ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনাকালেও ভেজাল ওষুধ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০
  • / ১৮৭ বার পড়া হয়েছে

কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিন
ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে বাজার সয়লাব। দেদার বিক্রি হচ্ছে ওষুধের দোকানে। নামিদামি ওষুধ কম্পানির জনপ্রিয় ওষুধও নকল করে বাজারজাত করছে একটি চক্র। ওষুধকেই মানুষের প্রাণঘাতী করে তোলা হচ্ছে। এই ভয়ংকর প্রবণতা রোধ করা যাচ্ছে না কিছুতেই। করোনাকালেও থেমে নেই ভেজাল ওষুধের কারবার। অভিযানে গেলেই মিলছে প্রচুর পরিমাণ নকল, ভেজাল ও অবৈধ ওষুধ। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, এসব ভেজাল ও অবৈধ ওষুধের নাম অনেক চিকিৎসকও নাকি তাঁদের ব্যবস্থাপত্রে লিখে থাকেন। জীবন বাঁচায় যে ওষুধ, সে ওষুধই অনেক ক্ষেত্রে জীবনহানির কারণ হচ্ছে। কেড়ে নিচ্ছে জীবন। প্রকাশিত এসংক্রান্ত খবরে বলা হয়েছে, এসব ওষুধের মধ্যে এমন কিছু ওষুধ রয়েছে, যা মানুষের কিডনি বিকল থেকে শুরু করে শরীরে নানা জটিলতা তৈরি করে। ঢাকার বাইরে সিলেট, দিনাজপুর, জয়পুরহাটসহ আরো কয়েকটি জেলায় সম্প্রতি পৃথক অভিযান চালিয়ে নানা ধরনের নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও অবৈধ ওষুধ জব্দ করা হয়। ঢাকার মিটফোর্ডে ওষুধের মার্কেটেও চলতি মাসে একাধিক অভিযানে নকল, ভেজাল, নিবন্ধনহীন প্রচুর পরিমাণ ওষুধসহ জীবাণুনাশক জব্দ করা হয়। এসব ঘটনায় জরিমানাও আদায় করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু বিক্রেতাদের ধরে জরিমানা করে কিংবা জেল দিয়ে কোনো লাভ হবে না। এসব নকল, ভেজাল ও অবৈধ ওষুধের উৎপাদক ও বাজারজাতকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তা না করে দু-চারটা ফার্মেসিতে অভিযান চালানো হলেও অন্য হাজার হাজার ফার্মেসি কিংবা ফুটপাতে এই বাণিজ্য দেদার চলতেই থাকবে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে যেসব নামকরা ওষুধের দোকানের ওপর মানুষের অপেক্ষাকৃত বেশি আস্থা ছিল, সেগুলোতেও এখন পাওয়া যাচ্ছে ভেজাল, নকল কিংবা অবৈধ ওষুধ। বাংলাদেশে নকল ও ভেজাল ওষুধ কী পরিমাণে তৈরি হয়, তার কোনো নির্দিষ্ট তথ্য সম্ভবত নেই। নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করার কাজে অনেক কম্পানিও জড়িত আছে। নানা ধরনের সিরাপ, ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল নকল হচ্ছে। এর পাশাপাশি আছে নিম্নমানের ওষুধ তৈরির কারবার। অনেক ওষুধ ব্যবসায়ী দাদনের মতো করে ওষুধ প্রস্তুতকারী কম্পানিকে আগাম টাকা দিয়ে ভেজাল ওষুধ তৈরি করেন। এর আগে অনেক ট্যাবলেট, ক্যাপসুল পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেগুলোর ভেতরে সাধারণ আটা-ময়দা ছাড়া কিছুই নেই। সিরাপের মধ্যে আছে শুধু রং। সরল বিশ্বাসে ওষুধ কিনে প্রতারিত হন ক্রেতা। এর আগেও নকল-ভেজাল ওষুধ উদ্ধার ও জব্দ করা হয়েছে। নকল ও ভেজাল ওষুধের কারবারিরা ধরা পড়ছেন, আবিষ্কার হচ্ছে নতুন নতুন ভেজাল ওষুধের কারখানা; কিন্তু ভেজাল ওষুধ তৈরি তো বন্ধ হচ্ছে না। ওষুধ ব্যবসা অন্য দশটা ব্যবসার মতো নয়। ভেজাল ওষুধ জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। ভেজাল ওষুধ উৎপাদক ও বাজারজাতকারীদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করার কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

করোনাকালেও ভেজাল ওষুধ!

আপলোড টাইম : ০৯:১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০

কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিন
ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে বাজার সয়লাব। দেদার বিক্রি হচ্ছে ওষুধের দোকানে। নামিদামি ওষুধ কম্পানির জনপ্রিয় ওষুধও নকল করে বাজারজাত করছে একটি চক্র। ওষুধকেই মানুষের প্রাণঘাতী করে তোলা হচ্ছে। এই ভয়ংকর প্রবণতা রোধ করা যাচ্ছে না কিছুতেই। করোনাকালেও থেমে নেই ভেজাল ওষুধের কারবার। অভিযানে গেলেই মিলছে প্রচুর পরিমাণ নকল, ভেজাল ও অবৈধ ওষুধ। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, এসব ভেজাল ও অবৈধ ওষুধের নাম অনেক চিকিৎসকও নাকি তাঁদের ব্যবস্থাপত্রে লিখে থাকেন। জীবন বাঁচায় যে ওষুধ, সে ওষুধই অনেক ক্ষেত্রে জীবনহানির কারণ হচ্ছে। কেড়ে নিচ্ছে জীবন। প্রকাশিত এসংক্রান্ত খবরে বলা হয়েছে, এসব ওষুধের মধ্যে এমন কিছু ওষুধ রয়েছে, যা মানুষের কিডনি বিকল থেকে শুরু করে শরীরে নানা জটিলতা তৈরি করে। ঢাকার বাইরে সিলেট, দিনাজপুর, জয়পুরহাটসহ আরো কয়েকটি জেলায় সম্প্রতি পৃথক অভিযান চালিয়ে নানা ধরনের নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও অবৈধ ওষুধ জব্দ করা হয়। ঢাকার মিটফোর্ডে ওষুধের মার্কেটেও চলতি মাসে একাধিক অভিযানে নকল, ভেজাল, নিবন্ধনহীন প্রচুর পরিমাণ ওষুধসহ জীবাণুনাশক জব্দ করা হয়। এসব ঘটনায় জরিমানাও আদায় করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু বিক্রেতাদের ধরে জরিমানা করে কিংবা জেল দিয়ে কোনো লাভ হবে না। এসব নকল, ভেজাল ও অবৈধ ওষুধের উৎপাদক ও বাজারজাতকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তা না করে দু-চারটা ফার্মেসিতে অভিযান চালানো হলেও অন্য হাজার হাজার ফার্মেসি কিংবা ফুটপাতে এই বাণিজ্য দেদার চলতেই থাকবে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে যেসব নামকরা ওষুধের দোকানের ওপর মানুষের অপেক্ষাকৃত বেশি আস্থা ছিল, সেগুলোতেও এখন পাওয়া যাচ্ছে ভেজাল, নকল কিংবা অবৈধ ওষুধ। বাংলাদেশে নকল ও ভেজাল ওষুধ কী পরিমাণে তৈরি হয়, তার কোনো নির্দিষ্ট তথ্য সম্ভবত নেই। নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করার কাজে অনেক কম্পানিও জড়িত আছে। নানা ধরনের সিরাপ, ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল নকল হচ্ছে। এর পাশাপাশি আছে নিম্নমানের ওষুধ তৈরির কারবার। অনেক ওষুধ ব্যবসায়ী দাদনের মতো করে ওষুধ প্রস্তুতকারী কম্পানিকে আগাম টাকা দিয়ে ভেজাল ওষুধ তৈরি করেন। এর আগে অনেক ট্যাবলেট, ক্যাপসুল পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেগুলোর ভেতরে সাধারণ আটা-ময়দা ছাড়া কিছুই নেই। সিরাপের মধ্যে আছে শুধু রং। সরল বিশ্বাসে ওষুধ কিনে প্রতারিত হন ক্রেতা। এর আগেও নকল-ভেজাল ওষুধ উদ্ধার ও জব্দ করা হয়েছে। নকল ও ভেজাল ওষুধের কারবারিরা ধরা পড়ছেন, আবিষ্কার হচ্ছে নতুন নতুন ভেজাল ওষুধের কারখানা; কিন্তু ভেজাল ওষুধ তৈরি তো বন্ধ হচ্ছে না। ওষুধ ব্যবসা অন্য দশটা ব্যবসার মতো নয়। ভেজাল ওষুধ জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। ভেজাল ওষুধ উৎপাদক ও বাজারজাতকারীদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করার কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।