ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় মাদ্রাসা ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে নওলামারী ম্রাদাসার সদস্য কলম গ্রেফতার : উপযুক্ত শাস্তি দাবি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:১৭:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • / ৪৭৬ বার পড়া হয়েছে

kolom-1আলমডাঙ্গা অফিস: চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার খাসকররা ইউনিয়নের নওলামারি গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের জনসাধারণ ক্রমান্বয়েই ধর্ষক কলম ও হামিদ মাষ্টারের উপযুক্ত বিচার ও শাস্তির দাবীতে ফুঁসে উঠছে। নওলামারি আলিম মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে প্রভাব খাটিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন জোরপূর্বক ধর্ষনের প্রতিবাদে ওই এলাকায় এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে মূল অভিযুক্তের একজন কলমকে পুলিশ গ্রেফতার করায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গার নওলামারি আলিম মাদ্রাসার সাবেক সদস্য ধর্ষক কলম আলীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মাদ্রাসার দরিদ্র অসহায় পরিবারের ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে রেখে ধর্ষণ করার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। জানা গেছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে আলমডাঙ্গা তিওরবিলা ক্যাম্পের আইসি এসআই বিল¬াল হোসেন ও এএসআই আব্দুল হাই এক অভিযান চালিয়ে আলমডাঙ্গার নওলামারি গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে কলম আলীকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসা ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আটকে রেখে উপর্যুপরি ধর্ষণ ও ওই মামলার সাক্ষীদের মারধর করে হাত পা ভেঙে দেওয়া ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। অসহায় ছাত্রী ও তার পরিবারসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার নওলামারী গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর মেয়ে রোকেয়া খাতুন। সে নওলামারী আলিম মাদ্রাসায় ১০ শ্রেণিতে পড়ে। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই রোকেয়া খাতুনের উপর মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির প্রভাবশালী সদস্য অশিক্ষিত কলম আলীর কুনজর পড়ে। কলম তার লালসা চরিতার্থ করতে প্রিয় বন্ধু একই গ্রামের হামিদ মাষ্টারকে সাথে নেয় । আব্দুল হামিদ ঘোলদাঁড়ি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক। দুই বন্ধু বিভিন্ন সময়ে রোকেয়াকে লালসার শিকারে পরিণত করতে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিল। তাদের পাতা ষড়যন্ত্রের জালে পিতৃহীন দরিদ্র পরিবারের মেয়ে রোকেয়া এক সময় ফেঁসে যায়। প্রথম প্রথম সে সাহস করে গ্রামের অত্যন্ত প্রভাবশালী এই দুইজনকে এড়িয়ে চলত। কিন্তু এক পর্যায়ে দুই সন্তানের জনক কলম (৫২) তার বন্ধু হামিদ মাষ্টারকে রোকেয়ার বাড়িতে পাঠায় বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে। এতেও রাজি না হলে রোকেয়াকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। রোকেয়া জানায়, কলম আলী গত বছরের ২৩ জুলাই মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে রোকেয়াকে হামিদ মাস্টারের মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। মেয়েকে হারিয়ে রোকেয়ার মা মোমেনা খাতুন ছুটে যান হামিদ মাষ্টারের কাছে। হামিদ মাষ্টার মোমেনাকে বলেছিল, রোকেয়া কলমের কাছে রয়েছে। সে পরামর্শ দেয় থানা-পুলিশ না করতে। পুলিশকে জানালে রোকেয়াকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল হামিদ মাষ্টার বলে রোকেয়ার মা জানায়। অসহায় পিতৃহীন রোকেয়াকে তুলে নিয়ে গিয়ে কলম আলী চুয়াডাঙ্গার সুবদিয়ায় তার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়র একটি বাড়িতে নিয়ে তোলে। রোকেয়া জানায়, হামিদ মাষ্টার তার নিজের মোটরসাইকেলে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল সুবদিয়ায়। অসহায় কিশোরী রোকেয়া প্রভাবশালী কলম আলীর অপকর্মে সাহস করে বাঁধা দিতে পারেনি। কলম ওই বাড়ির একটি ঘরে রাতভর রোকেয়াকে ধর্ষণ করে। রোকেয়া বার বার বলে- আপনি আমার বাপের বয়সের। আমার জীবনটা এভাবে নষ্ট করে দিয়েন না”- বলে রোকেয়া কলমের পা ধরে আকুতি মিনতি করেও লম্পট কলমের মন টলাতে পারেনি। পরদিন সকালে প্রতিবেশীরা জেনে গেলে কলমকে আটক করে সুবদিয়ার গ্রামবাসি। সেখানে স্থানীয় যুবকদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে আলমডাঙ্গার পারলক্ষ্মীপুর গ্রামে কলমের এক খালু মসলেম আলীর বাড়িতে তোলে রোকেয়াকে। ডাকা হয় খাসকররার কাবিলনগরের আলোচিত কাজি মঞ্জুকে। একটি সাদা কাগজে বিয়ের নামে রোকেয়ার সইও করে নেওয়া হয়। এরপর থেকে ওই বাড়ির একটি ঘরে রোকেয়াকে সারাদিন তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। রাত হলেই চলে রোকেয়ার ওপর পাশবিক নির্যাতন। এভাবে দিনে তালা ও রাতে ধর্ষন চলে সাতদিন ধরে। বাড়ির গৃহস্থের আপত্তির মুখে এরপর পারলক্ষ্মীপুর গ্রামের অপর পাড়ায় কলমের মামা আইয়ুব আলীর বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় রোকেয়াকে। সেখানেও তাকে দিনে তালা ও রাতে ধর্ষণ চলতে থাকে। এভাবে চলে আরও সাতদিন। এক পর্যায়ে গত বছরের নভেম্বর মাসের ৯ তারিখের ভোরে রোকেয়া নিজের জীবন বাঁচাতে ওই ঘর থেকে পালিয়ে জাঁহাপুর গ্রামে দুলাভাই ইদ্রিসের বাড়িতে চলে আসে। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে লম্পট কলম ও হামিদ মাষ্টার। তারা আবারও রোকেয়াকে স্ত্রী দাবি করে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। এক পর্যায়ে রোকেয়া চুয়াডাঙ্গার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে ধর্ষক কলম, হামিদ মাষ্টার ও কাজি মঞ্জুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এ মামলা দায়েরের পর থেকে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদস্য কলম আলী ও তার বন্ধু হামিদ মাষ্টার আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। মাদ্রাসায় প্রভাব বিস্তার করে রোকেয়াকে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তারা স্বয়ং  মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফকে হাত করেন। রোকেয়ার মাদ্রাসার উপবৃত্তির টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে যায় রোকেয়া। প্রথম দিন তাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, রোকেয়ার দায়েরকৃত মামলায় কলম আলীকে গ্রেফতার করে জেলে দেয়। হাজত খেটে জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছে। জেলমুক্ত হয়েই সে নির্যাতিতার পরিবার-আত্মীয় ও সাক্ষীদের উপর চড়াও হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলায় স্বাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে সাক্ষী একই গ্রামের সরলা খাতুনকে মারধর করে হাত পা ভেঙে দেয়। এছাড়া একই গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে মিলন ও রহমানের ছেলে ইদ্রীসসহ সকল সাক্ষীদের হুমকি ধামকি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে সরলা খাতুন বাদি হয়ে কলমকে আসামি করে পৃথক একটি মামলা দায়ের করেছে। গত ১৭ সেপ্টম্বর তাকে থানা পুলিশ ধর্ষণ মামলা ও মামলার সাক্ষীকে মারধর করার মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় ধর্ষক কলম ও হামিদ মাষ্টারের উপযুক্ত বিচার ও শাস্তি এখন সময়ের দাবী।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আলমডাঙ্গায় মাদ্রাসা ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে নওলামারী ম্রাদাসার সদস্য কলম গ্রেফতার : উপযুক্ত শাস্তি দাবি

আপলোড টাইম : ০২:১৭:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

kolom-1আলমডাঙ্গা অফিস: চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার খাসকররা ইউনিয়নের নওলামারি গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের জনসাধারণ ক্রমান্বয়েই ধর্ষক কলম ও হামিদ মাষ্টারের উপযুক্ত বিচার ও শাস্তির দাবীতে ফুঁসে উঠছে। নওলামারি আলিম মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে প্রভাব খাটিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন জোরপূর্বক ধর্ষনের প্রতিবাদে ওই এলাকায় এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে মূল অভিযুক্তের একজন কলমকে পুলিশ গ্রেফতার করায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গার নওলামারি আলিম মাদ্রাসার সাবেক সদস্য ধর্ষক কলম আলীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মাদ্রাসার দরিদ্র অসহায় পরিবারের ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে রেখে ধর্ষণ করার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। জানা গেছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে আলমডাঙ্গা তিওরবিলা ক্যাম্পের আইসি এসআই বিল¬াল হোসেন ও এএসআই আব্দুল হাই এক অভিযান চালিয়ে আলমডাঙ্গার নওলামারি গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে কলম আলীকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসা ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আটকে রেখে উপর্যুপরি ধর্ষণ ও ওই মামলার সাক্ষীদের মারধর করে হাত পা ভেঙে দেওয়া ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। অসহায় ছাত্রী ও তার পরিবারসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার নওলামারী গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর মেয়ে রোকেয়া খাতুন। সে নওলামারী আলিম মাদ্রাসায় ১০ শ্রেণিতে পড়ে। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই রোকেয়া খাতুনের উপর মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির প্রভাবশালী সদস্য অশিক্ষিত কলম আলীর কুনজর পড়ে। কলম তার লালসা চরিতার্থ করতে প্রিয় বন্ধু একই গ্রামের হামিদ মাষ্টারকে সাথে নেয় । আব্দুল হামিদ ঘোলদাঁড়ি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক। দুই বন্ধু বিভিন্ন সময়ে রোকেয়াকে লালসার শিকারে পরিণত করতে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিল। তাদের পাতা ষড়যন্ত্রের জালে পিতৃহীন দরিদ্র পরিবারের মেয়ে রোকেয়া এক সময় ফেঁসে যায়। প্রথম প্রথম সে সাহস করে গ্রামের অত্যন্ত প্রভাবশালী এই দুইজনকে এড়িয়ে চলত। কিন্তু এক পর্যায়ে দুই সন্তানের জনক কলম (৫২) তার বন্ধু হামিদ মাষ্টারকে রোকেয়ার বাড়িতে পাঠায় বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে। এতেও রাজি না হলে রোকেয়াকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। রোকেয়া জানায়, কলম আলী গত বছরের ২৩ জুলাই মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে রোকেয়াকে হামিদ মাস্টারের মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। মেয়েকে হারিয়ে রোকেয়ার মা মোমেনা খাতুন ছুটে যান হামিদ মাষ্টারের কাছে। হামিদ মাষ্টার মোমেনাকে বলেছিল, রোকেয়া কলমের কাছে রয়েছে। সে পরামর্শ দেয় থানা-পুলিশ না করতে। পুলিশকে জানালে রোকেয়াকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল হামিদ মাষ্টার বলে রোকেয়ার মা জানায়। অসহায় পিতৃহীন রোকেয়াকে তুলে নিয়ে গিয়ে কলম আলী চুয়াডাঙ্গার সুবদিয়ায় তার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়র একটি বাড়িতে নিয়ে তোলে। রোকেয়া জানায়, হামিদ মাষ্টার তার নিজের মোটরসাইকেলে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল সুবদিয়ায়। অসহায় কিশোরী রোকেয়া প্রভাবশালী কলম আলীর অপকর্মে সাহস করে বাঁধা দিতে পারেনি। কলম ওই বাড়ির একটি ঘরে রাতভর রোকেয়াকে ধর্ষণ করে। রোকেয়া বার বার বলে- আপনি আমার বাপের বয়সের। আমার জীবনটা এভাবে নষ্ট করে দিয়েন না”- বলে রোকেয়া কলমের পা ধরে আকুতি মিনতি করেও লম্পট কলমের মন টলাতে পারেনি। পরদিন সকালে প্রতিবেশীরা জেনে গেলে কলমকে আটক করে সুবদিয়ার গ্রামবাসি। সেখানে স্থানীয় যুবকদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে আলমডাঙ্গার পারলক্ষ্মীপুর গ্রামে কলমের এক খালু মসলেম আলীর বাড়িতে তোলে রোকেয়াকে। ডাকা হয় খাসকররার কাবিলনগরের আলোচিত কাজি মঞ্জুকে। একটি সাদা কাগজে বিয়ের নামে রোকেয়ার সইও করে নেওয়া হয়। এরপর থেকে ওই বাড়ির একটি ঘরে রোকেয়াকে সারাদিন তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। রাত হলেই চলে রোকেয়ার ওপর পাশবিক নির্যাতন। এভাবে দিনে তালা ও রাতে ধর্ষন চলে সাতদিন ধরে। বাড়ির গৃহস্থের আপত্তির মুখে এরপর পারলক্ষ্মীপুর গ্রামের অপর পাড়ায় কলমের মামা আইয়ুব আলীর বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় রোকেয়াকে। সেখানেও তাকে দিনে তালা ও রাতে ধর্ষণ চলতে থাকে। এভাবে চলে আরও সাতদিন। এক পর্যায়ে গত বছরের নভেম্বর মাসের ৯ তারিখের ভোরে রোকেয়া নিজের জীবন বাঁচাতে ওই ঘর থেকে পালিয়ে জাঁহাপুর গ্রামে দুলাভাই ইদ্রিসের বাড়িতে চলে আসে। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে লম্পট কলম ও হামিদ মাষ্টার। তারা আবারও রোকেয়াকে স্ত্রী দাবি করে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। এক পর্যায়ে রোকেয়া চুয়াডাঙ্গার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে ধর্ষক কলম, হামিদ মাষ্টার ও কাজি মঞ্জুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এ মামলা দায়েরের পর থেকে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদস্য কলম আলী ও তার বন্ধু হামিদ মাষ্টার আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। মাদ্রাসায় প্রভাব বিস্তার করে রোকেয়াকে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তারা স্বয়ং  মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফকে হাত করেন। রোকেয়ার মাদ্রাসার উপবৃত্তির টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে যায় রোকেয়া। প্রথম দিন তাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, রোকেয়ার দায়েরকৃত মামলায় কলম আলীকে গ্রেফতার করে জেলে দেয়। হাজত খেটে জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছে। জেলমুক্ত হয়েই সে নির্যাতিতার পরিবার-আত্মীয় ও সাক্ষীদের উপর চড়াও হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলায় স্বাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে সাক্ষী একই গ্রামের সরলা খাতুনকে মারধর করে হাত পা ভেঙে দেয়। এছাড়া একই গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে মিলন ও রহমানের ছেলে ইদ্রীসসহ সকল সাক্ষীদের হুমকি ধামকি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে সরলা খাতুন বাদি হয়ে কলমকে আসামি করে পৃথক একটি মামলা দায়ের করেছে। গত ১৭ সেপ্টম্বর তাকে থানা পুলিশ ধর্ষণ মামলা ও মামলার সাক্ষীকে মারধর করার মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় ধর্ষক কলম ও হামিদ মাষ্টারের উপযুক্ত বিচার ও শাস্তি এখন সময়ের দাবী।