ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কর্মসংস্থান করতে পারলে কমবে মাদক ও চোরাচালান

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
  • / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে

মেহেরপুর জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা : চুয়াডাঙ্গার সভায় জেলা প্রশাসক
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেছেন, ‘সীমান্তাঞ্চল হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাচালানীদের দৌরাত্ব রয়েছে; দিন দিন তাদের সংখ্যাও বাড়ছে। তবে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে কমবে মাদক ও চোরাচালানসহ যাবতীয় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। একই সাথে বেকার যুবক ও অসচ্ছ্বল পরিবার সমৃদ্ধি লাভ করতে পারবে। কার্পাসডাঙ্গা কুতুবপুরে একটি চুল প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা রয়েছে; আমি সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে জানতে পেরেছি সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের অধিকাংশই এক সময় সীমান্ত অপরাধ, মাদক ও চোরাচালানের সাথে জড়িত ছিল। আজ তারা একটা ভালো কাজ বেঁছে নিয়ে সমস্ত প্রকার অপরাধ থেকে দূরে সরে এসেছে।’
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার ফরহাদ আহমদ’র পরিচালনায় সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘একাধিক সভা-সেমিনার হয়, সিদ্ধান্ত নেয়া হয় কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তাই সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। ডিসি-এসপি সব কাজ চাইলেও করতে পারে না; এ ক্ষেত্রে জনগণকে সচেতন হতে হবে।’ বাল্য বিবাহ বন্ধে নতুন উদ্যোগ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বিবাহ নিবন্ধক ও কাজীদের কাছে থাকা একাধিক ভলিউম উদ্ধারে শিঘ্রই ঝটিকা অভিযান চালানো হবে। কারো কাছে একটির অধিক ভলিউম থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কোচিং বানিজ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোচিং বানিজ্য বন্ধে এখনও হার্ড লাইনে আছি। নিষেধাজ্ঞা অমাণ্য করে নামে-বেনামে শহরে যেসব স্থানে কোচিং করানো হচ্ছে তাদের তালিকা তৈরী করে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও সড়ক উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে বলেন, ‘কাউকে ছাড় না দিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং কাজ চলছে। যানজট নিরসনে পিচঢালা পথে কোন অবৈধ স্থাপনা থাকবে না; সড়ক উন্নয়ন কাজ শেষ হলেই কমবে সে ভোগান্তি।’ সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গা শহরের অভ্যন্তরে চলাচলকারী ইজি বাইকগুলোর ডাটাবেজ করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিজিটাল হাজিরা ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, পরীক্ষার সময় মাইক/সাউন্ডবক্স না বাজানো, জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশ না করার ব্যাপারে গৃহীত সিদ্ধান্ত নিয়ে সূদুর প্রসারী আলোচনা করা হয়।


পুলিশ সুপারের বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান-পিপিএম বলেন, ‘মাদকের ক্ষেত্রে এখনও জিরো টলারেন্সে আছে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ। গত একমাসে ২ শতাধিক মাদকব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে মাদকব্যবসায়ীদের নাম প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক অভিযানে ডজন খানেক মাদকব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমনেও পুলিশ কাজ করছে। এখন আর শুধু মামলা নিয়ে কাজ করেনা পুলিশ। কেউ নির্যাতিত হলে থানার মহিলা পুলিশদের একটি নির্যাতন দমন সেল’র মাধ্যমে নির্যাতিতা ও তার পরিবারের মধ্যে সমঝোতা করানো হয়। এতে করে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার হার অনেকটা কমে এসেছে। জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজা, দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল হাসান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদুল হক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা চুয়াডাঙ্গা’র উপ-পরিচালক জাফর ইকবাল, ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আলী হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি, এড. আকসিজুল ইসলাম রতন, এড. মসলেম উদ্দীন প্রমূখ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটি, মাদক পাচার ও চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এ সকল সভা অনুষ্ঠিত হয়। মেহেরপুর জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান, সিভিল সার্জন জিকেএম সামসুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ ফরিদ আহম্মেদ, আনছারের জেলা কমান্ডেন্ট আব্দুর রশিদ, জেলার কামরুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার, গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ পাল, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আশকার আলী, মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক রফিকুল আলম প্রমুখ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কর্মসংস্থান করতে পারলে কমবে মাদক ও চোরাচালান

আপলোড টাইম : ১০:০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

মেহেরপুর জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা : চুয়াডাঙ্গার সভায় জেলা প্রশাসক
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেছেন, ‘সীমান্তাঞ্চল হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাচালানীদের দৌরাত্ব রয়েছে; দিন দিন তাদের সংখ্যাও বাড়ছে। তবে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে কমবে মাদক ও চোরাচালানসহ যাবতীয় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। একই সাথে বেকার যুবক ও অসচ্ছ্বল পরিবার সমৃদ্ধি লাভ করতে পারবে। কার্পাসডাঙ্গা কুতুবপুরে একটি চুল প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা রয়েছে; আমি সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে জানতে পেরেছি সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের অধিকাংশই এক সময় সীমান্ত অপরাধ, মাদক ও চোরাচালানের সাথে জড়িত ছিল। আজ তারা একটা ভালো কাজ বেঁছে নিয়ে সমস্ত প্রকার অপরাধ থেকে দূরে সরে এসেছে।’
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার ফরহাদ আহমদ’র পরিচালনায় সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘একাধিক সভা-সেমিনার হয়, সিদ্ধান্ত নেয়া হয় কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তাই সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। ডিসি-এসপি সব কাজ চাইলেও করতে পারে না; এ ক্ষেত্রে জনগণকে সচেতন হতে হবে।’ বাল্য বিবাহ বন্ধে নতুন উদ্যোগ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বিবাহ নিবন্ধক ও কাজীদের কাছে থাকা একাধিক ভলিউম উদ্ধারে শিঘ্রই ঝটিকা অভিযান চালানো হবে। কারো কাছে একটির অধিক ভলিউম থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কোচিং বানিজ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোচিং বানিজ্য বন্ধে এখনও হার্ড লাইনে আছি। নিষেধাজ্ঞা অমাণ্য করে নামে-বেনামে শহরে যেসব স্থানে কোচিং করানো হচ্ছে তাদের তালিকা তৈরী করে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও সড়ক উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে বলেন, ‘কাউকে ছাড় না দিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং কাজ চলছে। যানজট নিরসনে পিচঢালা পথে কোন অবৈধ স্থাপনা থাকবে না; সড়ক উন্নয়ন কাজ শেষ হলেই কমবে সে ভোগান্তি।’ সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গা শহরের অভ্যন্তরে চলাচলকারী ইজি বাইকগুলোর ডাটাবেজ করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিজিটাল হাজিরা ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, পরীক্ষার সময় মাইক/সাউন্ডবক্স না বাজানো, জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশ না করার ব্যাপারে গৃহীত সিদ্ধান্ত নিয়ে সূদুর প্রসারী আলোচনা করা হয়।


পুলিশ সুপারের বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান-পিপিএম বলেন, ‘মাদকের ক্ষেত্রে এখনও জিরো টলারেন্সে আছে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ। গত একমাসে ২ শতাধিক মাদকব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে মাদকব্যবসায়ীদের নাম প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক অভিযানে ডজন খানেক মাদকব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমনেও পুলিশ কাজ করছে। এখন আর শুধু মামলা নিয়ে কাজ করেনা পুলিশ। কেউ নির্যাতিত হলে থানার মহিলা পুলিশদের একটি নির্যাতন দমন সেল’র মাধ্যমে নির্যাতিতা ও তার পরিবারের মধ্যে সমঝোতা করানো হয়। এতে করে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার হার অনেকটা কমে এসেছে। জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজা, দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল হাসান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদুল হক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা চুয়াডাঙ্গা’র উপ-পরিচালক জাফর ইকবাল, ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আলী হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি, এড. আকসিজুল ইসলাম রতন, এড. মসলেম উদ্দীন প্রমূখ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটি, মাদক পাচার ও চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এ সকল সভা অনুষ্ঠিত হয়। মেহেরপুর জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান, সিভিল সার্জন জিকেএম সামসুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ ফরিদ আহম্মেদ, আনছারের জেলা কমান্ডেন্ট আব্দুর রশিদ, জেলার কামরুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার, গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ পাল, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আশকার আলী, মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক রফিকুল আলম প্রমুখ।