ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় স্ত্রীকে হত্যা করতে গিয়ে স্বামীর গলায় ব্লেড মেরে আত্মহত্যার চেষ্টা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪১:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৮
  • / ৪১৫ বার পড়া হয়েছে

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি (আলমডাঙ্গা): আলমডাঙ্গার পাইকপাড়ায় স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়ি নিতে এসে স্ত্রী স্বামীর সাথে না যাওয়ায় গলায় ব্লেড লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে স্বামী শুভ। পরিবারের দাবি মেয়েকে ভাগিয়ে বিবাহ করায় এখন আর মেয়ে না যাওয়ায় জোরপূর্বক নেয়ার জন্য এই ধরণের আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। শুভ বলে, বাড়ি ফিরে যাবে বলে তার স্ত্রী তন্নি ফোন করে ডেকে এনেছে। এরই মধ্যে তন্নিকে জোরপূর্বক বিবাহ করে ঝিনাইদহ শ্বশুর বাড়িতে আটকে রাখে বলে অভিযোগ করে। এনিয়ে এলাকাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজোনার সৃষ্টি হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাঁস ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের মোহন মহরীর মেয়ে দীন আফরোজা তন্নি উচ্চ মাধ্যমিকের ২য় বর্ষের ছাত্রী। গত ৫ মাস পূর্বে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানার হামদু গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান শুভ’র সাথে প্রেমজ সম্পর্কের মাধ্যমে পালিয়ে বিবাহ করে। ৫ মাস পার হলেও তন্নির পরিবার কোনভাবে তাদের এই বিবাহ মেনে নিতে পারেনি। তবে এরই মধ্যে তন্নির গর্ভে ৩ মাসের বাচ্চার ভ্রণ দেখা দেয়। এই খবর তন্নির পরিবারের নিকট পৌছালে তারা কৌশলে কুষ্টিয়ায় বসবাসকারী খালা রহিমাকে দিয়ে বাচ্চা নষ্ট করবার জন্য ঔষধ পাঠায়। ঔষধ সেবনের পর থেকেই তন্নির শরীর খারাপ করলে ডাক্তারের নিকট নেয়া হলে বাচ্চা ভালো আছে বলে জানায়। তবে তার পেটের বাচ্চা নষ্ট করার জন্য ঔষধ সেবন করানো হয় বলে ডাক্তার জানায়। এরই পর ঝিনাইদহ সদর থানায় তন্নির খালার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করে। ৫ মাস পার হওয়ার পর থেকেই তন্নির পরিবারের লোকজন তাদের বিবাহ মেনে নিবে বলে অভিমত পোষন করে। জামাইয়ের সাথে করে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসতে বলে তন্নিকে। গত অক্টোবরের ৩ তারিখে তন্নির স্বামীর সাথে আলাপ করে বাবার বাড়ি পাইকপাড়ায় বেড়াতে আসে। এরই মধ্যে তন্নির পেটে থাকা ৩ মাসের বাচ্চা নষ্ট করে পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে মহাচিন্তায় পড়ে স্বামী শুভ।
গত ৯ তারিখে শুভ’র নিকট তন্নি ফোন দিয়ে নিয়ে যেতে বলে। এই কারণে শুভ গত ১০ অক্টোবর বিকালে পাইকপাড়ায় শ্বশুর বাড়িতে আসে। গতকাল তন্নিকে ঝিনাইদহ নিয়ে যাবার কথা বললে সে যেতে নারাজ হয়। এরই সূত্র ধরে গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় শশুর বাড়িতে স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘরের মধ্যে ওড়না দিয়ে চোখ বাধে। তন্নির পরিবারের লোকজন ডাকাডাকি করলে ভয়ে শুভ তার নিজের গলায় ব্লেড দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে শ্বশুর বাড়ির লোকজন উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে গলায় ৩টি সেলাই দেয়।
এই ঘটনার পর শুভ দাবি করে, আমার স্ত্রীকে ভুলিয়ে এখানে নিয়ে এসে পেটে থাকা ৩ মাসের বাচ্চা হত্যা করেছে। তন্নি বলে, আমার পেটের বাচ্চা একাই নষ্ট হয়ে গেছে এর সাথে কেউ দায়ি নয়। আমি যাকে বিবাহ করেছি তার পরিবারের লোকজন আমাকে বন্দি করে রেখেছিলো। তারা ভয় দেখিয়ে আমাকে দিয়ে আমার খালার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করায়। পরিবারের লোকজন বলে, মেয়ে ভুল করে বিবাহ করেছে। এখন তার ভুল বুঝতে পেরে ওই ছেলের সংসার করবে না। আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ী ইনচার্জ ইসলাম জানান, ছেলেটি নিজের গলা কেটে রক্তাক্ত হওয়ায় বিকালে ফাঁড়ি হেফাজতে নেয়া হয়েছে, পরে থানায় পাঠানো হয়। তবে ৩ মাসের বাচ্চা নিজের ইচ্ছায় হত্যা করা হলে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আলমডাঙ্গায় স্ত্রীকে হত্যা করতে গিয়ে স্বামীর গলায় ব্লেড মেরে আত্মহত্যার চেষ্টা

আপলোড টাইম : ০৯:৪১:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৮

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি (আলমডাঙ্গা): আলমডাঙ্গার পাইকপাড়ায় স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়ি নিতে এসে স্ত্রী স্বামীর সাথে না যাওয়ায় গলায় ব্লেড লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে স্বামী শুভ। পরিবারের দাবি মেয়েকে ভাগিয়ে বিবাহ করায় এখন আর মেয়ে না যাওয়ায় জোরপূর্বক নেয়ার জন্য এই ধরণের আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। শুভ বলে, বাড়ি ফিরে যাবে বলে তার স্ত্রী তন্নি ফোন করে ডেকে এনেছে। এরই মধ্যে তন্নিকে জোরপূর্বক বিবাহ করে ঝিনাইদহ শ্বশুর বাড়িতে আটকে রাখে বলে অভিযোগ করে। এনিয়ে এলাকাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজোনার সৃষ্টি হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাঁস ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের মোহন মহরীর মেয়ে দীন আফরোজা তন্নি উচ্চ মাধ্যমিকের ২য় বর্ষের ছাত্রী। গত ৫ মাস পূর্বে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানার হামদু গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান শুভ’র সাথে প্রেমজ সম্পর্কের মাধ্যমে পালিয়ে বিবাহ করে। ৫ মাস পার হলেও তন্নির পরিবার কোনভাবে তাদের এই বিবাহ মেনে নিতে পারেনি। তবে এরই মধ্যে তন্নির গর্ভে ৩ মাসের বাচ্চার ভ্রণ দেখা দেয়। এই খবর তন্নির পরিবারের নিকট পৌছালে তারা কৌশলে কুষ্টিয়ায় বসবাসকারী খালা রহিমাকে দিয়ে বাচ্চা নষ্ট করবার জন্য ঔষধ পাঠায়। ঔষধ সেবনের পর থেকেই তন্নির শরীর খারাপ করলে ডাক্তারের নিকট নেয়া হলে বাচ্চা ভালো আছে বলে জানায়। তবে তার পেটের বাচ্চা নষ্ট করার জন্য ঔষধ সেবন করানো হয় বলে ডাক্তার জানায়। এরই পর ঝিনাইদহ সদর থানায় তন্নির খালার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করে। ৫ মাস পার হওয়ার পর থেকেই তন্নির পরিবারের লোকজন তাদের বিবাহ মেনে নিবে বলে অভিমত পোষন করে। জামাইয়ের সাথে করে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসতে বলে তন্নিকে। গত অক্টোবরের ৩ তারিখে তন্নির স্বামীর সাথে আলাপ করে বাবার বাড়ি পাইকপাড়ায় বেড়াতে আসে। এরই মধ্যে তন্নির পেটে থাকা ৩ মাসের বাচ্চা নষ্ট করে পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে মহাচিন্তায় পড়ে স্বামী শুভ।
গত ৯ তারিখে শুভ’র নিকট তন্নি ফোন দিয়ে নিয়ে যেতে বলে। এই কারণে শুভ গত ১০ অক্টোবর বিকালে পাইকপাড়ায় শ্বশুর বাড়িতে আসে। গতকাল তন্নিকে ঝিনাইদহ নিয়ে যাবার কথা বললে সে যেতে নারাজ হয়। এরই সূত্র ধরে গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় শশুর বাড়িতে স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘরের মধ্যে ওড়না দিয়ে চোখ বাধে। তন্নির পরিবারের লোকজন ডাকাডাকি করলে ভয়ে শুভ তার নিজের গলায় ব্লেড দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে শ্বশুর বাড়ির লোকজন উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে গলায় ৩টি সেলাই দেয়।
এই ঘটনার পর শুভ দাবি করে, আমার স্ত্রীকে ভুলিয়ে এখানে নিয়ে এসে পেটে থাকা ৩ মাসের বাচ্চা হত্যা করেছে। তন্নি বলে, আমার পেটের বাচ্চা একাই নষ্ট হয়ে গেছে এর সাথে কেউ দায়ি নয়। আমি যাকে বিবাহ করেছি তার পরিবারের লোকজন আমাকে বন্দি করে রেখেছিলো। তারা ভয় দেখিয়ে আমাকে দিয়ে আমার খালার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করায়। পরিবারের লোকজন বলে, মেয়ে ভুল করে বিবাহ করেছে। এখন তার ভুল বুঝতে পেরে ওই ছেলের সংসার করবে না। আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ী ইনচার্জ ইসলাম জানান, ছেলেটি নিজের গলা কেটে রক্তাক্ত হওয়ায় বিকালে ফাঁড়ি হেফাজতে নেয়া হয়েছে, পরে থানায় পাঠানো হয়। তবে ৩ মাসের বাচ্চা নিজের ইচ্ছায় হত্যা করা হলে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।