ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কোরবানির হাট-বাজার; সার্বক্ষণিক নজরদারি দরকার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩৬:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৫৫৭ বার পড়া হয়েছে

কোরবানির ঈদ এক দিন পরেই। এ ঈদে সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা হয়। তাই পশুর ব্যাপক চাহিদা থাকে। অনেক দিন কোরবানির হাট ভারতীয় গরুর দখলে ছিল। সম্প্রতি দেশি গরু-ছাগল সে স্থান দখল করেছে। দেশে পশুপালন অনেক বেড়েছে। সমস্যা অন্যত্র। কিছু অসাধু মানুষ এ উপলক্ষে স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করে গরু মোটাতাজা করে। এতে জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। যেকোনো স্টেরয়েড সুস্থ মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর; কিডনি, লিভার, শ্বাসতন্ত্র ও হৃদযন্ত্রে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এভাবে পুষ্ট করা গরুর মৃত্যুহারও অনেক বেশি। হাটে আনার পথে বা হাটে বা কিনে বাড়িতে নেওয়ার পর গরু মারা যাওয়ার অনেক ঘটনা ঘটে। টিটেনাস ইনজেকশন, ইউরিয়া বা অ্যান্টিবায়োটিকও মোটাতাজাকরণে ব্যবহৃত হয়। অনেক দিন ধরেই এ নিয়ে কথা হচ্ছে; কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়ার ঘটনা ছিল না বললেই চলে। এবার এ বিষয়ে সরকার সতর্কতামূলক প্রচারাভিযান চালাচ্ছে। মাঠে নামানো হয়েছে মেডিক্যাল টিম। অবৈধভাবে স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধ বেঁচাকেনা হচ্ছে কি না তা-ও দেখছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এটি স্বস্তিদায়ক উদ্যোগ। ভেজাল মেশানো হচ্ছে মসলায়ও। খয়ের মিশিয়ে জংলি তারাগোটাকে বানানো হচ্ছে কালো এলাচ, জিরায় মেশানো হচ্ছে মৌরি, মরিচে মেশানো হচ্ছে আলফাটক্সিন, অন্যান্য মসলায়ও মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক। ভ্রাম্যমাণ আদালত ভেজাল মসলা তৈরি, বিক্রি ও গুদামজাত করার অভিযোগে একাধিক ব্যবসায়ীকে কারাদ- ও অর্থদ- দিয়েছেন। এর পরও এ প্রবণতা থামছে না। মসলায় সাইপারমেথরিন, ডায়াজিনন, ক্রোমাটেড, মেটানিল ইয়োলো, টেক্সটাইল ডাই পিউরি, পেপরিকা প্রভৃতি রাসায়নিক ক্ষতিকর মাত্রায় মেশানো হয়। গুঁড়া মসলায় কীটনাশক মেশানো হয়। ইট, কাঠ, ভুট্টা ও চালের গুঁড়াও মেশানো হচ্ছে। মসলার বাজারও নিয়ন্ত্রণহীন। কেজিতে ১০ টাকা বাড়িয়ে আদা বিক্রি করা হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়; লবণ কেজিতে দুই টাকা বাড়িয়ে ২৪ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ ৫৬ থেকে ৬০ টাকা কেজি, আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ৯০ টাকা, এলাচ এক হাজার ৮৫০ থেকে এক হাজার ৯০০ টাকা, দারচিনি ২৮০ টাকা, টার্কি জিরা ৪১০ ও ভারতীয় জিরা ৩১০ টাকা। টিসিবির দৈনিক বাজারমূল্য তালিকায়ও এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে সরকার যে ব্যবস্থা নিয়েছে, মসলার ক্ষেত্রেও অনুরূপ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে মসলার বাজারে সারা বছরই নজরদারি রাখতে হবে। এ প্রক্রিয়া ধারাবাহিকভাবে চললে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কোরবানির হাট-বাজার; সার্বক্ষণিক নজরদারি দরকার

আপলোড টাইম : ০৮:৩৬:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ অগাস্ট ২০১৮

কোরবানির ঈদ এক দিন পরেই। এ ঈদে সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা হয়। তাই পশুর ব্যাপক চাহিদা থাকে। অনেক দিন কোরবানির হাট ভারতীয় গরুর দখলে ছিল। সম্প্রতি দেশি গরু-ছাগল সে স্থান দখল করেছে। দেশে পশুপালন অনেক বেড়েছে। সমস্যা অন্যত্র। কিছু অসাধু মানুষ এ উপলক্ষে স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করে গরু মোটাতাজা করে। এতে জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। যেকোনো স্টেরয়েড সুস্থ মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর; কিডনি, লিভার, শ্বাসতন্ত্র ও হৃদযন্ত্রে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এভাবে পুষ্ট করা গরুর মৃত্যুহারও অনেক বেশি। হাটে আনার পথে বা হাটে বা কিনে বাড়িতে নেওয়ার পর গরু মারা যাওয়ার অনেক ঘটনা ঘটে। টিটেনাস ইনজেকশন, ইউরিয়া বা অ্যান্টিবায়োটিকও মোটাতাজাকরণে ব্যবহৃত হয়। অনেক দিন ধরেই এ নিয়ে কথা হচ্ছে; কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়ার ঘটনা ছিল না বললেই চলে। এবার এ বিষয়ে সরকার সতর্কতামূলক প্রচারাভিযান চালাচ্ছে। মাঠে নামানো হয়েছে মেডিক্যাল টিম। অবৈধভাবে স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধ বেঁচাকেনা হচ্ছে কি না তা-ও দেখছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এটি স্বস্তিদায়ক উদ্যোগ। ভেজাল মেশানো হচ্ছে মসলায়ও। খয়ের মিশিয়ে জংলি তারাগোটাকে বানানো হচ্ছে কালো এলাচ, জিরায় মেশানো হচ্ছে মৌরি, মরিচে মেশানো হচ্ছে আলফাটক্সিন, অন্যান্য মসলায়ও মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক। ভ্রাম্যমাণ আদালত ভেজাল মসলা তৈরি, বিক্রি ও গুদামজাত করার অভিযোগে একাধিক ব্যবসায়ীকে কারাদ- ও অর্থদ- দিয়েছেন। এর পরও এ প্রবণতা থামছে না। মসলায় সাইপারমেথরিন, ডায়াজিনন, ক্রোমাটেড, মেটানিল ইয়োলো, টেক্সটাইল ডাই পিউরি, পেপরিকা প্রভৃতি রাসায়নিক ক্ষতিকর মাত্রায় মেশানো হয়। গুঁড়া মসলায় কীটনাশক মেশানো হয়। ইট, কাঠ, ভুট্টা ও চালের গুঁড়াও মেশানো হচ্ছে। মসলার বাজারও নিয়ন্ত্রণহীন। কেজিতে ১০ টাকা বাড়িয়ে আদা বিক্রি করা হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়; লবণ কেজিতে দুই টাকা বাড়িয়ে ২৪ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ ৫৬ থেকে ৬০ টাকা কেজি, আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ৯০ টাকা, এলাচ এক হাজার ৮৫০ থেকে এক হাজার ৯০০ টাকা, দারচিনি ২৮০ টাকা, টার্কি জিরা ৪১০ ও ভারতীয় জিরা ৩১০ টাকা। টিসিবির দৈনিক বাজারমূল্য তালিকায়ও এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে সরকার যে ব্যবস্থা নিয়েছে, মসলার ক্ষেত্রেও অনুরূপ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে মসলার বাজারে সারা বছরই নজরদারি রাখতে হবে। এ প্রক্রিয়া ধারাবাহিকভাবে চললে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে।