ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ক্রোয়েশিয়াকে উড়িয়ে ফ্রান্সের বিশ্বজয়

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২৫:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুলাই ২০১৮
  • / ৩৬১ বার পড়া হয়েছে

স্পোর্টস ডেস্ক: ফাইনাল ম্যাচের ১৮ মিনিটের মাথায় মনের মধ্যে খচখচানি শুরু হয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া স্ট্রাইকার মানজুকিচের। সেই খচখচানির দায় মানজুকিচ মুক্ত হন ম্যাচের ৬৯ মিনিটে এক গোল করে। কিন্তু তার আগে ব্যবধান বাড়িয়ে ৪-১ করে ফেলে ফ্রান্স। মানজুকিচের গোল কেবল ব্যবধান কমিয়ে ৪-২ করতে পারলো। আর ৪-২ ব্যবধানে জিতে ফ্রান্স ৪৮ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে বড় জয় নিশ্চত করল। ঘরে তুলল নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা। এর আগে সর্বশেষ ১৯৭০ বিশ্বকাপ ফাইনালে ইতালিকে ৪-১ গোলে হারায় ব্রাজিল। বিশ্বকাপের বড় জয়টা অবশ্য ৫-২ গোলের। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে সুইডেনকে ওই ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়াম অবশ্য এতো এতো বিস্ময় নিয়ে বসে ছিল। বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে আত্মঘাতি গোল করলেন মানজুকিচ। সেই মানজুকিচ আবার গোল করে গোল ব্যবধান কমালেন। এরপর ফাইনালে পেনাল্টি থেকে গোল দেখল রাশিয়া বিশ্বকাপ। আবার ফ্রান্স গোলরক্ষকের ছেলে মানুষি এক ভুলে হাস্যরসাত্মক গোলও দেখলো বিশ্বকাপের ফাইনাল। ম্যাচের ১৮ মিনিটের মাথায় গ্রিজম্যানের ফ্রি কিক বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল ঢুকিয়ে দেন মানজুকিচ। তাতে ১-০ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। চিন্তায় পড়ে যায় পুরো ক্রোয়েশিয়া। কারণ এর আগের সর্বশেষ আট বিশ্বকাপে যারা প্রথমে গোল পেয়েছে তারাই শিরোপা উৎসব করেছে।
এরপর ২৮ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে ইনজুরির কারণে অনিশ্চিত থাকা পেরিসিচ ক্রোয়েশিয়া স্ট্রাইকারের সেই আত্মঘাতি গোলের দায় ঘোচান। দলকে এনে দেন ভরসা। তার গোলে ১-১ গোলের সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু সে স্বস্তি ১০ মিনিটের বেশি রাখতে পারিনি ক্রোয়াটরা। আবার গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে তারা। ম্যাচের ৩৮ মিনিটে মানজুকিচের দায় মেটানো পেরিসিচ এবার নিজেই দায়বদ্ধ হয়ে পড়েন। ক্রোয়াট ফরোয়ার্ড ফ্রান্সের নেওয়া কর্ণার কিক বিদপমুক্ত করতে গিয়ে বক্সের মধ্যে হাতে বল লাগিয়ে বসেন। ভিডিও রেফারির সাহায্য নিয়ে রেফারি পেনাল্টি উপহার দেন ফ্রান্সকে। সেট পিস থেকে গোল করতে ভুল করেননি ফ্রান্স তারকা গ্রিজম্যান। বিশ্বকাপে ওই গোল থেকে নিজের নামের পাশে চার গোল লিখে ফেললেন গ্রিজু। তার মধ্যে তিনটিই অবশ্য পেনাল্টি থেকে। তাতে ২-১ গোলে আবার এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ওই লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে দ্য ব্লুসরা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৫৮ মিনিটে পগবার দারুণ গোলে ৩-১ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স।
কিন্তু তখনো তো এমবাপ্পের শো বাকি। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে চোখ ধাঁধাঁনো এক গোল করেন ফ্রান্সের তরুণ তারকা এমবাপ্পে। বক্সের বাইরে থেকে তার নেওয়া ঠান্ডা মাথার নিখুত শটটা শুধু দেখতে হলো ক্রোয়াট গোলরক্ষক সুভাসিচকে। তার গোলে ৪-১ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। কিন্তু ম্যাচের ৭১ মিনিটের মাথায় ফ্রান্স গোলরক্ষক হুগো লরিসের ভুলে ব্যবধান কমিয়ে ৪-২ করে ক্রোয়েশিয়া। ব্যবধান কমান মানজুকিচ। কিন্তু ব্যবধান কমানোর ওটাই শেষ। ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ঠিক ২০ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলল ফ্রান্স। ৩২ দিনের ফুটবল মিলন মেলার পর্দা নামল মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে হেরেই সেমিফাইনালে থেমেছিল ক্রোয়েশিয়ার স্বপ্নযাত্রা। এবারও দৃশ্যপটটা পাল্টালো না। বরং বেদনার রংয়ে নতুন মাত্রা যোগ হলো। অন্যদিকে ফান্সের অধিনায়ক ও কোচ হয়ে বিশ্বজয়ের ইতিহাস গড়ালেন দিদিয়ের দেশম। বিশ্বের তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতলেন তিনি। তার আগে জাগালো এবং বেকেনবাওয়ারের আছে এই কীর্তি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ক্রোয়েশিয়াকে উড়িয়ে ফ্রান্সের বিশ্বজয়

আপলোড টাইম : ১০:২৫:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুলাই ২০১৮

স্পোর্টস ডেস্ক: ফাইনাল ম্যাচের ১৮ মিনিটের মাথায় মনের মধ্যে খচখচানি শুরু হয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া স্ট্রাইকার মানজুকিচের। সেই খচখচানির দায় মানজুকিচ মুক্ত হন ম্যাচের ৬৯ মিনিটে এক গোল করে। কিন্তু তার আগে ব্যবধান বাড়িয়ে ৪-১ করে ফেলে ফ্রান্স। মানজুকিচের গোল কেবল ব্যবধান কমিয়ে ৪-২ করতে পারলো। আর ৪-২ ব্যবধানে জিতে ফ্রান্স ৪৮ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে বড় জয় নিশ্চত করল। ঘরে তুলল নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা। এর আগে সর্বশেষ ১৯৭০ বিশ্বকাপ ফাইনালে ইতালিকে ৪-১ গোলে হারায় ব্রাজিল। বিশ্বকাপের বড় জয়টা অবশ্য ৫-২ গোলের। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে সুইডেনকে ওই ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়াম অবশ্য এতো এতো বিস্ময় নিয়ে বসে ছিল। বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে আত্মঘাতি গোল করলেন মানজুকিচ। সেই মানজুকিচ আবার গোল করে গোল ব্যবধান কমালেন। এরপর ফাইনালে পেনাল্টি থেকে গোল দেখল রাশিয়া বিশ্বকাপ। আবার ফ্রান্স গোলরক্ষকের ছেলে মানুষি এক ভুলে হাস্যরসাত্মক গোলও দেখলো বিশ্বকাপের ফাইনাল। ম্যাচের ১৮ মিনিটের মাথায় গ্রিজম্যানের ফ্রি কিক বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল ঢুকিয়ে দেন মানজুকিচ। তাতে ১-০ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। চিন্তায় পড়ে যায় পুরো ক্রোয়েশিয়া। কারণ এর আগের সর্বশেষ আট বিশ্বকাপে যারা প্রথমে গোল পেয়েছে তারাই শিরোপা উৎসব করেছে।
এরপর ২৮ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে ইনজুরির কারণে অনিশ্চিত থাকা পেরিসিচ ক্রোয়েশিয়া স্ট্রাইকারের সেই আত্মঘাতি গোলের দায় ঘোচান। দলকে এনে দেন ভরসা। তার গোলে ১-১ গোলের সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু সে স্বস্তি ১০ মিনিটের বেশি রাখতে পারিনি ক্রোয়াটরা। আবার গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে তারা। ম্যাচের ৩৮ মিনিটে মানজুকিচের দায় মেটানো পেরিসিচ এবার নিজেই দায়বদ্ধ হয়ে পড়েন। ক্রোয়াট ফরোয়ার্ড ফ্রান্সের নেওয়া কর্ণার কিক বিদপমুক্ত করতে গিয়ে বক্সের মধ্যে হাতে বল লাগিয়ে বসেন। ভিডিও রেফারির সাহায্য নিয়ে রেফারি পেনাল্টি উপহার দেন ফ্রান্সকে। সেট পিস থেকে গোল করতে ভুল করেননি ফ্রান্স তারকা গ্রিজম্যান। বিশ্বকাপে ওই গোল থেকে নিজের নামের পাশে চার গোল লিখে ফেললেন গ্রিজু। তার মধ্যে তিনটিই অবশ্য পেনাল্টি থেকে। তাতে ২-১ গোলে আবার এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ওই লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে দ্য ব্লুসরা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৫৮ মিনিটে পগবার দারুণ গোলে ৩-১ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স।
কিন্তু তখনো তো এমবাপ্পের শো বাকি। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে চোখ ধাঁধাঁনো এক গোল করেন ফ্রান্সের তরুণ তারকা এমবাপ্পে। বক্সের বাইরে থেকে তার নেওয়া ঠান্ডা মাথার নিখুত শটটা শুধু দেখতে হলো ক্রোয়াট গোলরক্ষক সুভাসিচকে। তার গোলে ৪-১ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। কিন্তু ম্যাচের ৭১ মিনিটের মাথায় ফ্রান্স গোলরক্ষক হুগো লরিসের ভুলে ব্যবধান কমিয়ে ৪-২ করে ক্রোয়েশিয়া। ব্যবধান কমান মানজুকিচ। কিন্তু ব্যবধান কমানোর ওটাই শেষ। ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ঠিক ২০ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলল ফ্রান্স। ৩২ দিনের ফুটবল মিলন মেলার পর্দা নামল মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে হেরেই সেমিফাইনালে থেমেছিল ক্রোয়েশিয়ার স্বপ্নযাত্রা। এবারও দৃশ্যপটটা পাল্টালো না। বরং বেদনার রংয়ে নতুন মাত্রা যোগ হলো। অন্যদিকে ফান্সের অধিনায়ক ও কোচ হয়ে বিশ্বজয়ের ইতিহাস গড়ালেন দিদিয়ের দেশম। বিশ্বের তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতলেন তিনি। তার আগে জাগালো এবং বেকেনবাওয়ারের আছে এই কীর্তি।