কলকাতার ‘টম এন্ড জেরী’ মঞ্চায়িত
- আপলোড টাইম : ০৯:৩৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০
- / ৪১২ বার পড়া হয়েছে
দর্শনায় চলছে অনির্বাণ-এর তিন যুগপূর্তি উৎসব
আওয়াল হোসেন/ওয়াসিম রয়েল/সাজ্জাদ রহমান
‘গাহি সাম্যের গান-যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান, যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ, মুসলিম-ক্রীশ্চান’ স্লোগানে অনির্বাণের তিন যুগপূতি উপলক্ষে দর্শনায় চলছে সপ্তাহব্যাপী একুশে মেলা ও নাট্য উৎসব। এ উৎসব উপলক্ষে গতকাল রোববার বিকেলে দর্শনা কেরু উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে কবিতা আবৃত্তি, দেশের গান, নৃত্য ও একক অভিনয় অনুষ্ঠিত হয়। অনির্বাণ থিয়েটারের সভাপতি ফজলুল হকের সভাপতিত্বে আব্দুল ওদুদ শাহ কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মিল্টন কুমার সাহা-এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন কেরু উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম। এরপর সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার শিল্পীদের পরিবেশনায় লালন সংগীতের আসরে সংগীত পরিবেশন করেন পিংকি রানী মণ্ডল, সাব্বির কুরাইশ ও তুর্পনা মণ্ডল এবং বাদ্যযন্ত্রে ছিলেন ইসরাইল হোসেন খান টিটো, মিল্টন কুমার সাহা, আব্দুর রহমান ও খাইরুল ইসলাম। পরে ভারতের কলকাতার অঙ্গন বেলঘরিয়ার পরিবেশনায় ও অভি সেনগুপ্তের নির্দেশনায় ‘টম এন্ড জেরী’ নামের একটি নাটক পরিবেশিত হয়। নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে অনীশ মিত্র নামের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীকে ঘিরে। তার স্ত্রী মৈত্রী একজন বিখ্যাত গায়িকা ও সক্রিয় সমাজসেবীকা। দুজনের প্রেম করে বিয়ে হলেও সময়ের সাথে সাথে তাদের সম্পর্কে এসেছে যথেষ্ট তিক্ততা। দুজনেই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকায় একমাত্র সন্তান ঋদ্ধিকে তারা যথেষ্ট সময় দিতে পারেনি। তাকে ভুলিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছে দামী খেলনা আর টাকা দিয়ে। ঋদ্ধিকে বড় করে তুলেছে পরিচারিকা কলি এবং অনীশের বাল্যবন্ধু আর মৈত্রীর গানের সঙ্গী উদয়ের ভালোবাসা। মৈত্রী একদিন পতিতাপল্লী থেকে জেরী নামে একটি বাচ্চা মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। জেরীর এই বাড়িতে থাকা নিয়ে অনীশ আর মৈত্রীর ঝগড়া চরমে পৌঁছায়। এ দিকে জেরীকে পেয়ে ঋদ্ধি খুব খুশি, সে একাজন সঙ্গী, ছোট বোনকে খুঁজে পায়। হঠাৎ একদিন পড়ে গিয়ে জেরীর মাথা ফেটে যায় এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় নার্সিংহোমে ভর্তি হয়। জেরীর চিকিৎসার জন্য দুষ্প্রাপ্ত ও নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। অনীশের সঙ্গে জেরীর রক্তের গ্রুপ মিলে গেলেও অনীশ রক্তদান করতে অস্বীকার করে। এ বিষয়টিই নাটকের মূল আকর্ষণ হয়ে ওঠে দর্শকদের জন্য। যদিও অন্যের রক্তে জেরী সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে আসে, কিন্তু অনীশ কেন জেরীকে রক্ত দিতে চায় না, যা অনীশ ছাড়া আর জানে অনীশের সর্বক্ষণের কাজের সঙ্গী তুহিন। নাটকটির শেষ দৃশ্য দেখে অনেক দর্শকের চোখে পানি চলে আসে। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন অভি সেনগুপ্ত, তপন বিশ্বাস, রজত নন্দী, সায়ন সেনগুপ্ত, সোহিনী সেনগুপ্ত, রীনা ভট্টার্য ও বেবি সেনগুপ্ত এবং নেপথ্যে কাজ করেছেন আবহ : তিথি বিশ্বাস, আলো : অরূপ ব্যানার্জি, রূপসজ্জা : গুঞ্জন প্রসাদ গাঙ্গুলী।
‘অনির্বাণ-এর তিন যুগ পূর্তি উৎসব’ সার্বিক পরিচালনা করছেন অনির্বাণ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন। আজ সোমবার বিকেল ৪টায় দর্শনা সরকারি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা ৭টায় দর্শনা আনন্দধামের পরিবেশনায় সংগীত অনুষ্ঠান ও রাত ৮টায় পূর্ব-পশ্চিম কলকাতার ‘পটলবাবু ফিল্ম স্টার’ নামের একটি নাটক পরিবেশিত হবে।
উল্লেখ্য, এবারের উৎসবটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে উৎসর্গ করা হয়েছে। উৎসবটিতে পৃষ্ঠপোষকতা করছে হিসাব লিমিটেড।