ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইতালি থেকে যাত্রী ফেরত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৯:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০
  • / ১৩৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশকে আরো সতর্ক হতে হবে
গত ৭ জুলাই ইতালি থেকে ১৫১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য সত্যিকার অর্থেই বিব্রতকর। তবে এ কথা নিশ্চিত করেই বলা যায়, সমস্যাটি শুধু বাংলাদেশের একার নয়, সমস্যাটি বৈশ্বিক। শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক দেশেই এখন বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ নিষেধ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অনেক দেশই এমন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে ইতালি থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি আলোচিত হওয়ার কারণ হচ্ছে, ফেরত আসার আগে ইতালিতে কয়েকজনের কাছে করোনা পরীক্ষার বাংলাদেশি ভুয়া রিপোর্ট পাওয়া গেছে, যাদের সে দেশে পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, গত এক মাসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ছয়টি বিশেষ ফ্লাইটে প্রায় এক হাজার ৬০০ বাংলাদেশি ইতালিয়ান রেসিডেন্ট পারমিটধারী বা পাসপোর্টধারীকে ইতালি নিয়ে গেছে। ঢাকায় ইতালির কূটনীতিকরা এ ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রোম বিমানবন্দরে ৭০ থেকে ৭৫ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এর বাইরে ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের আরো ২০ থেকে ২৫ জনের করোনা শনাক্ত করেছে। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি ইতালি সরকারের কাছে অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
ইতালিতে সন্দেহ তালিকায় বাংলাদেশ কেন এমন প্রশ্নও সংগত কারণে আসতে পারে। আমরা একটু পেছনে ফিরে তাকালে দেখতে পাই, ইতালির পাসপোর্টধারী একদল দ্বৈত নাগরিক গত মার্চ মাসে বাংলাদেশে ফিরে বিশৃঙ্খলা বাধিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন। করোনাভাইরাসের ঝুঁকি সত্ত্বেও তাঁদের অনেকে কোয়ারেন্টিনে থাকেননি। আবার সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশফেরত আরেক দল ইতালির পাসপোর্টধারী ইতালিতে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশি সম্প্রদায়কে আলোচনায় আনেন কোয়ারেন্টিন না মেনে। ইতালি ফিরে তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ও সংক্রমণে ভূমিকা রেখেছেন এমন অভিযোগ রয়েছে সেখানে। ইতালি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বারবার বলার পরও তাঁরা সতর্ক হননি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভুয়া করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে ইতালির গণমাধ্যমের উদ্বেগের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ফেরা প্রায় ২০ শতাংশ যাত্রীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। ফলে শেষ পর্যন্ত জনস্বাস্থ্যের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ইতালি সরকার বাংলাদেশ থেকে যাত্রী যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে। শুধু ইতালি নয়, জাপানেও বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়। কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আরো ১১৩টি দেশ থেকে যাত্রী প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাপান। আবার বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাত্রীদের শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়াও বাংলাদেশ থেকে যাত্রী প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা, বিশেষ করে কভিড-১৯ সংক্রান্ত জাল সনদের বিষয়টি দেশে-বিদেশে আলোচিত হয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আরো অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সমস্যাটি বাংলাদেশের একার নয়, সব দেশের। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আরো অনেক বেশি সতর্ক হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ইতালি থেকে যাত্রী ফেরত

আপলোড টাইম : ০৮:৫৯:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০

বাংলাদেশকে আরো সতর্ক হতে হবে
গত ৭ জুলাই ইতালি থেকে ১৫১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য সত্যিকার অর্থেই বিব্রতকর। তবে এ কথা নিশ্চিত করেই বলা যায়, সমস্যাটি শুধু বাংলাদেশের একার নয়, সমস্যাটি বৈশ্বিক। শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক দেশেই এখন বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ নিষেধ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অনেক দেশই এমন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে ইতালি থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি আলোচিত হওয়ার কারণ হচ্ছে, ফেরত আসার আগে ইতালিতে কয়েকজনের কাছে করোনা পরীক্ষার বাংলাদেশি ভুয়া রিপোর্ট পাওয়া গেছে, যাদের সে দেশে পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, গত এক মাসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ছয়টি বিশেষ ফ্লাইটে প্রায় এক হাজার ৬০০ বাংলাদেশি ইতালিয়ান রেসিডেন্ট পারমিটধারী বা পাসপোর্টধারীকে ইতালি নিয়ে গেছে। ঢাকায় ইতালির কূটনীতিকরা এ ক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রোম বিমানবন্দরে ৭০ থেকে ৭৫ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এর বাইরে ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের আরো ২০ থেকে ২৫ জনের করোনা শনাক্ত করেছে। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি ইতালি সরকারের কাছে অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
ইতালিতে সন্দেহ তালিকায় বাংলাদেশ কেন এমন প্রশ্নও সংগত কারণে আসতে পারে। আমরা একটু পেছনে ফিরে তাকালে দেখতে পাই, ইতালির পাসপোর্টধারী একদল দ্বৈত নাগরিক গত মার্চ মাসে বাংলাদেশে ফিরে বিশৃঙ্খলা বাধিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন। করোনাভাইরাসের ঝুঁকি সত্ত্বেও তাঁদের অনেকে কোয়ারেন্টিনে থাকেননি। আবার সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশফেরত আরেক দল ইতালির পাসপোর্টধারী ইতালিতে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশি সম্প্রদায়কে আলোচনায় আনেন কোয়ারেন্টিন না মেনে। ইতালি ফিরে তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ও সংক্রমণে ভূমিকা রেখেছেন এমন অভিযোগ রয়েছে সেখানে। ইতালি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বারবার বলার পরও তাঁরা সতর্ক হননি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভুয়া করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে ইতালির গণমাধ্যমের উদ্বেগের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ফেরা প্রায় ২০ শতাংশ যাত্রীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। ফলে শেষ পর্যন্ত জনস্বাস্থ্যের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ইতালি সরকার বাংলাদেশ থেকে যাত্রী যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে। শুধু ইতালি নয়, জাপানেও বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়। কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আরো ১১৩টি দেশ থেকে যাত্রী প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাপান। আবার বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাত্রীদের শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়াও বাংলাদেশ থেকে যাত্রী প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা, বিশেষ করে কভিড-১৯ সংক্রান্ত জাল সনদের বিষয়টি দেশে-বিদেশে আলোচিত হয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আরো অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সমস্যাটি বাংলাদেশের একার নয়, সব দেশের। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আরো অনেক বেশি সতর্ক হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।