ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

এবার একুশে পদকপ্রাপ্ত ১৭ গুণীজনের যতো অবদান

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:০৬:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
  • / ৪৪৯ বার পড়া হয়েছে

PM-Hasina0120170220213420এবার একুশে পদকপ্রাপ্ত ১৭ গুণীজনের যতো অবদান
সমীকরণ ডেস্ক: ভাষা-শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরবময় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর ১৭ গুণী ব্যক্তিকে একুশে পদক দেওয়া হয়েছে। যাদের প্রত্যেকে নিজ নিজ অঙ্গনে উজ্জ্বল। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০১৭ সালে একুশে পদকপ্রাপ্তদের হাতে পদক ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ইব্রাহীম হোসেন খান। একুশে পদকপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে একটি স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও দুই লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এ বছর একুশে পদকপ্রাপ্তদের অবদান:
ভাষাসৈনিক অধ্যাপক ড. শরিফা খাতুন: ১৯৪৮ সালে স্কুলে অধ্যয়নকালে বাংলা ভাষার আন্দোলনে সহপাঠীদের নিয়ে মিছিলে অংশ নেন শরিফা খাতুন। ১৯৫২ সালে ইডেন কলেজে অধ্যয়নকালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে প্রচারপত্র বিলি, পোস্টার তৈরি করে দেয়ালে সাঁটানোসহ সভা, সমাবেশ ও মিছিলে সক্রিয় ছিলেন এ নারী। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে ২০-২৫ জন ছাত্রীসহ হোস্টেলের দেয়াল টপকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় ছাত্র সমাবেশে যোগ দেন শরিফা খাতুন। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে নির্মিত শহীদ মিনারে হোস্টেলের ছাত্রীরাসহ প্রভাতফেরি করে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করেন। শিল্পী সুষমা দাস: সুষমা দাস একজন লোকসংগীত শিল্পী। গ্রামীণ আসরে ধামাইল, কবিগান ও বাউল গানের পাশাপাশি হরি জাগরণের গান, গোপিনী কীর্তনসহ ভাটি অঞ্চলে প্রচলিত লোকজ ধারার নন্দিত শিল্পী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। বাংলাদেশ বেতারে তিনি সহস্রাধিক গান পরিবেশন করেন। তিনি প্রায় চারশত লোককবির গান সংগ্রহ করেছেন। সুষমা দাস রাধারমণ দত্ত, বাউল শাহ আবদুল করিম, কালাশাহ, দূরবীন শাহ, গীতিকবি গিয়াস উদ্দিন আহমদ, হাসন রাজাসহ বহু মরমি কবি ও সাধকের গান করেন।  শিল্পী জুলহাস উদ্দিন আহমেদ: জুলহাস উদ্দিন আহমেদ একজন বিশিষ্ট সংগীত সাধক। তিনবছর বয়সে দুরারোগ্য ব্যাধিতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে যান তিনি। জুলহাস কলকাতায় চিন্ময় লাহেড়ী, তারাপদ চক্রবর্তী ও ওস্তাদ আমীর খাঁ’র কাছে সংগীত শিক্ষা নেন। গৌরবঙ্গ সাহিত্য পরিষদ আয়োজিত উচ্চাঙ্গ সংগীত প্রতিযোগিতায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম স্থান অধিকার করে সুর সাগর উপাধি লাভ করেন। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি বেতারে সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে তিনি গান রেকর্ড করে স্বাধীন বাংলা বেতারে পাঠাতেন। এ জন্য তার ভাইয়ের ছেলেকে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে প্রাণ দিতে হয়। ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম: ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম উপমহাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় শাস্ত্রীয় ধারার বংশীবাদক। পঁয়তাল্লিশ বছরেরো বেশি সময় ধরে তিনি শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। দেশে-বিদেশে বহু বিশ্ব বরেণ্য সংগীত ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তিনি যুগলবন্দি ও একক অনুষ্ঠান করেছেন। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় বাশিঁ বাজিয়ে তিনি সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের এক মাত্র শিল্পী যিনি বিখ্যাত ডোভারেলন মিউজিক কনফারেন্সে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন। চলচ্চিত্রে তানভীর মোকাম্মেল: তানভীর মোকাম্মেল নিয়মিত প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী, সাহিত্য-সমালোচনা ও কবিতা লেখেন। এ পর্যন্ত তিনি ১১টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা। তার নির্মিত পূর্ণ দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রসমূহের মধ্যে রয়েছে চিত্রা নদীর পারে, লালসালু, লালন, নদীর নাম মধুমতি, রাবেয়া, জীবনঢুলী উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে লালসালু ৮টি ক্ষেত্রে, চিত্রা নদীর পাড়ে ৭টি ক্ষেত্রে, নদীর নাম মধুমতি ৩টি ক্ষেত্রে এবং লালন একটি ক্ষেত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে। কাহিনী চিত্র ছাড়াও তিনি ১৩টি মেগা প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করেন। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ১৯৭১ ব্যাপক প্রশংসিত।
ভাস্কর্যে সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ: সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ একজন বিশিষ্ট ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ভাস্কর্য অপরাজেয় বাংলা’র স্থপতি। এছাড়া আবহমান বাংলা, টেরাকোটা, অংকুর, অনন্ত বাংলা, স্বাধীনতা যুদ্ধ, অঙ্গীকার, ডলফিন, ঐতিহ্য, সৃষ্টি, বঙ্গবন্ধু, টেরাকোটাসহ দেশের একাধিক ভাস্কর্য ও ম্যুরালের স্থপতি।  নাট্যশিল্পী সারা যাকের: স্বাধীন বাংলাদেশে দর্শনীর বিনিময়ে নিয়মিত নাট্যচর্চার ক্ষেত্রে প্রথম নারী হিসেবে মঞ্চে পা রাখেন বিশিষ্ট অভিনয় শিল্পী সারা যাকের। বিদগ্ধ রমণীকুল, এই নিষিদ্ধপল্লীসহ বিভিন্ন নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি। অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন সারা যাকের। তার নাটকগুলো হলো- ক্রস পারপাস, বহিপীর, দেওয়ান গাজীর কিস্সা, সব মানুষের খোজেঁ, শাহজাহান, নুরলদীনের সারা জীবন, ম্যাকবেথ, ঈর্ষা, নায়ক নায়িকা ও স্বপ্ন বিলাস, নাম গোত্রহীন ইত্যাদি। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নাটকের নির্দেশনার দায়িত্ব পালন করেন। মঞ্চসহ টিভি ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তিনি মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন। সাংবাদিকতায় আবুল মোমেন: আবুল মোমেন ৩০ বছর ধরে পত্রিকায় রাজনৈতিক কলাম লিখছেন। তার লেখা ৬টি কবিতার বই, ১০টি শিশু-কিশোর গ্রন্থসহ ৩০টি মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা ও বাঙালির কথা, সংস্কৃতির সংকট ও সাম্প্রদায়িকতা, বাংলাদেশের হৃদয় হতে, অপরূপকথা, স্পার্টাকাস প্রভৃতি তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানসহ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। পরবর্তীতে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী আন্দোলনেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন আবুল মোমেন।  গবেষণায় সৈয়দ আকরম হোসেন: সৈয়দ আকরম হোসেন একজন শিক্ষাবিদ, গবেষক ও প্রাবন্ধিক। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে যোগ দিয়ে ২০১১ সালে অবসর নেন। বর্তমানে তিনি বিভাগের সুপারনিউমারি অধ্যাপক। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়ায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিলো। রবীন্দ্রচর্চা ও গবেষণায় তার খ্যাতি দুই বাংলায়। এই অধ্যাপকের প্রকাশিত গ্রন্থ ৯টি। রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস: দেশকাল ও শিল্পরূপ, রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস চেতনালোক ও শিল্পরূপ, বাংলাদেশের সাহিত্য ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, এস. ওয়াজেদ আলী, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, উল্লেখযোগ্য।  শিক্ষায় ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন: ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর। বিগত ৫০ বছর ধরে তিনি শিক্ষা ও গবেষণায় নিয়োজিত। পরপর দু’বার যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে মৌলিক গবেষণা করেছেন। তার তিনটি বই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক তার লেখাগুলো গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৭ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশ প্রণয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জাতীয় কমিটিতে অবদান রাখেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুর: বিশিষ্ট প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা ১৯৬৩ সাল থেকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ছাড়াও দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ পর্যন্ত তার ৭০টি গবেষণাপত্র দেশি-বিদেশি জার্নালে প্রকাশ হয়েছে। তিনি উঁচু ইমারতের শিয়ার ওয়াল ডিজাইনের সহজ পদ্ধতি কুল অ্যান্ড চৌধুরী মেথড উদ্ভাবন করেন। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর পরিকল্পনা, নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণে সম্পৃক্ত বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অন্যতম, বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে দলনেতা, সিসমিক জোনিং ম্যাপ ও ভূমিকম্পবিরোধী ভবনের বিল্ডিং কোডের রূপরেখা তৈরি করেন। পদ্মাসেতু প্রকল্পে আর্ন্তজাতিক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভাপতি তিনি।  সমাজসেবায় অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান: ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্সকে (আইপিজিএমআর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে মুখ্য ভূমিকা রাখেন অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান। তিনি দেশের প্রথম গ্যাস্ট্রোএন্টারলজি বিভাগের প্রধান হিসেবে কয়েকটি রোগ নির্ণয় ও উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু করেন। তিনি ১৩টি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও বেসরকারি পর্যায়ে এ বিষয়ে চিকিৎসার বিভাগ স্থাপনে মূল ভূমিকা পালন করেন। তার শতাধিক গবেষণাপত্র দেশি-বিদেশি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।  ভাষা ও সাহিত্যে কবি ওমর আলী: গত শতকের পঞ্চাশের দশকে কবি ওমর আলীর কবি-খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তিনি কবিতার মাধ্যমে দেশ, প্রকৃতি, মানুষ ও সংস্কৃতির প্রতি আমৃত্যু ছিলেন নিবেদিত। তার প্রকাশিত গ্রন্থ ৪১টি। এর মধ্যে ৩৮টি কাব্যগ্রন্থ, একটি শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ এবং দুটি উপন্যাস রয়েছে। তাকে মরণোত্তর একুশে পদক দেওয়া হয়েছে। ভাষা ও সাহিত্যে সুকুমার বড়ুয়া: সুকুমার বড়ুয়া বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। সুদীর্ঘ ৫৮ বছর তিনি ছড়া লিখছেন। তার একাধিক লেখা স্কুল পাঠ্য। সহজ-সরল কথায় ও ভাষায়, ছন্দ ও অন্ত্যমিলের অপূর্ব সমন্বয়ে তার ছড়াগুলো শিশুতোষ, উদ্ভট, ব্যঙ্গাত্মক, হাস্যরসাত্মক, কৌতূহলোদ্দীপক, নৈতিক শিক্ষামূলক, রাজনৈতিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ। সাংবাদিকতায় স্বদেশ রায়: স্বদেশ রায় সৎ ও সাহসী সাংবাদিক। তার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশ্লেষণমূলক লেখা দেশে-বিদেশে প্রশংসিত। তার লেখা কলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য অনুসন্ধানী তথ্যের সমাহার। দেশের বাইরে ভারতের সাউথ এশিয়া মনিটর, টাইম অব আসাম, সেভেন সিস্টার পোস্ট, শ্রীলঙ্কার শতবর্ষী দৈনিক ডেইলি নিউজসহ বিভিন্ন পত্রিকায় লেখেন। নৃত্য শিল্পী শামীম আরা নীপা: গত শতকে আশির দশক থেকে লোক ও সৃজনশীল নৃত্যে নতুন ধারার প্রবর্তন করেন বিশিষ্ট নৃত্য পরিচালক ও নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা। তিনি গণচীনে কোরিওগ্রাফির ওপর এক বছর মেয়াদী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তিনি নৃত্য পরিচালনা ও পরিবেশন করে আসছেন। গণসংগীতে রহমতউল্লাহ আল মাহমুদ আল সেলিম: রহমতউল্লাহ আল মাহমুদ আল সেলিম দেশের গণসংগীত জগতের একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। ১৯৭১ সালে জাতির পিতার আহ্বানে কিশোর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি ইতিহাস কথা কও গীতিআলেখ্য রচনা করে ৭৬ সালে ১৬ ডিসেম্বর মঞ্চায়ন করেন। এটি ছিলো সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রথম বঙ্গবন্ধু হত্যার সাংগঠনিক জোরালো প্রতিবাদ। তিনি ১৯৯১ সালে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি ও বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার ইতিহাস প্রতিযোগিতা পরিষদ গঠন করেন। জাগরণের গান সংকলনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: কিশোর ইতিহাস বইটি ৫০ হাজার কপি ছাপিয়ে স্বল্পমূল্যে বিতরণ করেন তিনি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

এবার একুশে পদকপ্রাপ্ত ১৭ গুণীজনের যতো অবদান

আপলোড টাইম : ০৪:০৬:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৭

PM-Hasina0120170220213420এবার একুশে পদকপ্রাপ্ত ১৭ গুণীজনের যতো অবদান
সমীকরণ ডেস্ক: ভাষা-শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরবময় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর ১৭ গুণী ব্যক্তিকে একুশে পদক দেওয়া হয়েছে। যাদের প্রত্যেকে নিজ নিজ অঙ্গনে উজ্জ্বল। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০১৭ সালে একুশে পদকপ্রাপ্তদের হাতে পদক ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ইব্রাহীম হোসেন খান। একুশে পদকপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে একটি স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও দুই লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এ বছর একুশে পদকপ্রাপ্তদের অবদান:
ভাষাসৈনিক অধ্যাপক ড. শরিফা খাতুন: ১৯৪৮ সালে স্কুলে অধ্যয়নকালে বাংলা ভাষার আন্দোলনে সহপাঠীদের নিয়ে মিছিলে অংশ নেন শরিফা খাতুন। ১৯৫২ সালে ইডেন কলেজে অধ্যয়নকালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে প্রচারপত্র বিলি, পোস্টার তৈরি করে দেয়ালে সাঁটানোসহ সভা, সমাবেশ ও মিছিলে সক্রিয় ছিলেন এ নারী। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে ২০-২৫ জন ছাত্রীসহ হোস্টেলের দেয়াল টপকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় ছাত্র সমাবেশে যোগ দেন শরিফা খাতুন। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে নির্মিত শহীদ মিনারে হোস্টেলের ছাত্রীরাসহ প্রভাতফেরি করে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করেন। শিল্পী সুষমা দাস: সুষমা দাস একজন লোকসংগীত শিল্পী। গ্রামীণ আসরে ধামাইল, কবিগান ও বাউল গানের পাশাপাশি হরি জাগরণের গান, গোপিনী কীর্তনসহ ভাটি অঞ্চলে প্রচলিত লোকজ ধারার নন্দিত শিল্পী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। বাংলাদেশ বেতারে তিনি সহস্রাধিক গান পরিবেশন করেন। তিনি প্রায় চারশত লোককবির গান সংগ্রহ করেছেন। সুষমা দাস রাধারমণ দত্ত, বাউল শাহ আবদুল করিম, কালাশাহ, দূরবীন শাহ, গীতিকবি গিয়াস উদ্দিন আহমদ, হাসন রাজাসহ বহু মরমি কবি ও সাধকের গান করেন।  শিল্পী জুলহাস উদ্দিন আহমেদ: জুলহাস উদ্দিন আহমেদ একজন বিশিষ্ট সংগীত সাধক। তিনবছর বয়সে দুরারোগ্য ব্যাধিতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে যান তিনি। জুলহাস কলকাতায় চিন্ময় লাহেড়ী, তারাপদ চক্রবর্তী ও ওস্তাদ আমীর খাঁ’র কাছে সংগীত শিক্ষা নেন। গৌরবঙ্গ সাহিত্য পরিষদ আয়োজিত উচ্চাঙ্গ সংগীত প্রতিযোগিতায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম স্থান অধিকার করে সুর সাগর উপাধি লাভ করেন। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি বেতারে সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে তিনি গান রেকর্ড করে স্বাধীন বাংলা বেতারে পাঠাতেন। এ জন্য তার ভাইয়ের ছেলেকে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে প্রাণ দিতে হয়। ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম: ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম উপমহাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় শাস্ত্রীয় ধারার বংশীবাদক। পঁয়তাল্লিশ বছরেরো বেশি সময় ধরে তিনি শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। দেশে-বিদেশে বহু বিশ্ব বরেণ্য সংগীত ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তিনি যুগলবন্দি ও একক অনুষ্ঠান করেছেন। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় বাশিঁ বাজিয়ে তিনি সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের এক মাত্র শিল্পী যিনি বিখ্যাত ডোভারেলন মিউজিক কনফারেন্সে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন। চলচ্চিত্রে তানভীর মোকাম্মেল: তানভীর মোকাম্মেল নিয়মিত প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী, সাহিত্য-সমালোচনা ও কবিতা লেখেন। এ পর্যন্ত তিনি ১১টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা। তার নির্মিত পূর্ণ দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রসমূহের মধ্যে রয়েছে চিত্রা নদীর পারে, লালসালু, লালন, নদীর নাম মধুমতি, রাবেয়া, জীবনঢুলী উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে লালসালু ৮টি ক্ষেত্রে, চিত্রা নদীর পাড়ে ৭টি ক্ষেত্রে, নদীর নাম মধুমতি ৩টি ক্ষেত্রে এবং লালন একটি ক্ষেত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে। কাহিনী চিত্র ছাড়াও তিনি ১৩টি মেগা প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করেন। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ১৯৭১ ব্যাপক প্রশংসিত।
ভাস্কর্যে সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ: সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ একজন বিশিষ্ট ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ভাস্কর্য অপরাজেয় বাংলা’র স্থপতি। এছাড়া আবহমান বাংলা, টেরাকোটা, অংকুর, অনন্ত বাংলা, স্বাধীনতা যুদ্ধ, অঙ্গীকার, ডলফিন, ঐতিহ্য, সৃষ্টি, বঙ্গবন্ধু, টেরাকোটাসহ দেশের একাধিক ভাস্কর্য ও ম্যুরালের স্থপতি।  নাট্যশিল্পী সারা যাকের: স্বাধীন বাংলাদেশে দর্শনীর বিনিময়ে নিয়মিত নাট্যচর্চার ক্ষেত্রে প্রথম নারী হিসেবে মঞ্চে পা রাখেন বিশিষ্ট অভিনয় শিল্পী সারা যাকের। বিদগ্ধ রমণীকুল, এই নিষিদ্ধপল্লীসহ বিভিন্ন নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি। অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন সারা যাকের। তার নাটকগুলো হলো- ক্রস পারপাস, বহিপীর, দেওয়ান গাজীর কিস্সা, সব মানুষের খোজেঁ, শাহজাহান, নুরলদীনের সারা জীবন, ম্যাকবেথ, ঈর্ষা, নায়ক নায়িকা ও স্বপ্ন বিলাস, নাম গোত্রহীন ইত্যাদি। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নাটকের নির্দেশনার দায়িত্ব পালন করেন। মঞ্চসহ টিভি ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তিনি মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন। সাংবাদিকতায় আবুল মোমেন: আবুল মোমেন ৩০ বছর ধরে পত্রিকায় রাজনৈতিক কলাম লিখছেন। তার লেখা ৬টি কবিতার বই, ১০টি শিশু-কিশোর গ্রন্থসহ ৩০টি মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা ও বাঙালির কথা, সংস্কৃতির সংকট ও সাম্প্রদায়িকতা, বাংলাদেশের হৃদয় হতে, অপরূপকথা, স্পার্টাকাস প্রভৃতি তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানসহ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। পরবর্তীতে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী আন্দোলনেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন আবুল মোমেন।  গবেষণায় সৈয়দ আকরম হোসেন: সৈয়দ আকরম হোসেন একজন শিক্ষাবিদ, গবেষক ও প্রাবন্ধিক। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে যোগ দিয়ে ২০১১ সালে অবসর নেন। বর্তমানে তিনি বিভাগের সুপারনিউমারি অধ্যাপক। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়ায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিলো। রবীন্দ্রচর্চা ও গবেষণায় তার খ্যাতি দুই বাংলায়। এই অধ্যাপকের প্রকাশিত গ্রন্থ ৯টি। রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস: দেশকাল ও শিল্পরূপ, রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস চেতনালোক ও শিল্পরূপ, বাংলাদেশের সাহিত্য ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, এস. ওয়াজেদ আলী, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, উল্লেখযোগ্য।  শিক্ষায় ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন: ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর। বিগত ৫০ বছর ধরে তিনি শিক্ষা ও গবেষণায় নিয়োজিত। পরপর দু’বার যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে মৌলিক গবেষণা করেছেন। তার তিনটি বই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক তার লেখাগুলো গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৭ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশ প্রণয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জাতীয় কমিটিতে অবদান রাখেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুর: বিশিষ্ট প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা ১৯৬৩ সাল থেকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ছাড়াও দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ পর্যন্ত তার ৭০টি গবেষণাপত্র দেশি-বিদেশি জার্নালে প্রকাশ হয়েছে। তিনি উঁচু ইমারতের শিয়ার ওয়াল ডিজাইনের সহজ পদ্ধতি কুল অ্যান্ড চৌধুরী মেথড উদ্ভাবন করেন। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর পরিকল্পনা, নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণে সম্পৃক্ত বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অন্যতম, বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে দলনেতা, সিসমিক জোনিং ম্যাপ ও ভূমিকম্পবিরোধী ভবনের বিল্ডিং কোডের রূপরেখা তৈরি করেন। পদ্মাসেতু প্রকল্পে আর্ন্তজাতিক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভাপতি তিনি।  সমাজসেবায় অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান: ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্সকে (আইপিজিএমআর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে মুখ্য ভূমিকা রাখেন অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান। তিনি দেশের প্রথম গ্যাস্ট্রোএন্টারলজি বিভাগের প্রধান হিসেবে কয়েকটি রোগ নির্ণয় ও উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু করেন। তিনি ১৩টি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও বেসরকারি পর্যায়ে এ বিষয়ে চিকিৎসার বিভাগ স্থাপনে মূল ভূমিকা পালন করেন। তার শতাধিক গবেষণাপত্র দেশি-বিদেশি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।  ভাষা ও সাহিত্যে কবি ওমর আলী: গত শতকের পঞ্চাশের দশকে কবি ওমর আলীর কবি-খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তিনি কবিতার মাধ্যমে দেশ, প্রকৃতি, মানুষ ও সংস্কৃতির প্রতি আমৃত্যু ছিলেন নিবেদিত। তার প্রকাশিত গ্রন্থ ৪১টি। এর মধ্যে ৩৮টি কাব্যগ্রন্থ, একটি শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ এবং দুটি উপন্যাস রয়েছে। তাকে মরণোত্তর একুশে পদক দেওয়া হয়েছে। ভাষা ও সাহিত্যে সুকুমার বড়ুয়া: সুকুমার বড়ুয়া বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। সুদীর্ঘ ৫৮ বছর তিনি ছড়া লিখছেন। তার একাধিক লেখা স্কুল পাঠ্য। সহজ-সরল কথায় ও ভাষায়, ছন্দ ও অন্ত্যমিলের অপূর্ব সমন্বয়ে তার ছড়াগুলো শিশুতোষ, উদ্ভট, ব্যঙ্গাত্মক, হাস্যরসাত্মক, কৌতূহলোদ্দীপক, নৈতিক শিক্ষামূলক, রাজনৈতিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ। সাংবাদিকতায় স্বদেশ রায়: স্বদেশ রায় সৎ ও সাহসী সাংবাদিক। তার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশ্লেষণমূলক লেখা দেশে-বিদেশে প্রশংসিত। তার লেখা কলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য অনুসন্ধানী তথ্যের সমাহার। দেশের বাইরে ভারতের সাউথ এশিয়া মনিটর, টাইম অব আসাম, সেভেন সিস্টার পোস্ট, শ্রীলঙ্কার শতবর্ষী দৈনিক ডেইলি নিউজসহ বিভিন্ন পত্রিকায় লেখেন। নৃত্য শিল্পী শামীম আরা নীপা: গত শতকে আশির দশক থেকে লোক ও সৃজনশীল নৃত্যে নতুন ধারার প্রবর্তন করেন বিশিষ্ট নৃত্য পরিচালক ও নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা। তিনি গণচীনে কোরিওগ্রাফির ওপর এক বছর মেয়াদী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তিনি নৃত্য পরিচালনা ও পরিবেশন করে আসছেন। গণসংগীতে রহমতউল্লাহ আল মাহমুদ আল সেলিম: রহমতউল্লাহ আল মাহমুদ আল সেলিম দেশের গণসংগীত জগতের একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। ১৯৭১ সালে জাতির পিতার আহ্বানে কিশোর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি ইতিহাস কথা কও গীতিআলেখ্য রচনা করে ৭৬ সালে ১৬ ডিসেম্বর মঞ্চায়ন করেন। এটি ছিলো সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রথম বঙ্গবন্ধু হত্যার সাংগঠনিক জোরালো প্রতিবাদ। তিনি ১৯৯১ সালে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি ও বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার ইতিহাস প্রতিযোগিতা পরিষদ গঠন করেন। জাগরণের গান সংকলনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: কিশোর ইতিহাস বইটি ৫০ হাজার কপি ছাপিয়ে স্বল্পমূল্যে বিতরণ করেন তিনি।