ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কেরির আশ্বাসে বিএনপি চাঙ্গা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৩২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অগাস্ট ২০১৬
  • / ৩৫৪ বার পড়া হয়েছে

image_1648_252950

সমীকরণ ডেস্ক: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা অনেকটাই চাঙ্গা। এ নিয়ে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উৎফুল্ল। কারণ বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে উদ্যোগ নেয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিএনপিকে জানানো হয়েছে। এছাড়া খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক মামলায় সাজা হওয়ার বিষয়টিও নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার বিকালে রাজধানীর বারিধারায় দেশটির চেন্সারি কমপ্লেক্স ভবনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পরাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে দলের সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মঙ্গলবার বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা গেছে। সূত্র জানায়, জন কেরি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গেও পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন বলে খালেদা জিয়াকে জানিয়েছেন। সূত্র মতে, সেক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে দক্ষ শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন কমিশন গঠন প্রয়োজন বলে উভয়পক্ষই একমত হন। এক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন জন কেরি। আর ওই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। বিএনপির জন্য ২০ মিনিট নির্ধারিত থাকলেও ৩৫ মিনিট স্থায়ী হয় এ বৈঠক। মাঠের বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকে বাড়তি গুরুত্ব দেয়া এবং বর্তমান বিরোধীদলকে সেভাবে সময় না দেয়ায় বেশ উৎফুল্ল দলটির হাইকমান্ড। এ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের শুভকামনা করা হয়। বৈঠকে খালেদা জিয়া তার বিরুদ্ধে দায়ের করা বিভিন্ন মামলা নিয়েও কথা বলেন। জন কেরিকে খালেদা জিয়া বলেছেন, যেভাবে সরকার তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো পরিচালনা করছে, আশঙ্কা করা হচ্ছে এসব মামলায় আগামী ৯ মাসের মধ্যে সাজা দিয়ে পরবর্তী নির্বাচনে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। জবাবে জন কেরি বলেছেন, যেহেতু এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, তারপরও রাজনৈতিক উদ্দেশে কোনো মামলায় যাতে সাজা দেয়া না হয়, সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র নজর রাখছে। বৈঠকে খোলামেলা আলাপচারিতায় বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়ও উঠে আসে। রাজপথের বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবেও আরো শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন জন কেরি। একই সঙ্গে বিএনপির গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণও চায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে কর্মসূচি যেন ধ্বংসাত্মক না হয়, সে ব্যাপারেও বিএনপিকে অনুরোধ জানান জন কেরি।
বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপির এক নেতা জানান, ‘বেশ কিছুদিন ধরে অনেকেই বলাবলি করছেন, বিএনপি আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জন কেরির সঙ্গে বৈঠকে প্রমাণিত হয়, বিএনপিকে যুক্তরাষ্ট্র যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়। জন কেরি বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাছাড়া জন কেরি বলেছেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে প্রয়োজন গণতন্ত্র। এর অর্থ দাঁড়ায় দেশে গণতন্ত্র নেই। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের জবাবদিহিমূলক সরকার জরুরি। আশা করি, কেরির এ সফরের পর সরকারের বোধোদয় হবে। খুব শিগগিরই সবার অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, মৌখিক আলোচনার বাইরেও দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে একটি লিখিত বক্তব্য তুলে ধরা হয় বিএনপির পক্ষ থেকে। এর মধ্যে গুম, খুন, হামলা, মামলা থেকে শুরু করে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের কঠোর দমননীতির কথা বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এমনকি জঙ্গিবাদ নিরসনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ‘জাতীয় ঐক্যের’ প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না বলেও উল্লেখ করা হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কেরির আশ্বাসে বিএনপি চাঙ্গা

আপলোড টাইম : ১২:৩২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অগাস্ট ২০১৬

image_1648_252950

সমীকরণ ডেস্ক: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা অনেকটাই চাঙ্গা। এ নিয়ে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উৎফুল্ল। কারণ বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে উদ্যোগ নেয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিএনপিকে জানানো হয়েছে। এছাড়া খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক মামলায় সাজা হওয়ার বিষয়টিও নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার বিকালে রাজধানীর বারিধারায় দেশটির চেন্সারি কমপ্লেক্স ভবনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পরাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে দলের সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মঙ্গলবার বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা গেছে। সূত্র জানায়, জন কেরি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গেও পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন বলে খালেদা জিয়াকে জানিয়েছেন। সূত্র মতে, সেক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে দক্ষ শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন কমিশন গঠন প্রয়োজন বলে উভয়পক্ষই একমত হন। এক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন জন কেরি। আর ওই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। বিএনপির জন্য ২০ মিনিট নির্ধারিত থাকলেও ৩৫ মিনিট স্থায়ী হয় এ বৈঠক। মাঠের বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকে বাড়তি গুরুত্ব দেয়া এবং বর্তমান বিরোধীদলকে সেভাবে সময় না দেয়ায় বেশ উৎফুল্ল দলটির হাইকমান্ড। এ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের শুভকামনা করা হয়। বৈঠকে খালেদা জিয়া তার বিরুদ্ধে দায়ের করা বিভিন্ন মামলা নিয়েও কথা বলেন। জন কেরিকে খালেদা জিয়া বলেছেন, যেভাবে সরকার তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো পরিচালনা করছে, আশঙ্কা করা হচ্ছে এসব মামলায় আগামী ৯ মাসের মধ্যে সাজা দিয়ে পরবর্তী নির্বাচনে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। জবাবে জন কেরি বলেছেন, যেহেতু এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, তারপরও রাজনৈতিক উদ্দেশে কোনো মামলায় যাতে সাজা দেয়া না হয়, সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র নজর রাখছে। বৈঠকে খোলামেলা আলাপচারিতায় বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়ও উঠে আসে। রাজপথের বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবেও আরো শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন জন কেরি। একই সঙ্গে বিএনপির গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণও চায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে কর্মসূচি যেন ধ্বংসাত্মক না হয়, সে ব্যাপারেও বিএনপিকে অনুরোধ জানান জন কেরি।
বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপির এক নেতা জানান, ‘বেশ কিছুদিন ধরে অনেকেই বলাবলি করছেন, বিএনপি আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জন কেরির সঙ্গে বৈঠকে প্রমাণিত হয়, বিএনপিকে যুক্তরাষ্ট্র যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়। জন কেরি বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাছাড়া জন কেরি বলেছেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে প্রয়োজন গণতন্ত্র। এর অর্থ দাঁড়ায় দেশে গণতন্ত্র নেই। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের জবাবদিহিমূলক সরকার জরুরি। আশা করি, কেরির এ সফরের পর সরকারের বোধোদয় হবে। খুব শিগগিরই সবার অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, মৌখিক আলোচনার বাইরেও দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে একটি লিখিত বক্তব্য তুলে ধরা হয় বিএনপির পক্ষ থেকে। এর মধ্যে গুম, খুন, হামলা, মামলা থেকে শুরু করে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের কঠোর দমননীতির কথা বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এমনকি জঙ্গিবাদ নিরসনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ‘জাতীয় ঐক্যের’ প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না বলেও উল্লেখ করা হয়।