ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আসছে প্রবাসী কর্মীর লাশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫২:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / ২৩২ বার পড়া হয়েছে

জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে নতুন করে ভাবুন
একসময় বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিপুল জনশক্তি রপ্তানি করা হতো। কিন্তু এখন অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। বিরূপ বিশ্ব পরিস্থিতিতে জনশক্তি রপ্তানিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। এক এক করে বন্ধ হচ্ছে পুরনো শ্রমবাজার। সবচেয়ে বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্য ক্রমেই গুটিয়ে আসছে। আরব আমিরাত, কুয়েত, ইরাক, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, লেবাননসহ কয়েকটি দেশে জনশক্তির বাজার এখন প্রায় বন্ধ। আবার লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে প্রতারণার শিকার হওয়াসহ নানা কারণে অনেকেই খালি হাতে দেশে ফিরছেন। বেশ কয়েক বছর আগে প্রচলিত শ্রমবাজারের বাইরে প্রায় ২৬টি দেশকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু এসব দেশে জনশক্তি রপ্তানির কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে জনশক্তি রপ্তানির আগে গবেষণা করে চাহিদা অনুযায়ী জনশক্তি গড়ে তোলার প্রাথমিক কাজটিও বাংলাদেশে উপেক্ষিত। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কূটনৈতিক নিষ্ক্রিয়তা। গতকাল কালের একটি জাতীয় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ভিটামাটি বিক্রি এবং ঋণ করে বিদেশে গেলেও এখন খালি হাতে ‘জীবন্ত লাশ’ হয়ে দেশে ফেরত আসছেন হাজার হাজার শ্রমিক। অন্যদিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০০৯ সালে দুই হাজার ৩১৫ জন, ২০১০ সালে দুই হাজার ২৯৯ জন, ২০১১ সালে দুই হাজার ২৩৫ জন, ২০১২ সালে দুই হাজার ৩৮৩ জন, ২০১৩ সালে দুই হাজার ৫৪২ জন, ২০১৪ সালে দুই হাজার ৮৭২ জন, ২০১৫ সালে দুই হাজার ৮৩১ জন, ২০১৬ সালে দুই হাজার ৯৮৫ জন, ২০১৭ সালে দুই হাজার ৯১৯ জন এবং ২০১৮ সালে তিন হাজার ৫৭ জনের মরদেহ দেশে আসে। অর্থাৎ গত ১১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসীর লাশ দেশে এসেছে এ বছর। ২০১৮ সালের চেয়ে এ বছরের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত আট শতাধিক প্রবাসীর লাশ বেশি এসেছে দেশে। হতভাগ্য এসব কর্মীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে হার্ট অ্যাটাক। তীব্র মানসিক চাপে মৃত্যু হচ্ছে তাঁদের। হতভাগ্য এই মানুষগুলোকে কি আমরাই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছি? এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করতে হবে। দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে। বিকাশমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাই জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আসছে প্রবাসী কর্মীর লাশ

আপলোড টাইম : ০৯:৫২:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯

জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে নতুন করে ভাবুন
একসময় বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিপুল জনশক্তি রপ্তানি করা হতো। কিন্তু এখন অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। বিরূপ বিশ্ব পরিস্থিতিতে জনশক্তি রপ্তানিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। এক এক করে বন্ধ হচ্ছে পুরনো শ্রমবাজার। সবচেয়ে বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্য ক্রমেই গুটিয়ে আসছে। আরব আমিরাত, কুয়েত, ইরাক, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, লেবাননসহ কয়েকটি দেশে জনশক্তির বাজার এখন প্রায় বন্ধ। আবার লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে প্রতারণার শিকার হওয়াসহ নানা কারণে অনেকেই খালি হাতে দেশে ফিরছেন। বেশ কয়েক বছর আগে প্রচলিত শ্রমবাজারের বাইরে প্রায় ২৬টি দেশকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু এসব দেশে জনশক্তি রপ্তানির কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে জনশক্তি রপ্তানির আগে গবেষণা করে চাহিদা অনুযায়ী জনশক্তি গড়ে তোলার প্রাথমিক কাজটিও বাংলাদেশে উপেক্ষিত। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কূটনৈতিক নিষ্ক্রিয়তা। গতকাল কালের একটি জাতীয় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ভিটামাটি বিক্রি এবং ঋণ করে বিদেশে গেলেও এখন খালি হাতে ‘জীবন্ত লাশ’ হয়ে দেশে ফেরত আসছেন হাজার হাজার শ্রমিক। অন্যদিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্ক সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০০৯ সালে দুই হাজার ৩১৫ জন, ২০১০ সালে দুই হাজার ২৯৯ জন, ২০১১ সালে দুই হাজার ২৩৫ জন, ২০১২ সালে দুই হাজার ৩৮৩ জন, ২০১৩ সালে দুই হাজার ৫৪২ জন, ২০১৪ সালে দুই হাজার ৮৭২ জন, ২০১৫ সালে দুই হাজার ৮৩১ জন, ২০১৬ সালে দুই হাজার ৯৮৫ জন, ২০১৭ সালে দুই হাজার ৯১৯ জন এবং ২০১৮ সালে তিন হাজার ৫৭ জনের মরদেহ দেশে আসে। অর্থাৎ গত ১১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসীর লাশ দেশে এসেছে এ বছর। ২০১৮ সালের চেয়ে এ বছরের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত আট শতাধিক প্রবাসীর লাশ বেশি এসেছে দেশে। হতভাগ্য এসব কর্মীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে হার্ট অ্যাটাক। তীব্র মানসিক চাপে মৃত্যু হচ্ছে তাঁদের। হতভাগ্য এই মানুষগুলোকে কি আমরাই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছি? এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করতে হবে। দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে। বিকাশমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাই জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।