ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৫০:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অক্টোবর ২০২০
  • / ১৯৬ বার পড়া হয়েছে

করোনায় নির্বাচন হতে পারলে পরীক্ষা বাতিল হলো কেন?
সমীকরণ প্রতিবেদন:
স্থগিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষা শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়েছে। এক দিন আগে যেখানে পরীক্ষা শুরুর তারিখ জানানোর কথা, সেখানে শিক্ষামন্ত্রী কর্তৃক পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণায় দেশব্যাপী বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিচ্ছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশও পাটিয়েছেন এক আইনজীবী। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে এটি নিয়ে শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়ানোরও ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। অনেকে সরকারের পরীক্ষা বাতিলের এই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনারও আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেন, করোনায় যদি দেশে নির্বাচন হতে পারে সেখানে পরীক্ষার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজন বাতিল না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবশ্যই তা সম্পন্ন করা যেত।
গত পয়লা এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়া এই পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তবে শিক্ষাবোর্ডগুলো বরাবরই বলে আসছিল যে, পরীক্ষা গ্রহণের সামগ্রিক প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানেই তারা স্থগিত হওয়া এই পরীক্ষা নিতে পারবেন। মাত্র সপ্তাহখানিক আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি নিজেই সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, পরীক্ষা অবশ্যই হবে। তবে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে পরীক্ষা নেয়া হবে ৫০ নম্বরে। পরীক্ষা বাতিল কিংবা না হওয়ার বিষয়ে তিনি কোনো ইঙ্গিতও দেননি। বরং পরীক্ষা না নেয়া হলে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে হীনমন্যতায় ভুগবেন বলেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন। এরপর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি আবারো বলেছিলেন তিনি নিজে পরের দিন (বুধবার) পরীক্ষা শুরুর তারিখ ঘোষণা দেবেন। কিন্তু বুধবার পরীক্ষা শুরুর তারিখ না জানিয়ে তিনি তা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন।
এ দিকে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে স্থগিত হওয়া এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং ৯টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। গতকালই এই নোটিশ পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানিয়েছেন আজ (বৃহস্পতিবার) আমরা লিগ্যাল নোটিশটি পেয়েছি। বৃহস্পতিবার সকালে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে শতাব্দী রায় নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পক্ষে এই নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাবউদ্দিন খান।
পরীক্ষা বাতিল বিষয়ে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন তার প্রতিক্রিয়ায় গতকাল বলেন, করোনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশে^ই ছড়িয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে কোনো দেশে পাবলিক পরীক্ষা বাতিল হয়নি। এ ছাড়া বাংলাদেশের শির্ক্ষার্থীরা যখন বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে যাবে তখন তারা কোন সার্টিফিকেট বা মার্কশিট নিয়ে যাবে? তিনি আরো বলেন, করোনার মধ্যে যে দেশে নির্বাচন হতে পারে সেখানে পরীক্ষা বাতিল নয় বরং কেন্দ্র বা উপকেন্দ্র বাড়িয়ে এই পাবলিক পরীক্ষাটা নেয়া যেত। বাতিলের কোনো দরকার ছিল না। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে সাবেক এই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে থাকে জেএসসি বা এসএসসিতে সেভাবে তাদের প্রস্তুতি থাকে না। তাই আগের পরীক্ষায় যারা ভালো ফলাফল করতে পারেনি তারা এই মূল্যায়নে পিছিয়ে থাকবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, আমাদের দেশেই তো ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীরা পাবলিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তার মতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পরীক্ষা ছাড়া মূল্যায়নের ফল নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে এবারের পরীক্ষার্থীদের।
পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণার পর অভিভাবকদের মধ্যে অনেকে তাদের মতামতে বলেছেন, এইচএসসির রেজিস্ট্রেশন করা সব শিক্ষার্থীকে অটোপাস দেয়ার সিদ্ধান্ত আমাদের সন্তানদের মধ্যেই এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা তৈরি করবে। অনেকে ইতোমধ্যে সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের গড়ের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার ফল নির্ধারণ করা হবে বলে যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, তা আসলে যৌক্তিক নয়। তারা বলছেন, অনেকে এই দু’টি স্তরে খারাপ করলেও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সেটি পুষিয়ে নেয়। কিন্তু এবার সেই সুযোগ আর থাকছে না।
শিক্ষার্থীদের অভিমত হচ্ছে উচ্চশিক্ষা, মেডিক্যাল কলেজ, বুয়েট, কিংবা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে অনেকেই নিশ্চিতভাবেই নানা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়বেন। শিক্ষার্থীদের মতে এইচএসসির ফলের প্রতি পয়েন্টের সাথে ২৫ আর এসএসসির প্রতি পয়েন্টের সাথে ১৫ গুণ করে আলাদা ২০০ নম্বর লিখিত পরীক্ষার নম্বরের সাথে যোগ করা হয়। কারো যদি পয়েন্ট কম থাকে এই ফলাফলের কারণে, তাহলে তিনি লিখিত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেলেও তার নম্বর অনেক পেছনে থাকবে। ওই শিক্ষার্থী হয়তো সরকারি মেডিক্যালে চান্স না-ও পেতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক রায়হান আরা জানান, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে যেহেতু নিরাপত্তার কারণে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়, সে হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের পর আগের দু’টি পরীক্ষার (জেএসসি ও এসএসসি) গড় মূল্যায়নের ফলাফল নিয়ে উচ্চশিক্ষা কিংবা মেডিক্যাল, বুয়েট বা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তিতে শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের বিড়ম্বনার মধ্যে পড়বে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি বলেছেন, গড় নম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে তাদের সমস্যা হবে না। গড় এই ফলাফল নিয়ে দেশ-বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতেও শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যাও হবে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

আপলোড টাইম : ১১:৫০:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অক্টোবর ২০২০

করোনায় নির্বাচন হতে পারলে পরীক্ষা বাতিল হলো কেন?
সমীকরণ প্রতিবেদন:
স্থগিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষা শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়েছে। এক দিন আগে যেখানে পরীক্ষা শুরুর তারিখ জানানোর কথা, সেখানে শিক্ষামন্ত্রী কর্তৃক পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণায় দেশব্যাপী বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিচ্ছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশও পাটিয়েছেন এক আইনজীবী। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে এটি নিয়ে শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়ানোরও ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। অনেকে সরকারের পরীক্ষা বাতিলের এই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনারও আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেন, করোনায় যদি দেশে নির্বাচন হতে পারে সেখানে পরীক্ষার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজন বাতিল না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবশ্যই তা সম্পন্ন করা যেত।
গত পয়লা এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়া এই পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তবে শিক্ষাবোর্ডগুলো বরাবরই বলে আসছিল যে, পরীক্ষা গ্রহণের সামগ্রিক প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানেই তারা স্থগিত হওয়া এই পরীক্ষা নিতে পারবেন। মাত্র সপ্তাহখানিক আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি নিজেই সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, পরীক্ষা অবশ্যই হবে। তবে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে পরীক্ষা নেয়া হবে ৫০ নম্বরে। পরীক্ষা বাতিল কিংবা না হওয়ার বিষয়ে তিনি কোনো ইঙ্গিতও দেননি। বরং পরীক্ষা না নেয়া হলে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে হীনমন্যতায় ভুগবেন বলেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন। এরপর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি আবারো বলেছিলেন তিনি নিজে পরের দিন (বুধবার) পরীক্ষা শুরুর তারিখ ঘোষণা দেবেন। কিন্তু বুধবার পরীক্ষা শুরুর তারিখ না জানিয়ে তিনি তা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন।
এ দিকে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে স্থগিত হওয়া এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং ৯টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। গতকালই এই নোটিশ পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানিয়েছেন আজ (বৃহস্পতিবার) আমরা লিগ্যাল নোটিশটি পেয়েছি। বৃহস্পতিবার সকালে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে শতাব্দী রায় নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পক্ষে এই নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাবউদ্দিন খান।
পরীক্ষা বাতিল বিষয়ে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন তার প্রতিক্রিয়ায় গতকাল বলেন, করোনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশে^ই ছড়িয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে কোনো দেশে পাবলিক পরীক্ষা বাতিল হয়নি। এ ছাড়া বাংলাদেশের শির্ক্ষার্থীরা যখন বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে যাবে তখন তারা কোন সার্টিফিকেট বা মার্কশিট নিয়ে যাবে? তিনি আরো বলেন, করোনার মধ্যে যে দেশে নির্বাচন হতে পারে সেখানে পরীক্ষা বাতিল নয় বরং কেন্দ্র বা উপকেন্দ্র বাড়িয়ে এই পাবলিক পরীক্ষাটা নেয়া যেত। বাতিলের কোনো দরকার ছিল না। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে সাবেক এই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে থাকে জেএসসি বা এসএসসিতে সেভাবে তাদের প্রস্তুতি থাকে না। তাই আগের পরীক্ষায় যারা ভালো ফলাফল করতে পারেনি তারা এই মূল্যায়নে পিছিয়ে থাকবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, আমাদের দেশেই তো ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীরা পাবলিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তার মতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পরীক্ষা ছাড়া মূল্যায়নের ফল নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে এবারের পরীক্ষার্থীদের।
পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণার পর অভিভাবকদের মধ্যে অনেকে তাদের মতামতে বলেছেন, এইচএসসির রেজিস্ট্রেশন করা সব শিক্ষার্থীকে অটোপাস দেয়ার সিদ্ধান্ত আমাদের সন্তানদের মধ্যেই এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা তৈরি করবে। অনেকে ইতোমধ্যে সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের গড়ের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার ফল নির্ধারণ করা হবে বলে যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, তা আসলে যৌক্তিক নয়। তারা বলছেন, অনেকে এই দু’টি স্তরে খারাপ করলেও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সেটি পুষিয়ে নেয়। কিন্তু এবার সেই সুযোগ আর থাকছে না।
শিক্ষার্থীদের অভিমত হচ্ছে উচ্চশিক্ষা, মেডিক্যাল কলেজ, বুয়েট, কিংবা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে অনেকেই নিশ্চিতভাবেই নানা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়বেন। শিক্ষার্থীদের মতে এইচএসসির ফলের প্রতি পয়েন্টের সাথে ২৫ আর এসএসসির প্রতি পয়েন্টের সাথে ১৫ গুণ করে আলাদা ২০০ নম্বর লিখিত পরীক্ষার নম্বরের সাথে যোগ করা হয়। কারো যদি পয়েন্ট কম থাকে এই ফলাফলের কারণে, তাহলে তিনি লিখিত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেলেও তার নম্বর অনেক পেছনে থাকবে। ওই শিক্ষার্থী হয়তো সরকারি মেডিক্যালে চান্স না-ও পেতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক রায়হান আরা জানান, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে যেহেতু নিরাপত্তার কারণে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়, সে হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের পর আগের দু’টি পরীক্ষার (জেএসসি ও এসএসসি) গড় মূল্যায়নের ফলাফল নিয়ে উচ্চশিক্ষা কিংবা মেডিক্যাল, বুয়েট বা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তিতে শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের বিড়ম্বনার মধ্যে পড়বে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি বলেছেন, গড় নম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে তাদের সমস্যা হবে না। গড় এই ফলাফল নিয়ে দেশ-বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতেও শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যাও হবে না।