ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনা বলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অপপ্রচার!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০
  • / ১৫৫ বার পড়া হয়েছে

হরিণাকুণ্ডুতে অপারেশনের পর প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ
ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের মহেশপুরের পর এবার হরিণাকুণ্ডু শহরে ভাই ভাই ক্লিনিকে রোজিনা খাতুন (২০) নামে এক প্রসূতি অপারেশনের পর মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে তাঁর জমজ দুই সন্তান বেঁচে আছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে করোনা উপসর্গ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। মৃত গৃহবধূ একই উপজেলার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের শিলনের স্ত্রী।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রোজিনা খাতুন জ্বর নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের শামিমা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জটিলতা থাকায় ডা. শামিমা অপারেশনের ঝুঁকি না নিয়ে রোগী ফিরিয়ে দেন। এরপর রোজিনা ভর্তি হন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। স্বজনেরা গত শুক্রবার সকাল ৭টায় হরিণাকুণ্ডু শহরের ভাই ভাই ক্লিনিকে ভর্তি করেন রোজিনাকে। সেখানে ভর্তির পর ডা. জামিনুুর রশিদ ও ডা. আহসান হাবিব অপারেশন করেন। অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোজিনার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁর স্বামী শিলন মিয়া। তবে ডা. জামিনুুর রশিদ জানান, রোজিনার করোনা উপসর্গ ছিল। ছিল প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট। অন্যদিকে তাঁর ডেলিভারির সময়ও হয়ে গেছে। এই অবস্থায় তাঁকে অপারেশন করে দুর্ঘটনা ঘটে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও হাটে-বাজারে গজিয়ে ওঠা ক্লিনিকগুলোতে সেবার কোনো মান নেই। অহরহ সেখানে অপচিকিৎসায় মানুষ মারা গেলেও সিভিল সার্জন অফিস কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। তাঁরা লোক দেখানো তদন্ত করেই দায়িত্ব শেষ করেন। হরিণাকুণ্ডুর ভাই ভাই ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন নেই। চিকিৎসার পরিবেশ ভালো না। মহেশপুরের নেপার মোড়ের দুই ক্লিনিকে দুই প্রসূতি মারা গেছেন। তাদেরও লাইসেন্স নবায়ন নেই। ক্লিনিকগুলিতে সর্বক্ষণ কোনো চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নার্স নেই। তারপরও ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন দপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অর্থের বিনিময়ে এদের নতুন লাইসেন্স ও পুরানো লাইসেন্স নবায়ন করে থাকে। অভিযোগ উঠেছে সিভিল সার্জন অফিসের নওশের আলী, নজরুল ইসলাম, ইসরাইল হোসেন ও নজরুল ইসলাম (২) ক্লিনিকের এই ফাইলগুলো দেখভাল করেন। তাঁরাই মিথ্যা তথ্য দিয়ে বছরের পর বছর মানহীন এসব ক্লিনিক বহাল রাখার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, ‘আমরা মাতৃ মৃত্যু কোনোভাবেই সহ্য করব না। হরিণাকুণ্ডু ভাই ভাই ক্লিনিকে মৃত্যুর ব্যাপারে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ তিনি বলেন, আগামী ২৩ আগস্ট পর্যন্ত এসব ক্লিনিকের শেষ সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তাঁরা শর্ত পূরণ করতে না পারলে সবগুলো বন্ধ করে দেব।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

করোনা বলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অপপ্রচার!

আপলোড টাইম : ০৯:০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০

হরিণাকুণ্ডুতে অপারেশনের পর প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ
ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের মহেশপুরের পর এবার হরিণাকুণ্ডু শহরে ভাই ভাই ক্লিনিকে রোজিনা খাতুন (২০) নামে এক প্রসূতি অপারেশনের পর মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে তাঁর জমজ দুই সন্তান বেঁচে আছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে করোনা উপসর্গ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। মৃত গৃহবধূ একই উপজেলার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের শিলনের স্ত্রী।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রোজিনা খাতুন জ্বর নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের শামিমা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জটিলতা থাকায় ডা. শামিমা অপারেশনের ঝুঁকি না নিয়ে রোগী ফিরিয়ে দেন। এরপর রোজিনা ভর্তি হন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। স্বজনেরা গত শুক্রবার সকাল ৭টায় হরিণাকুণ্ডু শহরের ভাই ভাই ক্লিনিকে ভর্তি করেন রোজিনাকে। সেখানে ভর্তির পর ডা. জামিনুুর রশিদ ও ডা. আহসান হাবিব অপারেশন করেন। অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোজিনার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁর স্বামী শিলন মিয়া। তবে ডা. জামিনুুর রশিদ জানান, রোজিনার করোনা উপসর্গ ছিল। ছিল প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট। অন্যদিকে তাঁর ডেলিভারির সময়ও হয়ে গেছে। এই অবস্থায় তাঁকে অপারেশন করে দুর্ঘটনা ঘটে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও হাটে-বাজারে গজিয়ে ওঠা ক্লিনিকগুলোতে সেবার কোনো মান নেই। অহরহ সেখানে অপচিকিৎসায় মানুষ মারা গেলেও সিভিল সার্জন অফিস কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। তাঁরা লোক দেখানো তদন্ত করেই দায়িত্ব শেষ করেন। হরিণাকুণ্ডুর ভাই ভাই ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন নেই। চিকিৎসার পরিবেশ ভালো না। মহেশপুরের নেপার মোড়ের দুই ক্লিনিকে দুই প্রসূতি মারা গেছেন। তাদেরও লাইসেন্স নবায়ন নেই। ক্লিনিকগুলিতে সর্বক্ষণ কোনো চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নার্স নেই। তারপরও ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন দপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অর্থের বিনিময়ে এদের নতুন লাইসেন্স ও পুরানো লাইসেন্স নবায়ন করে থাকে। অভিযোগ উঠেছে সিভিল সার্জন অফিসের নওশের আলী, নজরুল ইসলাম, ইসরাইল হোসেন ও নজরুল ইসলাম (২) ক্লিনিকের এই ফাইলগুলো দেখভাল করেন। তাঁরাই মিথ্যা তথ্য দিয়ে বছরের পর বছর মানহীন এসব ক্লিনিক বহাল রাখার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, ‘আমরা মাতৃ মৃত্যু কোনোভাবেই সহ্য করব না। হরিণাকুণ্ডু ভাই ভাই ক্লিনিকে মৃত্যুর ব্যাপারে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ তিনি বলেন, আগামী ২৩ আগস্ট পর্যন্ত এসব ক্লিনিকের শেষ সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তাঁরা শর্ত পূরণ করতে না পারলে সবগুলো বন্ধ করে দেব।