ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কুখ্যাত সন্ত্রাসী সিরাজের মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২০
  • / ৫২১ বার পড়া হয়েছে

বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলের এক সময়ের ত্রাস, সিরাজ বাহিনীর প্রধান
আলমডাঙ্গা অফিস:
বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলের এক সময়ের ত্রাস, কুখ্যাত সন্ত্রাসী সিরাজ বাহিনীর প্রধান সিরাজ মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল বুধবার লন্ডনে অবস্থানরত তাঁর ছেলের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আম্বাড়িয়া গ্রামের সিরাজের মৃত্যুর খবর সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর মৃত্যুতে অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, মিরপুর উপজেলার আম্বাড়িয়া গ্রামের এক সাধারণ পরিবারের ছেলে সিরাজ। তবে পরবর্তীকালে সন্ত্রাসী জগতের সম্রাট বলে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। ওই সময় আলমডাঙ্গার পাইকপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য রফিকুল ইসলাম একটি আন্ডার গ্রাউন্ড দল গঠন করেন। সিরাজ গ্রাম ছেড়ে রফিকুলের দলে যোগ দেন। কৌশলী ও ভয়ঙ্কর সিরাজ এক সময় রফিকুলকে হত্যা করে ওই দলের নেতা হন। তাঁকে সবাই লিডার বলে ডাকত। কিন্তু পাইকপাড়ার গহর চেয়ারম্যানের ভাইয়েরা বিষয়টি সহজভাবে নেয়নি। সিরাজ খুব ধুর্ত ও সাহসী ছিল। এক সময় তাঁর পথ থেকে সরিয়ে দিতে তাঁর নিজের বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেন। ঠিক একই সময় গহর চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের পাঁচজনকে ঠান্ডা মাথায় ডেকে নিয়ে হত্যা করেছিলেন তিনি। সে সময় সবার কাছে সিরাজ মানেই আতঙ্ক, সিরাজ মানেই ত্রাস। পুলিশের রাতের ঘুম হারাম করে দেন তিনি। একের পর এক খুন, রাহাজানি, ইটভাটায় জ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা ছিল তাঁর নিত্য-নৈমিত্যিক ব্যাপার। সিরাজ আলমডাঙ্গা শহরে ইটভাটা ব্যবসায়ী ফয়েজ মিয়া, তাঁর স্ত্রী, ছোট কোলের শিশু সন্তানকে হত্যা করেন। এতেও তিনি ক্ষ্যান্ত হয়নি। আলমডাঙ্গা থানায় প্যাকেটে লাশের মাথা কেটে ওসিকে উপহার পাঠান। পত্রিকায় ঘোষণা দিতেন যে ‘অমক খুন আমি করেছি’। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করেন। জেলখানায় অতিবাহিত হতে থাকে তাঁর দিনাতিপাত। তাঁর বিরুদ্ধে সবাই তখন সোচ্চার। কিন্তু আদালতে কেউ সাক্ষী দেয়নি। ফলে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যান সিরাজ। এরপর তিনি ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে বসবাস শুরু করেন। পরে তাঁর ছেলে লন্ডনে থাকার সুবাদে তিনিও লন্ডন চলে যান। সেখানেই গতকাল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কুখ্যাত সন্ত্রাসী সিরাজের মৃত্যু

আপলোড টাইম : ০৯:৫৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২০

বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলের এক সময়ের ত্রাস, সিরাজ বাহিনীর প্রধান
আলমডাঙ্গা অফিস:
বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলের এক সময়ের ত্রাস, কুখ্যাত সন্ত্রাসী সিরাজ বাহিনীর প্রধান সিরাজ মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল বুধবার লন্ডনে অবস্থানরত তাঁর ছেলের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আম্বাড়িয়া গ্রামের সিরাজের মৃত্যুর খবর সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর মৃত্যুতে অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, মিরপুর উপজেলার আম্বাড়িয়া গ্রামের এক সাধারণ পরিবারের ছেলে সিরাজ। তবে পরবর্তীকালে সন্ত্রাসী জগতের সম্রাট বলে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। ওই সময় আলমডাঙ্গার পাইকপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য রফিকুল ইসলাম একটি আন্ডার গ্রাউন্ড দল গঠন করেন। সিরাজ গ্রাম ছেড়ে রফিকুলের দলে যোগ দেন। কৌশলী ও ভয়ঙ্কর সিরাজ এক সময় রফিকুলকে হত্যা করে ওই দলের নেতা হন। তাঁকে সবাই লিডার বলে ডাকত। কিন্তু পাইকপাড়ার গহর চেয়ারম্যানের ভাইয়েরা বিষয়টি সহজভাবে নেয়নি। সিরাজ খুব ধুর্ত ও সাহসী ছিল। এক সময় তাঁর পথ থেকে সরিয়ে দিতে তাঁর নিজের বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেন। ঠিক একই সময় গহর চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের পাঁচজনকে ঠান্ডা মাথায় ডেকে নিয়ে হত্যা করেছিলেন তিনি। সে সময় সবার কাছে সিরাজ মানেই আতঙ্ক, সিরাজ মানেই ত্রাস। পুলিশের রাতের ঘুম হারাম করে দেন তিনি। একের পর এক খুন, রাহাজানি, ইটভাটায় জ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা ছিল তাঁর নিত্য-নৈমিত্যিক ব্যাপার। সিরাজ আলমডাঙ্গা শহরে ইটভাটা ব্যবসায়ী ফয়েজ মিয়া, তাঁর স্ত্রী, ছোট কোলের শিশু সন্তানকে হত্যা করেন। এতেও তিনি ক্ষ্যান্ত হয়নি। আলমডাঙ্গা থানায় প্যাকেটে লাশের মাথা কেটে ওসিকে উপহার পাঠান। পত্রিকায় ঘোষণা দিতেন যে ‘অমক খুন আমি করেছি’। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করেন। জেলখানায় অতিবাহিত হতে থাকে তাঁর দিনাতিপাত। তাঁর বিরুদ্ধে সবাই তখন সোচ্চার। কিন্তু আদালতে কেউ সাক্ষী দেয়নি। ফলে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যান সিরাজ। এরপর তিনি ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে বসবাস শুরু করেন। পরে তাঁর ছেলে লন্ডনে থাকার সুবাদে তিনিও লন্ডন চলে যান। সেখানেই গতকাল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।