ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় এসএসসি পরীক্ষার্থীরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৫৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০
  • / ১৭১ বার পড়া হয়েছে

যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে
করোনার কারণে পুরো বিশ্বই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। দেশেও ক্রমাগত বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। প্রত্যেকটি খাতই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে উলেস্নখ্য যে, নানা ধরনের অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে শিক্ষা ক্ষেত্রেও। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, পিইসি-জেএসসি ও এইচএসসির বোর্ড পরীক্ষার পাশাপাশি স্কুলপর্যায়ের অন্যান্য শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও আগামী এসএসসি পরীক্ষা কোন আঙ্গিকে হবে তার কোনো ছকই এখনো তৈরি হয়নি। এমনকি বোর্ডপর্যায়ের এ পরীক্ষার জন্য পাঠ্যসূচি কতটা সংক্ষিপ্ত করা হবে তারও কোনো আগাম পরিকল্পনা নেই। যদিও এরই মধ্যে প্রি-টেস্ট পরীক্ষার সময় পেরিয়ে গেছে। এ ছাড়া টেস্ট (নির্বাচনী) পরীক্ষার সময়ও খুব কাছাকাছি। অথচ নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তারা মাত্র তিন-চার সপ্তাহ পূর্ণাঙ্গ ক্লাস করতে পেরেছে। এর পরপরই করোনার কারণে সারা দেশে সব স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, এ অবস্থায় আগামী বছর ফেব্রম্নয়ারিতে কিংবা এর থেকে আরও এক-দুই মাস পিছিয়ে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হলে এর ফলাফল কেমন হবে তা নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে, তা অমূলক নয়। প্রসঙ্গত বলা দরকার, শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ সময় অক্টোবর মাসে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষা হয়ে থাকে। আর এ পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নের ধরনসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়ে পর্যাপ্ত ধারণা পেয়ে থাকে। অথচ করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ওই সময়ে টেস্ট পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ কম। এছাড়া এ অবস্থায় বোর্ড পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের ভালো রেজাল্ট করার সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতিতে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা এড়ানোর সুযোগ নেই। ফলে পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই আমরা মনে করি। এছাড়া এটাও আমলে নিতে হবে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনের কথা বললেও তাদের আশ্বাসে খুব একটা নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না অভিভাবকরা। কেননা এপ্রিল-মে মাসে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, এরপর সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম। এবারে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ায় এইচএসসি পরীক্ষা হওয়া এবং পরীক্ষার পর শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সঙ্গত কারণেই এই অনিশ্চয়তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বিগ্ন পরিস্থিতি। ফলে যত দ্রুত সম্ভব করোনাকালীন সময়ের মধ্যেই পরীক্ষার্থীদের বিষয়টি ভাবতে হবে এবং সামগ্রিক অবস্থা বিচার-বিবেচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বলা দরকার, পরীক্ষার্থীরা মনে করছে, নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকেই তারা যেহেতু নিয়মিত ক্লাস করতে পারেনি এবং প্রি-টেস্ট ও টেস্ট পরীক্ষাও তারা ঠিকমতো দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না- এ ক্ষেত্রে সিলেবাস বেশখানিকটা সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত। আর তা আগেভাগেই শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া জরুরি। কেননা, তা না হলে সারা বছর পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস দেখে লেখাপড়া করার পর শেষ সময়ে এসে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস দেওয়া হলে তা তাদের কোনোই উপকারে আসবে না। ফলে এই বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বিভিন্ন খাতের যেমন বিপর্যস্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তেমনি বাস্তবতাকে মেনে তা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তেমনিভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, একটি জাতির সামগ্রিক সমৃদ্ধির জন্য শিক্ষার আগ্রগতির বিকল্প নেই। ফলে করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা ক্ষেত্রে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তা স্বাভাবিকভাবেই চ্যালেঞ্জের বিষয়। কিন্তু বাস্তবতাকে সামনে রেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণেরও বিকল্প নেই। পরীক্ষার্থীরা যেমন চিন্তিত, তেমনি অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন এটি আমলে নিতে হবে। একই সঙ্গে পুরো শিক্ষাব্যবস্থাতেই স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে করোনা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে এটাও ভুলে যাওয়া যাবে না। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুধাবন করে পর্যাপ্ত বিচার বিশ্লেষণ সাপেক্ষে শিক্ষা ক্ষেত্রে করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। শিক্ষার অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি কাম্য।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় এসএসসি পরীক্ষার্থীরা

আপলোড টাইম : ১২:৫৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০

যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে
করোনার কারণে পুরো বিশ্বই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। দেশেও ক্রমাগত বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। প্রত্যেকটি খাতই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে উলেস্নখ্য যে, নানা ধরনের অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে শিক্ষা ক্ষেত্রেও। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, পিইসি-জেএসসি ও এইচএসসির বোর্ড পরীক্ষার পাশাপাশি স্কুলপর্যায়ের অন্যান্য শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও আগামী এসএসসি পরীক্ষা কোন আঙ্গিকে হবে তার কোনো ছকই এখনো তৈরি হয়নি। এমনকি বোর্ডপর্যায়ের এ পরীক্ষার জন্য পাঠ্যসূচি কতটা সংক্ষিপ্ত করা হবে তারও কোনো আগাম পরিকল্পনা নেই। যদিও এরই মধ্যে প্রি-টেস্ট পরীক্ষার সময় পেরিয়ে গেছে। এ ছাড়া টেস্ট (নির্বাচনী) পরীক্ষার সময়ও খুব কাছাকাছি। অথচ নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তারা মাত্র তিন-চার সপ্তাহ পূর্ণাঙ্গ ক্লাস করতে পেরেছে। এর পরপরই করোনার কারণে সারা দেশে সব স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, এ অবস্থায় আগামী বছর ফেব্রম্নয়ারিতে কিংবা এর থেকে আরও এক-দুই মাস পিছিয়ে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হলে এর ফলাফল কেমন হবে তা নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে, তা অমূলক নয়। প্রসঙ্গত বলা দরকার, শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ সময় অক্টোবর মাসে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষা হয়ে থাকে। আর এ পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নের ধরনসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়ে পর্যাপ্ত ধারণা পেয়ে থাকে। অথচ করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ওই সময়ে টেস্ট পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ কম। এছাড়া এ অবস্থায় বোর্ড পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের ভালো রেজাল্ট করার সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতিতে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা এড়ানোর সুযোগ নেই। ফলে পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই আমরা মনে করি। এছাড়া এটাও আমলে নিতে হবে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনের কথা বললেও তাদের আশ্বাসে খুব একটা নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না অভিভাবকরা। কেননা এপ্রিল-মে মাসে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, এরপর সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম। এবারে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ায় এইচএসসি পরীক্ষা হওয়া এবং পরীক্ষার পর শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সঙ্গত কারণেই এই অনিশ্চয়তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বিগ্ন পরিস্থিতি। ফলে যত দ্রুত সম্ভব করোনাকালীন সময়ের মধ্যেই পরীক্ষার্থীদের বিষয়টি ভাবতে হবে এবং সামগ্রিক অবস্থা বিচার-বিবেচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বলা দরকার, পরীক্ষার্থীরা মনে করছে, নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকেই তারা যেহেতু নিয়মিত ক্লাস করতে পারেনি এবং প্রি-টেস্ট ও টেস্ট পরীক্ষাও তারা ঠিকমতো দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না- এ ক্ষেত্রে সিলেবাস বেশখানিকটা সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত। আর তা আগেভাগেই শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া জরুরি। কেননা, তা না হলে সারা বছর পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস দেখে লেখাপড়া করার পর শেষ সময়ে এসে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস দেওয়া হলে তা তাদের কোনোই উপকারে আসবে না। ফলে এই বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বিভিন্ন খাতের যেমন বিপর্যস্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তেমনি বাস্তবতাকে মেনে তা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তেমনিভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, একটি জাতির সামগ্রিক সমৃদ্ধির জন্য শিক্ষার আগ্রগতির বিকল্প নেই। ফলে করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা ক্ষেত্রে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তা স্বাভাবিকভাবেই চ্যালেঞ্জের বিষয়। কিন্তু বাস্তবতাকে সামনে রেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণেরও বিকল্প নেই। পরীক্ষার্থীরা যেমন চিন্তিত, তেমনি অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন এটি আমলে নিতে হবে। একই সঙ্গে পুরো শিক্ষাব্যবস্থাতেই স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে করোনা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে এটাও ভুলে যাওয়া যাবে না। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুধাবন করে পর্যাপ্ত বিচার বিশ্লেষণ সাপেক্ষে শিক্ষা ক্ষেত্রে করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। শিক্ষার অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি কাম্য।