এসেছিলেন তারা তার শিরাই খুঁজে পান না। তার ব্যক্তিগত লোক আছে যারা এ বিষয়টি ভালো পারেন। তাদের আসার সুযোগ দিলে ভালো হয়। এ বিষয়টি তিনি আদালতে উপস্থাপন করতে তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদারকেও পরামর্শ দেন।
আইনজীবীরা জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সরকারের গঠন করা মেডিক্যাল বোর্ড এসে তার পরীক্ষা করেছে। মেডিক্যাল বোর্ডের বক্তব্য হলো- তার বাম হাত ও বাম পা অবাশ হয়ে গেছে। তিনি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন না। অন্যের সাহায্য নিয়েও নিজের পায়ে তার হাঁটা সম্ভব নয়। তার রক্ত ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয়নি। মেডিক্যাল বোর্ড বলছে, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে বড় রকমের বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। আইনজীবীরা জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে হাইকোর্টের নির্দেশে বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে তাকে আবার কারাগারে আনা হয়। বর্তমানে উনার শারীরিক অবস্থা ভালো না। উনার শারীরিক সমস্যাগুলো বাড়ছে। তার চিকিৎসার ব্যাপারে হাইকোর্টের একটি আদেশ রয়েছে। এখন তিনি প্রচ- অসুস্থ তাই আমরা ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে আবারো তাকে চিকিৎসা প্রদানের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি।
কুমিল্লার হত্যা মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি আজ : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর আজ মঙ্গলবার বেলা ২টায় শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। গতকাল সোমবার খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন শুনানির জন্য হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় ছিল। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের পক্ষে সময় আবেদনটির শুনানির জন্য সময় আবেদন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশিরুল্লাহ। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন প্রমুখ। এ বিষয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এ মামলায় নি¤œ আদালত খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করায় আমরা হাইকোর্টে আবেদন করেছি। হাইকোর্টের কার্যতালিকায় আবেদনটি ৫৪ নম্বরে ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করায় শুনানির জন্য মঙ্গলবার বেলা ২টায় সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার এ মামলায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া। গত ২৩ জানুয়ারি এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন গত ৪ ফেব্রুয়ারি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরে নি¤œ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। এর বিরুদ্ধে আবার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
১১ মামলার শুনানি ৪ মার্চ : সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা ১১ মামলার শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশিবাজারস্থ আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েসের আদালত আসামিপক্ষের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির এ দিন ধার্য করেন। সোমবার মামলাগুলো শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সব মামলার কার্যক্রম খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন জানিয়ে শুনানি পেছানোর আবেদন করেন তার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে নতুন তারিখ ধার্য করেন। মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাজধানীর দারুস সালাম থানার নাশকতার ৮টি, যাত্রাবাড়ী থানার ২টি ও রাষ্ট্রদ্রোহের ১টি মামলা। ১১ মামলার মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। অপর ১০ মামলা ছিল অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার নির্দেশ আদালতের

আপলোড টাইম : ১১:১২:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০১৯

কুমিল্লার হত্যা মামলায় জামিন শুনানি আজ; এগারো মামলার শুনানি ১৬ এপ্রিল
সমীকরণ প্রতিবেদন:
উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড ও জেল কোড অনুযায়ী কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত খালেদা জিয়ার পক্ষে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা প্রদানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ও ৩ মার্চ চিকিৎসা চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি শেষে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন আদালত।
আদেশে আদালত বলেন, খালেদাকে চিকিৎসা দেয়ার লক্ষ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশে এরই মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের সদস্যরা উচ্চ আদালতের নির্দেশ মতে মনোনীত হয়েছেন। খালেদা জিয়া কী অবস্থায় ও কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত চিকিৎসা পেতে পারেন তাও উচ্চ আদালত কর্তৃক সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু মেডিক্যাল বোর্ড কর্তৃক আসামির চিকিৎসা প্রদানের বিষয়টি চলমান রয়েছে, সেহেতু উচ্চ আদালতের নির্দেশনার বাইরে আসামির দরখাস্তের পরিপ্রেক্ষিতে বা তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানোর নির্দেশনা প্রদানের কোনো সুযোগ বা এখতিয়ার আদালতের নেই। আদেশে আদালত আরো বলেন, এ অবস্থায় খালেদার দাখিলকৃত দরখাস্ত আদালতে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণে আসামি বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে তার চিকিৎসাসংক্রান্ত দু’টি আবেদন নথিভুক্ত করা হোক, তবে আসামিকে উচ্চ আদালতের রিট পিটিশন ১১৪৯৬/২০১৮ মামলার ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর তারিখের রায়ের নির্দেশ মতে এবং জেল কোড অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা বা অব্যাহত রাখার জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতে আনা হলে তার চিকিৎসার জন্য আবেদন করতে আইনজীবীদের পরামর্শ দেন। এরপর খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ উল্লেখ করে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। এরপর ওই আবেদনের ওপর ১২ ফেব্রুয়ারিসহ কয়েক কার্যদিবস শুনানি হয়। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে আদালতের আদেশ সম্পর্কে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আমরা এ আদেশে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত চিকিৎসকের বিষয়টি তিনি পাশ কেটে গেছেন। ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানোর বিষয়টি এ আদালতের বিবেচনা করার সুযোগ ছিল কিন্তু তিনি তা করেননি। ব্যক্তিগত চিকিৎসকের বিষয়ে যেহেতু আদালত কোনো আদেশ দেননি। তাই আদেশটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাদের প্রত্যাশিত আদেশের জন্য উচ্চ আদালতে যাবো। গত ৩ মার্চ নাইকো মামলায় আদালতে হাজির করা হলে বেগম খালেদা জিয়া তার চিকিৎসার বিষয়ে আইনজীবীদের বলেন, দিন দিন তার শরীর খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে। শরীর কাঁপে, পা নাড়াতে পারেন না। আদালতে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে সমস্যা হয়। চিকিৎসার জন্য রক্ত নিতে যারা তার কাছে এসেছিলেন তারা তার শিরাই খুঁজে পান না। তার ব্যক্তিগত লোক আছে যারা এ বিষয়টি ভালো পারেন। তাদের আসার সুযোগ দিলে ভালো হয়। এ বিষয়টি তিনি আদালতে উপস্থাপন করতে তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদারকেও পরামর্শ দেন।
আইনজীবীরা জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সরকারের গঠন করা মেডিক্যাল বোর্ড এসে তার পরীক্ষা করেছে। মেডিক্যাল বোর্ডের বক্তব্য হলো- তার বাম হাত ও বাম পা অবাশ হয়ে গেছে। তিনি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন না। অন্যের সাহায্য নিয়েও নিজের পায়ে তার হাঁটা সম্ভব নয়। তার রক্ত ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয়নি। মেডিক্যাল বোর্ড বলছে, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে বড় রকমের বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। আইনজীবীরা জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে হাইকোর্টের নির্দেশে বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে তাকে আবার কারাগারে আনা হয়। বর্তমানে উনার শারীরিক অবস্থা ভালো না। উনার শারীরিক সমস্যাগুলো বাড়ছে। তার চিকিৎসার ব্যাপারে হাইকোর্টের একটি আদেশ রয়েছে। এখন তিনি প্রচ- অসুস্থ তাই আমরা ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে আবারো তাকে চিকিৎসা প্রদানের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি।
কুমিল্লার হত্যা মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি আজ : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর আজ মঙ্গলবার বেলা ২টায় শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। গতকাল সোমবার খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন শুনানির জন্য হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় ছিল। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের পক্ষে সময় আবেদনটির শুনানির জন্য সময় আবেদন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশিরুল্লাহ। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন প্রমুখ। এ বিষয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এ মামলায় নি¤œ আদালত খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করায় আমরা হাইকোর্টে আবেদন করেছি। হাইকোর্টের কার্যতালিকায় আবেদনটি ৫৪ নম্বরে ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করায় শুনানির জন্য মঙ্গলবার বেলা ২টায় সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার এ মামলায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া। গত ২৩ জানুয়ারি এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন গত ৪ ফেব্রুয়ারি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরে নি¤œ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। এর বিরুদ্ধে আবার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
১১ মামলার শুনানি ৪ মার্চ : সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা ১১ মামলার শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশিবাজারস্থ আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েসের আদালত আসামিপক্ষের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির এ দিন ধার্য করেন। সোমবার মামলাগুলো শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সব মামলার কার্যক্রম খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন জানিয়ে শুনানি পেছানোর আবেদন করেন তার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে নতুন তারিখ ধার্য করেন। মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাজধানীর দারুস সালাম থানার নাশকতার ৮টি, যাত্রাবাড়ী থানার ২টি ও রাষ্ট্রদ্রোহের ১টি মামলা। ১১ মামলার মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। অপর ১০ মামলা ছিল অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য।