ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনাভাইরাসের ঝুঁকি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ মার্চ ২০২০
  • / ১৭৭ বার পড়া হয়েছে

বিদেশ থেকে অবাধ আসা-যাওয়া রোধ করুন
চীনে শুরু হলেও করোনাভাইরাস এখন ছড়িয়ে পড়েছে বেশির ভাগ দেশে। ইউরোপে এর ভয়াবহ বিস্তার শুরু হয়েছে। ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার, মৃতের সংখ্যা আট শর কাছাকাছি। ইরানেও ভাইরাসটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা পাঁচ শর কাছাকাছি। মধ্যপ্রাচ্যের আরো কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি ক্রমেই ব্যাপক হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের যেসব দেশ বেশি আক্রান্ত, সেসব দেশে অনেক বাংলাদেশি বসবাস করেন। তাঁদের একটি অংশ দ্রুত দেশে ফিরে আসার চেষ্টা করছে বলে জানা যায়। সরকার প্রবাসীদের এভাবে তাড়াহুড়া করে ফিরে আসাকে নিরুৎসাহ করলেও অনেকেই ফিরছেন। তাঁদের অনেককে হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হলেও অনেকে বাড়িতে সেলফ-কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন। প্রকাশিত খবরাখবর থেকে জানা যায়, তাঁরা ঠিকমতো স্বাস্থ্য aনির্দেশিকা মানছেন না। এর ফলে তাঁদের সংস্পর্শে আসা অনেকেই সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে যে তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছেন, তাঁদের দুজন ইতালি থেকে এসেছেন এবং তাঁদের সংস্পর্শে এসে অন্য একজন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। চীন অত্যন্ত সফলভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। এ জন্য কয়েকটি রাজ্য ও অনেক শহরে মানুষের চলাচল যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে, তা কি বাংলাদেশে করা সম্ভব? ইতালিজুড়েই মানুষ এখন একপ্রকার অবরুদ্ধ জীবন যাপন করছে। খাবার ও ওষুধের দোকান ছাড়া অন্য দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে দুটি ক্রুজ জাহাজ থেকে কয়েক হাজার যাত্রীকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত নামতে দেওয়া হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয়দের প্রবেশ বন্ধ রেখেছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে কূটনৈতিক ভিসা ছাড়া বাকি সব ভিসা স্থগিত রাখা হয়েছে। কারো বৈধ ভিসা থাকলেও তিনি ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন না। এতে ভারতের বিমান সংস্থাগুলোও ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। তা সত্ত্বেও বৃহত্তর জনসংখ্যার কল্যাণে কখনো কখনো এমন পদক্ষেপ নিতে হয়। ভারত তা-ই করেছে। আমাদেরও আক্রান্ত দেশগুলো থেকে যাত্রীদের আসা-যাওয়া আরো কড়াকড়িভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত বলে অনেকেই মনে করছেন। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা, ঘনবসতি ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবের কারণে বাংলাদেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তাঁদের মতে, ভাইরাসের প্রবেশ ও সংক্রমণ রোধে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। সরকার অনেক পদক্ষেপ এরই মধ্যে নিয়েছে। এখন প্রয়োজন বিদেশ থেকে আসা আক্রান্ত লোকজনের কোয়ারেন্টাইন কঠোরভাবে পালন করা। বেশি আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আসা সবাইকে হাসপাতালে বা বিশেষ কোনো স্থানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা বাধ্যতামূলক করা। স্টেশন, গণপরিবহন, বিপণিবিতানসহ জনসমাগমের স্থানগুলো জীবাণুমুক্ত রাখার ব্যবস্থা করা; বাসা কিংবা কর্মস্থলে জীবাণুমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। আমরা আশা করি, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি আমরা সফলভাবেই মোকাবেলা করতে পারব।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

করোনাভাইরাসের ঝুঁকি

আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ মার্চ ২০২০

বিদেশ থেকে অবাধ আসা-যাওয়া রোধ করুন
চীনে শুরু হলেও করোনাভাইরাস এখন ছড়িয়ে পড়েছে বেশির ভাগ দেশে। ইউরোপে এর ভয়াবহ বিস্তার শুরু হয়েছে। ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার, মৃতের সংখ্যা আট শর কাছাকাছি। ইরানেও ভাইরাসটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা পাঁচ শর কাছাকাছি। মধ্যপ্রাচ্যের আরো কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি ক্রমেই ব্যাপক হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের যেসব দেশ বেশি আক্রান্ত, সেসব দেশে অনেক বাংলাদেশি বসবাস করেন। তাঁদের একটি অংশ দ্রুত দেশে ফিরে আসার চেষ্টা করছে বলে জানা যায়। সরকার প্রবাসীদের এভাবে তাড়াহুড়া করে ফিরে আসাকে নিরুৎসাহ করলেও অনেকেই ফিরছেন। তাঁদের অনেককে হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হলেও অনেকে বাড়িতে সেলফ-কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন। প্রকাশিত খবরাখবর থেকে জানা যায়, তাঁরা ঠিকমতো স্বাস্থ্য aনির্দেশিকা মানছেন না। এর ফলে তাঁদের সংস্পর্শে আসা অনেকেই সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে যে তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছেন, তাঁদের দুজন ইতালি থেকে এসেছেন এবং তাঁদের সংস্পর্শে এসে অন্য একজন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। চীন অত্যন্ত সফলভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। এ জন্য কয়েকটি রাজ্য ও অনেক শহরে মানুষের চলাচল যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে, তা কি বাংলাদেশে করা সম্ভব? ইতালিজুড়েই মানুষ এখন একপ্রকার অবরুদ্ধ জীবন যাপন করছে। খাবার ও ওষুধের দোকান ছাড়া অন্য দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে দুটি ক্রুজ জাহাজ থেকে কয়েক হাজার যাত্রীকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত নামতে দেওয়া হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয়দের প্রবেশ বন্ধ রেখেছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে কূটনৈতিক ভিসা ছাড়া বাকি সব ভিসা স্থগিত রাখা হয়েছে। কারো বৈধ ভিসা থাকলেও তিনি ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন না। এতে ভারতের বিমান সংস্থাগুলোও ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। তা সত্ত্বেও বৃহত্তর জনসংখ্যার কল্যাণে কখনো কখনো এমন পদক্ষেপ নিতে হয়। ভারত তা-ই করেছে। আমাদেরও আক্রান্ত দেশগুলো থেকে যাত্রীদের আসা-যাওয়া আরো কড়াকড়িভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত বলে অনেকেই মনে করছেন। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা, ঘনবসতি ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবের কারণে বাংলাদেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তাঁদের মতে, ভাইরাসের প্রবেশ ও সংক্রমণ রোধে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। সরকার অনেক পদক্ষেপ এরই মধ্যে নিয়েছে। এখন প্রয়োজন বিদেশ থেকে আসা আক্রান্ত লোকজনের কোয়ারেন্টাইন কঠোরভাবে পালন করা। বেশি আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আসা সবাইকে হাসপাতালে বা বিশেষ কোনো স্থানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা বাধ্যতামূলক করা। স্টেশন, গণপরিবহন, বিপণিবিতানসহ জনসমাগমের স্থানগুলো জীবাণুমুক্ত রাখার ব্যবস্থা করা; বাসা কিংবা কর্মস্থলে জীবাণুমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। আমরা আশা করি, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি আমরা সফলভাবেই মোকাবেলা করতে পারব।