ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কিসের ছাত্রলীগ, সে বিবেচনা করব না: প্রধানমন্ত্রী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৪:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৯
  • / ২১৭ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের বিচারে নিজের অবস্থানের কথা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘কিসের ছাত্রলীগ, সে বিবেচনা করব না। এই হত্যাকা-ের বিচার হবেই। অপরাধী অপরাধীই।’ শেখ হাসিনা বলেছেন, অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক, নিশ্চিত করা হবে সর্বোচ্চ শাস্তি। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের বিচারে নিজের অবস্থানের কথা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘কিসের ছাত্রলীগ, সে বিবেচনা করব না। এই হত্যাকা-ের বিচার হবেই। অপরাধী অপরাধীই।’ শেখ হাসিনা বলেছেন, অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় যা–ই হোক, নিশ্চিত করা হবে সর্বোচ্চ শাস্তি। গতকাল বুধবার নিজের যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সফর নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। বেলা সাড়ে তিনটায় গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই তাঁর দুই সফরের বিষয়ে কথা বলা শুরু করেন। এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব।
সংবাদ সম্মেলনের দ্বিতীয় প্রশ্নটিই ছিল আবরার হত্যা নিয়ে। গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার কয়েকজন নেতা-কর্মী। এই হত্যা নিয়ে বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে বিক্ষোভ। সংবাদ সম্মেলনে আবরার হত্যা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেউ যদি কোনো অপরাধ করে, তা কোন দলের কে করে, সেটা দেখি না। অপরাধী হিসেবেই চিহ্নিত করি।’ আবরার হত্যাকে ‘অমানবিক’ বলে অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একটা বাচ্চা ছেলে, ২১ বছর বয়স। তাকে কী অমানবিকভাবে হত্যা করেছে। পিটিয়ে পিটিয়ে মেরেছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ঘটনার পরই ছাত্রলীগকে বলেছি অভিযুক্তদের বহিষ্কার করতে। তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। পুলিশকে বলেছি অপরাধীদের ধরতে। অনেকেই ধরা পড়েছে। ছাত্ররা নামার আগেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।’
আবরার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণ পরিবারের ছেলে, এত ব্রিলিয়ান্ট একটা ছেলে। তার মায়ের কষ্ট আমি বুঝি। বাবার কষ্ট বুঝি। কারণ, আমিও হত্যার বিচার চেয়ে পাইনি। মা–বাবার হত্যার পর ৩৮ বছর আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কে ছাত্রদল কে ছাত্রলীগ এ বিবেচনা করব না।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বুয়েটে যে ঘটনা ঘটেছে, সকালে জানার পরই পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু শুনলাম, পুলিশকে ফুটেজ নিয়ে আসতে দেওয়া হবে না। তখন প্রশ্ন হলো, ব্যাপারটি কী? পুুলিশের আইজিপিও বললেন, পুলিশকে ফুটেজ আনতে দিচ্ছে না। ঘিরে রেখেছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ফুটেজটা হাতে পাওয়ার জন্য তিনটি ঘণ্টা সময় নষ্ট করল কেন? আবরার হত্যার পর আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আবার কিসের আন্দোলন। কোনো দাবি তো সঙ্গে সঙ্গে পূরণ করা যায় না। অপরাধীদের ধরা চলছে।
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বুয়েট চাইলে নিষিদ্ধ করতে পারে। তাদের সিনেট আছে, এটা করতে পারে। তবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে দিতে হবে, এটা স্বৈরাচারদের কথা। আমি নিজে ছাত্ররাজনীতি করে উঠে এসেছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বুয়েটে আমাদের একাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে, নিহত হয়েছে। কয়টার বিচার হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম সম্মেলনে যোগ দিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর আট দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র যান। সেখান থেকে দেশে ফিরে আবার চার দিনের সফরে ভারত যান। ৩ থেকে ৬ অক্টোবর তিনি ভারত সফর করেন। গতকাল শুরুর প্রশ্নটাই ছিল ত্রিপুরায় এলপিজি ও ফেনী নদীর পানি ত্রিপুরাকে দেওয়ার বিষয়ে সাম্প্রতিক চুক্তি নিয়ে। এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এলপিজি প্রাকৃতিক গ্যাস নয়। আমাদের দেশে উৎপাদন হয় না। আমরা যে অপরিশোধিত তেল কিনে নিয়ে আসি, এর বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে একটা অংশ এলপিজি হয়।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কিসের ছাত্রলীগ, সে বিবেচনা করব না: প্রধানমন্ত্রী

আপলোড টাইম : ১০:১৪:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৯

সমীকরণ প্রতিবেদন:
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের বিচারে নিজের অবস্থানের কথা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘কিসের ছাত্রলীগ, সে বিবেচনা করব না। এই হত্যাকা-ের বিচার হবেই। অপরাধী অপরাধীই।’ শেখ হাসিনা বলেছেন, অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক, নিশ্চিত করা হবে সর্বোচ্চ শাস্তি। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের বিচারে নিজের অবস্থানের কথা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘কিসের ছাত্রলীগ, সে বিবেচনা করব না। এই হত্যাকা-ের বিচার হবেই। অপরাধী অপরাধীই।’ শেখ হাসিনা বলেছেন, অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় যা–ই হোক, নিশ্চিত করা হবে সর্বোচ্চ শাস্তি। গতকাল বুধবার নিজের যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সফর নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। বেলা সাড়ে তিনটায় গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই তাঁর দুই সফরের বিষয়ে কথা বলা শুরু করেন। এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব।
সংবাদ সম্মেলনের দ্বিতীয় প্রশ্নটিই ছিল আবরার হত্যা নিয়ে। গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার কয়েকজন নেতা-কর্মী। এই হত্যা নিয়ে বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে বিক্ষোভ। সংবাদ সম্মেলনে আবরার হত্যা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেউ যদি কোনো অপরাধ করে, তা কোন দলের কে করে, সেটা দেখি না। অপরাধী হিসেবেই চিহ্নিত করি।’ আবরার হত্যাকে ‘অমানবিক’ বলে অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একটা বাচ্চা ছেলে, ২১ বছর বয়স। তাকে কী অমানবিকভাবে হত্যা করেছে। পিটিয়ে পিটিয়ে মেরেছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ঘটনার পরই ছাত্রলীগকে বলেছি অভিযুক্তদের বহিষ্কার করতে। তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। পুলিশকে বলেছি অপরাধীদের ধরতে। অনেকেই ধরা পড়েছে। ছাত্ররা নামার আগেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।’
আবরার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণ পরিবারের ছেলে, এত ব্রিলিয়ান্ট একটা ছেলে। তার মায়ের কষ্ট আমি বুঝি। বাবার কষ্ট বুঝি। কারণ, আমিও হত্যার বিচার চেয়ে পাইনি। মা–বাবার হত্যার পর ৩৮ বছর আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কে ছাত্রদল কে ছাত্রলীগ এ বিবেচনা করব না।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বুয়েটে যে ঘটনা ঘটেছে, সকালে জানার পরই পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু শুনলাম, পুলিশকে ফুটেজ নিয়ে আসতে দেওয়া হবে না। তখন প্রশ্ন হলো, ব্যাপারটি কী? পুুলিশের আইজিপিও বললেন, পুলিশকে ফুটেজ আনতে দিচ্ছে না। ঘিরে রেখেছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ফুটেজটা হাতে পাওয়ার জন্য তিনটি ঘণ্টা সময় নষ্ট করল কেন? আবরার হত্যার পর আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আবার কিসের আন্দোলন। কোনো দাবি তো সঙ্গে সঙ্গে পূরণ করা যায় না। অপরাধীদের ধরা চলছে।
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বুয়েট চাইলে নিষিদ্ধ করতে পারে। তাদের সিনেট আছে, এটা করতে পারে। তবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে দিতে হবে, এটা স্বৈরাচারদের কথা। আমি নিজে ছাত্ররাজনীতি করে উঠে এসেছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বুয়েটে আমাদের একাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে, নিহত হয়েছে। কয়টার বিচার হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম সম্মেলনে যোগ দিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর আট দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র যান। সেখান থেকে দেশে ফিরে আবার চার দিনের সফরে ভারত যান। ৩ থেকে ৬ অক্টোবর তিনি ভারত সফর করেন। গতকাল শুরুর প্রশ্নটাই ছিল ত্রিপুরায় এলপিজি ও ফেনী নদীর পানি ত্রিপুরাকে দেওয়ার বিষয়ে সাম্প্রতিক চুক্তি নিয়ে। এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এলপিজি প্রাকৃতিক গ্যাস নয়। আমাদের দেশে উৎপাদন হয় না। আমরা যে অপরিশোধিত তেল কিনে নিয়ে আসি, এর বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে একটা অংশ এলপিজি হয়।’