ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কোরআনের ভাষায় বৃষ্টির উপকারিতা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০১৯
  • / ২৩২ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেক্স :
পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত রহমত রয়েছে। যার ব্যবস্থা আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির কল্যাণ সাধনের জন্য করেছেন। দৈনন্দিনের উপকারার্থে করেছেন। সহজ জীবন চলাচলের জন্য করেছেন। মানুষের অন্ন-বস্ত্র থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার অপার নেয়ামত পরিলক্ষিত হয়, যার মাধ্যমে মানুষের নিত্যদিনের প্রয়োজন পূরণ হয়। খাবারদাবার সহজলব্ধ হয়। জমিনে তৈরি হয় কৃষিজাত উদ্ভিদ। মানুষ খুঁজে পায় বেঁচে থাকার উপায়। সুখ-শান্তি নেমে আসে জীবন চরাচরে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদেয় হলো মৌসুমি বর্ষা। আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণের মাধ্যমেই আল্লাহ তায়ালা বান্দার কল্যাণ এবং রিজিকের ব্যবস্থা করেন। বৃষ্টি বর্ষণের উদ্দেশ্য ও উপকারিতা সম্পর্কে কোরআনের বিভিন্ন আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। প্রাকৃতিক জীবনে দেখা যায় কয়েকদিন অঝোর ধারায় বৃষ্টি বর্ষিত হলেই মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। বিভিন্ন ভাষায় আপত্তিকর মন্তব্য করে বসে। কিন্তু কোরআনের বর্ণনায় বোঝা যায়, আল্লাহ তায়ালা মানুষকে যেমন সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন, তেমনি মানুষের কল্যাণেই বৃষ্টি বর্ষণ করে থাকেন। বৃষ্টি বর্ষণের বিষয়ে প্রিয়নবী (সা.) বলেছেন, মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ এরশাদ করেন, ‘আমার বান্দারা যদি আমার বিধান যথাযথ মেনে চলত; তবে আমি তাদের রাতের বেলায় বৃষ্টি দিতাম, আর সকালবেলায় সূর্য (আলো) দিতাম এবং কখনও তাদের বজ্রপাতের আওয়াজ শুনাতাম না।’ (মুসনাদে আহমদ)। াবার দেখা যায়, প্রিয়নবী (সা.) নিজেই আকাশে মেঘ ও বিদ্যুৎ চমকানো দেখলে এবং গর্জন শুনলে পেরেশান হয়ে যেতেন। মেঘের গর্জনের সময় তিনি কথাবার্তা ছেড়ে দিতেন। মেঘের ভয়াবহতা থেকে হেফাজত থাকতে তসবিহ এবং দোয়া পাঠ করতেন। বৃষ্টি বন্ধে প্রিয়নবী এ দোয়া পড়তেনÑ ‘আল্লাহুম্মা হাওয়াইলানা ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আকামি ওয়াল ঝিবালি ওয়াল উঝামি ওয়াজ জিরাবি ওয়াল আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতিশ শাজারি।’ অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি বর্ষণ কর। আমাদের ওপর করিও না। হে আল্লাহ! টিলা, পাহাড়, উচ্চভূমি, মালভূমি, উপত্যকা এবং বনাঞ্চলে বৃষ্টি বর্ষণ কর।’ (বোখারি)। বৃষ্টিবর্ষণ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা অনেক আয়াত অবতীর্ণ করেছেন, যেমন তিনি এরশাদ করেন, ‘আমি জলধর মেঘমালা থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত করি, যাতে তা দ্বারা উৎপন্ন করি শস্য, উদ্ভিদ ও পাতাঘন উদ্যান।’ (সূরা নাবা : ১৪-১৬)। ‘আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে থাকি পরিমাণ মতো অতঃপর আমি জমিনে সংরক্ষণ করি এবং আমি তা অপসারণও করতে সক্ষম। অতঃপর আমি তা দ্বারা তোমাদের জন্য খেজুর ও আঙুরের বাগান সৃষ্টি করেছি। তোমাদের জন্য এতে প্রচুর ফল আছে এবং তোমরা তা থেকে আহার করে থাক। ওই বৃক্ষ সৃষ্টি করেছি, যা সিনাই পর্বতে জন্মায় এবং আহারকারীদের জন্য তেল ও ব্যঞ্জন উৎপন্ন করে।’ (সূরা মুমিনুন : ১৮-২০)।
‘তিনিই স্বীয় রহমতের প্রাক্কালে বাতাসকে সুসংবাদবাহীরূপে প্রেরণ করেন। আমি আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্য পানি বর্ষণ করি। তা দ্বারা মৃত ভূভাগকে সঞ্জীবিত করার জন্য এবং আমার সৃষ্ট জীবজন্তু ও অনেক মানুষের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য এবং আমি তা তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে বিতরণ করি, যাতে তারা স্মরণ করে। কিন্তু অধিকাংশ লোক অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কিছুই করে না।’ (সূরা ফুরকান : ৪৮-৫০)।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কোরআনের ভাষায় বৃষ্টির উপকারিতা

আপলোড টাইম : ০৯:৫৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০১৯

ধর্ম ডেক্স :
পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত রহমত রয়েছে। যার ব্যবস্থা আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির কল্যাণ সাধনের জন্য করেছেন। দৈনন্দিনের উপকারার্থে করেছেন। সহজ জীবন চলাচলের জন্য করেছেন। মানুষের অন্ন-বস্ত্র থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার অপার নেয়ামত পরিলক্ষিত হয়, যার মাধ্যমে মানুষের নিত্যদিনের প্রয়োজন পূরণ হয়। খাবারদাবার সহজলব্ধ হয়। জমিনে তৈরি হয় কৃষিজাত উদ্ভিদ। মানুষ খুঁজে পায় বেঁচে থাকার উপায়। সুখ-শান্তি নেমে আসে জীবন চরাচরে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদেয় হলো মৌসুমি বর্ষা। আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণের মাধ্যমেই আল্লাহ তায়ালা বান্দার কল্যাণ এবং রিজিকের ব্যবস্থা করেন। বৃষ্টি বর্ষণের উদ্দেশ্য ও উপকারিতা সম্পর্কে কোরআনের বিভিন্ন আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। প্রাকৃতিক জীবনে দেখা যায় কয়েকদিন অঝোর ধারায় বৃষ্টি বর্ষিত হলেই মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। বিভিন্ন ভাষায় আপত্তিকর মন্তব্য করে বসে। কিন্তু কোরআনের বর্ণনায় বোঝা যায়, আল্লাহ তায়ালা মানুষকে যেমন সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন, তেমনি মানুষের কল্যাণেই বৃষ্টি বর্ষণ করে থাকেন। বৃষ্টি বর্ষণের বিষয়ে প্রিয়নবী (সা.) বলেছেন, মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ এরশাদ করেন, ‘আমার বান্দারা যদি আমার বিধান যথাযথ মেনে চলত; তবে আমি তাদের রাতের বেলায় বৃষ্টি দিতাম, আর সকালবেলায় সূর্য (আলো) দিতাম এবং কখনও তাদের বজ্রপাতের আওয়াজ শুনাতাম না।’ (মুসনাদে আহমদ)। াবার দেখা যায়, প্রিয়নবী (সা.) নিজেই আকাশে মেঘ ও বিদ্যুৎ চমকানো দেখলে এবং গর্জন শুনলে পেরেশান হয়ে যেতেন। মেঘের গর্জনের সময় তিনি কথাবার্তা ছেড়ে দিতেন। মেঘের ভয়াবহতা থেকে হেফাজত থাকতে তসবিহ এবং দোয়া পাঠ করতেন। বৃষ্টি বন্ধে প্রিয়নবী এ দোয়া পড়তেনÑ ‘আল্লাহুম্মা হাওয়াইলানা ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আকামি ওয়াল ঝিবালি ওয়াল উঝামি ওয়াজ জিরাবি ওয়াল আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতিশ শাজারি।’ অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি বর্ষণ কর। আমাদের ওপর করিও না। হে আল্লাহ! টিলা, পাহাড়, উচ্চভূমি, মালভূমি, উপত্যকা এবং বনাঞ্চলে বৃষ্টি বর্ষণ কর।’ (বোখারি)। বৃষ্টিবর্ষণ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা অনেক আয়াত অবতীর্ণ করেছেন, যেমন তিনি এরশাদ করেন, ‘আমি জলধর মেঘমালা থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত করি, যাতে তা দ্বারা উৎপন্ন করি শস্য, উদ্ভিদ ও পাতাঘন উদ্যান।’ (সূরা নাবা : ১৪-১৬)। ‘আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে থাকি পরিমাণ মতো অতঃপর আমি জমিনে সংরক্ষণ করি এবং আমি তা অপসারণও করতে সক্ষম। অতঃপর আমি তা দ্বারা তোমাদের জন্য খেজুর ও আঙুরের বাগান সৃষ্টি করেছি। তোমাদের জন্য এতে প্রচুর ফল আছে এবং তোমরা তা থেকে আহার করে থাক। ওই বৃক্ষ সৃষ্টি করেছি, যা সিনাই পর্বতে জন্মায় এবং আহারকারীদের জন্য তেল ও ব্যঞ্জন উৎপন্ন করে।’ (সূরা মুমিনুন : ১৮-২০)।
‘তিনিই স্বীয় রহমতের প্রাক্কালে বাতাসকে সুসংবাদবাহীরূপে প্রেরণ করেন। আমি আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্য পানি বর্ষণ করি। তা দ্বারা মৃত ভূভাগকে সঞ্জীবিত করার জন্য এবং আমার সৃষ্ট জীবজন্তু ও অনেক মানুষের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য এবং আমি তা তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে বিতরণ করি, যাতে তারা স্মরণ করে। কিন্তু অধিকাংশ লোক অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কিছুই করে না।’ (সূরা ফুরকান : ৪৮-৫০)।